১৮ বছর পর বাংলাদেশের মালদ্বীপ জয়
ম্যাচ জয়ের উল্লাস, উচ্ছ্বাস, উন্মাদনা আর উত্তেজনাটাই আলাদা। পুরো ব্যাপারটাই অন্যরকম। বাঁধভাঙা আনন্দের যেন সীমা-পরিসীমা থাকে না। হোক না সেটা গ্রুপ পর্বের সাধারণ একটা ম্যাচ। জয় তো জয়ই। সেই ম্যাচ জয়ের উৎসবই যেন ছুঁয়ে গেল বাংলাদেশের ফুটবলকে।
জয়ের দেখা পেয়েছে বাংলাদেশ। জামাল ভূঁইয়ারা ২-১ গোলে হারিয়েছে মালদ্বীপকে। ২০০৩ সালের পর এই প্রথম মালদ্বীপকে ধরাশায়ী করেছে লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। সে হিসেবে প্রায় ১৮ বছর পর মালদ্বীপ জয় করল দেশের ফুটবলাররা।
শ্রীলঙ্কার চারজাতি ফুটবল টুর্নামেন্টে কোচ মারিও লেমোসের শিষ্যদের নতুন মিশন শুরু হয়েছিল অঘটন দিয়ে। দুর্বল সিশেলসের কাছে ১-১ গোলে ড্রয়ের লজ্জা নিয়ে মাঠ ছেড়েছিল দেশের ফুটবলাররা। অথচ শুরুতে এগিয়ে গিয়েছিল বাংলাদেশই। কিন্তু শেষ দিকে গোল হজম করে জয় হাতছাড়া করে জামাল ভূঁইয়ারা। অবশেষে জয়ের দেখা পেল বাংলাদেশ। তবে সেটা প্রাইম মিনিস্টার মাহিন্দা রাজাপাকসে ফুটবল টুর্নামেন্টে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে এসে। এ জয়ের সুবাদে ফাইনালে খেলার আশাটাও জিইয়ে রাখল তপু বর্মণরা।
কলম্বোর রেসকোর্স গ্রাউন্ডে ম্যাচের ১০তম মিনিটে লিড পায় বাংলাদেশ। ডিফেন্ডার রহমত মিয়া লম্বা থ্রো করেন। মালদ্বীপের বক্সের মধ্যে ফুটবলারদের জটলা বেঁধে যায়। উড়ে আসা বল দখলের লড়াইয়ে নেমে লাফ দিয়েও সফল হননি দুদলের ফুটবলাররা। বল ফুটবলারদের মাথা না ছুঁয়ে মাঠে ড্রপ খেয়ে লাফিয়ে উঠে চলে যায় ক্যাপ্টেন জামাল ভূইয়ার কাছে যায়। নির্ভুল নিশানায় জামাল প্রতিপক্ষ মালদ্বীপের জাল কাঁপাতে বিন্দু মাত্র ভুল করেননি।
তবে গোল পেতে বেশ বেগ পেতে হয়েছে। যুক্তি-তর্কে রীতিমতো গোল ছিনিয়ে নিতে হয়েছে বাংলাদেশকে। কথার লড়াইয়ে অবশ্য সফল হয়েছেন জামাল ভূঁইয়ারা। বল গোললাইন অতিক্রম করার আগেই সহকারী রেফারি অফ সাইডের পতাকা তুলে দেন। মাঠের রেফারিকে ঘিরে ধরে দেশের ফুটবলাররা জেরা শুরু করেন। কিছুক্ষণ সময় নিয়ে সিদ্ধান্ত পাল্টে ফেলেন রেফারি। সহকারী ও চতুর্থ রেফারির সঙ্গে পরামর্শ করে বাজান গোলের বাঁশি।
প্রথমার্ধের ৩২তম মিনিটে ম্যাচে সমতায় ফেরে মালদ্বীপ। আলী আশফাকের কর্নার কিক থেকে উড়ে আসা বল ক্লিয়ার করতে চেয়েও পারেনি বাংলাদেশ। আনমার্কড ছিলেন আইসাম ইব্রাহিম। সুযোগ পেয়ে মালদ্বীপকে সমতাসূচক গোল এনে দেন এ মিডফিল্ডার।
ম্যাচ শেষের তিন মিনিট আগে পেনাল্টি পায় বাংলাদেশ। জুয়েল রানাকে বক্সের মধ্যে ফেলে দেন মালদ্বীপের গোলরক্ষক। রেফারি পেনাল্টির বাঁশি বাজিয়ে কার্ড দেখান মালদ্বীপের গোলরক্ষককে। পেনাল্টির সুযোগ কাজে লাগিয়ে জয়সূচক গোল উপহার দিয়ে লাল-সবুজের জার্সিধারীদের উচ্ছ্বাসের বন্যায় ভাসিয়ে দেন ডিফেন্ডার তপু বর্মণ। বাংলাদেশের ম্যাচ জয়ের এ নায়ক পান ম্যাচসেরার পুরস্কারও।