মুশফিক-মায়ানের মায়াভরা এই সময়!

  • স্পোর্টস এডিটর, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

বাবা মুশফিকের ভালোবাসায় সিক্ত ছেলে মায়ান

বাবা মুশফিকের ভালোবাসায় সিক্ত ছেলে মায়ান

খেলা নেই। মাঠে অনুশীলন নেই। এমন সময় সাধারণত আলসেমি পেয়ে বসতে বাধ্য। কিন্তু ক্রিকেটার মুশফিকুর রহিমের কাছে আলস্য যে ঘেঁষে বসার সুযোগ পায় না। নিজের ফিটনেসের জন্য বাসায় প্রতিদিনের কঠিন রুটিন মেনে চলেন মুশফিক।

যেন তেন ধরনের নয়, একেবারে কেতাবি স্টাইলেই ফিটনেস চর্চা। করোনাভাইরাস মহামারীর এই সময়টায় বাসায় ফিটনেস, গ্যারেজে টেনিস বলে খানিকটা ক্রিকেট অনুশীলন এবং মাঝে সাঝে নির্জন কোনো মাঠের সবুজে একাকী ছোটাছুটি- এভাবেই চলছে ক্রিকেটার মুশফিকের এখনকার সময়টা।

বিজ্ঞাপন

আর হ্যাঁ, এই সময়ের বেশিরভাগ অংশই জুড়ে আছে তার শিশুপুত্র মায়ান। বাসায় মুশফিকের সারাক্ষণের সঙ্গী সে। দুষ্টুমিতে, বৃষ্টি ভেজায়, আদরে-আনন্দে এমনকি মুশফিকের ফিটনেস ক্লাসেও সহচর তিনে পা দেওয়া মায়ান।

ছেলের জন্মের পর এই প্রথম বাসায় এতো লম্বা সময় কাটাচ্ছেন মুশফিক। মধ্য মার্চ থেকে জুলাইয়ের তৃতীয় সপ্তাহ। পেছনের এই চার মাস ক্রিকেট আনন্দ থেকে বঞ্চিত হলেও ছেলের সঙ্গে মুশফিকের সময়টা কাটছে স্বর্গীয় সুখে।

বিজ্ঞাপন
বাবার পিঠ চুলকে যেন ভালোবাসার প্রলেপ দিচ্ছে ছোট্ট মায়ান

ছেলের সঙ্গে নিজের এই প্রিয় মুহূর্তগুলো ক্যামেরায় সংরক্ষিত করেও রাখছেন মুশফিক। বাবার পিঠে বসে ছেলে আঙ্গুলের নখে আদর বুলাচ্ছে। নখের আঁচড় একটু বেশি হলে সঙ্গে সঙ্গে সেখানে চুমু দিয়ে যত্নের প্রলেপ দিচ্ছে। চমকে দিয়ে হঠাৎ মুশফিক ছেলের হাতে একটা কিছু ধরিয়ে দিলেন। গভীর আগ্রহ নিয়ে ছেলে হাতে ধরা সেই কাগজটা সরিয়ে দেখে- আইসক্রিম! এই আবিষ্কারের সঙ্গে সঙ্গে মায়ানের চোখে-মুখে সেকি আনন্দের ছটা! যেন চিৎকার করে বলতে চাইছে-মাই ফাদার ইজ দ্যা বেস্ট ইন দ্যা ওয়ার্ল্ড!

আইসক্রিম পেয়ে বেজায় খুশি ছোট্ট মায়ান

ঘরের এক কোণে ট্রেডমিলে মুশফিক দৌড়াচ্ছেন আর খানিকটা দূরে দাঁড়িয়ে তাকে ঠিক সেই কায়দায় অনুসরণ করছেন ছোট্ট মায়ান। বাবা মুশফিকের মতো ছেলে মায়ানও একই ভঙ্গিতে হাত-পা নাড়ছে।

বাবাকে ফিটনেসের চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছে ছোট্ট মায়ানও!

শনিবার দুপুরে বার্তা২৪.কম’র সঙ্গে এই প্রসঙ্গের আলাপে মুশফিক বলছিলেন- ‘ক্রিকেট না খেলার কষ্ট আছে। কিন্তু ছেলে যে আমার সব কষ্ট ভুলিয়ে দিচ্ছে। সারাক্ষণ আমার খেলার সঙ্গী সে এখন। চোখের আড়ালই করতে চায় না আমাকে। খেলা শুরু হলে লম্বা সময় তাকে ছাড়া থাকতে আমার কি যে কষ্ট হবে- এখনই সেটা ভেবে বুক পুড়ছে! এখন তো ও সারাক্ষণই শুধু আমার পিছুপিছু। ওর জন্মের পর এই প্রথম এক নাগাড়ে এত লম্বা সময় ধরে আমাকে বাসায় দেখছে।’

চুপচাপ বসে মুশফিক পুত্র মায়ান

লম্বা সময় ক্রিকেট মাঠের বাইরে কাটানোর পর ১৯ জুলাই, রোববার থেকে মুশফিক মিরপুরে ক্রিকেট একাডেমিতে অনুশীলনে ফিরছেন। জানালেন- ‘যথাযথ স্বাস্থ্য বিধি মেনেই আমি মাঠে অনুশীলনে নামব। আশা করছি, যেভাবে যা চাইছি, সেটাই যেন হয়। মিডিয়াসহ সবার কাছ থেকে এই বিষয়ে আমাদের সহযোগিতার প্রয়োজন।’

চমৎকার পারিবারিক পারিপার্শ্বিকতায় ছেলে মায়ানের বেড়ে উঠার প্রসঙ্গে মুশফিক সব কৃতিত্ব দিচ্ছেন তার স্ত্রীকে। বললেন- ‘আমি তো ছেলেকে তেমন সময়ই দিতে পারিনি। তবে সঠিক নিয়মে ছেলের বেড়ে উঠার পুরো কৃতিত্বের কারিগর আমার স্ত্রী। একা হাতে ঘর-দুয়ার-বাচ্চা সামাল দেয়ার কঠিন পরিশ্রম করছে সে।’

বাবা মুশফিক-ছেলে মায়ানের দুষ্টুমি

ঈদে ছুটির সময়টা সাধারণত দেশের বাড়ি বগুড়ায় কাটান মুশফিক। কিন্তু ঈদ-উল-ফিতরে এবার দেশে যাননি। বনানীর বাসায় কাটিয়েছেন। কোরবানির ঈদেও আপাতত সেই পরিকল্পনাই তার।