সারা দেশে ই-কমার্স ‘সেলার ওয়ান’ প্রোগ্রাম
সারা দেশে অনলাইন বিক্রেতাদের ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে ই-ক্যাব, এটুআই ও আইসিটি ডিভিশনের সহায়তায় পেপারফ্লাই চালু করল ‘সেলার ওয়ান’ প্রোগ্রাম।
সোমবার (৭ সেপ্টেম্বর) ভার্চুয়াল সম্মেলনের মধ্য দিয়ে সেবাটি চালু করা হয়। ফলে ঢাকার বাইরের এবং গ্রামীণ ব্যবসায়ীরা তাদের উৎপাদিত পণ্য সরাসরি দেশব্যাপী ক্রেতাদের কাছে পৌঁছে দিতে পারবে।
রাজধানীকেন্দ্রিক অর্থনীতি-বাণিজ্য ঢাকার বাইরের ব্যবসায়ী শ্রেণির পরিপূর্ণ ক্ষমতায়নে যথাযথ ভূমিকা রাখতে পারে না। ঢাকার মত করে অন্যান্য জেলায় পরিবহন, দক্ষ জনবল এবং দ্রুত আর্থিক সেবার সুবিধা পাওয়া যায় না।
তবে মানুষের উদ্যোগ ও সৃজনশীলতা কোনও অর্থনৈতিক হিটম্যাপে আবদ্ধ হতে পারে না। ঢাকার বাইরে অবস্থিত যে কোনও অনলাইন ব্যবসা পরিচালনার সুবিধার্থেই পেপারফ্লাই তাদের সেলার ওয়ান নামে নতুন সেবা চালু করেছে। যার মাধ্যমে দেশজুড়ে আগ্রহীরা আজ অনলাইন মারচেন্ট হতে পারবে।
ঢাকা শহর ছাড়িয়ে দেশের সবকটি জেলায় পেপারফ্লাইয়ের ৬৪ টি নিজস্ব পয়েন্টের মাধ্যমে মার্চেন্টের পণ্য পিকআপ করে এবং একইসাথে যে কোনও ঠিকানাতে পৌঁছে দেবে নতুন এ সেবা।
পেপারফ্লাই চিফ মার্কেটিং অফিসার রাহাত আহমেদ বলেন, ই-কমার্স কেন্দ্রিক লজিস্টিক ইন্ডাস্ট্রির পথপ্রদর্শক হিসেবে নিত্যনতুন সেবা এবং সমাধান নিয়ে আসার চেষ্টা করেছি। সেলার ওয়ান প্রোগ্রাম তারই একটি নতুন প্রয়াস। যা সারা দেশে অনলাইন বিক্রেতার সংখ্যা বাড়ানোর মাধ্যমে ইকমার্স ইকোসিস্টেম প্রতিষ্ঠায় সহায়ক হবে। অনলাইন উপস্থিতিই ই-কমার্স গল্পের শেষ নয়। বরং এটি কেবল সূচনা। পূর্ণাঙ্গ লজিস্টিক সহায়তা, ফেসবুক এবং অন্যসব প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে অনলাইনে ব্যবসা করার জ্ঞান, দক্ষতা, আর্থিক সহায়তা বা ব্যাংক ঋণ ব্যতীত দেশের উদীয়মান ই-কমার্স শিল্পটি বাঁচতে পারে না।
বর্তমানে আমাদের দেশে যে বৃহৎ অনলাইন বিক্রেতাগোষ্ঠী আছে তাদের প্রতি আমাদের দৃষ্টি দেয়া এবং বাংলাদেশের ই-কমার্স শিল্পের প্রবৃদ্ধিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে তাদের ই-কমার্সের জন্য প্রস্তুত করার এখনই উপযুক্ত সময়। সময়োপযোগী এই চিন্তাকে সমর্থন করার জন্য, পেপারফ্লাই ও ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অফ বাংলাদেশ (ই-ক্যাব) সম্মিলিতভাবে এই সেলার ওয়ান প্রোগ্রামটি চালু করে।
ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ই-ক্যাব) সভাপতি শমী কায়সার বলেন, গ্রামীণ বা প্রান্তিক বিক্রেতাদের বাধা নিরসনেই ই-ক্যাব এবং পেপারফ্লাইয়ের এই প্রচেষ্টা। যাতে আরও ব্যবসায়ীরা ঢাকার বাইরে থেকে তাদের অনলাইন ব্যবসা শুরু করতে পারে। অবশ্যই এই পরিবর্তন রাতারাতি ঘটবে না। তবে নতুন উদ্যোগে বলতে পারি যে আমরা লক্ষ্য অর্জনে আরও এক ধাপ এগিয়ে গেলাম।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন আইসিটি বিভাগ এটুআই’র হেড অব ই-কমার্স রেজওয়ানুল হক জামি, ই-ক্যাবের সহসভাপতি মোহাম্মদ সাহাব উদ্দিন, আইএফসি বাংলাদেশের প্রাইভেট সেক্টর স্পেসালিস্ট হোসনে ফেরদৌস সুমি এবং প্রাইম ব্যাংকের হেড অব এমএসএমই ব্যাংকিং সৈয়দ এম ওমর তৈয়ব।
অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন লাইটক্যাসল পার্টনার্স সিইও বিজন ইসলাম।
করোনা সময়ে বহু ব্যবসা প্রায় বন্ধ বা হওয়ার পথে। আকারে ছোট ব্যবসাগুলো বেঁচে থাকতে ও বেড়ে উঠতে বিকল্প বিক্রয় ব্যবস্থার প্রয়োজন। ই-কমার্স এখন দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।
অনেক ব্যবসায়ী অনলাইনে তাদের ব্যবসা শুরু করছেন। বর্তমানে ৫০ হাজারেরও বেশি অনলাইন মার্চেন্ট ফেসবুক প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে তাদের ব্যবসা পরিচালনা করছে। সক্রিয় এফ-কমার্স বিক্রেতাদের বেশিরভাগই ঢাকার ভেতরের।
ঢাকার বাইরের অনলাইনে ব্যবসাগুলো এখনও পেশাদার কোনও ই-কমার্স কেন্দ্রিক লজিস্টিক পার্টনার, অনলাইনে ব্যবসা পরিচালনার জ্ঞান এবং আর্থিক সহায়তার অভাবের কারণে বিকাশিত হয়নি। এই উদ্যোক্তাদের ব্যবসা অনলাইনে একটি চ্যানেল সৃষ্টির মাধ্যমে তাদের ক্ষমতায়ন করার মধ্য দিয়ে দেশজুড়ে ই-কমার্স শিল্প বিকাশের একটি সম্ভবনাময় সুযোগ আছে। সেলার ওয়ান সম্ভাব্য ডিজিটাল উদ্যোক্তাদের সহযোগিতার মাধ্যমে ভালো ব্যবসা, অর্থনৈতিক উন্নতি এবং স্থানীয় কর্মসংস্থানের সুযোগ নিশ্চিতে সহায়ক হবে বলে বক্তারা জানান।