মিঠুনের ব্যাটে ফিফটি, দুইশ পেরোল বাংলাদেশ

  • স্পোর্টস ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

হাফসেঞ্চুরি তুলে নিলেন মোহাম্মদ মিঠুন, ছবি: সংগৃহীত

হাফসেঞ্চুরি তুলে নিলেন মোহাম্মদ মিঠুন, ছবি: সংগৃহীত

দুঃস্বপ্নের মতো শুরুর পর বাংলাদেশ দুইশ পেরোবে-ভাবা যায়নি। কিন্তু মোহাম্মদ মিঠুনের দৃঢ়তায় ঠিকই শেষ বিকেলে সম্মানজনক স্কোরের পথে সফরকারীরা। পাকিস্তানের বিপক্ষে রাওয়ালপিন্ডি টেস্টে হাফসেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন এই মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান।

তবে অন্য ব্যাটসম্যানরা তেমন লড়তে পারেননি। স্রোতের বিপরীতে উইকেটে লড়াই করে সম্ভাবনা জাগানো ইনিংস খেলার পথে হঠাৎ করেই পথ হারাচ্ছেন ব্যাটসম্যানরা। বড় ইনিংস খেলতে পারছেন না। যার মাশুল গুনছে দল।

বিজ্ঞাপন

চা বিরতির পর এ রিপোর্ট লেখার সময় সিরিজের প্রথম টেস্টে ১ম ইনিংসে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৮১ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ২২৯ রান। মোহাম্মদ মিঠুন ৫৯ রানে ব্যাট করছেন।

১৩৭ বলে হাফসেঞ্চুরি তুলেন মিঠুন। দেখে-শুনে ঠাণ্ডা মাথায় খেলছেন তিনি।

বিজ্ঞাপন

অথচ সম্ভাবনা জাগিয়েছিলেন অনেকেই। ষোল মাস পর টেস্ট খেলতে নেমেই বেশ দৃঢ়তা দেখালেন নাজমুল হোসেন শান্ত। মনে হচ্ছিল প্রত্যাবর্তনটা মনে রাখার মতো হবে। কিন্তু হলো না। লাঞ্চ থেকে ফিরেই আউট। প্রথম সেশনে দাপট দেখানো শান্ত দ্বিতীয় সেশনে আউট প্রথম ওভারে। মোহাম্মদ আব্বাসের অফ স্টাম্পের বেশ বাইরের বল খেলতে গিয়ে ক্যাচ দেন কিপার মোহাম্মদ রিজওয়ানের গ্লাভসে।

একইভাবে উইকেটে থিতু হয়ে ফিরে গেলেন মুমিনুল হক, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ও লিটন দাস।

আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের এই লড়াইয়ে দাপট পাকিস্তানেরই। সবুজে ছোঁয়া রাওয়ালপিন্ডি স্টেডিয়ামের উইকেটে পেস বোলারদের দিয়েই বাংলাদেশকে কাবু করছে পাকিস্তান।

শুক্রবার টেস্টের প্রথম দিন সকালে পথ হারায় বাংলাদেশ। টস হেরে ব্যাট করতে নেমে ২ ওভার শেষে ২ উইকেট হারিয়ে তোলে মাত্র ৩। দ্রুত ফিরেন দুই ওপেনার তামিম ইকবাল ও সাইফ হাসান। ইনিংসের প্রথম দুই ওভারে দুই ওপেনারকে হারানোর পর বাংলাদেশকে বিপর্যয় থেকে টেনে তুললেন মুমিনুল হক ও নাজমুল হোসেন শান্ত।

তাদের দৃঢ়তায় রাওয়ালপিন্ডি টেস্টে পথ খুঁজে পায় বাংলাদেশ। প্রথম দিনে প্রথম ঘণ্টায় ১৪ ওভারে ৩২ রান করে দল। জুটি যখন জমে উঠল তখনই মুমিনুলকে ফেরান শাহীন শাহ আফ্রিদি। ৫৯ বলে ৩০ রানে ফেরেন অধিনায়ক। সম্ভাবনা জাগিয়ে ফেরেন মুমিনুল। আফ্রিদির অফ স্টাম্পের বাইরের বলে কাভার ড্রাইভ করেন অধিনায়ক। কিন্তু ব্যাটের কানা ছুঁয়ে বল চলে যায় উইকেটকিপার মোহাম্মদ রিজওয়ানের গ্লাভসে।

বিদায়ের আগে শান্তর সঙ্গে গড়েন ৫৯ রানের জুটি। অভিষিক্ত শান্তও বেশ কিছুক্ষণ লড়লেন। হাফসেঞ্চুরির পথে ছিলেন তিনি। মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে নিয়ে পথ দেখাচ্ছিলেন। কিন্তু ১১০ বলে ৪৪ রান করে ফেরেন। মাহমুদউল্লাহও একইভাবে হতাশ করলেন। এই অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যানকে ফেরালেন শাহীন শাহ আফ্রিদি। ফেরার আগে করেন ৪৮ বলে ২৫।

লিটন দাসও একই পথের পথিক। তার ব্যাটেও রান এসেছে। মনে হচ্ছিল তিনি অন্তত লড়ে যাবেন। কিন্তু তার সম্ভাবনাময় ইনিংসের ইতি টানেন হারিস সোহেল। ৪৬ বলে ৩৩ তুলে ফিরে যান সাজঘরে।

এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই পথ হারায় বাংলাদেশ। প্রথম দুই ওভারেই ফিরে যান দুই ওপেনার। সাইফ হাসানের পর বিদায় নেন তামিম।

বাংলাদেশ দলকে পেস আক্রমণে বিপাকে ফেলার কৌশলে শুরুতেই সফল আজহার আলি। নাসিম শাহ, শাহিন শাহ আফ্রিদি আর মোহাম্মদ আব্বাসের গতি-বাউন্স-সুইংয়ে শুরুতেই হোঁচট বাংলাদেশের। টস হেরে ব্যাট করতে নেমে দলীয় সংগ্রহে ৩ রান যোগ হতেই উইকেট হারায় সফরকারীরা। এরপর একই রানে আরেকটি উইকেটের পতন!

রাওয়ালপিন্ডি স্টেডিয়ামে আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের এই লড়াইয়ে টেস্ট অভিষিক্ত সাইফ হাসান ফিরলেন শূন্য রানে। তামিম ইকবালের সঙ্গে ইনিংস উদ্বোধন করতে নেমে দুঃস্বপ্নের অভিষেক হলো সাইফের। ইনিংসের প্রথম ওভারে কোনো রান না করেই শাহিন শাহ আফ্রিদির বলে কুপোকাত তিনি। এরপর মোহাম্মদ আব্বাস ফেরান তামিমকে। এই ওপেনার করেন মাত্র ৩ রান।

সিরিজের প্রথম টেস্টের একাদশে ফিরলেন নাজমুল হোসেন শান্ত আর অভিজ্ঞ পেসার রুবেল হোসেন। ছিটকে গেছেন সৌম্য সরকার, আল-আমিন হোসেন ও নাঈম হাসান।

দীর্ঘ ১৬ বছর পর ফের পাকিস্তানের মাঠে টেস্ট খেলতে নেমেছে বাংলাদেশ। পাকিস্তানের মাঠে এ পর্যন্ত চারটি টেস্ট খেলেছে টাইগাররা। হেরেছে সব কটিতেই। সব মিলিয়ে দেশটির বিপক্ষে ১০ টেস্টে লড়েছে টিম টাইগার্স। কিন্তু ৯টিতে হার দেখেছে লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। একটি টেস্ট ড্র।

রাওয়ালপিন্ডির মাঠে এর আগে কখনোই টেস্ট খেলেনি বাংলাদেশ। অবশ্য এই মাঠের ইতিহাস স্বস্তি দিচ্ছে না আজহার আলির দলকেও। সর্বশেষ ২৩ বছরে এখানে টেস্ট জিততে পারেনি স্বাগতিকরা। এই ম্যাচে পাকিস্তান একাদশে আছেন লেগ স্পিনার ইয়াসির শাহ। বোলিং আক্রমণে ইয়াসিরের সঙ্গী তিন পেসার মোহাম্মদ আব্বাস, নাসিম শাহ ও শাহিন শাহ আফ্রিদি! তাদের বোলিং তোপেই সর্বনাশ টাইগারদের।