রকিবুলের পর দ্বিতীয় বাংলাদেশি, তামিমের ট্রিপল সেঞ্চুরি
পাকিস্তান সফরের জন্য টেস্ট দল ঘোষণা হয়েছে শনিবার, ১ ফেব্রুয়ারি। সেদিনের বিকেলে তামিম ইকবাল মাঠ থেকে ফিরলেন অপরাজিত ২২২ রান নিয়ে। ট্রিপল সেঞ্চুরির স্বপ্ন নিয়ে ম্যাচের তৃতীয় দিন সকালে মাঠে নামলেন। লাঞ্চের পর সেই স্বপ্নও সফল হলো তার। ৪০ বাউন্ডারিতে ৪০৭ বলে প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটে নিজের প্রথম ট্রিপল সেঞ্চুরি পুরো করলেন তিনি।
বাংলাদেশের হয়ে প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটে ট্রিপল সেঞ্চুরির এটি দ্বিতীয় নজির। প্রথমটির মালিকের নাম রকিবুল হাসান। ২০০৬-০৭ মৌসুমে রকিবুল হাসান বাংলাদেশের প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটে ট্রিপল সেঞ্চুরির কৃতিত্ব গড়েন। রকিবুলের রান ছিল ৩১৩।
প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটে নিজের ৯০ নম্বর ম্যাচে এসে তামিম ইকবাল ট্রিপল সেঞ্চুরির দেখা পেলেন। শুধু পরিসংখ্যান নয়, খেলার ধরন এবং পারফরম্যান্সের ধারাবাহিকতা জানাচ্ছে তামিম ইকবাল নিঃসন্দেহে দেশের সর্বকালের সেরা ব্যাটসম্যান। তিন ফরমেটের ক্রিকেটেই দেশের হয়ে সবচেয়ে বেশি রান, সেঞ্চুরি, এমনকি হাফসেঞ্চুরিরও মালিক তামিম ইকবাল। সেই সাফল্যে আরো পরিপূর্ণ হলো প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটে এই ট্রিপল সেঞ্চুরির আনন্দে।
২২২ রান নিয়ে বাংলাদেশ ক্রিকেট লিগের (বিসিএল) এই ম্যাচের তৃতীয় দিন সকালে খেলতে নেমে তামিম ইকবাল কিছুটা সাবধানী কৌশল নিয়েই সামনে বাড়েন। অপরাজিত ২৭৯ রান নিয়ে লাঞ্চে যান। অর্থাৎ সকালের সেশনে তামিম করেন ৫৭ রান। লাঞ্চের পর যখন ব্যাট করতে নামেন তখন এই ম্যাচের একটাই আকর্ষণ এবং অপেক্ষা-কখন হবে তামিমের ট্রিপল সেঞ্চুরি?
লাঞ্চের পর সেই অপেক্ষা শেষ করতে বেশি সময় নিলেন না তামিম। শুভাগত হোমকে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে ২৯০ রানের ঘরে প্রবেশ করেন। খানিকবাদে মুস্তাফিজের বলে আরেকটি বাউন্ডারি তুলে নিয়ে তামিম নিজের রানকে নিয়ে যান ২৯৭ রানে। সেই ওভারের শেষ বলে একটি সিঙ্গেল নেন। ট্রিপল সেঞ্চুরি থেকে তামিমের দূরত্ব তখন মাত্র ২ রানের। শুভাগত হোমের পরের ওভারটি সাবধানে খেললেন তিনি। দিলেন মেডেন। অন্যপ্রান্ত থেকে আক্রমণে আসা মুস্তাফিজের ওভারের চার বল খেলে মাত্র ১ রান নিয়ে ২৯৯ রানে পৌঁছে যান তামিম। শুভাগত হোমের পরের ওভারের দ্বিতীয় বলে এক রান নিয়ে নিজের কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছে যান-ট্রিপল সেঞ্চুরি! ব্যাট উঁচিয়ে গ্যালারি থেকে উঠা হাততালি ও অভিনন্দনের জবাব দেন তামিম।
ম্যাচের দ্বিতীয় দিন শেষেই ইস্টজোনের অধিনায়ক মুমিনুল হকও তামিমের ট্রিপল সেঞ্চুরির অপেক্ষায় ছিলেন। মুমিনুল হকের সেই ইচ্ছেও পুরো করলেন তামিম। পাকিস্তানের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজেও তামিমের ব্যাট এমন সাফল্যের হাসি ছড়াবে-এখন সেই অপেক্ষায় বাংলাদেশের টেস্ট অধিনায়ক মুমিনুল হক।
বাংলাদেশের হয়ে প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটে ট্রিপল সেঞ্চুরির আশপাশ থেকে ঘুরে আসা ব্যাটসম্যানের সংখ্যাও কম নয়। নাসির হোসেন ২০১৮ সালে জাতীয় ক্রিকেট লিগে মাত্র ৫ রানের জন্য ট্রিপল সেঞ্চুরি মিস করেন। চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে রংপুর বিভাগের হয়ে বরিশাল বিভাগের বিপক্ষে ২৯৫ রানে আউট হন নাসির। মার্শাল আইয়ুব প্রথম শ্রেণীর এক ম্যাচে ২৮৮ রানে আউট হয়েছেন। প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটে মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতের সর্বোচ্চ রান ২৮২। শামসুর রহমানের ক্যারিয়ার সেরা স্কোর ২৬৭।