২০ কোটি লোকের রক্ত ফোয়ারা দিয়ে দেশ দখল করতে হবে: মির্জা আব্বাস
দেশ দখলের চিন্তা বাদ দিয়ে ভারতকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেছেন, ভারত কে যদি বাংলাদেশ দখল করতে হয় তাহলে ২০ কোটি লোকের (সোলজার) রক্ত ফোয়ারা দিয়ে দেশ দখল করতে হবে।
রোববার (১ ডিসেম্বর) সকালে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে স্বাধীনতা ফোরাম আয়োজিত 'বর্তমান প্রক্ষাপটে স্বাধীনতা, গণতন্ত্র ও ভোটের অধিকার' শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এই মন্তব্য করেন।
বিএনপিএ স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, সবাই বলে বাংলাদেশ ছোট গরীব দেশ কিন্তু আমি মনে করি বাংলাদেশ উদার ও অনেক শক্তিশালী দেশ। একটা কথা মনে রাখতে আমাদের সোলজার (সৈনিক) কম। আমি তাদের ভাবতে বলবো আমরা একাত্তর সালে ট্রেনিং ছাড়া যুদ্ধ করেছি। '২৪ সালে হাসিনা পতনেও আমরা আমাদের ছেলে-মেয়েরা বিনা অস্ত্রে যুদ্ধ করেছি। বাংলাদেশে ২০ কোটি লোক কিন্তু সোলজার। যদি আজকে বাংলাদেশ দখল করতে হয় তাহলে ২০ কোটি লোকের রক্ত ফোয়ারা দিয়ে দেশ দখল করতে হবে।
আওয়ামী লীগ ১৫ বছরে দেশের সকল ইতিহাস নষ্ট করেছে উল্লেখ করে মির্জা আব্বাস বলেন, আওয়ামী লীগ গত ১৫ বছরে সঠিক ইতিহাস নষ্ট করে ফেলেছে। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষক। দেশের সেক্টর কমান্ডারের অফিস ছিল ভারতে। একমাত্র জিয়াউর রহমানের অফিস ছিল সিলেটে। আওয়ামী লীগ স্বাধীনতার ইতিহাস বইয়ে পড়েছে। তারা সরাসরি যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেনি। আমরা সম্মুখ সারির যুদ্ধে সরাসরি অংশগ্রহণ করেছি।
আওয়ামী সরকারের আমলে নির্যাতনের চিত্র তুলে ধরে তিনি বলেন, এখনো আমাদের কোর্টে যেতে হয়। কোর্টের বারান্দায় ঘুরতে হয়। ইনশাআল্লাহ সঠিক সময়ে আমরা ন্যায় বিচার পাব। আমার এমন কোন বছর নাই যে বছর জেলে যাই নাই। মানুষ বলতো ভাই আপনার ঠিকানা কোথায় আমি বলতাম কোর্ট বা জেল। সেখানে আমাকে গেলে পাবেন।
মির্জা আব্বাস বলেন, এই সরকার বিব্রত করার জন্য একটি চক্রান্ত করছে। কিন্তু আমরাসহ কয়েকটি রাজনৈতিক দল এই সরকারকে স্বার্থক করার জন্য কাজ করে যাচ্ছি। আমরা ড. ইউনূস স্যারকে সঠিক পথে নেওয়ার জন্য কাজ করে যাচ্ছি।
তিনি আরও বলেন, কিন্তু একটি মহল বিএনপিকে আওয়ামী লীগের সাথে মিলাচ্ছে। দেশের কিছু ইউটিউবার আছে যাদের কোন কাজ নাই তারা এইসব কাজ করছে। আমরা প্রমাণ করেছি গণতান্ত্রিক দল। কারণ আমরা সুষ্ঠুভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর করেছি। আওয়ামী লীগ যদি সুষ্ঠুভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর করতো তাহলে আজকে দেশের এই অবস্থা হতোনা।
আলোচনা সভায় দলটির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু বলেন, শেখ হসিনা সরকার ক্ষমতায় থেকে ইতিহাস বিকৃত করছে যা ছাত্র জনতার ঐতিহাসিক আন্দোলনেত মাধ্যমে নতুন ইতিহাস সৃষ্টি হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, শেখ মুজিব যুদ্ধে পর একদলীয় শাসন কায়েম করার জন্য ৪০ হাজার দেশ প্রেমিক মানুষকে হত্যা করেছে। বাকশালকে আরও শক্তিশালী করার জন্য শান্তিরক্ষী বাহিনী সৃষ্টি করেছে। ১৫ আগষ্ট যদি ঘটনা না ঘটতো তাহলে বাংলাদেশে আর স্বাধীনতা থাকতো না। যুগে যুগে এইদেশের স্বাধীনতার উন্নয়নে জিয়াউর রহমান অবদান অনেক।
আলোচনা সভা যোগ দিয়ে গণ অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান বলেন, শেখ হাসিনার অন্যায়ের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক দলগুলো প্রথম লড়াই করেছিল। সেই লড়াইয়ে পরে যুক্ত হয়েছে ছাত্র জনতা।
আর্মি স্টোডিয়ামে কনসার্টের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, '২৪ এর গণ অভ্যুত্থানে গণতন্ত্র রক্ষার আন্দোলনে বহু ছাত্র জনতা মৃত্যুবরণ করেছে। এমন বিপ্লবে যেখানে হাসপাতালে ছাত্র জনতা আহত অবস্তায় কান্না করছে সেখানে আর্মি স্টোডিয়ামে শিল্পী নিয়ে আনন্দ উল্লাস করছে এটা কিসের ইঙ্গিত। জাতিকে বিপ্লব থেকে দূরে থাকতে এই ধরনের আয়োজন করা হয়েছে। এই গণ হত্যার সাথে জড়িত আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টিকে আগামী নির্বাচন থেকে দূরে রাখতে হবে।
আলোচনা সভায় স্বাধীনতা ফোরামের সভাপতি আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ সভাপত্বিতে বিশেষ অতিথি ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, যুগ্ম মহাসচিব আবুল সালাম আজাদ, গণ অধিকার পরিষের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খানসহ প্রমুখ।