ফেনীতে গণ-গ্রেফতারের অভিযোগ বিএনপির

  • ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম,ফেনী
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

গণ-গ্রেফতারের অভিযোগ বিএনপির

গণ-গ্রেফতারের অভিযোগ বিএনপির

কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে নাশকতার দুই মামলায় ফেনীতে গ্রেফতার হয়েছেন বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠনের বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী। মামলায় এজাহারভুক্ত আসামিদের মধ্যেও রয়েছে বিএনপির শীর্ষ পর্যায়ের নেতাকর্মীদের নাম। তবে বিএনপির দাবি কোটা আন্দোলনের সাথে বিএনপির কোনো সম্পৃক্ততা নেই। তাদের অভিযোগ কোটা আন্দোলনকে কেন্দ্র করে গণ-গ্রেফতার অভিযান চালিয়ে নেতাকর্মীদের গ্রেফতার ও হয়রানি করা হচ্ছে।

ফেনী মডেল থানা সূত্রে জানা গেছে, গত ১৯ জুলাই (বৃহস্পতিবার) শহরের ট্রাংক রোডে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারী ও পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনায় ফেনী মডেল থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক আল আমিন বাদী হয়ে ২১ জনের নাম উল্লেখ ও আরও ১০০ থেকে ১৫০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন। পরবর্তী ২১ জুলাই (রোববার) আবারও সংঘর্ষের ঘটনায় উপ-পরিদর্শক জাহাঙ্গীর আলম বাদী হয়ে ২৯ জনের নাম উল্লেখ ও আরও ১৫০ থেকে ২০০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে আরেকটি মামলা দায়ের করেন।

বিজ্ঞাপন

বিএনপি নেতাদের দাবি, মামলায় উল্লেখিত ঘটনার সময় ফেনীতে না থেকে ও অসুস্থ হয়ে শয্যাশায়ী হলেও অনেক নেতাকর্মীকে পুলিশ নাশকতার মামলায় গ্রেফতার করেছে। এছাড়া ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মী ও পুলিশ প্রশাসন যৌথভাবে জাতীয়তাবাদী দলের নেতাকর্মীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে হামলা চালিয়ে শারীরিক নির্যাতন করে গ্রেফতারে সহযোগিতা করছে।

ফেনী জেলা বিএনপির শীর্ষ নেতারা বলছেন, পুলিশের দায়ের করা দুই মামলায় জেলা বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের ১৭ জন নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ করা হয়েছে। মামলায় এখন পর্যন্ত শতাধিক নেতাকর্মীকে গ্রেফতার হয়েছে। তবে গ্রেফতারকৃত নেতাকর্মীরা এজহারের অন্তর্ভুক্ত নন বলে দাবি করেন তারা।

বিজ্ঞাপন

এ প্রসঙ্গে জেলা বিএনপির সদস্য সচিব আলাল উদ্দিন আলাল বার্তা২৪.কমকে বলেন, সরকার এ আন্দোলনকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে বিএনপি নেতাকর্মীদের গণ-গ্রেফতার করছে। গ্রামে গ্রামে পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে যুবলীগ-ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা আমাদের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা করছে। অনেকে অসুস্থ ও জেলার বাইরে অবস্থান করেও গ্রেফতার হয়েছেন। আবার গ্রেফতারকৃত অনেকের নাম মামলার এজাহারে নেই। বিএনপির নেতাকর্মীদের ওপর বর্বরতা চালানো হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।

জেলা বিএনপির আহ্বায়ক শেখ ফরিদ বাহার বলেন, আওয়ামী লীগ ও পুলিশ প্রশাসন এক হয়ে বিএনপি নেতাদের গ্রেফতার করছে। যা অত্যন্ত ঘৃণ্যকাজ। অবিলম্বে সকল হামলা, মামলা, গুম, খুন ও নির্যাতন বন্ধ করতে হবে। গ্রেফতারকৃত সকল নেতাকর্মীদের নিঃশর্ত মুক্তি দেয়ার আহবান জানান তিনি।

জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি সাইদুর রহমান জুয়েল বলেন, সরকার শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে ভিন্ন দিকে নিতে এখন আমাদের ওপর পড়েছে। এসব হামলা-মামলা দিয়ে নেতাকর্মীদের মনোবলে চিড় ধরাতে পারবে না।

বিএনপির গণ-গ্রেফতারের অভিযোগ সম্পর্কে ফেনী সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শুসেন চন্দ্র শীল বলেন, বিএনপি নেতাকর্মীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে হামলা বা এই ধরনের কোনো কিছুরই কারণ নেই। যারা রাষ্ট্রীয় সম্পদের ক্ষতি করেছে তাদের বিরুদ্ধে পুলিশ ব্যবস্থা নেবে এটি স্বাভাবিক। তবে সেখানে আওয়ামী লীগ বা সহযোগী সংগঠনের কোন নেতাকর্মীর সংশ্লিষ্টতা নেই। ফেনীতে হিংসাত্মক রাজনীতি অতীতে হয়নি। আগামীতেও আওয়ামী লীগ হিংসাত্মক রাজনীতি করবে না।

এ বিষয়ে ফেনীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) থোয়াই অংপ্রু মারমা বার্তা২৪.কমকে বলেন, যাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে এবং ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে তাদেরকেই গ্রেফতার করা হচ্ছে। নিরপরাধ কাউকে পুলিশ গ্রেফতার বা হয়রানি করছে না।

তিনি বলেন, নাশকতার দুই মামলায় সোমবার পর্যন্ত ৯৭ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বিভিন্ন সিসিটিভি ফুটেজ এবং গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে তাদের গ্রেফতার করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।