মার্টিন বিক্রেমাসিংহের বাড়িতে নিমন্ত্রণ



এম. এম. কায়সার, স্পোর্টস এডিটর, বার্তা২৪.কম
মার্টিন বিক্রেমাসিংহের আদি নিবাস ও লোকজ জাদুঘর

মার্টিন বিক্রেমাসিংহের আদি নিবাস ও লোকজ জাদুঘর

  • Font increase
  • Font Decrease

লা ভেরান্দা ডি সেরেনা!

কটেজের নাম শুনেই প্রেমে পড়ে গেলাম। কাঠের সিঁড়ি বেয়ে দোতলায় উঠার সময় হঠাৎ কোত্থকে আসা পানির ছিটে এসে শরীরে লাগল। চমকে উঠে পেছন ফিরতেই দেখি-ওমা, নিচেই সমুদ্র, এ যে তারই জলছাপ!

-ওয়েল কাম ড্রিঙ্ক, নাকি?

কটেজের মালিক চান্দানা আমার কথায় হো হো হাসিতে ফেটে পড়লেন! গলের লা ভেরান্দা ডি সেরেনা কটেজ এভাবেই স্বাগত জানাল। 

মার্টিন বিক্রেমাসিংহের বাড়িতে  নিয়ে গেলেন এম. এম. কায়সার

হোটেলের দেয়ালে আছড়ে পড়ছে সমুদ্রের পানি। জলের হালকা বিন্দু বিন্দু ছোঁয়া দিয়ে যাচ্ছে দোতলার বারান্দায়! কটেজের গা ঘেঁষে কয়েক সারিতে দাঁড়ানো নারিকেল গাছ। হেলে পড়া সেই গাছের শাখার একাংশ বাতাসে দোল খেয়ে দোতলার কার্নিশের সঙ্গে যেন লুকোচুরি খেলছে। গাছের ডালের গর্ত থেকে কাঠবেড়ালী একবার মাথা বের করছে, সামনে কাউকে দেখতে পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে আবার ভেতরে মুখ লুকিয়ে ঢুকে যাচ্ছে। কাঠবেড়ালীর এই লুকোছাপা দেখে ছোটবেলার টিলো এক্সপ্রেস খেলা মনে পড়ে গেল!

আপনি হোটেলের বারান্দায় আধশোয়া হয়ে আছেন ইজি চেয়ারে। সামনে চোখ যতদূর যায় ফেনিল সমুদ্র। জেলেদের মাছধরার ইঞ্জিনচালিত বড় নৌকা ভাসছে। বাতাস একটু বেশি হতেই সমুদ্রে ঢেউ এর তোড় বাড়ছে। দক্ষ সাঁতারু হয়ে সেই তরঙ্গমালা ফিনিসিং লাইন স্পর্শ করছে কটেজের নিচের শক্তপোক্ত দেয়ালে, শেষ ধাক্কায় আছড়ে পড়ছে লাগোয়া নারিকেল গাছের গোড়ালির অংশে। আর সেই শক্তিতে তৈরি জলকণা সমর্পিত হওয়ার ভঙ্গিতে গায়ে-গালে আদরের ছাঁচ বুলিয়ে দিচ্ছে!

পেছনে সমুদ্রের ঢেউ। কটেজের লনে আড্ডা-আনন্দ। সুন্দর ছবির জায়গাটা লা ভেরান্দা ডি সেরেনা কটেজের একাংশের!

এমন সমুদ্র সুখ নিতে চাইলে গলে আপনার জন্য পারফেক্ট ঠিকানা লা ভেরান্দা ডি সেরেনা। হোটেল বললেও এটি এক অর্থে কটেজ।

কটেজ মালিক চান্দানা নিজেই বোর্ডারদের সবার দেখাশোনা করেন। বয়সে তরুণ। প্রতিদিন খোঁজ নেন। কোনো সমস্যা হচ্ছে কিনা- দেখা হওয়া মাত্রই প্রতিদিন তার প্রথম প্রশ্ন এটাই।

সকালে নাস্তার টেবিল আর রাতে ফেরার সময় কাউন্টার থেকে চাবি নেওয়া- এই দুই সময় ছাড়া চান্দানার সঙ্গে আমার আর দেখা হয় না।

-তুমি কি সারাদিন ক্রিকেট মাঠেই কাটাও। গলের আর কোথায়ও যাও না?’

স্টেডিয়াম থেকে রাতে কটেজে ফেরার পর রুমের চাবি চাইতে চান্দানার প্রশ্ন। প্রতিদিন সকালে ব্যাগ কাঁধে নিয়ে বেরিয়ে যাই। দিনের খেলা শেষে ফিরতে ফিরতে রাত। সকাল থেকে রাত অব্দি আমার কাজটা ঠিক কি তা জানার কৌতূহল থেকেই চান্দানার এই প্রশ্ন।

-যাব, কিভাবে বল? সকাল ১০টায় খেলা শুরু। শেষ হয় সন্ধ্যায়। তিন-চারটা রিপোর্ট লিখে কটেজে ফিরতে ফিরতে সেই রাত ১০টা। একে তো টানা পরিশ্রম। রাতের খাওয়ার পর আর পা চলে না। আলো আতশবাজি ও উদ্দাম মিউজিকের উনাবাটুনা বিচের নাইট আউট হাতছানি দিলেও পরদিন সকালে আবার ঘুম থেকে উঠতে হবে এই চিন্তার কাছে সেই স্বপ্নের আত্মসমর্পণ!

আমার সূচি দেখে চান্দানা সহানুভূতি জানাল। সেই সঙ্গে পরামর্শও দিলো।

 লেখক, ইতিহাসবিদ, ঔপন্যাসিক, চিন্তাবিদ মার্টিন বিক্রেমাসিংহে

-তুমি তো সকালটা কাজে লাগাতে পার। কোগ্গালা লেক ঘুরে আসতে পার। স্পিডবোটিংও করা যায়। আর হ্যাঁ, ওখানে গেলে অবশ্যই মার্টিন বিক্রেমাসিংহের বাড়ি ঘুরে এসো। একটা ফোক জাদুঘরও আছে। শ্রীলঙ্কার লোক ইতিহাসের সঙ্গে পরিচিত হতে চাইলে ওটা তোমার অনেক কাজে লাগবে।’

শ্রীলঙ্কায় এর আগে দুবারের সফরে লেখক, ইতিহাসবিদ, ঔপন্যাসিক, চিন্তাবিদ মার্টিন বিক্রেমাসিংহের নাম জেনেছিলাম। কিন্তু এর আগে কোনোবারই গলে আসা হয়নি। এবার শ্রীলঙ্কা সফরই শুরু করেছি গল থেকে। তাই আর আফসোস নিয়ে ফিরতে চাইলাম না।

ম্যাচের তৃতীয় দিনের সকালে মাঠে যাবার আগে সকাল ৮টায় উঠে কোগ্গালা রওয়ানা হলাম। গুগল ম্যাপ নির্দেশনা দিচ্ছে- আমার কটেজ থেকে কোগ্গালা লেকের দূরত্ব এগার কিলোমিটার। তবে কোগ্গালা লেকে গিয়ে স্পিডবোটে করে পুরো লেক ঘুরে দেখতে গেলে খেলা শুরুর আগে মাঠে ফেরা যাবে না। তাই স্পিডবোটে লেক ঘোরার পরিকল্পনা বাদ। শুধু মার্টিন বিক্রেমাসিংহের আদি নিবাস ও লোকজ জাদুঘর দেখে আসার সিদ্ধান্ত নিলাম।

কিন্তু এখানে টুকটুক থেকে নেমে পড়লাম নতুন সমস্যায়। ঘড়িতে তখনো সকাল ৯টা বাজেনি। গার্ড জানাল- জাদুঘরের দরজা ৯টার আগে খুলে না। ২০০ রুপি দিয়ে টিকিট কেটে ৯টার অপেক্ষায় থাকলাম। ৯টা বাজার মিনিট পাঁচেক আগে গাড়ি থেকে এক ভদ্রলোক এসে জাদুঘরের সামনে নামলেন।

আমাকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে নিজেই এগিয়ে এসে পরিচয় দিলেন জাদুঘরের প্রশাসক জে. জয়ানেত্তি। বাংলাদেশি মিডিয়া শুনে ভীষণভাবে আপ্যায়নে ব্যতিব্যস্ত হয়ে পড়লেন জয়ানেত্তি। টেলিফোনে অন্যপ্রান্তে গুরুত্বপূর্ণ কারো সঙ্গে কথা বলার পর আমার হাতে থাকা টিকিট চেয়ে নিলেন। জানালেন- ‘প্লিজ, বাংলাদেশি সাংবাদিক, এতদূর থেকে এসেছেন- আপনি আমাদের মেহমান। টিকিট লাগবে না। আজ আপনি মার্টিন বিক্রেমাসিংহের বাড়িতে অতিথি।’

ভদ্রলোকের সঙ্গে জোরাজুরি করা গেল না। ২০০ রুপি ফেরত নিতেই হলো।

লোকজ জাদুঘরের এক ঝলক

লোকজ জাদুঘরের বড় ঘরে যাবার আগে পাশের দেয়াল জুড়ে মার্টিন বিক্রেমাসিংহের লেখা এবং বিশ্বের বিভিন্ন ভাষায় অনূদিত বইয়ের মলাট শোভা পাচ্ছে। শিশু-কিশোরদের জন্য লেখা তার জনপ্রিয় উপন্যাস মাদল ডুভা (ম্যানগ্রোভ আইল্যান্ড) ইংরেজি, বুলগেরিয়ান, রুমানিয়ান, ডাচ, ফ্রেঞ্চ ও জাপানি-এই ছয় ভাষায় অনূদিত হয়েছে। পাশের ছোট কাউন্টারে সুলভ মূল্যে বিক্রমাসিংহের বই বিক্রিও হচ্ছে। অনেক বইয়ের তালিকা থেকে ইংরেজিতে অনূদিত ‘সর্ট স্টোরিস অব বিক্রেমাসিংহে’ বইটি সংগ্রহে রাখলাম।

লোকজ জাদুঘরে পুরোটা সময় জয়ানেত্তি সঙ্গে রইলেন। প্রতিটি সেলফের পাশে গিয়ে শ্রীলঙ্কার বিভিন্ন লোকজ শিল্প, বাদ্য-বাজনা, কৃষিকাজের জন্য প্রায় শতাব্দি পুরনো লাঙ্গল, জোয়াল, মাছ ধরার জাল, ঝুড়ি, কামারের হাপর- ঐতিবাহী সবকিছুর সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন। কবে কোথা থেকে প্রাচীন এসব দ্রব্যাদি এই জাদুঘরে এসেছে- তার সংক্ষিপ্ত একটা বর্ণনা দিয়ে গেলেন একেবারে মুখস্থ কায়দায়।

জাদুঘরের এক কোনায় অনেক মুখোশ দেখে এগিয়ে গেলাম। শ্রীলঙ্কায় যাচ্ছি শুনে সতীর্থ সাংবাদিক মাসুদ পারভেজ মুখোশ নিয়ে আসার অনুরোধ করেছিলেন।

তোমার এখানে রাবণের মুখোশ নেই?

সায় দেওয়ার ভঙ্গিতে মাথা দুলিয়ে জয়ানেত্তি জানালেন- আসলে এখানে সুপারন্যাচারাল এবং ন্যাচারাল উভয় ধরনের মুখোশই রয়েছে। এসব সুপারন্যাচারাল মুখোশ পরে নাটকের বিভিন্ন দৃশ্য ফুটিয়ে তোলা হতো। কিন্তু ওগুলো এখনো শুধু প্রদর্শনীর জন্য রাখা। বিক্রির জন্য নয়।

যাক ঢাকায় ফিরে মাসুদকে এই যুক্তি দেখানো যাবে!

মার্টিন বিক্রেমাসিংহের সমাধি

বাংলাদেশের গ্রাম বাংলার মতো পুতুল নাচ শ্রীলঙ্কার সংস্কৃতিরও অংশ। লোকজ জাদুঘরের একটা বড় অংশ জুড়ে পুতুল নাচের বিভিন্ন কলাকৌশলের একটা কর্নারও দেখা গেল। ক্যান্ডিয়ান সময়ের (প্রায় দুশো বছর আগের) বিভিন্ন ধরনের হাত পাখা, বৌদ্ধমূর্তি, সন্ন্যাসীদের পানির পাত্র, তাদের ব্যবহৃত বিভিন্ন দ্রব্যাদি, হস্তলিপি, তৈলচিত্র, সিংহলি ভাষার উৎপত্তি-ক্রমবিকাশ-আধুনিকরূপের ক্রমবর্ণনাও মিলল এখানে। ওপন্যাসিক মার্টিন বিক্রেমাসিংহের ব্যক্তিগত ইচ্ছে এই লোকজ জাদুঘর তৈরি হয়েছিল। শ্রীলঙ্কার সরকার পরে তার বাড়ির সামনের কয়েক একর জায়গা অধিগ্রহণ করে জাদুঘরটা আরও বিস্তৃতি ঘটায়।

লোকজ জাদুঘর পরিদর্শন শেষ করে আরও একটু সামনে বাড়তেই মার্টিন বিক্রেমাসিংহের পূর্বপুরুষের নিবাসের প্রবেশদ্বার মিলল। বাড়ির বিভিন্ন কক্ষে মার্টিন বিক্রেমাসিংহের ব্যবহৃত দ্রব্যাদি পরম যত্নের সঙ্গে পরিপাটি করে রাখা। চশমা, কলম, আতস কাঁচ, টোব্যাকো পাইপ, লুঙ্গি, কোট-প্যান্ট, জুতো, তার লেখার টেবিল-চেয়ার, ফুলদানি- এমনকি পায়ের চটি পর্যন্ত প্রদর্শনীর জন্য গুছিয়ে রাখা হয়েছে।

বাড়ির দ্বিতীয় কক্ষের ওপরে ইংরেজিতে লেখা- এই কক্ষে মার্টিন বিক্রেমাসিংহে জন্মেছিলেন। জন্মসাল: ২৯ মে, ১৮৯০। সেই ঘরের সামনে দাঁড়িয়ে বাইরের দিকে নজর পড়তেই দেখি সবুজ ঘাসে মোড়া একটা চারকোনা জায়গা একটু উঁচু করে পাথরে বাঁধানো। সবুজের সেই গালিচার এক কোনে একটা বড় কালো পাথর। পাশেই সাইনবোর্ডে ছোট্ট করে লেখা- বিক্রেমাসিংহের সমাধি! ১৯৭৬, ২৩ জুলাই।

জন্মস্থান থেকে হাত বাড়ানো দূরত্বেই চিরনিদ্রায় শ্রীলঙ্কার ইতিহাসের সেরা ওপন্যাসিক।

জীবন শুরু ও শেষের কি অদ্ভুত সমীকরণ!

 

পরের গল্প : হাতিদের এতিমখানা!

পাকিস্তানকে হারিয়ে এশিয়া কাপ ফাইনালে শ্রীলঙ্কা



স্পোর্টস ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি- সংগৃহীত

ছবি- সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

এশিয়া কাপের ফাইনালে পৌঁছে গেছে শ্রীলঙ্কা। আজ ডাম্বুলায় দ্বিতীয় সেমিফাইনালে দলটা পাকিস্তানকে হারিয়েছে ৩ উইকেটে।

টস জিতে পাকিস্তানকে ব্যাট করতে পাঠায় লঙ্কানরা। গুল ফিরোজা আর মুনিবা আলীর ওপেনিং জুটিতেই চলে এসেছিল ৬১ রান। গুল করেন ২৪, মুনিবার ব্যাট থেকে আসে ৩৭ রান। 

সিদরাহ আমিনও ১৩ বলে ১০ রান করে বিদায় নেন। শেষ দিকে নিদা দার আর ফাতিমা সানা দুজনেই ১৭ বলে ২৩ করে করেন, আলিয়া রিয়াজ করেন ১৫ বলে ১৬ রান। তাতে দলের পুঁজি দাঁড়ায় ৪ উইকেটে ১৪০।

জবাবে শ্রীলঙ্কাকে শুরুতেই ধাক্কা দেন সাদিয়া ইকবাল। প্রথম ওভারেই ভিশ্মি গুনারত্নকে ফেরান। চতুর্থ ওভারে হার্শিতা সামারাবিক্রমাকে এলবিডাব্লিউর ফাঁদে ফেলেন ওমাইমা সোহেইল। এরপর অবশ্য চামারি আতাপাত্তু দেয়াল তুলে দাঁড়ান। তৃতীয় উইকেটে কাভিশা দিলহারিকে সঙ্গে নিয়ে ৪৯ রান যোগ করেন তিনি। 

শুরুতে লঙ্কাকে ধাক্কা দেওয়া সাদিয়া আবারও পাকিস্তানকে ম্যাচে ফেরার দায়িত্বটা নেন। ৩ বলে তুলে নেন ২ উইকেট। শুরুতে কাভিশা, এরপর নীলাক্ষীকে ফেরান তিনি। 

চামারি আতাপাত্তুর অন্যপাশে ছিলেন বলেই লঙ্কানদের ওপর চাপ ছিল না। তবে চাপটা এল তিনি ফিরে গেলে। ৪৮ বলে ৬৩ রান করা চামারিকে ফেরান সেই সাদিয়া ইকবালই। পরের ওভারে হাসিনি পেরেরাও ফেরেন রান আউট হয়ে।

এরপর আনুষ্কা সঞ্জীবনী আর সুগন্ধা কুমারির ১৫ রানের জুটি লঙ্কাকে নিয়ে যায় শঙ্কার বাইরে। শেষ দিকে সুগন্ধা ফেরেন। তবে শ্রীলঙ্কা ততক্ষণে জয়ের সুগন্ধ পেয়ে গেছে। শেষমেশ ৩ উইকেটের জয় তুলে নেয় দলটা। চলে যায় ফাইনালে।

এশিয়া কাপের ফাইনালে আগামী রবিবার মাঠে নামবে শ্রীলঙ্কা। তাদের সামনে থাকবে প্রতিযোগিতার সবচেয়ে সফল দল ভারত। 

;

আইপিএল নিলামের পরও বাড়বে খেলোয়াড়দের বেতন



স্পোর্টস ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
সংগৃহীত

সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

সবশেষ আইপিএলে কলকাতা নাইট রাইডার্স মিচেল স্টার্কে দলে ভিড়িয়েছিল রেকর্ড ২৪ কোটি ৭৫ লাখ রুপির বিনিময়ে। তবে পরের মৌসুমে যে স্টার্ক কলকাতার হয়ে খেলবেন তার কোনো নিশ্চয়তা নেই। এই নিয়মটি বদলাতে চায় ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলো। তাদের প্রিয় খেলোয়াড়ের হারাতেও চায় না দলগুলো। আর তাই তো পরবর্তী মেগা আইপিএল নিলামে আসতে পারে বড় পরিবর্তন।

ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোর পরামর্শে, আগামী আইপিএল থেকে নিলামের পরেও আইপিএলের খেলোয়াড়দের বেতন-ভাতা বেড়ে যেতে পারে। খেলোয়াড়দের বেতনের জন্য দলগুলোকে বেঁধে দেওয়া সর্বোচ্চ খরচের সীমা ৯০ কোটি রুপি থেকে বেড়ে হতে পারে ১৩০-১৪০ কোটি রুপি। যার ফলে আসছে নিলামে খেলোয়াড়দের দাম বাড়তে পারে কয়েক গুণ!

বর্তমান নিয়ম অনুসারে, নিলামে একজন খেলোয়াড়কে যে দামে কেনা হয়, পুরো মৌসুমে সেটি বাড়ানোর আর সুযোগ থাকে না। এই নিয়মের সাথে একমত নয় ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলো। পাশাপাশি পরের মৌসুমে অন্য কোন দল যেন তাদের খেলোয়াড় ছিনিয়ে নিতে না পারে সেই নিয়মও বানাতে চেয়েছে আইপিএলের দলগুলো।

টাইমস অব ইন্ডিয়াকে এক ফ্র্যাঞ্চাইজি কর্মকর্তা জানিয়েছেন, 'অন্যান্য চাকরির মত আইপিএলে খেলোয়াড়দের বেতন বেতন বৃদ্ধির কোনো সুযোগ নেই। ধরুন, কোনো দল একজন খেলোয়াড়ের জন্য খরচ করেছে ৩০ লাখ রুপি। সেই খেলোয়াড় আইপিএলে একটি দুর্দান্ত কাটল। ফলে ফ্র্যাঞ্চাইজির কাছে এমন কিছু উপায় থাকা উচিত যাতে পরের মৌসুমের জন্য ফ্র্যাঞ্চাইজি সেই খেলোয়াড়ের সাথে ৩ কোটি রুপির চুক্তি করতে পারে। যার ফলে অন্য কোন দল সেই খেলোয়াড় কে ছিনিয়ে নিতে পারবে না।'

এই কর্মকর্তা আরও জানিয়েছেন, 'উঁচুমানের পারফরম্যান্স দেখানো খেলোয়াড়দের বেতন নিয়ে দর–কষাকষির সুযোগ ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোকে দেওয়া উচিত আইপিএলের। এর মাধ্যমে আগের মৌসুমের সেরা খেলোয়াড়কে তারা ধরে রাখতে পারবে।''

ফ্র্যাঞ্চাইজি গুলোর দাবি যদি মানে নেয় আইপিএল তবে আগামী ডিসেম্বরের নিলামে ব্যাপক পরিবর্তনের দেখা মিলবে আইপিএলে।

;

শুরুর আগেই ডোপ-কান্ডে প্যারিস অলিম্পিক



স্পোর্টস ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

প্যারিসের মাটিতে কিছুক্ষণ পরই শুরু হচ্ছে এবারের অলিম্পিকের জমকালো উদ্বোধনী অনুষ্ঠান। শত বছর পরে অলিম্পিককে বরণ করে নিতে প্রস্তুত ফ্রান্স। তবে এর আগেই ডোপিং বিতর্ক! যার ফলে এবারের অলিম্পিক থেকে ছিটকে গিয়েছেন রোমানিয়ার ফ্লোরেন্টিনা ইউস্কোর। গত বছর এপ্রিলে ডোপ টেস্টে পজেটিভ রেজাল্ট আসায় এবারের অলিম্পিক থেকে বাদ পড়েছেন তিনি।

তিন বছর আগে টোকিও অলিম্পিকে চীনের ২৩ সাঁতারুর শরীরে মিলেছিল নিষিদ্ধ হার্টের ওষুধ ট্রাইমেটাজিডিনের। সেই ২৩ জনের ১১ জন এবার এসেছেন প্যারিসে। আর তাতেই ডোপ কেলেঙ্কারির অভিযোগ এনেছে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক টাইমস এবং জার্মান টেলিভিশন এআরডি। এই প্রসঙ্গে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন বাকি অ্যাথলেটরাও।

সবচেয়ে বিস্ময়ের ব্যাপার হলো, বৈশ্বিক অ্যান্টি ডোপিং সংস্থা (ওয়াডা) চলতি মাসে এক প্রতিবেদনে চীনা সাঁতারুদের ডোপিং কাণ্ডে পজেটিভ হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। তারপরও তাদের এবারের অলিম্পিকে অংশগ্রহণ করতে দেওয়তে বাঁধা দেয়নি সংস্থাটি।

আর তাতে চটেছেন অস্ট্রেলিয়ার স্বর্ণপদকজয়ী সাঁতারু জ্যাক স্ট্যাবলেটি-কুক। ২০০ মিটার ব্রেস্টস্ট্রোকে চীনের বিশ্বরেকর্ডধারী সাঁতারু কুইন হাইয়াংয়ের বিপক্ষে লড়ার পর ডোপ টেস্টে অংশ নেবেন না বলে জানিয়ে দিয়েছেন তিনি। আর তাইত অন্য সাঁতারুদেরও ডোপ টেস্টে অংশ না নেওয়ার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন এই অস্ট্রেলিয়ার সাঁতারু।

তবে চীনা সাঁতারুদের মতো সৌভাগ্য নেই রোমানিয়ার অ্যাথলেট ফ্লোরেন্টিনার। গেল বছর কোন প্রতিযোগিতা ছাড়াই ডোপ টেস্টে করতে হয়েছিল এই অ্যাথলেটকে। সে সময় তার শরীরে নিষিদ্ধ ওষুধ ছিল বলে জানা যায়। আর তাতেই কপাল পুড়লো ফ্লোরেন্টিনা ইউস্কোর।

;

উডের গতিময় বোলিংয়ে মুগ্ধ স্টোকস



স্পোর্টস ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ক্রিকেটে বলের গতির রেকর্ড আছে এমন ডেলিভারির মধ্যে সবার ওপরে আছেন শোয়েব আকতার। একমাত্র ক্রিকেটার হিসেবে তুলেছেন ঘন্টায় একশো মাইলের গতি। ২০০৩ বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ১০০.২ মাইল অর্থাৎ ১৬১.৩ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টায়। সবমিলিয়ে ঘন্টায় একশো মাইল গতিতে বল করা দুই পেসার শোয়েব আকতার এবং শন টেইট। দুটোই অবশ্য সাদা বলের ক্রিকেটে।

টেস্ট ক্রিকেটে সর্বোচ্চ গতি তোলার রেকর্ড অস্ট্রেলিয়ার মিচেল স্টার্কের। ২০১৫ সালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে একটি ডেলিভারিতে ঘণ্টায় ৯৯.৬ মাইল বা প্রায় ১৬০.৩ কিলোমিটার গতি তুলেছিলেন এ বাঁহাতি পেসার। যে রেকর্ড এখন পর্যন্ত ভাঙতে পারেননি আর কেউই।

এবার টেস্টেও হবে একশো মাইল গতির ডেলিভারি। এমনটাই বিশ্বাস ইংলিশ ক্যাপ্টেন বেন স্টোকসের। তার বিশ্বাস এমনটা করে দেখাবেন তার টিমমেট মার্ক উড। এজবাস্টন টেস্টের আগে সংবাদ সম্মেলনে স্টোকস বলেন, ‘আমার মনে হয় না উড এটা নিয়ে খুব একটা চিন্তিত। তবে তাকে দেখে মনে হচ্ছে সে এটার আরও বেশি কাছে যাচ্ছে। কিন্তু আমি আসলে সে এখন যা করছে, সত্যি বলতে তা নিয়েই খুশি।’

নিয়মিতই এমন গতিতে বল করে যাওয়ায় উডে মুগ্ধ স্টোকসি। জুড়ে দিলেন অনেক গুলো বিশেষণ, ‘এমন গতি ধরে রাখাটা দুর্দান্ত। সে যখনই টেস্ট ম্যাচ খেলে, তার গড় গতি ঘণ্টায় ৯০ মাইলের ওপর থাকে। একটা স্পেলে ৯০-এর বেশিতে করাটা ভালো কিন্তু সে প্রতিটি স্পেলেই ঘণ্টায় ৯০ মাইলের বেশি গতি তোলে। তার নাম উচ্চারণ করার সঙ্গে দর্শকেরা উল্লাস করে ওঠে। আর বড় পর্দায় যখনই গতি দেখানো হয়, সবাই আরও উজ্জীবিত হয়।’

শুধু লাইন-লেন্থ ঠিক করে বল করা আর উইকেট তোলাই নয়, উডের নজর সাইড স্ক্রিনেও থাকে। ভালো করেই জানেন গতি তোলাও তার অনেক বড় দায়িত্বের একটা। ‘কত গতি তুলছে, সেটি সবসময়ই উড খেয়াল করে বিগ স্ক্রিনে। সে জানে, সে শুধু দক্ষতার সাথে বোলিং করার জন্যই নয় কিন্তু, দ্রুতগতিতে বোলিং করার জন্যও দলে আছে।’

;