আন্দোলন প্রতিহত করতে প্রশাসন গণহত্যা চালাচ্ছে: ফিরোজ রশীদ
জাতীয় পার্টির (রওশন) নির্বাহী চেয়ারম্যান কাজী ফিরোজ রশীদ বলেছেন, সন্ত্রাস দমনের নামে দেশজুড়ে ছড়িয়ে পড়া ছাত্রআন্দোলন প্রতিহত করতে প্রশাসন নারকীয় গণহত্যা চালাচ্ছে। ছাত্রদের সকল ন্যায্য দাবি মেনে নিয়ে অবিলম্বে জুলুম-নির্যাতন ও গণগ্রেফতার বন্ধ করুন।
একই সঙ্গে অযোগ্য বাকপটু মন্ত্রী, এমপিদের পদত্যাগ ও অতি উৎসাহী পুলিশ অফিসারদের বরখাস্ত করার দাবি জানিয়েছে তিনি।
শনিবার (৩আগস্ট) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) নসরুল হামিদ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত জরুরি সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব মন্তব্য করেন। এ সময় ১০ দফা লিখিত দাবি উত্থাপন করেন কাজী ফিরোজ রশীদ।
শিক্ষার্থীদের সকল ন্যায্য দাবির প্রতি পূর্ণ সমর্থন ব্যক্ত করে বলেন, আন্দোলন দমনের নামে দেশজুড়ে আটক সব ছাত্র, শিক্ষক ও সাধারণ মানুষকে অবিলম্বে মুক্তি দিতে হবে। চলমান আন্দোলনে এ পর্যন্ত যারা শহীদ হয়েছেন, তাদের তালিকা প্রকাশ করতে হবে। যারা নিহত হয়েছেন, তাদের পরিবারকে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ এবং আহতদের সুচিকিৎসার ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে গণহত্যার বিচার করতে হবে।
কাজী ফিরোজ রশীদ বলেন, শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবিগুলো শুরুতে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সমাধান না করে, শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকে অশান্ত করে তোলা হয়েছে। ছাত্রলীগ ও যুবলীগকে ব্যবহারের মাধ্যমে সহিংস পরিস্থিতি সৃষ্টি করে শত শত ছাত্র-জনতার প্রাণহানির জন্য আওয়ামী লীগ সাধারন সম্পাদক ওবায়দুল কাদের দায় দায়িত্ব এড়াতে পারেন না। তাই অবিলম্বে ওবায়দুল কাদেরকে দলীয় সাধারন সম্পাদকের পদ এবং মন্ত্রীসভা থেকে পদত্যাগ করতে হবে। ছাত্রদের রক্তে ভেজা রাস্তা দিয়ে ওবায়দুল কাদের পতাকা উড়িয়ে চলাচল করবে, দেশের জনগন তা মেনে নেবে না।
লিখিত দশ শর্ত তুলে ধরে বলেন, হারুন-উর-রশীদ ও বিপ্লব কুমার সরকারের মতো যে সসব অতি উৎসাহী পুলিশ অফিসার ছাত্রদের আন্দোলন দমনে নৃশংসতা চালিয়েছে, তাদের এখনই বরখাস্ত করতে হবে।
দেশের নির্বাহী বিভাগের এখতিয়ারভুক্ত কোটা প্রশ্নে হাইকোর্টের যেসব বিচারপতি বিতর্কিত রায় প্রদান করে ছাত্র আন্দোলনকে উষ্কে দিয়েছেন, তারাও কোনোভাবে দায় এড়াতে পারেন না। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সুপ্রীম জুডিশিয়াল কাউন্সিল গঠনের দাবিও করেন তিনি।
তিনি বলেন, যেসব আমলা, রাজনৈতিক নেতা এবং ব্যবসায়ীরা হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার করেছেন, তার শ্বেতপত্র প্রকাশ করে বিচার করতে হবে। চলমান আন্দোলন দমনের নামে সংগঠিত প্রত্যেকটি হত্যাকান্ডের সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে দায়ি ও দোষীদের বিচারের আওতায় আনতে হবে। এসব হত্যাকান্ডের ব্যাপারে এ পর্যন্ত যেসব মিথ্যা এজাহার দায়ের করা হয়েছে, তা প্রত্যাহার করে সত্য ঘটনা তুলে ধরতে হবে।
অবিলম্বে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দিয়ে দেশে শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনার আহ্বান জানান তিনি।
সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন পার্টির মহাসচিব কাজী মো. মামুনুর রশিদ, কো-চেয়ারম্যান সাহিদুর রহমান টেপা, শফিকুল ইসলাম সেন্টু, গোলাম সারোয়ার মিলন, সুনীল শুভ রায়, ডা. রুস্তম আলী ফরাজী, প্রেসিডিয়াম সদস্য রফিকুল হক হাফিজ, শফিকুল ইসলাম শফিক, জাহাঙ্গীর আলম পাঠান, খন্দকার মনিরুজ্জামান টিটু, ইয়াহ ইয়া চৌধুরী, শাহ জামাল রানা, পার্টির উপদেষ্টা হাফছা সুলতানা, ভাইস- চেয়ারম্যান মোস্তাকুর রহমান মোস্তাক, হাজী নাসির সরকার, সারফুদ্দিন আহমেদ শিপু, যুগ্ম-মহাসচিব ফখরুল আহসান শাহজাদা, শেখ মাসুক রহমান, এসএম আল জুবায়ের, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. রিফাতুল ইসলাম প্রমুখ।