পঞ্চপাণ্ডবের দিন শেষ, ধন্যবাদ বলার সময় এলো তাহলে?



এম. এম. কায়সার
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

তারা পাঁচ। তাদের ভালোবেসে ডাকা হতো ‘পঞ্চপান্ডব’ নামে। পাঁচজনই অভিজ্ঞ। ম্যাচউইনার। দারুণ বন্ধুত্ব ছিল তাদের।

-ছিল?

হ্যাঁ, এই সম্পর্কে সুসম্পর্ক শব্দটা এখন অতীত। এই সৌহার্দ্যে জট-জটিলতার ধারালো কুড়াল সবার আগে মেরেছেন সাকিব আল হাসান। আর তাই বাকি পাণ্ডবদের এক-দুইয়ের সঙ্গে তার সম্পর্কের রেখাচিত্র সবচেয়ে বেশি নিম্নমুখী। তামিমের সঙ্গে সাকিব কথা বলেন না। বন্ধুত্ব তো দূরের কথা। বিশ্বকাপে যাওয়ার আগের এক সাক্ষাৎকারে সাকিব যেভাবে প্রকাশ্যে তামিমের সমালোচনা করেছেন তাতে তাদের সম্পর্কের ময়লা ঢাকার দূষিত বাতাসের চেয়েও চরম অস্বাস্থ্যকর হয়ে উঠেছে! বিশ্বকাপের ঠিক আগেভাগে তামিম-সাকিব দ্বন্দ্ব, বিতর্ক, বিবাদ, একে অন্যকে অপদস্ত ও ঘায়েল করার ‘কুৎসিত ম্যাচ’ দেখেছিলো গোটা ক্রিকেট বিশ্ব।

এই পাঁচ পান্ডবদের মধ্যে প্রথম কে আর দ্বিতীয় কে-তার একটা নিজস্ব সমাধান দিয়েছেন সাকিব আল হাসান। পুরোদস্তুর ঘোষণার ভঙ্গিতে সাকিবের দাবি, প্রথমে আমি তারপর অন্য পান্ডব! অর্থাৎ মাশরাফি, মাহমুদউল্লাহ, তামিম ইকবাল ও মুশফিকের চেয়ে নিজের নামটাই এই তালিকায় প্রথমে রেখেছেন সাকিব। আর্ন্তজাতিক ক্রিকেটে পারফরম্যান্সের তুল্যমূল্য বিচারে আনলে সাকিবের এই দাবি অযৌক্তিক নয়। কিন্তু সব অনুষ্ঠানে সামনের চেয়ারে না বসলে মর্যাদা থাকে না-এমন মানসিকতা শ্রেষ্ঠত্বের ইঙ্গিত দেয় না; বরং তা সুপেরিওরিটি কমপ্লেক্স বা গরিমার প্রকাশমাত্র!

মাশরাফি জাতীয় দলে এখন আর নেই। তাই পঞ্চপাণ্ডবের এই লড়াইয়ের রিং থেকে অনেক দূরেতিনি। মাঝে মাঝে বিবেক বা বিচারকের ভঙ্গিতে ফেইসবুকে সব পক্ষকে এক চৌকাঠে রাখার জন্য স্বস্তিদায়ক কথাবার্তা বলেন। বিপদ বড় হলে বিসিবিও তাকে মাঝে সাজে বৈঠকে ডাকে। মাশরাফি এসে শালিসি সভায় মিলমিশ করানোর একটা চেষ্টা চালান। মাঠের বাইরের ক্রিকেট জটিলতা মেটাতে আপাতত সাবেক অধিনায়কের কাজের পরিধি অতটুকুই। জাতীয় দলের জার্সি যে মাশরাফির গায়ে আর উঠছে না, সেটা পরিস্কার। তবে যেহেতু আনুষ্ঠানিকভাবে এখনো তিনি আর্ন্তজাতিক ক্রিকেট থেকে অবসরের ঘোষণা দেননি, তাই তার নামের আগে আনুষ্ঠানিকভাবে ‘সাবেক ক্রিকেটার’ বসানোর উপায়ও নেই। কিন্তু এটা নিশ্চিত যে মাশরাফি এখন কোনো স্তরেই জাতীয় দলের পরিকল্পনায় আর নেই। জাতীয় দলের হয়ে শেষ ম্যাচ খেলেছেন মাশরাফি ২০২০ সালের মার্চে।

তাকে সেই তখনই ‘ধন্যবাদ’ জানিয়ে দিয়েছে বিসিবি।

মুশফিক ও মাহমুদউল্লাহ ঘনিষ্ঠ আত্মীয় হওয়ায় তারা এখনো একে অন্যের বাসায় দাওয়াত কবুল করেন। দুজনের মধ্যে কোনো জটিলতা নেই। এই দুই পাণ্ডবের মধ্যে সুসম্পর্ক বিরাজমান।

মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ শুধুমাত্র ওয়ানডে ফরমেটে খেলেন। এক অর্থে অভিমান করেই টেস্ট থেকে তিনি স্বেচ্ছা অবসর নিয়েছেন। টি- টোয়েন্টির বিবেচনায় তাকে রাখেনি দল। ওয়ানডেতেও তিনি বাদের তালিকায় ছিলেন। ২০২৩ সালের বিশ্বকাপের প্রাথমিক পরিকল্পনা তার নামই ছিল না। তাই নির্বাচকরা তাকে বিশ্বকাপের আগে লম্বা সময়ে বিশ্রামে রেখেছিলেন। মুলত বিশ্রামের আড়ালে তাকেই বাদই দেওয়া হয়েছিল। বিশ্বকাপের দলে তার কোনো বিকল্প না পাওয়ায় মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে ১৫ জনের দলে রাখা হয়। আর পুরো বিশ্বকাপে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ যে ক্রিকেট খেললেন তাতে নির্বাচকরা এখন পরের ওয়ানডে সিরিজের জন্য তার নামটাই লিখবেন সবার আগে! তবে সমস্যা হলো বয়স জানাচ্ছে মাহমুদউল্লাহর সামনের সময়ের ক্রিকেট খুবই সংক্ষিপ্ত। নিশ্চয়ই চারবছর পরের বিশ্বকাপের একাদশে পরিকল্পনায় মাহমুদউল্লাহ থাকছেন না। টেস্ট এবং টি- টোয়েন্টির বিদায়ে তাকে কোনো বিদায়ী মানপত্র দিতে পারেনি বিসিবি। সেই দুঃখ কাটিয়ে উঠার সুযোগ এসেছে ক্রিকেট বোর্ডের সামনে। মাহমুদউল্লাহও নিশ্চয়ই জানেন সরিয়ে দেওয়ার আগে সময় থাকতেই সরে যাওয়াটা বেশি মর্যাদার।

পাঁচ পাণ্ডবের মধ্যে মুশফিকুর রহিম সবচেয়ে ফিট। টি- টোয়েন্টিকে বিদায় জানিয়েছেন বছর কয়েক আগে। ওয়ানডে এবং টেস্ট খেলেন শুধু। টেস্টে শুধুমাত্র ব্যাটসম্যান হিসেবে একাদশে জায়গা তার। ওয়ানডেতে এখনো গ্লাভস হাতে কিপিংয়ের বাড়তি দায়িত্বও সামাল দেন। তার জন্য বিদায় মঞ্চ সাজাতে বিসিবি সবচেয়ে বেশি সময় ধরে অপেক্ষায় থাকতে সম্মত। পঞ্চপাণ্ডবের মধ্যে জাতীয় দলে সম্ভবত মুশফিকের ক্যারিয়ারই সবচেয়ে দীর্ঘ হওয়ার সম্ভাবনার রেখাচিত্র একটু বেশিই স্পষ্ঠ।

গেল একটা বছর ধরে তামিম ইকবাল মাঠের ক্রিকেটের চেয়ে মাঠের বাইরের ঘটনা-দুর্ঘটনা, তর্ক-বিতর্ক, মান-অভিমান, রাগ-আবেগ নিয়েই বেশি আলোচিত। এই সময়টায় ক্রিকেট ছেড়েছেন। আবার ২৪ ঘন্টার মধ্যেই ক্রিকেটে ফিরেছেন। অধিনায়ক ছিলেন। অধিনায়কত্ব ছেড়েছেন। বিশ্বকাপের পরিকল্পনায় ছিলেন। বাদ পড়েছেন। একসময়ের বন্ধু সাকিবের সঙ্গে তার সাম্প্রতিক শত্রুতা বাংলাদেশ ক্রিকেটের সবচেয়ে বাজে শিরোনাম! পিঠের চোট তার কবে সারবে তার কোনো নিশ্চয়তা নেই। মাঠের ক্রিকেটে আবার বাংলাদেশ তাকে কবে পাবে, তা তিনি এবং বিসিবি কেউ জানে না। কোনো সুনির্দিষ্ট দিক নির্দেশনা নেই। জাতীয় দলে খেলার জন্য যে তাগিদ, যে অনুভব, যে জোরদার ইচ্ছাশক্তির কথা আমরা শুনে থাকি, সেই আবশ্যিক শর্তগুলো পূরণে সাম্প্রতিক সময়ে তামিম ইকবালও কি জোরালো কোনো ভূমিকা রাখতে পেরেছেন? বিশ্বকাপে খেলার জন্য তামিম যেভাবে মরিয়া আগ্রহ দেখিয়েছিলেন এখন জাতীয় দলের হয়ে টেস্ট বা ওয়ানডে সিরিজ খেলার জন্য সেই তাড়নায় যে বড্ড বেশি ঘাটতি এই ওপেনারের মেজাজ-মর্জি ও ইচ্ছেয়।

বাংলাদেশ ক্রিকেটে নিজের শেষের শুরু দেখে ফেলেছেন তামিম ইকবাল। তার জন্যও এবার বিদায়ী ক্রেষ্ট তৈরি করতেই পারে বিসিবি!

সাকিব আল হাসান যা করেন মোটামুটি ঘোষণা দিয়েই করেন। বিশ্বকাপের আগে বলেছিলেন এই টুর্নামেন্টই তার অধিনায়কত্বের শেষ। ২০২৫ এর চ্যাম্পিয়ন্স লিগে খেলে ওয়ানডে ক্রিকেটও ছেড়ে দেবেন। নিঃসন্দেহে সাকিব এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের হয়ে খেলা সবচেয়ে প্রভাবী ক্রিকেটার। তিনি বিসিবির ইচ্ছেমাফিক নয়, বরং বিসিবিই চলে তার ইচ্ছে ও সিদ্ধান্ত মোতাবেক। বিশ্বকাপ শেষে আরেকটি চমক দেখান সাকিব। জাতীয় নির্বাচনে নেমে পড়েন। এবার এমপি হওয়ার ইচ্ছে হয়েছে তার। খেলার মাঠে থেকেই রাজনীতির মঞ্চে হাজির সাকিব। খেলা এবং রাজনীতি দুটোই চালিয়ে যেতে চান। পরিবার থাকে বিদেশে। খেলার ফাঁকে সময় পেলেই যুক্তরাষ্ট্রে পরিবারের কাছে ছুটতে হয় তাকে। ব্যবসা-বাণিজ্যেও ব্যস্ত রয়েছে। হর-হামেশা শো-রুম উদ্বোধনের সূচিও তাকে পালন করতে হয়। সবমিলিয়ে ক্রিকেটের সাকিব এখন ক্রিকেটে কম, অন্যত্র বেশি।

বিসিবি’র উচিত তাকে ক্রিকেট ব্যস্ততা থেকে মুক্ত করে দেওয়া।

২০১৫ সালের বিশ্বকাপের সময় থেকে এই পঞ্চপান্ডব শব্দের আবি ভাব। যদিও এই পাঁচজনে এর আগে থেকেই জাতীয় দলে একসঙ্গে খেলেছেন। কিন্তু মাশরাফির নেতৃত্বে ২০১৫ সালের বিশ্বকাপ ও পরবর্তী কয়েক বছরের দ্বিপাক্ষিক সিরিজের সাফল্যে এই পাঁচের কৃতিত্বই ছিল বেশি। সে সময়কার প্রায় সবগুলো বড় জয়ে এই পঞ্চপাণ্ডবের কোনো না কোনো একজনের ভূমিকা ছিল মূখ্য। এই পাঁচজনকে এক ফ্রেমে রেখে তাদের ছবি তোলাটা ছিল ক্রিকেট ফটোগ্রাফারদের জন্য আরাধ্য বিষয়।
সেই ফটো ফ্রেম ভেঙ্গে গেছে। এই পাঁচজনের সবাইকে আর কখনোই এক দলে তো নয়ই, এক ছবির ফ্রেমেও সম্ভবত পাওয়া যাবে না!
বিসিবির উচিত সামনে তাকিয়ে একটা সাহসী সিদ্ধান্ত নেওয়া।

-এম. এম. কায়সার, সম্পাদক- স্পোর্টস বাংলা

   

বৃষ্টিবিঘ্নিত ম্যাচে হেরে বিপদ বাড়ল বাংলাদেশের



স্পোর্টস ডেস্ক, বার্তা ২৪
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

সিলেটে বাংলাদেশ-ভারত দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টির একটা বড় অংশই গিয়েছে বৃষ্টির পেটে। তবু ফল হয়েছে ম্যাচের। ডিএলএস পদ্ধতিতে বাংলাদেশ ম্যাচটা হেরে গেছে ১৯ রানে। এই হারে পাঁচ ম্যাচ সিরিজে ২-০ ব্যবধানে পিছিয়ে পড়েছে বাংলাদেশ।

সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ টসে জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয়। তবে ব্যাট হাতে মোটেই সুবিধা করতে পারেননি বাংলাদেশের ব্যাটাররা। ওপেনার মুর্শিদা খাতুন এক প্রান্ত আগলে শেষ ওভার পর্যন্ত দাঁড়িয়ে থাকলেও অন্য প্রান্তে চলেছে আসা-যাওয়ার মিছিল।

১১ ব্যাটারের মধ্যে চার অঙ্ক ছুঁতে পেরেছেন মোটে চার ব্যাটার। তাদের মধ্যে সর্বোচ্চ ৪৬ রান এসেছে মুর্শিদার ব্যাটে। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২০ রান করেছেন এই ম্যাচ দিয়ে একাদশে প্রবেশ করা রিতু মনি।

ভারতীয় বোলারদের মধ্যে ৪ ওভারে ১৯ রান দিয়ে সর্বোচ্চ ৩ উইকেট ঝুলিতে পুরেছেন রাধা যাদব।

জবাব দিতে নেমে বৃষ্টিতে ম্যাচ থেমে যাওয়ার আগে ৫.২ ওভারে ১ উইকেটে ৪৭ রান তুলে ফেলে ভারত। ২৪ বলে ৫ চার এবং ২ ছয়ে ৪১ রানে ব্যাট করছিলেন দায়ালান হেমলতা।

এরপরই শুরু হয় বৃষ্টি। বাংলাদেশ ইনিংসের সময়ও বৃষ্টি বাগড়া দিয়েছিল। তবে সে যাত্রায় খুব বেশি সময় স্থায়ী হয়নি। তবে ভারতীয় ইনিংসের ষষ্ট ওভারে শুরু হওয়া বৃষ্টি আর থামেনি। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের নিয়মানুযায়ী যেহেতু দুই দলই অন্তত পাঁচ ওভার ব্যাটিং করেছে, তাই নির্ধারিত সময় পেরিয়ে যাওয়ার পর ডিএলএস মেথডে ম্যাচের ফল ঘোষণা করে দেয়া হয়।

৫.২ ওভারে পার স্কোর ছিল ২৮ রান। পার স্কোরের চেয়ে ১৯ রান এগিয়ে থেকে জয়ী হয় ভারত।

;

এটাই তাহলে বাংলাদেশের বিশ্বকাপ দল?



এম. এম. কায়সার
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

বিশ্বকাপ দল গঠন করতে কি নির্বাচকদের খুব কঠিন কোনো পরিশ্রম করতে হচ্ছে? খুব বেশি চিন্তা করতে হচ্ছে?

ত্তর হচ্ছে না, টি- টোয়েন্টি বিশ্বকাপের জন্য বাংলাদেশ দল গঠন নিয়ে নির্বাচকদের তেমন বাড়তি কোনো চিন্তাই করতে হচ্ছে না। দল প্রায় গড়া হয়ে গেছে আগেভাগেই। এক বা দুজনকে নিয়ে সামান্য কিছু চিন্তা ছাড়া বাকি অন্তত ১৩/১৪ জনের নামের পাশে নির্বাচকরা টিকমার্ক বসিয়ে দিয়েছেন। 

বিশ্বকাপের দলকে যদি আপনি ব্যাটার, অলরাউন্ডার, স্পিনার এবং পেস বোলার-এই চার ক্যাটাগরিতে ভাগ করেন তাহলেই তালিকার ১৫ জনের শতকরা ৯৯ ভাগ নাম পেয়ে যাবেন। 

চলুন সেই হিসেব মেলাই।

প্রথমেই ব্যাটারদের প্রসঙ্গ। ওপেনিংয়ে লিটন দাস ও তানজিম হাসান তামিম থাকছেন সেই বিষয়টা নিশ্চিত। অধিনায়ক তো বাংলাদেশ আগেই ঘোষণা করেছে। সেই সূত্রে নাজমুল হোসেন শান্তর জায়গা দলে গ্যারান্টেড অনেক আগেই। ফর্ম এবং এই ফরম্যাটে খেলার দক্ষতায় তাওহিদ হৃদয় মিডল অর্ডারে আরেকটি অটোমেটিক চয়েজ। 

ব্যাটার হিসেবে বাকি পছন্দের তালিকায় থাকছেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, জাকের আলি অনিক। অভিজ্ঞতা এবং বর্তমান ফর্মের প্রেক্ষিতে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ বিশ্বকাপে যাচ্ছেন সন্দেহতীতভাবেই। জাকের আলি অনিক বিপিএল এবং শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে অভিষেক সিরিজে যে পারফরমেন্স দেখিয়েছেন তাতে নির্বাচকদের গুডবুকে তার লেখা হয়ে গেছে আগেভাগেই। আরেক ব্যাটার হিসেবে আফিফ হোসেন ধ্রুব নাকি পারভেজ হোসেন ইমন এই নিয়ে কিছুটা বিশ্লেষণে রয়েছেন নির্বাচকরা। তবে অভিজ্ঞতা, ম্যাচ উইনিং পারফরম্যান্স, বোলিং দক্ষতা এবং প্রিমিয়ার ক্রিকেটে সর্বশেষ ম্যাচে ম্যাচ জেতানো ইনিংস বিশ্বকাপের ১৫ জনের তালিকায় আফিফ হোসেনকে এগিয়ে রাখছে। তরুণ পারভেজ হোসেন ইমনকে আরেকটি বিশ্বকাপের জন্য অপেক্ষায় থাকতে হচ্ছে। খুব সম্ভবত এই বিশ্বকাপে তার জায়গা হচ্ছে রিজার্ভ তালিকায়। 

অলরাউন্ডার কোটায় যথারীতি সবার আগে নাম সাকিব আল হাসানের। আরেকটি বিশ্বকাপ খেলার অভিজ্ঞতা যোগ হচ্ছে সাকিবের ক্যারিয়ারে। স্পিন কোটায় থাকছেন অফ স্পিনার শেখ মেহেদী ও রিশাদ হোসেন। লেগ স্পিনার নিয়ে কোনো বিশ্বকাপে খেলতে না পারার দুঃখ এবার বাংলাদেশ ভুলতে যাচ্ছে রিশাদ হোসেনের অর্ন্তভুক্তিতে। বাড়তি সুবিধা হলো শেখ মাহেদি এবং রিশাদ হোসেন দুজনেই মারকুটে ব্যাটিংটাও ভালোই জানেন। শেখ মেহেদীর তো আবার টপ অর্ডার এবং মিডল অর্ডারে ব্যাটিং করার অভিজ্ঞতাও রয়েছে।

পেস বোলিং অলরাউন্ডার কোটায় মোহাম্মদ সাইফুদ্দিনের নাম তালিকার শীর্ষে। তবে সমস্যা ছিল তার ইনজুরি। প্রিমিয়ার ক্রিকেটে তার বোলিং ও পারফরম্যান্স বেশ কড়া নজরে রেখেছিলেন নির্বাচকরা। ইনজুরি নিয়ে বাড়তি কোনো সমস্যায় আর পড়েননি সাইফুদ্দিন। বিশ্বকাপ দলে তার অর্ন্তভুক্তির অন্যতম উপাত্ত হলো বিপিএলে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স। শেষের দিকে ব্যাটিংয়ে নেমে প্রায় প্রতি ম্যাচেই দেড়শ-দু’শর ওপর স্ট্রাইকরেটে রান তুলেছেন তিনি। ডেথ ওভারে বোলিংয়েও তার পারফরম্যান্স ছিল নজরকাড়া।

পেস বোলিং বিভাগে শরিফুল ইসলামকে এখন বাংলাদেশ দলের ‘নেতা’ মানা হয়। এই মর্যাদা অর্জন করেছেন শরিফুল তার পারফরম্যান্স দিয়েই।  পেছনের কয়েক বছরে তিনি দলের অন্যতম ধারাবাহিক পারফর্মার। প্রায় প্রতিটি ম্যাচে তাকে পরিকল্পনায় রেখেই বোলিং একাদশ সাজানো হয়। শরিফুল নিশ্চিতভাবেই যাচ্ছে আমেরিকা বিশ্বকাপে। জাতীয় দলে মুস্তাফিজুর রহমানের সাম্প্রতিক ফর্ম ঠিক আহামরি মানের কিছু না। কিন্তু এবারের আইপিএলে তার বোলিং পারফরম্যান্স এবং ম্যাচের গুরুত্বপূর্ণ সময়ে উইকেট শিকারের কৌশল বিশ্বকাপে বাংলাদেশ দলে তার জায়গাটা নিশ্চিত করেছে। তাসকিন আহমেদের জায়গা নিয়েও কোনো সংশয় নেই। তরুণ পেসার তানজিম হাসান তামিম গতি এবং সঠিক নিশানার জন্য বিশ্বকাপ দলের পরিকল্পনায় রয়েছেন। 

হিসেব মিলল বিশ্বকাপ দলের? 

সাত ব্যাটার। চার অলরাউন্ডার। চারজন বোলার। এই পনেরো নিয়েই বাংলাদেশের বিশ্বকাপ দল। 

বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ দলের প্রেডিকশন

লিটন দাস, তানজিদ হাসান তামিম, নাজমুল হোসেন শান্ত (অধিনায়ক), তাওহীদ হৃদয়, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, জাকের আলী অনীক, আফিফ হোসেন ধ্রুব, সাকিব আল হাসান, শেখ মাহেদি, রিশাদ হোসেন, মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন, মুস্তাফিজুর রহমান, শরিফুল ইসলাম, তানজিম হাসান সাকিব ও তাসকিন আহমেদ।

;

টানা ১৪ জয়ে শিরোপা আবাহনীর



স্পোর্টস ডেস্ক, বার্তা ২৪
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

প্রথম পর্বে টানা ১১ জয়ের পর সুপার লিগে পরপর তিন জয়ে ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগের শিরোপা  নিশ্চিত করেছে আবাহনী। শেখ জামালকে ৪ উইকেটে হারিয়ে শিরোপা নিশ্চিত করেছে ডিপিএল ইতিহাসের এই সফলতম দল।

শেখ জামালের বিপক্ষে ম্যাচের আগে বেশ বিপদেই পড়েছিল আবাহনী। জাতীয় দলের ক্রিকেটারে ঠাসা দলটির একাদশ গড়তেই সমস্যায় পড়তে হয়েছিল। দলের বেশিরভাগ ক্রিকেটারদের যে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে বাংলাদেশের সিরিজের অনুশীলন ক্যাম্পে যোগ দিয়েছিলেন।

তবু ভাঙাচোরা দল নিয়েই শিরোপার মিশনে দলকে খেলিয়েছেন কোচ খালেদ মাহমুদ সুজন। তাতে সাফল্যও এসেছে। টসে হেরে আগে ব্যাট করা শেখ জামাল অলরাউন্ডার জিয়াউর রহমানের ৫৮ বলে ৮৫ রানের ঝোড়ো ইনিংসে ৯ উইকেটে ২৬৭ রানের চ্যালেঞ্জিং স্কোর গড়ে।

৪৯ রান করে দু’দিন আগেই যুক্তরাষ্ট্র থেকে দেশে ফেরা সাকিব আল হাসান। ৪১ রান আসে অধিনায়ক নুরুল হাসান সোহান ও ওপেনার সৈকত আলির ব্যাটে।

আবাহনীর হয়ে সর্বোচ্চ তিনটি করে উইকেট নেন স্পিনার রাকিবুল হাসান এবং পেসার তানজিম হাসান সাকিব।

জবাব দিতে নেমে এনামুল হক বিজয় (৬৭) এবং আফিফ হোসেন ধ্রুবর (৮৩) জোড়া ফিফটিতে ঠিকঠাক ছন্দেই এগোতে থাকে আবাহনী।

শেষদিকে অবশ্য ধীরগতির ব্যাটিংয়ে নিজেদের বিপদ বাড়াচ্ছিল তারা। তবে অধিনায়ক মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত ৫৩ রানের হার না মানা ইনিংস খেলে দলকে জিতিয়েই মাঠ ছাড়েন। তাতে দুই ম্যাচ হাতে রেখেই শিরোপা নিশ্চিত হয়ে যায় আবাহনীর।

;

ভারতকে ১২০ রানের চ্যালেঞ্জ বাংলাদেশের



স্পোর্টস ডেস্ক, বার্তা ২৪
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

সিরিজে ফেরার চ্যালেঞ্জ নিয়ে মাঠে নেমেছে বাংলাদেশ। পাঁচ ম্যাচ সিরিজের প্রথম ম্যাচে ভারতের সামনে দাঁড়াতেই পারেননি নিগার সুলতানা জ্যোতিরা। দ্বিতীয় ম্যাচ দিয়ে সিরিজে সমতায় ফেরার লক্ষ্যে বাংলাদেশের ব্যাটিংটা ঠিক মনমতো হয়নি। এক মুর্শিদা খাতুন বাদে ক্রিজে থিতু হতে পারেননি। তার ৪৫ রানের লড়াকু ইনিংসে চড়ে আগে ব্যাট করা বাংলাদেশ ২০ ওভারে অলআউট হওয়ার আগে স্কোরবোর্ডে তুলেছে ১১৯ রান।

সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা মন্দ হয়নি বাংলাদেশ। পাওয়ার প্লে’তে দুই উইকেট হারালেও স্কোরবোর্ডে ৪৩ রান জমা করেন নিগাররা। কিন্তু রাধা যাদবের করা ইনিংসের দশম টানা দুই বলে দুই ব্যাটার নিগার ও ফাহিমা খাতুন লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়েন।

পরের ওভারে সুলতানা খাতুনও সাজঘরের পথ ধরলে ৬৯ রানে পঞ্চম উইকেট হারিয়ে বসে বাংলাদেশ।

ওপেনার মুর্শিদা খাতুন তখনো ক্রিজে অবিচল। তাকে সঙ্গ দেন এই ম্যাচ দিয়ে একাদশে প্রবেশ করা রিতু মনি। এই জুটি যখন ক্রিজে, তখন খেলা কিছুক্ষণের জন্য থমকে যায় বৃষ্টিতে। তবে মুর্শিদা-রিতুর জুটিতে তার প্রভাব পড়েনি। বৃষ্টির পুর আবার নিজেদের সহজাত ব্যাটিংয়ে দলের রানের চাকা সচল রাখেন তারা।

দীপ্তি শর্মার বলে লেট কাট করতে গিয়ে রিতু মনি বোল্ড হলে ভাঙে এই জুটি। ৩২ রান আসে মুর্শিদা-রিতুর পঞ্চম উইকেটের জুটিতে। ২ চারে ১৮ বলে ২০ রান করেন রিতু।

মুর্শিদা তবু লড়াই চালিয়ে যান। শেষ ওভারে দুর্ভাগ্যজনকভাবে রানআউট হওয়ার আগে তার ব্যাটে আসে দলীয় সর্বোচ্চ ৪৫ রান।

ভারতের পক্ষে সর্বোচ্চ ৩ উইকেট নেন রাধা। দুটি করে উইকেট পান শ্রেয়াঙ্কা ও দীপ্তি।

জয়ে ফিরতে এখন বোলারদের দিকে তাকিয়ে বাংলাদেশ। স্বল্প পুঁজি পেলেও সেটা ডিফেন্ড করার চ্যালেঞ্জ নিয়ে বল করতে হবে নাহিদা-মারুফাদের।

;