সরকারের দেয়া হতাহতের তালিকা বিশ্বাস করে না জাপা: মহাসচিব

  • স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু

জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু

কোটা সংস্কার আন্দোলনে সরকারের দেয়া হতাহতের তালিকা জাতীয় পার্টি বিশ্বাস করে না বলে মন্তব্য করেছেন- জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু। নিরপেক্ষ তদন্ত কমিশন গঠন করে ছাত্র হত্যায় জড়িত সকল সরকারি কর্মকর্তা ও উস্কানিদাতাদের বিচার নিশ্চিত করা উচিত বলে মনে করেন তিনি।

রোববার (২৮ জুলাই) জাতীয় পার্টির যৌথসভা শেষে সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন। পার্টির কো-চেয়ারম্যান, প্রেসিডিয়াম সদস্য, উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য, ভাইস চেয়ারম্যান, যুগ্ম মহাসচিব, সাংগঠনিক সম্পাদক, যুগ্ম সাংগঠনিক সম্পাদক, যুগ্ম সম্পাদক, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের সভাপতি সম্পাদকদের ডাকা হয় বৈঠকে।

বিজ্ঞাপন

মুজিবুল হক বলেন, হতাহতের যে পরিসংখ্যান দেওয়া হচ্ছে, সংখ্যা এরচেয়ে অনেক বেশি হবে। ছাত্রদের ন্যায্য দাবি বল প্রয়োগের মাধ্যমে দমনকে তীব্র নিন্দা জানায় জাতীয় পার্টি। ছাত্র আন্দোলনে রংপুরে নিহত আবু সাঈদ -এর মামলার এজাহারে প্রকৃত কারণ উল্লেখ না করার নিন্দা জানানো হয়েছে যৌথসভায়।

তিনি বলেন, কেপিআইভুক্ত সরকারি স্থাপনার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হয়েছে সরকার। তারা এর দায় এড়াতে পারে না। এ জন্য সংশ্লিষ্ট দফতরের মন্ত্রীদের পদত্যাগ দাবি করছি। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সরকারের কোনো মন্ত্রীর বাসায়তো হামলা হয়নি। তারা তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছে, কিন্তু সরকারি স্থাপনার গুরুত্ব দেয়নি।

বিজ্ঞাপন

জাপা মহাসচিব বলেন, জাতীয় পার্টির যৌথসভায় নিহত শিক্ষার্থীদের বীর মুক্তিসেনা হিসেবে আখ্যায়িত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। চলমান ছাত্র আন্দোলনে আগেই জাপা সর্বাত্মক সমর্থন দিয়েছে। ছাত্রদের অহিংস আন্দোলনে সমর্থন অব্যাহত থাকবে।

তিনি ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের হয়রানি, নির্যাতন না করার আহ্বান জানান। একইসঙ্গে গ্রেফতারকৃত ছাত্রদের অবিলম্বে মুক্তির দাবি করেন।

জাতীয় পার্টির পক্ষ থেকে ১১ দফা প্রস্তাবনা তুলে ধরে তিনি অবিলম্বে দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া, প্রকৃত ছাত্রদের হল প্রশাসনের মাধ্যমে নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি জানান।

কোট সংস্কার আন্দোলনের নেতাদের সংসদে আইন পাশের দাবির সঙ্গে একমত পোষণ করে বলেন, সংসদে বিল আনা হলে জাতীয় পার্টি তাতে সমর্থন করবে। সুপ্রীম কোর্ট পর্যবেক্ষণ দিয়েছে, সে কারণে আইন হওয়া উচিত।

অপর এক প্রশ্নের জবাবে এ মহাসচিব বলেন, সরকারের ভুলের কারণে আজকে এই অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। জাতীয় পার্টি নিয়মতান্ত্রিক রাজনীতিতে বিশ্বাসী। তারা জ্বালাও পোঁড়াও বিশ্বাস করে না। আমরা নিয়মতান্ত্রিকভাবে সরকারের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদ করে যাচ্ছি। তবে শিগগিরই কর্মসূচি নিয়ে মাঠে নামতে চাই।

পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের এর সভাপতিত্বে বেলা পৌঁনে ১২টায় বৈঠক শুরু হয়ে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত চলে। এতে নেতাকর্মীরা পার্টির শীর্ষ নেতৃত্বের বিরুদ্ধে সরকারের লেজুড়বৃত্তির অভিযোগ তোলেন। তারা অনেকেই প্রশ্ন তোলেন, গত নির্বাচনে দলের ভূমিকা নিয়ে। কেউ কেউ জানতে চান, গত নির্বাচনের পূর্বে সারাদেশ থেকে আসা নেতৃবৃন্দ নির্বাচনে না যাওয়ার পক্ষে মতামত দেন। তারপরও কেনো যাওয়া হলো। অনেক নেতাই কর্মসূচি নিয়ে রাজপথে নামার পক্ষে মতামত দেন।

এসময় শীর্ষ নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান জাতীয় সংসদের বিরোধীদলীয় উপনেতা ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, কো-চেয়ারম্যান এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার, অ্যাডভোকেট সামলা ইসলাম এমপি, মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু।