অনূর্ধ্ব-১৯ দলের ক্রিকেটার সজীবের আত্মহত্যা
২২ গজের ক্রিকেট ম্যাচ জেতার কথা ছিল তার। অথচ সেই তরুণ হেরে গেলেন জীবনের ম্যাচে।
হেরে গেলেন বলাটা ঠিক হচ্ছে না। নিজেই হারলেন। পুলিশ জানিয়েছে, আত্মহত্যা করেছেন তরুণ ক্রিকেটার সজিবুল ইসলাম সজীব। রাজশাহীর দূর্গাপুরে বাসার দরজা ভেঙ্গে পুলিশ তার লাশ উদ্ধার করেছে। দূর্গাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ হাসমত আলী বার্তা২৪কে জানান, শনিবার রাত দশটায় সজিবুল নিজ রুমের দরজা বন্ধ করে দেন। পরদিন সকালে অনেক ডাকাডাকির পরও যখন ভেতর থেকে সাড়া পাওয়া যাচ্ছে না, তখন পুলিশে খবর দেওয়া হয়। দরজা ভেঙ্গে ভেতরে ঢোকার পর তাকে ঘরের আড়ার সঙ্গে গলায় দড়ি বাঁধা অবস্থায় পাওয়া যায়। মারা গেছেন তিনি অনেক আগেই।
ঠিক কেন এবং কি কারণে আত্মহত্যা করেছেন তরুণ এই ক্রিকেটার, সেই বিষয়ে বেশ কয়েকটি ভাষ্য পাওয়া যায়। তবে কোনোটিই এখন পর্যন্ত যথেষ্ট প্রমাণ সাপেক্ষ নয়।
দূর্গাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ হাসমত আলী জানান, ‘তার পরিবারের লোকজন বলাবলি করছে বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি লিগে খেলার স্বপ্ন দেখছিল সজীব। সবাইকে সে বলতো এই লিগে তাকে দেখা যাবে। কিন্তু সজীব সেই লিগে সুযোগই পায়নি। তাই মানসিকভাবে সে বিষণ্ন ছিল। কয়েকদিন ধরে তাকে মনমরা অবস্থায় দেখতে পাওয়া যায়। মানসিক সেই বিপর্যস্ত অবস্থা হয়তো কাটিয়ে উঠতে না পারায় হতাশায় আত্মহত্যার পথ বেছে নিতে পারে সে।’
তবে বিসিবি সূত্রে জানা গেছে এই লিগে সজীবের নাম খেলোয়াড় ড্রাফটেই ছিল না। তাই তার দল পাওয়ার প্রশ্নই আসে না।
সজীব ২০১৮ সালের অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপের স্ট্যান্ডবাই খেলোয়াড় ছিলেন। ২০১৭ সালে শ্রীলঙ্কায় অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপে খেলেছিলেন তিনি। উদীয়মান ক্রিকেটার হিসেবে তাকে বিবেচনা করা হচ্ছিল। কিন্তু উদিত হওয়ার আগেই যে নিজেই নিজেকে নিভিয়ে দিলেন সজীব!
রাজশাহীর ‘বাংলা ট্র্যাক’ ক্রিকেট একাডেমি থেকে ক্রিকেট প্রশিক্ষণ নিয়ে ক্রিকেট ক্যারিয়ার গড়ার স্বপ্ন দেখছিলেন এই তরুণ। কিন্তু জীবনের ইনিংস ভালোমতো শুরুর আগেই যে নিঃশেষ হয়ে গেলেন তিনি।
দূর্গাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাসমত এই প্রসঙ্গে আরও জানান, ‘শনিবার রাতে সজীব খাবার দাবার না খেয়েই নিজের রুমের দরজা বন্ধ করে দেয়। পরদিন সকালে জানালা দিয়ে তাকে ঘরে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পেয়ে তার বাবা পুলিশে খবর দেন। পুলিশ এসে দেখে ঘরের দরজা বন্ধ। শাবল দিয়ে ঘরের দরজা ভেঙ্গে পুলিশ ভেতরে প্রবেশ করে। দেখতে পায় ঘরের আঁড়ার সঙ্গে সজীবের দেহ ঝুলছে। পারিপার্শ্বিক সবদিক বিবেচনা করে আমরা নিশ্চিত যে এটা পুরোপুরি আত্মহত্যার ঘটনা।’
সজিবুল ইসলাম সজীবের আত্মহত্যার বিষয়ে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) এর পক্ষ থেকে এখনো কোনো ভাষ্য পাওয়া যায়নি।