‘স্বেচ্ছাসেবক লীগ তার আদর্শিক জায়গাতেই আছে’

  • শাহজাহান মোল্লা, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, আফম বাহাউদ্দিন নাছিম

ছবি: বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, আফম বাহাউদ্দিন নাছিম

স্বেচ্ছাসেবক লীগ যে নীতি আদর্শ নিয়ে সৃষ্টি হয়েছিল এখনো সেই জায়গাতেই অবিচল আছে, কোনো পরিবর্তন হয় নাই। হয়তো বা ব্যক্তিগতভাবে কোনো নেতা অথবা কর্মী আদর্শচ্যুত হতে পারেন, নীতি আদর্শ শৃঙ্খলার পথ থেকে ভুল পথে চলে যেতে পারেন। সেটা তাদের ব্যক্তিগত ব্যাপার, তার সাথে দলের আদর্শচ্যুত হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নাই। সংগঠনের নীতি আদর্শের ব্যত্যয় ঘটেছে বলে আমি মনে করি না।

১৬ নভেম্বর আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন স্বেচ্ছাসেবক লীগের তৃতীয় জাতীয় সম্মেলন। সেই সম্মেলনকে ঘিরে চলছে প্রস্তুতি। কেমন নেতা আসবে আগামী নেতৃত্বে? স্বেচ্ছাসেবক লীগ কী তার আদর্শিক জায়গাতে আছে। মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) ধানমন্ডির বাসভবনে বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম-এর এমন নানা প্রশ্নের খোলামেলা উত্তর দিয়েছেন স্বেচ্ছাসেবক লীগের প্রথম সভাপতি ও আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আফম বাহাউদ্দিন নাছিম। স্বেচ্ছাসেবক লীগের আসন্ন কাউন্সিল সমন্বয়ের দায়িত্ব পেয়েছেন এই নেতা।

বিজ্ঞাপন

বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম: কাউন্সিলের আগে স্বেচ্ছাসেবক লীগের শীর্ষ নেতৃত্বকে সরিয়ে দেওয়া নেতাকর্মীদের মধ্যে নেতিবাচক বার্তা যায় কী না?
নাছিম: তা তো অবশ্যই। নেতাকর্মীদের কাছে একটা বার্তা যায়। বার্তাটা হলো নীতি আদর্শের ক্ষেত্রে অবিচল থাকতে, দৃঢ় থাকতে হবে। দলীয় প্রধান শেখ হাসিনা দলের ভেতরে ও সর্বস্তরে কিন্তু শুদ্ধি অভিযান শুরু করেছে। হ্যাঁ এটা সত্য ওনার নিজের ঘর থেকে অভিযান শুরু করেছেন। সরকারি-বেসরকারি, রাজনৈতিক, অরাজনৈতিক এমনকি বিভিন্ন শ্রেণি-পেশা থেকে আরম্ভ করে জাতীয় পর্যায় এবং তৃণমূল পর্যায় চলবে এই শুদ্ধি অভিযান।


আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আফম বাহাউদ্দিন নাছিমের সাক্ষাৎকার নিচ্ছেন সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট শাহজাহান মোল্লা
আমাদের দলের বা সংগঠনের যারা বির্তকিত হয়েছেন অথবা যারা বির্তকিত কর্মকাণ্ডের সাথে সম্পৃক্ত হয়েছেন তাদেরকে রাজনীতি থেকে দূরে সরিয়ে রাখার চিন্তা নিয়েই কাজ শুরু হয়েছে। এটা দলের প্রতি মানুষের শ্রদ্ধা, বিশ্বাস, ভালোবাসা আস্থার জায়গাটা তৈরি করে। মানুষের যে আস্থা বিশ্বাস ভালোবাসা আওয়ামী লীগের প্রতি আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনের প্রতি আছে সেই জায়গাটা যাতে নষ্ট না হয়, সেই জায়গাটা রক্ষা করার জন্যই এই অভিযান।

বিজ্ঞাপন

বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম: সম্মেলনের প্রস্তুতি কেমন চলছে?

নাছিম: সন্মেলনকে ঘিরে নেতাকর্মীদের মাঝে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনার সৃষ্টি হয়েছে। আসলে একটা সম্মেলন যখন হয়, তখন নেতাকর্মীরা জাগরিত হয়, উজ্জীবিত হয় এবং তারা সকলে একটা জায়গায় সমবেত হয়। এতে মিলন মেলার সৃষ্টি হয়। সম্মেলনের মাধ্যমে একে অপরকে জানার, চেনার সুযোগ সৃষ্টি হয়।

তাছাড়া সংগঠনের নীতি আদর্শের ক্ষেত্রে কোনো সংশোধনের প্রয়োজন পড়লে সংগঠনের ঘোষণাপত্রে বা গঠণতন্ত্রের পরিবর্তন আনার জন্য নেতাকর্মীরা এই কাউন্সিলে অংশ গ্রহণ করে। তবে কাউন্সিলে সংগঠনের নেতা নির্বাচন করাটাই মূল বিষয় হিসেবে দেখি।

বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা ১৯৮১ সালে দেশে ফেরার পর স্বেচ্ছাসেবক লীগ দ্বিতীয় পর্যায়ে নবতর উদ্যমে যাত্রা করে। শেখ হাসিনার নির্দেশে ও পরামর্শে স্বেচ্ছাসেবক লীগ নতুন পথচলা শুরু করে। এবার হতে যাচ্ছে তৃতীয় জাতীয় সম্মেলন। জননেত্রী শেখ হাসিনাই সংগঠনের নেতৃত্ব দিচ্ছেন, ওনার নেতৃত্বে উনি যখন যেটা বলেন যেভাবে চিন্তা করেন সেই আলোকেই স্বেচ্ছাসেবক লীগ পরিচালিত হচ্ছে।

বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম: অনেকে মজা করে করে বলেন স্বেচ্ছাসেবক লীগ ‘স্বেচ্ছাসেবা’ ছাড়া সবই করে।এ বিষয়ে আপনার মন্তব্য কী?

নাছিম: সেবা, শান্তি প্রগতির মূলমন্ত্র নিয়ে স্বেচ্ছাসেবক লীগ গঠিত। সেই মন্ত্রেই দিক্ষিত হয়ে  স্বেচ্ছাসেবক লীগ পরিচালিত হয়। এই সংগঠন এখনো যেকোন দুর্যোগে দুর্বিপাকে বা যে কোনো দুর্যোগকালীন সময়ে দেশের মানুষের পাশে দাঁড়ায়। এটা আমরা দেখেছি, সকল সময়েই আছে এটা করছে এবং এটা করে যাবে। আওয়ামী লীগের একটি সহযোগী সংগঠন সাধারণ মানুষের কল্যাণে কাজ করে বিপদের দিনে পাশে দাঁড়াবে এটাই আওয়ামী লীগ বিশ্বাস করে এবং স্বেচ্ছাসেবক লীগের প্রতিটি নেতাকর্মী বিশ্বাস করে এবং সেই বিশ্বাস নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে। যারা বলে ‘স্বেচ্ছাসেবায় নাই’ এটা হলো অপপ্রচার। এই অপপ্রচারকারীরা অপপ্রচার চালাবে। অপপ্রচারকারীরা বসে থাকবে না। সেক্ষেত্রে দলের নেতাকর্মীরা তাদের কর্মের ভেতর দিয়ে তাদের নীতির ভেতর দিয়ে সংগঠনের আর্দশ অনুযায়ী কাজ করে এই সংগঠনের ভাবমূর্তি আরো উজ্জল করবে।

বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম: আগামী নেতৃত্বে কারা আসবে? কেমন নেতৃত্ব চাচ্ছেন?

নাছিম: যারা বির্তর্কিত, যারা সমালোচিত,যারা দলের শৃঙ্খলার বাইরে গিয়েছেন, বিশেষ করে যারা অনু্প্রবেশকারী, যারা নতুন, যারা কোনদিন এই সংগঠন করে নাই- এদেরকে যেমন প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না, নেতৃত্বে আসার সুযোগ দেওয়া হবে না। তেমনি অপেক্ষাকৃত বয়সে তরুণ, দলের প্রতি যারা শ্রদ্ধাশীল, দীর্ঘদিন যারা দলীয় কর্মকাণ্ডের সাথে, সংগঠনের সাথে, আদর্শের সাথে কাজ করেছে, দুর্যোগে দুর্বিপাকে পরীক্ষিত নেতারাই নেতৃত্বে আসবে। সুসময়ে এবং দু:সময়ে যারা কাজ করেছে তাদেরকে নিয়েই আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠিত হবে।

বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম: সময় দেওয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।

নাছিম: আপনাকেও ধন্যবাদ