নেপালকে উড়িয়ে সাফ শুরু বাংলাদেশের



স্পোর্টস ডেস্ক, বার্তা২৪
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

সাফ অনূর্ধ্ব-২০ নারী চ্যাম্পিয়নশিপে নেপালকে উড়িয়ে জয় দিয়ে সাফ শুরু বাংলাদেশের।

শুক্রবার (৩ ফেব্রুয়ারি) কমলাপুরের বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহী মোস্তফা কামাল স্টেডিয়ামে নেপালকে ৩-১ গোলে হারিয়েছেন গোলাম রব্বানী ছোটনের শিষ্যরা।র রিপারা।

খেলা শুরুর দ্বিতীয় মিনিটেই বাংলাদেশকে লিড এনে দেন আকলিমা খাতুন। ঘরোয়া লিগে সর্বোচ্চ গোলদাতা আকলিমা সাফে বাংলাদেশের গোল সূচনা করেন। বারো মিনিট পর শামসুন্নাহার ব্যবধান দ্বিগুণ করেন। বক্সের মধ্যে দারুণভাবে বলের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে গোল করেন।

২৪ মিনিটে খেলায় ফেরে নেপাল। সফরকারীদের আক্রমণ ক্লিয়ার করতে গিয়ে কর্ণার হয়। সেই কর্ণার থেকে গোল পায় নেপাল৷ মনমায়া দামাইয়ের নেয়া শট পোস্টের ভেতরের অংশ লেগে গোল হয়।

এক গোল পরিশোধ করে নেপাল বাংলাদেশকে চেপে ধরে। ম্যাচের ৪০ মিনিটে বাংলাদেশের গোলরক্ষক রুপনা চাকমা বক্সের সামনে এসে একটি সেভ করেন।

রাউন্ড রবিন লিগে রোববার নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে ভারতের মুখোমুখি বাংলাদেশ।

আইরিশদের কাছে হেরে স্বপ্নভঙ্গ টাইগারদের



স্পোর্টস ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে টানা দুই ম্যাচ জিতে সিরিজটা আগেই নিজেদের করে নিয়েছিল বাংলাদেশ। এরপর তিন ম্যাচের সিরিজে আইরিশদের হোয়াইটওয়াশের স্বপ্নও দেখতে শুরু করেছিলেন টাইগার সমর্থকরা। কিন্তু সেটি আর হলো না। তৃতীয় ও শেষ টি-টোয়েন্টি ম্যাচে ৩৬ বল হাতে রেখেই ৭ উইকেটের সহজ জয় তুলে নিয়েছে সফরকারীরা।

কার্যত বাংলাদেশের ইনিংসের পরেই ম্যাচের ভাগ্য নির্ধারণ করে ফেলেন অনেকেই। ১২৪ রানের মামুলি সংগ্রহের পর বাংলাদেশ যে ম্যাচ জিততে পারে, সেটি বিশ্বাস করেছেন ঠিক কজন? আইরিশ অধিনায়ক পল স্টার্লিংয়ের দুর্দান্ত ব্যাটিং-এ বাংলাদেশ দলের সমর্থকরাও অপেক্ষা করছিলেন, কত দ্রুত শেষ হবে এই ম্যাচ!

ওয়ানডে সিরিজের পর প্রথম দুই টি-টোয়েন্টি ম্যাচেও সফরকারী আয়ারল্যান্ড খুব একটা সুবিধা করতে পারেনি। তবে তৃতীয় ম্যাচে এসে নিজেদের তুলে ধরল ঠিকভাবেই। ফলে বিদেশের মাটিতে বাংলাদেশের বিপক্ষে হোয়াইটওয়াশ রুখতে সক্ষম হয়েছে দেশটি।

আজ (৩১ মার্চ) চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে প্রথমে ব্যাট করে মিডল অর্ডার ব্যাটার শামীম হোসেন পাটওয়ারীর ক্যারিয়ার সেরা ৫১ রানে ভর করে ১৯.২ ওভারে মাত্র ১২৪ রানেই অলআউট হয়ে যায় স্বাগতিক বাংলাদেশ। জবাবে রান তাড়া করতে নেমে আইরিশ অধিনায়ক স্টার্লিংয়ের ৭৭ রানে ১৪ ওভারে ৩ উইকেট হারিয়ে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় সফরকারীরা।

এর আগে ম্যাচের শুরুতে টস জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন টাইগার অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। তবে ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে মার্ক এডেইয়ারের প্রথম বলে অফ স্টাম্পের বেশ বাইরের বলে স্ল্যাশ করতে গিয়ে থার্ডম্যানে ক্যাচ তুলে দেন লিটন। ৫ রান করেই আউট হয়েছেন লিটন। ফলে ৯১ ও ১২৪ রানের পর এবার ওপেনিং জুটি মাত্র ৯ রানেই ভেঙে যায়।

এরপর তৃতীয় ওভারের শেষ বলে পার্ট টাইম স্পিনার হ্যারি টেক্টরের বলে কার্টিশ ক্যাম্পারের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরেন নাজমুল হোসেন শান্ত। বিদায়ের আগে ৮ বলে ৪ রান করেন তিনি। এরপর দ্রুতই বিদায় নেন আরেক ওপেনার রনি তালুকদারও। দলের রান ২৪ থাকতেই ব্যক্তিগত ১৪ রান করে প্যাভিলিয়নে ফিরেছেন তিনি।

এদিন ব্যর্থতার মিছিলে যোগ দেন সাকিব নিজেও। পাওয়ার প্লের শেষ ওভারে পুল করতে গিয়ে ব্যক্তিগত ৬ রানে হোয়াইটের হাতে সহজ ক্যাচ দিয়ে ফিরেছেন টাইগার অধিনায়ক। দলীয় ৪১ রানের মাথায় নিজের উইকেট বিলিয়ে দেন তাওহিদ হৃদয়। হোয়াইটের বলে হ্যারি টেক্টরের হাতে ক্যাচ দিয়ে সমান এক চার-ছক্কায় ১২ রান করেন তরুণ এই ব্যাটার।

এরপর দলীয় ৬১ রানের মাথায় জোড়া উইকেট হারায় বাংলাদেশ। অভিষিক্ত রিশাদ হোসেন ৮ রান করে বিদায় নেওয়ার পর শূন্য হাতেই ফেরেন তাসকিন। তবে অষ্টম উইকেট জুটিতে নাসুমকে নিয়ে ৩৩ রানের জুটি গড়েন শামীম। নাসুম ১৩ রান করে বিদায় নিলেও অন্যপ্রান্তে দেখেশুনে ব্যাট চালিয়ে নিজের ক্যারিয়ারের প্রথম ফিফটির দেখা পেয়ে যান শামীম।

তবে ফিফটির পর পরই ইনিংসের শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে বিদায়ের আগে ৪২ বলে ৫১ রান করেন বাঁহাতি এই ব্যাটার। ফলে নির্ধারিত সময়ের আগেই ১৯.২ ওভারে মাত্র ১২৪ রানে থেমে যায় টাইগারদের ইনিংস। তিনি ছাড়া আর কোনো ব্যাটার বিশের অঙ্কও ছুঁয়ে দেখতে পারেননি।

বোলিংয়ে আইরিশদের হয়ে সর্বোচ্চ ৩ উইকেট শিকার করেছেন মার্ক এডেইয়ার। ম্যাথু হামফ্রিস পান ২ উইকেট। এ ছাড়া হ্যারি টেক্টর, কার্টিস ক্যাম্পার, বেন হোয়াইট, গ্যারেথ ডেলানি ও ফিওন হ্যান্ড প্রত্যেকে ১টি করে উইকেট পান।

বাংলাদেশের দেওয়া ১২৫ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে দলীয় ১৭ রানেই ভাঙে আইরিশদের ওপেনিং জুটি। ইনিংসের তৃতীয় ওভারের চতুর্থ বলে ওপেনার রস অ্যাডায়ারকে সাজঘরে ফেরান তাসকিন। বিদায়ের আগে মাত্র ৭ রান করেন এই ওপেনার। তবে অপর প্রান্তে আগ্রাসী ব্যাটিং করতে থাকেন স্টার্লিং।

;

টস জিতে ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশ, রিশাদের অভিষেক



স্পোর্টস ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

চট্টগ্রামে তিন ম্যাচ সিরিজের তৃতীয় ও শেষ টি-টোয়েন্টি ম্যাচের শুরুতে টস জিতে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন টাইগার দলনেতা সাকিব আল হাসান। ফলে কিছুক্ষণের মধ্যেই ব্যাট করতে নামবে টাইগাররা।

বাংলাদেশ দলে আজ দুটি পরিবর্তন এসেছে। অভিষেক হতে যাচ্ছে লেগ-স্পিনার রিশাদ হোসেনের। নাসুম আহমেদের পরিবর্তে খেলবেন তিনি। আর মোস্তাফিজুরের জায়গায় এসেছেন শরিফুল ইসলাম। আয়ারল্যান্ড দলেও দুটি পরিবর্তন এসেছে।

ওয়ানডে সিরিজে আয়ারল্যান্ডকে ২-০ ব্যবধানে হারিয়েছে হাথুরুসিংহের শিষ্যরা। জয়ের ধারা অব্যাহত রাখে টি-টোয়েন্টি সিরিজেও। সিরিজের প্রথম ম্যাচে বৃষ্টি আইনে জেতে ২২ রানে। আর দ্বিতীয় ম্যাচে জিতে নেয় ৭৭ রানের বিশাল ব্যবধানে। তাতেই আগে-ভাগে সিরিজ নিশ্চিত হয় টাইগারদের। পারফরমেন্সের ধারা অব্যাহত থাকলে টানা দুই সিরিজে প্রতিপক্ষকে হোয়াইটওয়াশ করার নজির গড়বে বাংলাদেশ।

বাংলাদেশ একাদশ:

সাকিব আল হাসান (অধিনায়ক), লিটন দাস, রনি তালুকদার, নাজমুল হোসেন শান্ত, তাওহিদ হৃদয়, শরিফুল ইসলাম, হাসান মাহমুদ, তাসকিন আহমেদ, শরিফুল ইসলাম, রিশাদ হোসেন ও জাকের আলী অনিক।

আয়ারল্যান্ড একাদশ:

পল স্টার্লিং (অধিনায়ক), মার্ক অ্যাদায়ের, রস অ্যাদায়ের, কুর্তিস ক্যাম্ফের, গ্যারেথ ডেলানি, জর্জ ডকরেল, ফিওন হ্যান্ড, হ্যারি টেক্টর, লরকান টাকার, বেন হোয়াইট ও ম্যাথু হ্যাম্প্রেস।

;

হোয়াইটওয়াশের মিশনে দুপুরে মাঠে নামছে টাইগাররা



স্পোর্টস ডেস্ক, বার্তা২৪
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

শক্তিশালী ইংল্যান্ডের পর এবার টি-টোয়েন্টিতে আয়ারল্যান্ডকে হোয়াইটওয়াশ করার লক্ষ্যে আজ শুক্রবার জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে সিরিজের তৃতীয় টি-টোয়েন্টিতে নিজেদের সেরাটা উজার করে দিতে বদ্ধপরিকর বাংলাদেশ।

দুপুর ২টায় শুরু হওয়া ম্যাচটি টি স্পোর্টস চ্যানেলে সরাসরি সম্প্রচার করা হবে।

ইতিমধ্যে টি-টোয়েন্টি সিরিজ নিজেদের করে নিয়েছে বাংলাদেশ। বৃষ্টি আইনে প্রথম ম্যাচ ২২ রানে এবং দ্বিতীয়টি ৭৭ রানে জিতে নেয় টাইগাররা। দু’টি ম্যাচই বৃষ্টির কবলে পড়েছিলো। বৃষ্টির বাঁধাকে উপেক্ষা না থাকলে প্রথম দুই ম্যাচেই অসাধারণ পারফরমেন্স করে বাংলাাদেশ।

পারফরমেন্সের ধারা অব্যাহত থাকলে টানা দুই সিরিজে প্রতিপক্ষকে হোয়াইটওয়াশ করার নজির গড়বে বাংলাদেশ। এর আগে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডকে হোয়াইটওয়াশ করেছিলো তারা। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে দ্বিতীয় ম্যাচের জয় বাংলাদেশের জন্য এই ফরম্যাটে ছিলো টানা পঞ্চম। এই ফরম্যাটে টানা ম্যাচ জয়ে এটি বাংলাদেশের জন্য সর্বোচ্চ। টানা জয়ের সংখ্যাটা বাড়িয়ে নেওয়ার দারুন সুযোগ থাকছে টাইগারদের।

তবে টানা জয় বা অন্য টার্গেটের চেয়ে এই ফরম্যাটেও ওয়ানডের মত ব্র্যান্ড তৈরি করতে মুখিয়ে আছে বাংলাদেশ। ওয়ানডে ফরম্যাটে নিজেদের অন্যতম শক্তিতে পরিণত করেছে টাইগাররা।

এই ফরম্যাটে সেরা দল হতে নির্ভিক ক্রিকেট খেলার উপর জোর দেন বাংলাদেশের অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। তিনি বলেন, আমরা গত কয়েক ম্যাচের পারফরমেন্সের ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে চেয়েছিলাম এবং আমরা তা ভালোভাবেই করেছি। দুর্দান্ত দল হতে চাইলে আমাদের সেভাবে খেলতে হবে এবং প্রথম বল থেকেই সেটি ফুটিয়ে তুলতে হবে। এটাই আমরা আলোচনা করেছি এবং আমরা যেভাবে খেলতে চাই।

টি-টোয়েন্টির আগে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ ২-০ ব্যবধানে জিতে বেশ কয়েকটি রেকর্ড ভেঙেছে বাংলাদেশ। একটি ম্যাচ বৃষ্টিতে ভেসে যায়।

সেই ধারা অব্যাহত রেখে টি-টোয়েন্টি সিরিজেও বেশ কয়েকটি রেকর্ড ভেঙেছে বাংলাদেশ। নিজেদের টি-টোয়েন্টি ইতিহাসে প্রথমবারের মত টানা দুই ম্যাচে ২শর রান করতে সক্ষম টাইগাররা। যদি পুরো ২০ ওভার খেলার সুযোগ পেত তবে নিজেদের সর্বোচ্চ ২১৫ রানের রেকর্ডটিও ভাঙতে পারতো বাংলাদেশ।

দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে ১৮ বলে হাফ-সেঞ্চুরি করে বাংলাদেশের পক্ষে দ্রুততম অর্ধশতকের রেকর্ড গড়েন ওপেনার লিটন দাস। ২০০৭ সালে করা মোহাম্মদ আশরাফুলের ২০ বলে দ্রুততম হাফ-সেঞ্চুরির রেকর্ড ভাঙেন লিটন। রেকর্ড গড়া ইনিংসে ৪১ বলে ৮১ রান করেন লিটন। বল হাতে ২২ রানে ৫ উইকেট নেন অধিনায়ক সাকিব। দ্বিতীয়বারের মত সংক্ষিপ্ত ভার্সনে পাঁচ উইকেট নিয়ে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে সর্বোচ্চ শিকারি হন সাকিব।

অন্যদিকে বাংলাদেশের বিপক্ষে এই সফরে পাঁচ ম্যাচের মধ্যে কোনটিতেই লড়াই করতে পারেনি আয়ারল্যান্ড। টি-টোয়েন্টিতে হোয়াইটওয়াশ এড়াতে হলে আবহাওয়ার সহায়তা পেতে হবে আইরিশদের। ২০১২ সালের পর আবারও বাংলাদেশের কাছে হোয়াইওয়াশের মুখে পড়েছে আয়ারল্যান্ড।

সিরিজ নিশ্চিত হওয়ায় একাদশে কিছু পরিবর্তনের আভাস দিয়েছেন সাকিব। সাথে এটিও পরিস্কার করেছেন, পরিবর্তন যাই হোক দলের মূল লক্ষ্য প্রতিপক্ষকে হোয়াইটওয়াশ করা।

বাংলাদেশ ‘খুব শক্তিশালী দল’ হিসেবে স্বীকার করেছেন আয়ারল্যান্ডের অধিনায়ক পল স্টার্লিং। তৃতীয় ম্যাচ একতরফা ম্যাচ হবে না বলে মনে করে আজকের ম্যাচে প্রতিরোধ গড়ে তোলার আশা করেন তিনি।

স্টার্লিং বলেন, আমাদের দল নির্বাচন নিয়ে ভাবতে হবে। শুক্রবার আমাদের অব্যবহৃত উইকেট থাকবে এবং আশাকরি আমরা এক ধাপ এগিয়ে থাকবো।

বাংলাদেশ দল

সাকিব আল হাসান (অধিনায়ক), লিটন দাস, রনি তালুকদার, নাজমুল হোসেন শান্ত, তাওহিদ হৃদয়, শামীম হোসেন, মেহেদি হাসান মিরাজ, নাসুম আহমেদ, মুস্তাফিজুর রহমান, হাসান মাহমুদ, তাসকিন আহমেদ, শরিফুল ইসলাম, রিশাদ হোসেন ও জাকের আলী অনিক।

আয়ারল্যান্ড দল

পল স্টার্লিং (অধিনায়ক), মার্ক অ্যাডায়ার, রস অ্যাডায়ার, কার্টিস ক্যাম্পার, গ্যারেথ ডেলানি, জর্জ ডকরেল, গ্রাহাম হুম, ম্যাথিউ হামফ্রেস, ব্যারি ম্যাকার্থি, কনর অলফার্ট, হ্যারি টেক্টর, লরকান টাকার, বেন হোয়াইট ও ক্রেইগ ইয়ং।

;

লিটনের নান্দনিক ব্যাটিং আর সাকিবের ঘূর্ণিতে বাংলাদেশের সিরিজ জয়



স্পোর্টস ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

লিটন দাস ও রনি তালুকদারের নান্দনিক ব্যাটিংয়ে শুরু, মাঝে বাংলাদেশকে টেনেছেন তাওহিদ হৃদয় ও সাকিব আল হাসান। পুরো ম্যাচে চোখে লেগে থাকার মতো ব্যাটিং করেছেন বাংলাদেশের ব্যাটাররা। এমন দিনে বোলাররাও বিলিয়ে দিয়েছেন নিজেদের সেরাটা, বিশেষ করে সাকিব। বাঁহাতি এই স্পিনারের বল খেলার যেন কোনো উপায়ই খুঁজে পাচ্ছিলেন না আয়ারল্যান্ডের ব্যাটাররা। শেষ পর্যন্ত উপায় খুঁজেও পায়নি তারা। সাকিবের ঘূর্ণিতে রীতিমতো আসা যাওয়ার মিছিলে ছিলেন সফরকারীরা। শেষ দিকে কার্টিস ক্যাম্ফার হাফ সেঞ্চুরি করলেও সেটা কেবল তাদের হারের ব্যবধান কমিয়েছে। দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে আয়ারল্যান্ডকে ৭৭ রানে হারিয়ে এক ম্যাচ হাতে রেখেই সিরিজ জিতল বাংলাদেশ।

চট্টগ্রামে বড় রান তাড়ায় ইনিংসের প্রথম বলেই নিজেদের অধিনায়ককে হারায় আয়ারল্যান্ড। তাসকিন আহমেদের অফ স্টাম্পের বল তাড়া করতে গিয়ে আউট হন পল স্টার্লিং। ডানদিকে ঝাঁপিয়ে পড়ে লিটন দাস ক্যাচ লুফে নিলে শূূন্য রানেই ফিরে যেতে হয় আইরিশ অধিনায়ক। দ্বিতীয় ওভারে বোলিং এসে প্রথম বলেই উইকেট তুলে নেন সাকিব।

বাঁহাতি এই স্পিনারের শর্ট লেংথ ডেলিভারিতে হাঁটু গেড়ে পুল খেলতে চেয়েছিলেন লরকান টাকার। তবে শেষ মুহূর্তে ব্যাট থামিয়ে দেয়ায় বল ব্যাটে লেগে রনির হাতে চলে যায়। ফলে ফিরতে হয় টাকারকে। তৃতীয় ওভারে বোলিংয়ে এসে দুই ছক্কা দেন নাসুম আহমেদ। তবে পরের ওভারে বোলিংয়ে এসে আরও একবার প্রথম বলেই উইকেট পান সাকিব।

বাংলাদেশের অধিনায়কের আর্ম বলে বোল্ড হয়েছেন রস টেলর। সেই ওভারের শেষ বলে সাকিব নিয়েছেন আরও এক উইকেট। সাকিবের নিচু হওয়া ডেলিভারিতে এজ হয়ে লিটনের গ্লাভসে ধরা পড়েন ডেলানি। প্রতি ওভারে উইকেট নেয়ার ধারাবাহিকতা বজায় রাখেন নিজের তৃতীয় ওভারেও। সাকিবের স্ট্রেইট ডেলিভারিতে সুইপ করতে চেয়েছিলেন জর্জ ডকরেল। তবে ব্যাটে-বলে করতে পারেননি তিনি।

জোরালো আবেদন করলে আউট দেন অনফিল্ড আম্পায়ার তানভীর আহমেদ। তবে ততক্ষণাৎ রিভিউ নেন ডকরেল। রিপ্লেতে দেখা যায় বল মিডল স্টাম্পে হিট করতো। ফলে রিভিউ নিয়েও শেষ রক্ষা হয়নি ডকরেলের। একই ওভারের শেষ বলে আরও এক উইকেট নিয়েছেন সাকিব। বাঁহাতি এই স্পিনারকে সুইপ করতে গিয়ে বোল্ড হয়েছেন হ্যারি টেক্টর।

তাতে পঞ্চাশ পেরোনোর আগেই ৬ উইকেট হারায় আয়ারল্যান্ড। আর আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে দ্বিতীয়বারের মতো ৫ উইকেট নেয়ার কীর্তি গড়েছেন সাকিব। প্রথমবার বাংলাদেশি হিসেবে একাধিকবার ৫ উইকেট নেয়ার রেকর্ডটা এখন তার দখলে। এদিন আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে সবচেয়ে বেশি উইকেট নেয়া বোলারদের তালিকায় টিম সাউদিকে ছাড়িয়ে গেছেন তিনি। বর্তমানে সাকিবের উইকেট ১৩৬টি।

সাকিব-তাসকিনদের সঙ্গে উইকেট নেয়ার মিছিলে যোগ দেন হাসান মাহমুদও। ডানহাতি এই পেসারের বলে আউটসাইড এজ হয়ে লিটনের গ্লাভসে ক্যাচ দেন মার্ক অ্যাডায়ার। নিজের দ্বিতীয় ওভারে বোলিংয়ে এসে ফিন হ্যান্ডকে লেগ বিফোর উইকেটের ফাঁদে ফেলেছেন তাসকিন। ৫০ করা ক্যাম্ফারকেও ফিরিয়েছেন তিনি। শেষ পর্যন্ত সফরকারীরা থামে ১২৫ রানে।

এর আগে লেগ স্পিনার গ্যারেথ ডেলানিকে দিয়ে বোলিং শুরু করেছিল আয়ারল্যান্ড। প্রথম ওভারে কোনো বাউন্ডারি হজম না করলেও ৮ রান দিয়েছিলেন ডেলানি। পরের ওভারে মার্ক অ্যাডায়ারকে দুই চার মেরেছেন রনি ও লিটন। সময় যত বেড়েছে বাংলাদেশের দুই ওপেনার ততই আক্রমণাত্বক হয়েছেন। তাতে মাত্র ৩.৩ ওভারে দলের পঞ্চাশ পেরোয় বাংলাদেশ। ১৭ ওভারের ম্যাচ হওয়ায় এদিন পাওয়ার প্লে ছিল ৫ ওভার।

সেখানে ব্যাটিং-তাণ্ডব চালিয়ে লিটন ও রনি মিলে তুলেছেন ৭৩ রান। যেখানে বেশিরভাগ রানই এসেছে লিটনের ব্যাট থেকে। আইরিশ বোলারদেরে তুলোধুনো করতে থাকা লিটন বেন হোয়াইটের বলে সিঙ্গেল নিয়ে ১৮ বলে হাফ সেঞ্চুরি পূরণ করেছেন। টি-টোয়েন্টি ইতিহাসে বাংলাদেশের হয়ে যা দ্রুততম। এর আগে ২০০৭ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে করা মোহাম্মদ আশরাফুলের হাফ সেঞ্চুরি ছিল ২০ বলে।

এদিন ১৬ বছরের পুরোনো সেই রেকর্ড ভেঙেছেন লিটন। এদিকে হোয়াইটের আউট সাইড লেগ স্টাম্পের ডেলিভারিতে ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্ট দিয়ে লিটন চার মারলে একশ পূর্ণ হয় বাংলাদেশের। নিজেদের ইতিহাসে দ্বিতীয়বারের মতো উদ্বোধনী জুটিতে একশ ছুঁয়েছে স্বাগতিকরা। শুধু তাই নয় সেই চারে ছাড়িয়ে গেছেন নাইম শেখ ও সৌম্য সরকারের করা ১০২ রানের উদ্বোধনী জুটির রেকর্ড।

৮ বছর পর জাতীয় দলে ফিরে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম টি-টোয়েন্টিতে ৩৮ বলে ৬৭ রানের ইনিংস খেলেছিলেন রনি। টানা দুই হাফ সেঞ্চুরি করার সুযোগ ছিল ৩২ বছর বয়সি এই ওপেনারের। তবে তাকে সেটা করতে দিলেন না হোয়াইট। ডানহাতি এই স্পিনারকে লং অন দিয়ে উড়িয়ে মারতে গিয়ে অ্যাডায়ারেরে হাতে ধরা পড়েন ২২ বলে ৪৪ রানের ইনিংস খেলা রনি। তাতে ভাঙে বাংলাদেশের রেকর্ড ১২৪ রানের উদ্বোধনী জুটি।

আগের ম্যাচে শেষের দিকে ব্যাটিং করলেও এদিন তিনে নেমেছেন সাকিব আল হাসান। হোয়াইটের বলে লং অন দিয়ে চার মেরে প্রথম বলেই রানের খাতা খোলেন বাংলাদেশের অধিনায়ক। দারুণ ব্যাটিংয়ে ক্যারিয়ার সেরা ৭৩ রানের ইনিংস পেরিয়ে গেলেও প্রথমবার সেঞ্চুরি পাওয়া হয়নি লিটনের। খানিকটা তাড়াহুড়ো করতে গিয়ে আউট হয়েছেন ডানহাতি এই ওপেনার।

হোয়াইটের ওয়াইড তাড়া করতে গিয়ে আউটসাইড এজ হয়ে উইকেটকিপারের গ্লাভসে ক্যাচ দেন ৪১ বলে ক্যারিয়ার সেরা ৮৩ রান করা লিটন। এরপর তাওহিদ হৃদয়কে সঙ্গে নিয়ে ঝড়ো ব্যাটিং করতে থাকেন সাকিব। মাত্র ২৪ বলে পঞ্চাশ পেরিয়েছে তাদের দুজনের জুটি। শেষ ওভারে অ্যাডায়ারের স্লোয়ার ডেলিভারিতে টপ এজ হয়ে ফিরে গেছেন ১৩ বলে ২৪ রান করা হৃদয়। এদিকে সাকিব অপরাজিত ছিলেন ২৪ বলে ৩৮ রানের ইনিংস খেলে।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

বাংলাদেশ - ২০২/৩ (১৭ ওভার) (লিটন ৮৩, রনি ৪৪, সাকিব ৩৮*, হৃদয় ২৪)

আয়ারল্যান্ড- ১২৫/৯ (১৭ ওভার) (ক্যাম্ফায়ার ৫০; সাকিব ৫/২২)

;