‘নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষণা করে অনিশ্চয়তা দূর করুন’
সংস্কার দ্রুত শেষ করে নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষণা করে অনিশ্চয়তা দূর করার আহ্বান জানিয়েছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম পীর সাহেব চরমোনাই।
তিনি বলেন, অনিশ্চয়তা ও শূন্যতা নানা ধরণের জটিলতা ও অপলাপের জন্ম দেয়। তা রোধ করার জন্য নির্বাচনের সুষ্ঠু ও অবাধ পরিস্থিতি তৈরিতে করণীয় নির্ধারণ, তার জন্য সময়সীমা ঠিক করে একটি সুনির্দিষ্ট গাইডলাইন ঘোষণা করা হলে সবার জন্য কাজ করা সহজ হবে।
শনিবার (১৬ নভেম্বর) দুপুরে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের একশত দিনের কার্যক্রম ও দেশের চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে এক সংবাদ সম্মেলনে পীর সাহেব চরমোনাই লিখিত বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম বলেন, দেশের সব ধারার মানুষের স্বতস্ফুর্ত গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে স্বৈরাচারের অবসানের পর গণমানুষের বিপুল আশা-আকাঙ্ক্ষা ও সমর্থন নিয়ে গঠিত অন্তর্বর্তী সরকারের একশত দিনের কার্যক্রম পূর্ণ হয়েছে। দীর্ঘকালীন প্রতিষ্ঠিত স্বৈরাচারী শাসনের উৎখাতের পরে গঠিত সরকারের সার্বিক মূল্যায়নের জন্য একশদিন যথেষ্ট নয় কিন্তু একশত দিন একটি মাইলফলক।
তিনি বলেন, রাজনৈতিক অভিজ্ঞতাহীন এই সরকারের জন্য আনুষ্ঠানিক কোন বিরোধীদল নেই। এই সরকার জনতার, জনতাই এই সরকারের শক্তি ও এই সরকারের দর্পন। স্বৈরাচারী ব্যবস্থার স্থায়ী বিলোপ নিশ্চিত করতে এই সরকারকে সফল হতেই হবে। আর সেজন্য দরকার তাদের কাজের নির্মোহ পর্যালোচনা। যা তাদের ভালো কাজে উৎসাহ দেবে, ত্রুটি-বিচ্যুতি সম্পর্কে সতর্ক করবে।
তিনি আরও বলেন, এই সরকারের শীর্ষ ব্যক্তিগণও বারংবার তাদের কর্মকাণ্ডের নির্মোহ পর্যালোচনা করার আহবান করেছেন। সেই আহবানে সাড়া দিতে এবং জনতার বোঝাপড়া মিডিয়ার মাধ্যমে তাদের সামনে উপস্থাপন করা প্রয়োজন মনে করছি। সংবাদ সম্মেলনের শুরুতেই জুলাই-২৪ অভ্যুত্থানে জীবন দেওয়া ও আহত হওয়া সকল বিপ্লবীদের প্রতি আন্তরিক শ্রদ্ধা ও দোয়া জ্ঞাপন করেন এবং অভ্যুত্থানে অংশ নেওয়া সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করে তিনি।
পীর সাহেব চরমোনাই বলেন, ১৫ বছরের সামগ্রিক স্বৈরাশাসন সৃষ্ট ধ্বংসস্তুুপের ওপরে দাঁড়িয়ে মানুষের বিপুল-বিশাল প্রত্যাশা পূরণ করা কঠিন, এটা সত্য। সেই দায়িত্ব এই সরকার নিয়েছে সেজন্য সাধুবাদ। সরকারের আন্তরিকতা নিয়ে আমরা প্রশ্ন তুলতে চাই না। তাদের যোগ্যতা ও দক্ষতা নিয়েও প্রশ্ন তুলতে চাই না। তথাপিও কিছু বিষয় আছে যা পর্যালোচনা করা আবশ্যক মনে করছি। আমরা এই সরকারকে আবারও মনে করিয়ে দিতে চাই যে, আপনাদের সফল হওয়া ছাড়া আর কোন বিকল্প আমাদের সামনে নাই। এই বোধ থেকেই এখানে কিছু বিষয় তুলে ধরা হচ্ছে, যাতে করে দেশবাসীর প্রত্যাশা পূরণে আপনারা শতভাগ সফল হতে পারেন।
দলের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, দলের মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য প্রিন্সিপাল মাওলানা সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানী, অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন, অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান, যুগ্ম মহাসচিব আলহাজ্ব আমিনুল ইসলাম, প্রকৌশলী আশরাফুল আলম, সহকারী মহাসচিব মাওলানা ইমতিয়াজ আলম, সাংগঠনিক সম্পাদক কে এম আতিকুর রহমান, প্রচার ও দাওয়াহ সম্পাদক মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ূম, মাওলানা লোকমান হোসাইন জাফরী, মাওলানা এবিএম জাকারিয়া, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কাশেম, মাওলানা খলিলুর রহমান, মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাকী, অ্যাডভোকেট বরকত উল্লাহ লতিফ, মাওলানা নুরুল করীম আকরাম।