ক্রিকেট
নয়ডা টেস্ট–৪র্থ দিন
আফগানিস্তান–নিউজিল্যান্ড
সকাল ১০টা, ইউরোস্পোর্ট
ক্যারিবিয়ান প্রিমিয়ার লিগ
সেন্ট লুসিয়া–সেন্ট কিটস
আগামীকাল ভোর ৫টা, স্টার স্পোর্টস ২
টেনিস
ডেভিস কাপ
সকাল ৯টা, সনি স্পোর্টস টেন ২
ক্রিকেট
নয়ডা টেস্ট–৪র্থ দিন
আফগানিস্তান–নিউজিল্যান্ড
সকাল ১০টা, ইউরোস্পোর্ট
ক্যারিবিয়ান প্রিমিয়ার লিগ
সেন্ট লুসিয়া–সেন্ট কিটস
আগামীকাল ভোর ৫টা, স্টার স্পোর্টস ২
টেনিস
ডেভিস কাপ
সকাল ৯টা, সনি স্পোর্টস টেন ২
ভারতের সামনে অপেক্ষা করছে ব্যস্ত এক মৌসুম। বাংলাদেশের বিপক্ষে জোড়া টেস্ট দিয়ে শুরু, এরপর নিউজিল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজে ৮টি টেস্ট খেলবে রোহিত শর্মার দল। তবে রোহিত বাংলাদেশের বিপক্ষে এই সিরিজকে ওই সব সিরিজের প্রস্তুতির মঞ্চ হিসেবে দেখতে নারাজ।
চেন্নাইতে আজ তিনি মুখোমুখি হয়েছিলেন সংবাদ মাধ্যমের। সেখানে রোহিত বলেন, ‘দেশের জন্য যখন খেলছেন, তখন প্রত্যেকটা ম্যাচ সমান গুরুত্বপূর্ণ। এটা অস্ট্রেলিয়া সিরিজের পোশাকি মহড়া নয়। বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের জন্য পয়েন্ট দরকার আমাদের। মৌসুমটাও ভালোভাবে শুরু করা দরকার।’
বাংলাদেশের বিপক্ষে সিরিজেই আপাতত মনোযোগটা আটকে রাখতে চান রোহিত। দূরের ভাবনাটা দূরে ঠেলে রাখছেন তিনি ও তার দল। তার কথা, ‘আমার দলের মনোযোগ হচ্ছে বাংলাদেশ সিরিজে। আমরা অনেক দূরে মনোযোগ দিচ্ছি না।’
ঘরের মাঠে সবশেষ সিরিজটা ভারত হেরেছিল সেই ২০১২ সালে। সেবার ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ২-১ ব্যবধানে হেরেছিল। এরপর থেকে টানা ১৭টা সিরিজ জিতেছে দলটা। এ সময় ৫১ টেস্টের ৪টিতে হেরেছে মাত্র। তবে রোহিত সতীর্থদের সতর্ক করে দিলেন, তাদের যেন আত্মতুষ্টি পেয়ে না বসে।
তার কথা, ‘আমরা অনেক লম্বা সময়ের পর আবারও টেস্টে নামছি। যখন এটা শুরু হবে, আমাদের দেখতে হবে আমরা কোথায় দাঁড়িয়ে আছি। সেখান থেকে আগে বাড়তে হবে।’
শেষ কয়েক বছরে পেস আক্রমণে বেশ ভালো করেছে বাংলাদেশ। পাকিস্তান সফরে দ্বিতীয় টেস্টটা বাংলাদেশকে জিতিয়েছেন পেসাররাই। এমন সাফল্য বাংলাদেশকে টেস্টেও বেশ ফল দিচ্ছে। বর্তমানে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের চতুর্থ স্থানে আছে নাজমুল হোসেন শান্তর দল।
শেষ কয়েক বছর ধরে এমন সাফল্যের রহস্য কী? সে প্রশ্নের উত্তর নানা জন নানা ভাবে দিয়েছেন। তবে হাথুরু জানালেন, এই প্রশ্নের উত্তর লুকিয়ে আছে দূর অতীতে।
তবে তার আগে বর্তমানের প্রশংসা করতে ভুললেন না হাথুরু। বিশেষ করে নাহিদ রানার ভূয়সী প্রশংসা করলেন কোচ। বললেন, ‘ফিয়ার ফ্যাক্টরটাই পার্থক্য গড়ে দিয়েছে। আমি মনে করি বল যখন ১৫০ কিমি গতিতে আসে, এটার প্রতিক্রিয়া দেখাতে স্বাভাবিকভাবেই মানুষের কিছু সময় লাগে। এটা আপনার প্রতিক্রিয়া আর সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতাকে চ্যালেঞ্জ করে। আপনার দলে যদি কেউ ওই গতিতে বল করতে পারে, বিষয়টা আপনাকে অবশ্যই বাড়তি সুবিধা দেয়।’
তিনি আরও যোগ করেন, ‘নাহিদের বিশেষত্বটা হচ্ছে, সে ১৪৫ কিমি গতিতে টানা বল করে যেতে পারে। কিন্তু ক্রিকেটটা সে কম খেলেছে, তাই আমাদের তাকে দেখে শুনে রাখতে হবে। পিচ, পরিস্থিতি, কন্ডিশন ব্যতিরেকে আপনাকে একটা সুবিধা দিচ্ছে, বিশেষ করে যখন টেল এন্ডাররা আসছে তখন প্রতিপক্ষের মনে ভয় ধরিয়ে দিচ্ছে, তাদের দ্রুত অলআউট করতে সাহায্য করছে।’
এরপরই হাথুরু জানালেন নিজের অভিমতটা। তার চোখে শেষ কয়েক বছরে বিসিবি বেশ কিছু উদ্যোগ নিয়েছিল, যা এখন ফল দিচ্ছে বাংলাদেশকে। তিনি বলেন, ‘এটা রাতারাতি হয়ে যায় না। এর আগের কোচেরা আমার আগে অনেক কাজ করেছেন, এমনকি বোর্ডও বেশ কিছু প্রক্রিয়া শুরু করেছে ফাস্ট বোলারদের জন্য। আমি জানি ঘরোয়া ক্রিকেটে বেশ কিছু নিয়ম ছিল যেমন, পিচে ঘাস থাকতে হবে, বল বদলে ফেলা হয়েছিল। আমার মনে হয় এই ধরনের বিষয়গুলো ফাস্ট বোলারদের তাদের খেলাটা উপভোগের সুযোগ করে দিয়েছে, সাফল্য পাইয়ে দিয়েছে। আমাদের দেশেও অনেক ফাস্ট বোলার আছে, আসলে আমাদের সেরা বোলারকেই তো আমরা ইনজুরির কারণে আনতে পারিনি। সবাই যখন ফিরে আসবে, তখন দেখবেন আমাদের ফাস্ট বোলিংয়ের গভীরতা কতোটুকু।’
গোটা দলের সবাই অনুশীলন করছেন চেন্নাইতে। ম্যাচের ৪৮ ঘণ্টা আগে পরিস্থিতিটা এমন ‘সিরিয়াস’ই তো হওয়ার কথা। কিন্তু এই অনুশীলন সেশনে সবাই হাজির হননি। খুব পরিচিত একজনকে দেখা যাচ্ছে না। তিনি সাকিব আল হাসান।
সাকিব দলের সঙ্গে যোগ দেওয়ার কথা ছিল গতকাল সোমবার। কিন্তু আজ মঙ্গলবার পেরিয়ে গেলেও সাকিবের দেখা পায়নি বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। তার কারণ হচ্ছে তার ভিসা জটিলতা। এখনও ভারতের ভিসা হাতে পাননি সাকিব। আর ভিসা না পাওয়াতে তার দলের সঙ্গে চেন্নাইতে যোগ দেওয়ার উপায়ও নেই। বিষয়টা বার্তা২৪কে জানিয়েছে বাংলাদেশ দলের একটি সূত্র।
ম্যাচের ৪৮ ঘণ্টা আগেও দলের সবচেয়ে বড় তারকাকে না পেলেও বাংলাদেশ ম্যানেজমেন্ট তাকে নিয়ে ভাবছে না খুব একটা। নামটা যে সাকিব আল হাসান! পাকিস্তান সিরিজের পর থেকে সাকিব ছিলেন কাউন্টি ক্রিকেটে, সেখানে সারের হয়ে খেলেছেন, ২ ইনিংসে ৯ উইকেটও পেয়েছেন। তাই বোলিংয়ের ধার কমেনি, তা বোঝাই যাচ্ছে। সাকিবের পারফর্ম্যান্স নিয়ে তাই নির্ভার ম্যানেজমেন্ট।
আরও একটা বিষয় যোগ করতে পারেন এখানে। সাকিবের অভিজ্ঞতা। আইপিএলে বহু মৌসুম খেলেছেন, যার ফলে ভারত সাকিবের কাছে একেবারে হাতের উল্টোপিঠের মতোই চেনা। সঙ্গে যোগ করুন সাকিবের দ্রুত মানিয়ে নেওয়ার ক্ষমতাকেও। এতসব কিছুর মিশেলে সাকিবকে পরে পেলেও তাই টিম ম্যানেজমেন্ট তাকে নিয়ে খুব একটা দুশ্চিন্তায় নেই।
সাকিবের ওপর টিম ম্যানেজমেন্টের অগাধ আস্থা। এবার সাকিব তা ম্যাচে পুষিয়ে দিতে পারলেই হয়!
বাংলাদেশের টেস্ট ইতিহাসের অনেক বড় বড় অর্জন এসেছে কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহের হাত ধরে। তিনি দুই দফায় কোচের কাজ করেছেন, দুই দফাতেই তিনি টেস্টে সফলতা এনে দিয়েছেন বাংলাদেশকে। সবশেষ পাকিস্তান সফরে এল এ সাফল্য। এবার তিনি জানালেন, ভারতের বিপক্ষেও ভালো ছন্দটা ধরে রাখতে চেষ্টা করবে বাংলাদেশ।
তিনি আজ সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজটা আমাদের অনেক আত্মবিশ্বাস দিচ্ছে। তবে ওই সিরিজের ফলাফল নয়, যেভাবে আমরা খেলেছি, বিশেষ কিছু পরিস্থিতি সামাল দিয়েছি, সেটা আত্মবিশ্বাস দিচ্ছে। আমরা দুই ম্যাচেই পিছিয়ে পড়েছিলাম। আমরা যেভাবে এরপর ম্যাচে ফিরে এলাম, ভিন্ন ভিন্ন সময়ে ভিন্ন ভিন্ন খেলোয়াড় এসে হাল ধরেছে। এই সিরিজে আমাদের বিশ্বাসটা বেড়ে গেছে অনেক। আমি মনে করি এটা বাংলাদেশের ইতিহাসের সবচেয়ে পরিপূর্ণ দল।’
কেন পরিপূর্ণ দল, সেটাও পরিষ্কার জানিয়ে দিলেন কোচ হাথুরু। তিনি বলেন, ‘আমাদের বেশ ভালো কিছু ফাস্ট বোলার আছে। আমাদের স্পিন আক্রমণ বেশ অভিজ্ঞ। আর এরপর ব্যাটিং, আমাদের ব্যাটিংয়ের গভীরতা আছে বেশ, কারণ দুটো, এক আমাদের দুই স্পিনার আছেন যারা প্রকৃত ব্যাটার যাদের টেস্ট সেঞ্চুরি আছে আর আমাদের উইকেট কিপাররাও আমাদের মূল ব্যাটার। তো এই সিরিজে আমাদের দলটা বেশ ভালো। এটা আমাদের আত্মবিশ্বাস দিচ্ছে যে আমরা এবার এই সিরিজে বেশ প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ক্রিকেট খেলতে পারব।’
পরিপূর্ণ দল, সেরা ছন্দে থাকা দল নিয়েও যে ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশই আন্ডারডগ, সেটা মনে করিয়ে দিতে ভোলেননি কোচ হাথুরু। তার কথা, ‘চাপ হচ্ছে একটা সম্মানের মতো বিষয়। মানে হচ্ছে, এটা আমাদের আরও বেশি বিশ্বাসী করে তোলে, কোনো একটা লক্ষ্যের পেছনে ছুটতে অনুপ্রেরণা দেয়। তবে এরপরই আমাদেরকে বুঝতে হবে আমাদের অবস্থানটা কোথায়, আমাদের শক্তি আর দুর্বলতা কোথায়, আমরা সেটা ভালোভাবেই বুঝি। তবে আমরা খেলছি বিশ্বের সেরা দলের বিপক্ষে খেলতে, এটাও আমাদের বেশ অনুপ্রেরণা যোগাচ্ছে। ভারতে আসা, তাদের বিপক্ষে খেলাটা এখনকার দিনে বেশ চ্যালেঞ্জের বিষয়। তো সেরাদের বিপক্ষে খেলার বিষয়টা মাথায় রাখলেই নিজেদের অবস্থানটা পরিষ্কার হয়ে যায়।’