সাব্বিরের গড় সাড়ে ১৩, নাসিরের ৭!
বঙ্গবন্ধু বিপিএলের প্রায় অর্ধেক পথ শেষ।
কিন্তু এখনো এই টুর্নামেন্টে সাব্বির রহমান, নাসির হোসেন, ইয়াসির আলী পথ হাতড়ে বেড়াচ্ছেন। এই তিনজনের দলে মূল পরিচয় ব্যাটসম্যান। মূলত মিডলঅর্ডারে খেলেন। কিন্তু নিজেদের ছয় ম্যাচ শেষে এখন পর্যন্ত এই তিনজনে ব্যাট হাতে দলের মিডলঅর্ডারে পুরোপুরি ‘ডিসঅর্ডার’!
পারফরমেন্স তো তাই জানাচ্ছে।
কুমিল্লা ওয়ারির্য়সের ব্যাটসম্যান সাব্বির রহমান পেছনের ৬ ম্যাচের ছয় ইনিংসে সাকুল্যে রান করেছেন মাত্র ৮২। ম্যাচ প্রতি রান গড় ১৩.৬৬। এর মধ্যে এক ম্যাচেই আবার তার আছে ৪৯। অর্থাৎ বাকি পাঁচ ম্যাচে তার যোগাড় ৩৩! ছয় ম্যাচের একটি বাদে বাকি প্রতিটি ম্যাচেই সাব্বির রহমান মানেই এমন দৃশ্য- আউট হয়ে ফিরছেন, আর ব্যাটে দিতে তাকাচ্ছেন। যেন সব দোষ ঐ বেচারা ব্যাটের! চলতি টুর্নামেন্টে দেশি-বিদেশি ক্রিকেটারদের অনেকেই রান পাচ্ছেন। দলকে জেতাচ্ছেন। কিন্তু সাব্বির রহমান ব্যাট করতে নেমে দলকে বিপদ থেকে উদ্ধারের বদলে দলের সমস্যা আরও বাড়াচ্ছেন।
১৩.৬৬ গড়ের রান কোন মিডলঅর্ডার ব্যাটসম্যানের হতে পারে না। কুমিল্লা ওয়ারির্য়স টুর্নামেন্টের সামনের ম্যাচগুলোতে সাব্বির রহমানের বিকল্প খুঁজতে চাইলে অবাক হওয়ার কিছু নয়।
সর্বশেষ জাতীয় দল থেকে বাদ পড়া সাব্বির রহমানের সামনে নিজেকে প্রমাণের সুযোগ এই বিপিএলে। কিন্তু টুর্নামেন্টের প্রথম ধাপে ব্যাট হাতে তার যে বাজে পারফরমেন্স তাতে শেষ ধাপে একাদশে নামার সুযোগ পেলেই নিজেকে ভাগ্যবান ভাবতে পারেন সাব্বির!
সাব্বিরের চেয়ে আরো বাজে অবস্থা নাসির হোসেনের। জাতীয় দলে নেই নাসির বছর কয়েক ধরে। আর্ন্তজাতিক ক্রিকেটে আবারও ফিরে আসার তার সম্ভাবনার পথও ক্রমশ ক্ষীণ। আলোচনায় থাকতে পারেন এমন কোন পারফরমেন্স তো দুরের কথা। বরং নাসির হোসেনের নামই সবাই ভুলে যাচ্ছেন।
ব্যাটিংয়ে নাসির হোসেন এখন অনেক দুরের ছায়া যেন! চলতি টুর্নামেন্টে ৬ ম্যাচে তার মোট রান ৩৯! সর্বোচ্চ ২৪। গড় রান ৭.৮০! স্ট্রাইকরেট মাত্র ৮২.৯৭। এই স্ট্রাইকরেট নিয়ে তো ওয়ানডে ক্রিকেটেই টিকে থাকা যায় না। আর নাসিরের এই স্ট্রাইকরেট টি-টোয়েন্টিতে। মাঠে ফিল্ডিংয়েও নাসিরের নড়াচড়ায় সেই চটপটে ভাব নেই। আসল্য ভর করেছে।
সম্ভাবনাময় ব্যাটসম্যানদের তালিকা করলে সেখানে ইয়াসির আলীর নাম লেখেন অনেকে। কিন্তু এবারের বিপিএলে সেই অনেকের মর্যাদা রাখতে পারছেন না ইয়াসির আলী। ৬ ম্যাচে তার সঞ্চয় মাত্র ৫৪ রান। এর মধ্যে আবার এক ম্যাচেই তিনি করেছেন ৩০। ৬ ম্যাচের মধ্যে আবার দুটিতেই শূন্য রানে আউট।
চলতি টুর্নামেন্টের ২০ ম্যাচ শেষে ব্যর্থ ব্যাটসম্যানদের তালিকায় সৌম্য সরকারের নামও রয়েছে। কুমিল্লা ওয়ারির্য়সের এই ব্যাটসম্যান ব্যাটিং অর্ডার বদলেও রান ফেরাটা বদলাতে পারেননি। ৬ ম্যাচে সৌম্যের যোগাড় ১৪৭ রান। তবে বল হাতে ৮ উইকেট শিকার করায় সৌম্য নিজের ব্যাটিং দুরবস্থা ঢেকে রাখার একটা সুযোগ পাচ্ছেন।
বঙ্গবন্ধু বিপিএলে চট্টগ্রাম পর্ব শেষে শীর্ষ রানের তালিকায় থাকা প্রথম দশ ব্যাটসম্যানের মধ্যে ছয়জনই বিদেশি। শুরুর ৫০ জনের সেই তালিকায় সৌম্য সরকারের অবস্থান ১৬ নম্বরে। সাব্বির রহমানের স্থান ৩১। ইয়াসির আলী ৪১। নাসির হোসেন ৪৫ নম্বরে।
টুর্নামেন্টের বাকি সময় ব্যাটিংয়ে পাসমার্ক কি তুলতে পারবেন তারা?