তামিম-মায়ার্স ঝড়ে দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে বরিশাল
ম্যাচটা চট্টগ্রামের হাত থেকে ওখানেই অনেকটা ফসকে গেছে যখন চট্টগ্রামের ছন্নছাড়া ফিল্ডিংয়ে দলীয় ৯ রানের মাথায় ক্যাচ ছেড়ে সুযোগ দেয় তামিম ইকবালকে। তখন কেবল ১ রানে ব্যাট করছিলেন ফরচুন বরিশালের এই অধিনায়ক। সুযোগ পেয়ে রীতিমত চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের বোলারদের ওপরে চড়ে বসেন তামিম। তাকে যোগ্য সঙ্গ দিয়ে বাউন্ডারির ফুলঝুড়ি ফোটান ক্যারিবীয় ব্যাটার কাইল মায়ার্স।
এই দুই ব্যাটারের ফিফটিতে মধ্যম মানের লক্ষ্যকে মামুলি মানিয়ে ৩১ বল ও ৭ উইকেট হাতে রেখে জয় তুলে নেয় বরিশাল। এই জয়ে দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে জায়গা করে নিল তামিমের দল। সেখানে ফাইনালে দ্বিতীয় দলের জায়গা নিশ্চিতে প্রথম কোয়ালিফায়ারের পরাজিত দলের সঙ্গে খেলবে ফরচুন বরিশাল।
মিরপুরে প্লে-অফের এলিমিনেটর ম্যাচে আগে টসে জিতে বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয় বরিশাল। সেখানে আগে ব্যাট করে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে ১৩৫ রান তোলে বন্দর নগরীর দলটি।
লক্ষ্যটা সহজের কাতারে থাকলেও সেখানে শুরুতে ধাক্কা খায় বরিশাল। ইনিংসে দ্বিতীয় বলেই রানের খাতা না খোলা সৌম্য সরকার রিভার্স সুইপ খেলতে গিয়ে ক্যাচ দিয়ে বসেন উইকেটরক্ষকের হাতে। দলীয় ৯ রানের মাথায় ব্যাটিংয়ে দ্বিতীয় ধাক্কাটা খেতেই যাচ্ছিল বাংলার ভেনিসের দলটি। পেসার আল আমিনের বলে ব্যাটে-বলে ঠিকঠাক সংযোগ না হওয়ায় ডিপ থার্ড ম্যানের কাছে ক্যাচ তুলে নেন তামিম। তবে সেটি তালুবন্দি করতে পারেননি সৈকত আলী।
এরপর থেকেই রীতিমত চার-ছয়ের বন্যা বইয়েছেন তামিম ও মায়ার্স। পাওয়ার প্লের ৬ ওভারেই ৭৩ রান তোলে বরিশাল। ২৫ বলে ৩ চার ও ৫ ছক্কার মারে বিপিএলে নিজের প্রথম ফিফটি তোলেন মায়ার্স। তবে পরের বলেই আউট হলে ভাঙে দ্বিতীয় উইকেটে তামিমের সঙ্গে তার ৫৪ বলে ৯৮ রানের দুর্দান্ত জুটি।
বাকি সময়ে তামিমের বিপরীতে সবার নজর প্লে-অফে বিপিএল খেলতে আসা ডেভিড মিলারের দিকে। তবে ১৩ বলে ১৭ রানের সাধারণ এক ইনিংস খেলে রোমারিও শেফার্ডের বলে ফেরেন এই বাঁহাতি ব্যাটার। বাকি পথ অনেকটা একাই সামলিয়েছেন তামিম। আসরে নিজের প্রথম ফিফটি হাঁকিয়ে অপরাজিত থেকে ম্যাচ শেষ করেন বাংলাদেশের সাবেক এই অধিনায়ক। এর আগে ৪৩ বলে ৯ চারের মারে ৫২ রান আসে তার ব্যাট থেকে।
এর আগে ব্যাট করতে নেমে জশ ব্রাউনের দলীয় সর্বোচ্চ ৩৪ ও অধিনায়ক শুভাগত হোমের ২৪ রান বাদে বাকি ব্যাটাররা ছিলেন যাওয়া-আসার মধ্যেই। লিগ পর্বে ছন্দে থাকলেও বাঁচা-মরার এই ম্যাচে হাসেনি তানজিদ তামিম, টম ব্রুসদের ব্যাট। সেখানে বরিশালের পক্ষে দুটি করে উইকেট পেয়েছেন মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন, কাইল মায়ার্স ও ওবেড ম্যাকয়।
চলমান অল-রাউন্ড পারফর্মে বল হাতে দুই উইকেটের পর ২৬ বলে ৫০ রানের ভরে ম্যাচ সেরার খেতাবও জেতেন মায়ার্স।
সংক্ষিপ্ত স্কোরকার্ড: (এলিমিনেটর)
চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স: ১৩৫/৯ (২০ ওভার) (ব্রাউন ৩৪, শুভাগত ২৪; সাইফউদ্দিন ২/২৮ , মায়ার্স ২/২৮)
ফরচুন বরিশাল: ১৩৬/৩ (১৪.৫ ওভার) (তামিম ৫২*, মায়ার্স ৫০; শেফার্ড ১/১৭)
ফল: বরিশাল ৭ উইকেটে জয়ী
ম্যাচসেরা: কাইল মায়ার্স