চট্টগ্রামে ১৫ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বড় শোভাযাত্রা বিএনপির

  • স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: বার্তা ২৪

ছবি: বার্তা ২৪

কারও কপালে সংগঠনের নামাঙ্কিত কাপড়ের টুকরো। কারও হাতে দলীয় পতাকা। স্লোগানে-স্লোগানে একে একে আসছে মিছিলের স্রোত। এভাবে চট্টগ্রামের সব মোহনা যেন মিলিত হয়েছিল নগরীর জামিয়াতুল ফালাহ মসজিদ এলাকায়। জাতীয় বিপ্লব এবং সংহতি দিবস উপলক্ষে চট্টগ্রাম মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা বিএনপির উদ্যোগে আয়োজিত শোভাযাত্রা ও সমাবেশে এভাবেই নেমেছিল মানুষের ঢল। অনেকেই বলছেন, গত দেড় দশকের মধ্যে চট্টগ্রামে বিএনপির এটাই সবচেয়ে বড় জমায়েত।

শনিবার (৯ নভেম্বর) বিকেল ৩টায় আলমাস সিনেমা হলের সামনে এই সমাবেশ করে বিএনপি। সেখানে চট্টগ্রাম নগর ও ১৫ উপজেলা থেকে আসা হাজার হাজার নেতাকর্মী অংশ নেন। সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। সমাবেশ শেষে বিকেল ৪টায় বের করা হয় শোভাযাত্রা। শোভাযাত্রাটি কাজির দেউড়ি, লাভ লেন, আমতল হয়ে নিউমার্কেট মোড়ে গিয়ে শেষ হয়।

বিজ্ঞাপন

সমাবেশে বিএনপির নগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলার প্রায় সব শীর্ষ নেতা উপস্থিত ছিলেন। তবে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেনকে সমাবেশস্থলে দেখা যায়নি। তিনি পরে শোভাযাত্রায় যোগ দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন নেতাকর্মীরা।

সমাবেশে অংশ নেওয়া বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা বলছেন, ২০০৮ সালের পর থেকে গত ১৬ বছরে তারা এত বড় জমায়েত করতে পারেননি। এ জন্য তারা আওয়ামী লীগ সরকারের ওপর দায় চাপিয়েছেন। এখন আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর স্বাভাবিক কর্মসূচি পালন করতে পারায় আগের মতো সমাবেশে জমায়েতও বেড়েছে বলে জানান তারা।

বিজ্ঞাপন

কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া চট্টগ্রাম মহানগর যুবদলের সাবেক ক্রীড়া সম্পাদক জসিম উদ্দিন সাগর বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘আমরা আওয়ামী লীগের ফ্যাসিবাদী সরকারেরর কারণে গত ১৭ বছর বড় জমায়েত দূরের কথা, মুখ দিয়ে ভালোমতো কথাও বলতে পারিনি। ছাত্রজনতার গণঅভ্যুত্থানের পর দেশ নতুন করে স্বাধীন হওয়ায় আমরাও আগের মতো স্বাভাবিক রাজনৈতিক কর্মসূচি করতে পারছি। আর এসব কর্মসূচিতে দলীয় নেতা-কর্মীর পাশাপাশি জনতাও স্বতস্ফূর্তভাবে অংশ নিচ্ছেন। ঢাকার পর চট্টগ্রামেও তাই বিএনপির কর্মসূচিতে স্মরণকালের সবচেয়ে বড় জমায়েত হয়েছে।’

একই কথা বলেছেন দক্ষিণ জেলা বিএনপির আওতাধীন আনোয়ারা উপজেলা থেকে আসা বিএনপি কর্মী আবদুর রশিদও। তিনি বলেন, ‘অতীতে বিএনপির কর্মসূচিতে অংশ নিলেই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হয়রানির শিকার হতে হতো। অনেক সময় নানা মামলায়ও জড়ানো হতো। এখন আর সেই ভয় নেই।’

অন্যদিকে উত্তর জেলা বিএনপির আওতাধীন বিভিন্ন উপজেলা থেকেও বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী সমাবেশে অংশ নেন। মীরসরাই থেকে আসা যুবদল কর্মী শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘আগে কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া দূরের কথা, গ্রেফতার আতঙ্কে বাড়িঘরেও থাকা যেত না। এখন আমরা মুক্ত-স্বাধীন। সেজন্য কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া নিয়ে আর ভয় নেই। এখন তাই বিএনপির কর্মসূচি গুলোতে ব্যাপক জমায়েতও হচ্ছে। সামনে এই ধারা আরও বাড়বে।’