মার্টিন বিক্রেমাসিংহের বাড়িতে নিমন্ত্রণ



এম. এম. কায়সার, স্পোর্টস এডিটর, বার্তা২৪.কম
মার্টিন বিক্রেমাসিংহের আদি নিবাস ও লোকজ জাদুঘর

মার্টিন বিক্রেমাসিংহের আদি নিবাস ও লোকজ জাদুঘর

  • Font increase
  • Font Decrease

লা ভেরান্দা ডি সেরেনা!

কটেজের নাম শুনেই প্রেমে পড়ে গেলাম। কাঠের সিঁড়ি বেয়ে দোতলায় উঠার সময় হঠাৎ কোত্থকে আসা পানির ছিটে এসে শরীরে লাগল। চমকে উঠে পেছন ফিরতেই দেখি-ওমা, নিচেই সমুদ্র, এ যে তারই জলছাপ!

-ওয়েল কাম ড্রিঙ্ক, নাকি?

কটেজের মালিক চান্দানা আমার কথায় হো হো হাসিতে ফেটে পড়লেন! গলের লা ভেরান্দা ডি সেরেনা কটেজ এভাবেই স্বাগত জানাল। 

মার্টিন বিক্রেমাসিংহের বাড়িতে  নিয়ে গেলেন এম. এম. কায়সার

হোটেলের দেয়ালে আছড়ে পড়ছে সমুদ্রের পানি। জলের হালকা বিন্দু বিন্দু ছোঁয়া দিয়ে যাচ্ছে দোতলার বারান্দায়! কটেজের গা ঘেঁষে কয়েক সারিতে দাঁড়ানো নারিকেল গাছ। হেলে পড়া সেই গাছের শাখার একাংশ বাতাসে দোল খেয়ে দোতলার কার্নিশের সঙ্গে যেন লুকোচুরি খেলছে। গাছের ডালের গর্ত থেকে কাঠবেড়ালী একবার মাথা বের করছে, সামনে কাউকে দেখতে পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে আবার ভেতরে মুখ লুকিয়ে ঢুকে যাচ্ছে। কাঠবেড়ালীর এই লুকোছাপা দেখে ছোটবেলার টিলো এক্সপ্রেস খেলা মনে পড়ে গেল!

আপনি হোটেলের বারান্দায় আধশোয়া হয়ে আছেন ইজি চেয়ারে। সামনে চোখ যতদূর যায় ফেনিল সমুদ্র। জেলেদের মাছধরার ইঞ্জিনচালিত বড় নৌকা ভাসছে। বাতাস একটু বেশি হতেই সমুদ্রে ঢেউ এর তোড় বাড়ছে। দক্ষ সাঁতারু হয়ে সেই তরঙ্গমালা ফিনিসিং লাইন স্পর্শ করছে কটেজের নিচের শক্তপোক্ত দেয়ালে, শেষ ধাক্কায় আছড়ে পড়ছে লাগোয়া নারিকেল গাছের গোড়ালির অংশে। আর সেই শক্তিতে তৈরি জলকণা সমর্পিত হওয়ার ভঙ্গিতে গায়ে-গালে আদরের ছাঁচ বুলিয়ে দিচ্ছে!

পেছনে সমুদ্রের ঢেউ। কটেজের লনে আড্ডা-আনন্দ। সুন্দর ছবির জায়গাটা লা ভেরান্দা ডি সেরেনা কটেজের একাংশের!

এমন সমুদ্র সুখ নিতে চাইলে গলে আপনার জন্য পারফেক্ট ঠিকানা লা ভেরান্দা ডি সেরেনা। হোটেল বললেও এটি এক অর্থে কটেজ।

কটেজ মালিক চান্দানা নিজেই বোর্ডারদের সবার দেখাশোনা করেন। বয়সে তরুণ। প্রতিদিন খোঁজ নেন। কোনো সমস্যা হচ্ছে কিনা- দেখা হওয়া মাত্রই প্রতিদিন তার প্রথম প্রশ্ন এটাই।

সকালে নাস্তার টেবিল আর রাতে ফেরার সময় কাউন্টার থেকে চাবি নেওয়া- এই দুই সময় ছাড়া চান্দানার সঙ্গে আমার আর দেখা হয় না।

-তুমি কি সারাদিন ক্রিকেট মাঠেই কাটাও। গলের আর কোথায়ও যাও না?’

স্টেডিয়াম থেকে রাতে কটেজে ফেরার পর রুমের চাবি চাইতে চান্দানার প্রশ্ন। প্রতিদিন সকালে ব্যাগ কাঁধে নিয়ে বেরিয়ে যাই। দিনের খেলা শেষে ফিরতে ফিরতে রাত। সকাল থেকে রাত অব্দি আমার কাজটা ঠিক কি তা জানার কৌতূহল থেকেই চান্দানার এই প্রশ্ন।

-যাব, কিভাবে বল? সকাল ১০টায় খেলা শুরু। শেষ হয় সন্ধ্যায়। তিন-চারটা রিপোর্ট লিখে কটেজে ফিরতে ফিরতে সেই রাত ১০টা। একে তো টানা পরিশ্রম। রাতের খাওয়ার পর আর পা চলে না। আলো আতশবাজি ও উদ্দাম মিউজিকের উনাবাটুনা বিচের নাইট আউট হাতছানি দিলেও পরদিন সকালে আবার ঘুম থেকে উঠতে হবে এই চিন্তার কাছে সেই স্বপ্নের আত্মসমর্পণ!

আমার সূচি দেখে চান্দানা সহানুভূতি জানাল। সেই সঙ্গে পরামর্শও দিলো।

 লেখক, ইতিহাসবিদ, ঔপন্যাসিক, চিন্তাবিদ মার্টিন বিক্রেমাসিংহে

-তুমি তো সকালটা কাজে লাগাতে পার। কোগ্গালা লেক ঘুরে আসতে পার। স্পিডবোটিংও করা যায়। আর হ্যাঁ, ওখানে গেলে অবশ্যই মার্টিন বিক্রেমাসিংহের বাড়ি ঘুরে এসো। একটা ফোক জাদুঘরও আছে। শ্রীলঙ্কার লোক ইতিহাসের সঙ্গে পরিচিত হতে চাইলে ওটা তোমার অনেক কাজে লাগবে।’

শ্রীলঙ্কায় এর আগে দুবারের সফরে লেখক, ইতিহাসবিদ, ঔপন্যাসিক, চিন্তাবিদ মার্টিন বিক্রেমাসিংহের নাম জেনেছিলাম। কিন্তু এর আগে কোনোবারই গলে আসা হয়নি। এবার শ্রীলঙ্কা সফরই শুরু করেছি গল থেকে। তাই আর আফসোস নিয়ে ফিরতে চাইলাম না।

ম্যাচের তৃতীয় দিনের সকালে মাঠে যাবার আগে সকাল ৮টায় উঠে কোগ্গালা রওয়ানা হলাম। গুগল ম্যাপ নির্দেশনা দিচ্ছে- আমার কটেজ থেকে কোগ্গালা লেকের দূরত্ব এগার কিলোমিটার। তবে কোগ্গালা লেকে গিয়ে স্পিডবোটে করে পুরো লেক ঘুরে দেখতে গেলে খেলা শুরুর আগে মাঠে ফেরা যাবে না। তাই স্পিডবোটে লেক ঘোরার পরিকল্পনা বাদ। শুধু মার্টিন বিক্রেমাসিংহের আদি নিবাস ও লোকজ জাদুঘর দেখে আসার সিদ্ধান্ত নিলাম।

কিন্তু এখানে টুকটুক থেকে নেমে পড়লাম নতুন সমস্যায়। ঘড়িতে তখনো সকাল ৯টা বাজেনি। গার্ড জানাল- জাদুঘরের দরজা ৯টার আগে খুলে না। ২০০ রুপি দিয়ে টিকিট কেটে ৯টার অপেক্ষায় থাকলাম। ৯টা বাজার মিনিট পাঁচেক আগে গাড়ি থেকে এক ভদ্রলোক এসে জাদুঘরের সামনে নামলেন।

আমাকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে নিজেই এগিয়ে এসে পরিচয় দিলেন জাদুঘরের প্রশাসক জে. জয়ানেত্তি। বাংলাদেশি মিডিয়া শুনে ভীষণভাবে আপ্যায়নে ব্যতিব্যস্ত হয়ে পড়লেন জয়ানেত্তি। টেলিফোনে অন্যপ্রান্তে গুরুত্বপূর্ণ কারো সঙ্গে কথা বলার পর আমার হাতে থাকা টিকিট চেয়ে নিলেন। জানালেন- ‘প্লিজ, বাংলাদেশি সাংবাদিক, এতদূর থেকে এসেছেন- আপনি আমাদের মেহমান। টিকিট লাগবে না। আজ আপনি মার্টিন বিক্রেমাসিংহের বাড়িতে অতিথি।’

ভদ্রলোকের সঙ্গে জোরাজুরি করা গেল না। ২০০ রুপি ফেরত নিতেই হলো।

লোকজ জাদুঘরের এক ঝলক

লোকজ জাদুঘরের বড় ঘরে যাবার আগে পাশের দেয়াল জুড়ে মার্টিন বিক্রেমাসিংহের লেখা এবং বিশ্বের বিভিন্ন ভাষায় অনূদিত বইয়ের মলাট শোভা পাচ্ছে। শিশু-কিশোরদের জন্য লেখা তার জনপ্রিয় উপন্যাস মাদল ডুভা (ম্যানগ্রোভ আইল্যান্ড) ইংরেজি, বুলগেরিয়ান, রুমানিয়ান, ডাচ, ফ্রেঞ্চ ও জাপানি-এই ছয় ভাষায় অনূদিত হয়েছে। পাশের ছোট কাউন্টারে সুলভ মূল্যে বিক্রমাসিংহের বই বিক্রিও হচ্ছে। অনেক বইয়ের তালিকা থেকে ইংরেজিতে অনূদিত ‘সর্ট স্টোরিস অব বিক্রেমাসিংহে’ বইটি সংগ্রহে রাখলাম।

লোকজ জাদুঘরে পুরোটা সময় জয়ানেত্তি সঙ্গে রইলেন। প্রতিটি সেলফের পাশে গিয়ে শ্রীলঙ্কার বিভিন্ন লোকজ শিল্প, বাদ্য-বাজনা, কৃষিকাজের জন্য প্রায় শতাব্দি পুরনো লাঙ্গল, জোয়াল, মাছ ধরার জাল, ঝুড়ি, কামারের হাপর- ঐতিবাহী সবকিছুর সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন। কবে কোথা থেকে প্রাচীন এসব দ্রব্যাদি এই জাদুঘরে এসেছে- তার সংক্ষিপ্ত একটা বর্ণনা দিয়ে গেলেন একেবারে মুখস্থ কায়দায়।

জাদুঘরের এক কোনায় অনেক মুখোশ দেখে এগিয়ে গেলাম। শ্রীলঙ্কায় যাচ্ছি শুনে সতীর্থ সাংবাদিক মাসুদ পারভেজ মুখোশ নিয়ে আসার অনুরোধ করেছিলেন।

তোমার এখানে রাবণের মুখোশ নেই?

সায় দেওয়ার ভঙ্গিতে মাথা দুলিয়ে জয়ানেত্তি জানালেন- আসলে এখানে সুপারন্যাচারাল এবং ন্যাচারাল উভয় ধরনের মুখোশই রয়েছে। এসব সুপারন্যাচারাল মুখোশ পরে নাটকের বিভিন্ন দৃশ্য ফুটিয়ে তোলা হতো। কিন্তু ওগুলো এখনো শুধু প্রদর্শনীর জন্য রাখা। বিক্রির জন্য নয়।

যাক ঢাকায় ফিরে মাসুদকে এই যুক্তি দেখানো যাবে!

মার্টিন বিক্রেমাসিংহের সমাধি

বাংলাদেশের গ্রাম বাংলার মতো পুতুল নাচ শ্রীলঙ্কার সংস্কৃতিরও অংশ। লোকজ জাদুঘরের একটা বড় অংশ জুড়ে পুতুল নাচের বিভিন্ন কলাকৌশলের একটা কর্নারও দেখা গেল। ক্যান্ডিয়ান সময়ের (প্রায় দুশো বছর আগের) বিভিন্ন ধরনের হাত পাখা, বৌদ্ধমূর্তি, সন্ন্যাসীদের পানির পাত্র, তাদের ব্যবহৃত বিভিন্ন দ্রব্যাদি, হস্তলিপি, তৈলচিত্র, সিংহলি ভাষার উৎপত্তি-ক্রমবিকাশ-আধুনিকরূপের ক্রমবর্ণনাও মিলল এখানে। ওপন্যাসিক মার্টিন বিক্রেমাসিংহের ব্যক্তিগত ইচ্ছে এই লোকজ জাদুঘর তৈরি হয়েছিল। শ্রীলঙ্কার সরকার পরে তার বাড়ির সামনের কয়েক একর জায়গা অধিগ্রহণ করে জাদুঘরটা আরও বিস্তৃতি ঘটায়।

লোকজ জাদুঘর পরিদর্শন শেষ করে আরও একটু সামনে বাড়তেই মার্টিন বিক্রেমাসিংহের পূর্বপুরুষের নিবাসের প্রবেশদ্বার মিলল। বাড়ির বিভিন্ন কক্ষে মার্টিন বিক্রেমাসিংহের ব্যবহৃত দ্রব্যাদি পরম যত্নের সঙ্গে পরিপাটি করে রাখা। চশমা, কলম, আতস কাঁচ, টোব্যাকো পাইপ, লুঙ্গি, কোট-প্যান্ট, জুতো, তার লেখার টেবিল-চেয়ার, ফুলদানি- এমনকি পায়ের চটি পর্যন্ত প্রদর্শনীর জন্য গুছিয়ে রাখা হয়েছে।

বাড়ির দ্বিতীয় কক্ষের ওপরে ইংরেজিতে লেখা- এই কক্ষে মার্টিন বিক্রেমাসিংহে জন্মেছিলেন। জন্মসাল: ২৯ মে, ১৮৯০। সেই ঘরের সামনে দাঁড়িয়ে বাইরের দিকে নজর পড়তেই দেখি সবুজ ঘাসে মোড়া একটা চারকোনা জায়গা একটু উঁচু করে পাথরে বাঁধানো। সবুজের সেই গালিচার এক কোনে একটা বড় কালো পাথর। পাশেই সাইনবোর্ডে ছোট্ট করে লেখা- বিক্রেমাসিংহের সমাধি! ১৯৭৬, ২৩ জুলাই।

জন্মস্থান থেকে হাত বাড়ানো দূরত্বেই চিরনিদ্রায় শ্রীলঙ্কার ইতিহাসের সেরা ওপন্যাসিক।

জীবন শুরু ও শেষের কি অদ্ভুত সমীকরণ!

 

পরের গল্প : হাতিদের এতিমখানা!

   

ফের খরুচে মুস্তাফিজ, স্টয়নিসের বীরত্বে লক্ষ্ণৌয়ের জয়



স্পোর্টস ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

দুর্দান্ত ছন্দে আইপিএল শুরু করলেও ক্রমেই মুস্তাফিজুর রহমানের বোলিংয়ের হাড়গোড় বেরিয়ে পড়ছে। আরও একবার চেন্নাইয়ের সবচেয়ে খরুচে বোলারের তকমা জুটল মুস্তাফিজের। ৩.৩ ওভারে খরচ করলেন ৫১ রান, শেষ ওভারে ১৭ রান ডিফেন্ড করতে গিয়ে চূড়ান্ত ব্যর্থতার পরিচয় দিলেন। মুস্তাফিজের এমন দুঃস্বপ্নের দিনে তার দল চেন্নাই কয়েক দিনের ব্যবধানে ফের হেরেছে লক্ষ্ণৌয়ের কাছে। ৬ উইকেটের জয়ে লক্ষ্ণৌয়ের ‘বীর’ মার্কাস স্টয়নিস।

চেপকে টসে হেরে আগে ব্যাট করতে হয় চেন্নাইকে। অধিনায়ক রুতুরাজ গায়কোয়াড়ের অসাধারণ সেঞ্চুরি আর শিবম দুবের চিরচেনা মারকাটারি ব্যাটিংয়ে চলতি আসরে প্রথমবারের মতো দুইশ ছাড়ানো সংগ্রহ পায় স্বাগতিকরা।

৫০ বলে এক ডজন চার আর ৩ ছক্কায় ১০৮ রানে অপরাজিত থাকেন রুতুরাজ। তাকে যোগ্য সঙ্গ দিয়ে চেন্নাইকে দুইশ পেরোনো স্কোর পেতে সাহায্য করেন দুবে। ২৭ বলে ৩ চার আর ৭ ছয়ে ৬৬ রান আসে তার ব্যাটে। চতুর্থ উইকেটে তাদের ৪৬ বলে ১০৪ রানের অবিশ্বাস্য জুটিতেই কুড়ি ওভারে ৪ উইকেটে ২১০ রানে পৌঁছায় চেন্নাই।

তবে ব্যাট হাতে অতিমানবীয় এক ইনিংস খেলে রুতুরাজ-দুবের দুর্দান্ত ব্যাটিং ভুলিয়ে দেন স্টয়নিস। ৬৩ বলে ১৩ চার এবং আধডজন ছক্কায় ১২৪ রানের হার না মানা ইনিংস খেলেন এই অজি অলরাউন্ডার। স্বীকৃত টি-টোয়েন্টিতে এটা তার দ্বিতীয় সেঞ্চুরি।

অথচ লক্ষ্ণৌয়ের ইনিংসের শুরুতেই দীপক চাহার রানের খাতা খোলার আগেই ফেরান কুইন্টন ডি কককে। মুস্তাফিজের বলে ধরাশায়ী হন লক্ষ্ণৌ অধিনায়ক কেএল রাহুল (১৬)। তবে স্টয়নিসের দিনে যে তিনি একাই যথেষ্ট, সেটারই এক প্রদর্শনী দেখিয়ে চেপককে স্তব্ধ করে দেন এই অজি।

এই জয়ে চেন্নাইকে টপকে লক্ষ্ণৌ উঠে এসেছে পয়েন্ট টেবিলের চারে। ৮ ম্যাচে তাদের পয়েন্ট ১০। সমান ম্যাচ খেলেও ২ পয়েন্ট কম নিয়ে পাঁচে চেন্নাই।

;

বিসিবিকে লেগ স্পিনার ও চায়নাম্যান বোলার খুঁজে দেবেন মুশতাক



স্পোর্টস ডেস্ক বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

একজন লেগ স্পিনার কিংবা চায়নাম্যান বোলার না থাকার আক্ষেপটা বাংলাদেশের দীর্ঘ দিনের। জাতীয় দলে নানা সময় লেগ স্পিনারদের সুযোগ দেওয়া হলেও সেই অর্থে কেউই নিজেদের প্রমাণ করে দলের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠতে পারেননি। তবে এবার সেই আক্ষেপ দূর করতে চায় বিসিবি। আর সে কারণেই প্রথমবারের মতো স্পিন বোলার কোচ হিসেবে পাকিস্তানের কিংবদন্তি লেগ স্পিনার মুশতাক আহমেদকে নিয়োগ দিয়েছে বিসিবি।

সোমবার সেই দায়িত্ব বুঝে নিতে বাংলাদেশে পা রেখেছেন এই কোচ। পরিচিত হয়েছেন সকলের সঙ্গে। সেই সঙ্গে দায়িত্ব বুঝে নিয়েছেন প্রধান কোচ চান্ডিকা হাথুরুসিংহের কাছ থেকেও। তাকে নিয়ে মঙ্গলবার একটি ভিডিও শেয়ার করেছে বিসিবি। যাতে বাংলাদেশের তরুণ ক্রিকেটারদের নিয়ে নিজের মতামত তুলে ধরেছেন পাকিস্তানের হয়ে ৫২টি টেস্ট ও ১৪৪টি ওয়ানডে খেলে ৩৪৬ উইকেট নেওয়া মুশতাক।

বাংলাদেশের স্পিন বিভাগে পরিবর্তন আনার কথা জানিয়ে মুশতাক বলেন, ‘তরুণ ও অভিজ্ঞ ক্রিকেটারদের সঙ্গে অভিজ্ঞতা ভাগাভাগি করতে চাই আমি। আশা করি, আমরা একটা পার্থক্য তৈরি করতে পারব। এখানকার ক্রিকেটাররা অত্যন্ত প্রতিভাবান। তারা যেকোনো দলকে চ্যালেঞ্জ জানাতে পারে।’

বাংলাদেশ দল ও পাইপলাইনে যথেষ্ট লেগ স্পিনারের ঘাটতি আছে, যা জানা আছে মুশতাকেরও। আর সে কারণেই ঘরোয়া ক্রিকেটে নজর দিয়ে সেখান থেকে নতুন লেগ স্পিনার ও চায়নাম্যান বোলার খুঁজে বের করতে চান তিনি। বলেন, ‘আমরা লেগ স্পিনার এবং চায়নাম্যান বোলার খুঁজতে পারি। সাদা বলের ক্রিকেটে মাঝের ওভারগুলোতে উইকেট এনে দেওয়ার মতো বোলার প্রয়োজন আমাদের। আর সেটাই আমি করার চেষ্টা করব।’

;

‘আইপিএলের মতো রানবন্যা দেখা যাবে না বিশ্বকাপে’



স্পোর্টস ডেস্ক বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

রান তোলার বিচারে চলমান আইপিএল ছাড়িয়ে গেছে অন্যসব আসরগুলোকেও। দলীয় ২০০ রানের সংগ্রহ এখনও যেন অতি সহজ। সানরাইজার্স হায়দরাবাদ তো পারলে টি-টোয়েন্টিতে তিনশ রানও ছুঁয়ে ফেলে। এবারের আইপিএলে ২৮৮ রানের রেকর্ড গড়েছে দলটি। রেকর্ড গড়ছে পাওয়ার প্লেতে ১২৫ রান তুলেও। আর এই আইপিএলে বিশ্বের সব বড় বড় তারকা ক্রিকেটাররা খেলায় ধারণা করা হচ্ছে আসন্ন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও ছুটবে রানের ফুলকি।

এবারের আইপিএল শেষ হওয়ার মাত্র এক সপ্তাহের ব্যবধানে মাঠে গড়াবে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। সেখানেও কি এমন রানবন্যা দেখা যাবে; ডেভিড ওয়ার্নারের কাছে প্রশ্ন ছিল এমন; তিনি অবশ্য বলছেন ভিন্ন কথা। তার মতো, ওয়েস্ট ইন্ডিজের উইকেট আইপিএলের মতো হবে না। সেখানে রানবন্যা দেখা যাওয়ার সম্ভাবনা কম। আর এমন উইকেটে যে একজনকে ধরে খেলতে হয়, সেটাও মনে করিয়ে দিয়েছেন ওয়ার্নার।

ওয়ার্নার বলেন, ‘সেখানে উইকেট ধীরগতির হতে পারে, কিছুটা টার্ন করতে পারে। সেখানকার উইকেট সাধারণত কিছুটা নিচু ও ধীরগতির হয়। ২০১০ বিশ্বকাপে যখন খেলেছি তখনও, হাই স্কোরিং উইকেট ছিল না। আর এমন উইকেটে অ্যাঙ্করের প্রয়োজন হয়। আমাদের দলে মাইক হাসির মতো একজন ছিল। সে উইকেটে আসত, তার নিজের মতো একটা ইনিংস খেলত। আর তাছাড়া সেখানে ম্যাচগুলোও হবে মূলত দিনের বেলাতে। তাই এটা একটা বড় ভূমিকা রাখবে।’

এবারের আইপিএলটা অবশ্য খুব একটা ভালো কাটছে না ওয়ার্নারের। ৭ ম্যাচে তার রান মোটে ১৬৭। তবে নিজে তেমন একটা পারফর্ম করতে না পারলেও উইকেট নিয়ে খুশি তিনি। বলেন, ‘উইকেট খুবই ভালো। ফ্ল্যাট, কমপ্যাক্ট আর খুব বেশি হাই স্কোরিং। এবং যখন আপনি ছোট বাউন্ডারি পাবেন, আপনি বড় স্কোর দেখতেই পাবেন।’

;

সাকিব-মুস্তাফিজকে ক্যাম্পে না রাখার কারণ জানালেন লিপু



স্পোর্টস ডেস্ক বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

আসন্ন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ সামনে রেখে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলবে বাংলাদেশ। আগামী ৩ মে শুরু হতে যাওয়া সেই সিরিজ সামনে রেখে চট্টগ্রামে তিন দিনের অনুশীলন ক্যাম্প করবে বাংলাদেশ দল। আর সেই দলের জন্য ১৭ জনের দল ঘোষণা করেছে বিসিবি। যেই দলে নেই তারকা ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান ও মুস্তাফিজুর রহমান। যা নিয়ে আজ গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেছেন জাতীয় দলের প্রধান নির্বাচক গাজী আশরাফ হোসেন লিপু। ব্যাখ্যা দিয়েছেন কেন তাদের এই ক্যাম্পে রাখা হয়নি।

সাকিব বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন। বিশ্বকাপের আগে শেষ সিরিজ হিসেবে জিম্বাবুয়ে সিরিজে থাকার কথা ছিল তার। আর সেই সিরিজের আগে প্রস্তুতি ক্যাম্পে যোগ দেবেন না তিনি। তবে ক্যাম্পে না থাকলেও জিম্বাবুয়ে সিরিজের আগেই দেশে ফিরবেন তিনি। তবে দেশে ফিরলেও জিম্বাবুয়ে সিরিজে সাকিব খেলবেন কিনা সেটি এখনও নিশ্চিত নয়।

লিপু বলেন, ‘সাকিবের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। তার আউটকামটা হচ্ছে, এই মাসের শেষ নাগাদ তিনি বাংলাদেশে আসবেন। আসলে ডিপিএলে একটা দুটো ম্যাচ খেলার সম্ভাবনা আছে। তারপর আমাদের টিম ম্যানেজমেন্টের সঙ্গে ঢুকে যাবেন তিনি। সেখানে কিছু ক্রিকেটিং স্কিল প্র্যাকটিসের সুযোগ থাকবে, ম্যানেজমেন্ট যেভাবে চায়, তিনি যেভাবে চান… তারপরও আমরা চাইব ৫ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ, শেষ দিকে হলেও যেন তিনি খেলার সুযোগ পান।’

এবারের আইপিএলে বাংলাদেশের একমাত্র ক্রিকেটার হিসেবে খেলছেন মুস্তাফিজুর রহমান। চেন্নাইয়ের হয়ে নিয়মিত থাকছেন একাদশে। তবে মুস্তাফিজকে দেশে ফিরতে হচ্ছে এবার। ক্যাম্পে না থাকলেও তিনি যে দলের সঙ্গে যোগ দেবেন তা নিশ্চিত করেছেন লিপু।

বলেন, ‘প্রথম ম্যাচে মুস্তাফিজের না খেলার সম্ভাবনা বেশি। দেশে ফেরার পর মেডিক্যাল টিমের সঙ্গে তার কিছু কাজ রয়েছে। এরপর আমরা বুঝে নেওয়ার চেষ্টা করব, কথা বলে দেখব তার সঙ্গে। তবে আমার বিশ্বাস তিনি প্রথম ম্যাচে এভেইলেবল থাকবেন না।’

;