কালো স্ট্র্যাপ কেন কামড়ালেন সাকিব?
চেন্নাই টেস্টে ব্যাট করতে নামলেই সাকিব আল হাসানের একটা বাড়তি কাজ করতে দেখা গেছে। গলার কাছ থেকে একটা কালো স্ট্যাপ এনে তিনি কামড়ে ধরছেন, তারপর ব্যাট করছেন। আর তাতেই প্রশ্ন উঠে যাচ্ছে, এই কালো স্ট্র্যাপ কামড়ে ধরার রহস্য কী?
এই কাজটা সাকিব করছেন ব্যাটিংয়ের সময় মাথার অবস্থান ঠিক রাখার জন্য। তার মেন্টর মোহাম্মদ সালাউদ্দিন আর বিসিবির প্রধান চিকিৎসক দেবাশীষ চৌধুরীর অভিমত তাই। ব্যাটিংয়ের সময় তার মাথা নড়ে যাচ্ছে অনেক দিন ধরে, বিষয়টা থেকে রেহাই পেতে সাকিব এই পদ্ধতি বেছে নিয়েছেন। এর আগে একই কারণে নেক ব্রেস পরে ব্যাটিং অনুশীলন করেছেন।
গেল বছর বাড়তি চাপের জন্য সাকিবের চোখে সমস্যা দেখা দেয়। চেন্নাই, লন্ডন, ঢাকা, সিঙ্গাপুরের অপথালমলজিস্টরা তাকে জানান তার সেন্ট্রাল সেরাস কোরিওরেটিনোপ্যাথি হয়েছে। যার ফলে রেটিনার নিচে পানি জমে, আর দৃষ্টিশক্তি বিঘ্নিত হয়।
এই সমস্যার কারণে বল পরিষ্কার দেখতে মাথার পজিশন বদলাতে হয়েছে, যার কারণে সাকিবের টেকনিকেও সমস্যা তৈরি হয়েছে। তা ঠিক করতেই ঘণ্টার পর ঘণ্টা সময় ব্যয় করেছেন তিনি।
দেবাশীষ জানান, ‘সে স্ট্র্যাপ পরে খেলতে নামছে, এটা সম্পূর্ণ তার মস্তিষ্কপ্রসূত। আমরা কিছু বলিনি। ব্যাটিংয়ের সময় মাথার পজিশন ঠিক রাখতে এই কাজটা করেছে সে। সে নেক ব্রেস দিয়ে কাজ চালাতে চেয়েছে এর আগে। এই স্ট্র্যাপটাও ওই ট্রায়াল অ্যান্ড ইরোরেরই অংশ। সে এটা নিয়ে নেটে চেষ্টা করেছে, শ্যাডো প্র্যাকটিসেও এটা ব্যবহার করেছে সে।’
সালাউদ্দিন সাকিবের নতুন এই কায়দার বিষয়ে বলেন, ‘আমাদের সবার একটা ডমিনেন্ট চোখ আছে। যখন সেটা তাকে বল দেখতে বাধা দেবে, বিষয়টা গোলমেলে হতে পারে।’ সেটা সামলাতে এই রাবার স্ট্র্যাপের আশ্রয় নিচ্ছেন সাকিব। শিষ্যের এই উদ্ভাবনে বেশ খুশি সালাউদ্দিন। বলেন, ‘এটা তার জন্য ভালো, আমি তাকে এটা করতে বলিনি। সে নিজে এটা বের করেছে, গেল রাতে ও আমাকে ফোনে বলল বিষয়টা। সে এটা গলার কাছে বাঁধে, তারপর এটা কামড়ে ধরে যেন এটা তার মাথাটাকে স্থির রাখতে পারে। যখন মাথা ঘাড় ঘুরে যায়, তখন চোখও নড়ে, ব্যাটারের জন্য বিষয়টা ভালো কিছু নয়।’
তবে বিষয়টা সাকিবকে সুফল দিচ্ছে কি না, এটা একমাত্র সাকিবই বলতে পারবেন, জানালেন দেবাশীষ। তিনি বলেন, ‘এটা তার ব্যক্তিগত বিষয়। সে বুঝবে বিষয়টা তার জন্য কাজ করছে কি না। আমার মনে হয় এটা যতক্ষণ না তার সাস্থ্যের ক্ষতি করছে, এটা খারাপ না।’
চোখের সমস্যার কারণে গেল সপ্তাহে চেন্নাইতে তিনি চোখের ডাক্তারও দেখিয়েছেন সাকিব। সেখান থেকে তাকে জানানো হয়েছে, তার এই সমস্যা ধীরে ধীরে উন্নতির দিকে যাচ্ছে। যার ফলে সমস্যাও কমে আসবে আসছে সময়ে।