অভিভাবকদের জন্য গাইড নিয়ে এলো ইনস্টাগ্রাম ও কিশোর আলো
বাংলাদেশের কিশোর-কিশোরীদের জন্য অনলাইনে নিরাপদ পরিবেশ তৈরির লক্ষ্যে প্রকাশিত হলো ‘ইনস্টাগ্রাম গাইড ফর প্যারেন্টস’ নামে একটি অভিভাবক সহায়িকা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ইনস্টাগ্রাম এবং জনপ্রিয় কিশোর ম্যাগাজিন কিশোর আলোর যৌথ উদ্যোগে গাইডটি প্রকাশিত হয়।
শুক্রবার (২৫ জুন) এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য জানানো হয়।
এর আগে বৃহস্পতিবার (২৪ জুন) কিশোর আলোর ফেসবুক পেজ থেকে একটি ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানের মাধ্যমে গাইডটি বাংলা ও ইংরেজি উভয় ভাষাতে প্রকাশ করা হয়। এরপর আমন্ত্রিত অতিথি ও অভিভাবক প্রতিনিধিরা একটি আলোচনা সভায় অংশ নেন।
ইনস্টাগ্রামের ফিচারগুলো আরও ভালোভাবে বুঝে প্ল্যাটফর্মটিতে কিশোর-কিশোরীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং ইতিবাচক অভিজ্ঞতা অর্জনে সহায়তা করার উদ্দেশ্যে এই পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো-এর ২০১৫ সালের রিপোর্ট অনুযায়ী, বাংলাদেশে বর্তমানে কিশোর-কিশোরীর সংখ্যা প্রায় ৩ কোটি ৬০ লক্ষ, যা দেশের মোট জনসংখ্যার পাঁচ ভাগের এক ভাগের চেয়েও বেশি। বিশ্বের সব প্রান্তের উঠতি বয়সী ছেলে-মেয়েদের মাঝে ইনস্টাগ্রাম বেশ জনপ্রিয়। নিজেকে প্রকাশ করতে এবং বিভিন্ন কমিউনিটির সাথে চিন্তা-ভাবনা ও আগ্রহের বিষয় তুলে ধরে যোগাযোগ বা সম্পর্ক স্থাপনের মাধ্যম হিসেবে তারা ইনস্টাগ্রাম ব্যবহার করছে। ‘ইনস্টাগ্রাম গাইড ফর প্যারেন্টস’ মা-বাবা ও অভিভাবকদের সঙ্গে কিশোর-কিশোরীদের সেতুবন্ধন তৈরি হতে সহযোগিতা করবে। অভিভাবকেরা তাদের সন্তানদের সঙ্গে অনলাইন সুরক্ষা এবং মানসিক সুস্থতার মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে কথা বলতে পারবে।
এ প্রসঙ্গে ইনস্টাগ্রামের এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের পাবলিক পলিসি প্রধান ফিলিপ চুয়া বলেন, “করোনা মহামারির ফলে কিশোর-কিশোরীরা এবং তাদের পরিবার এখন আগের চেয়ে বেশি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ওপর নির্ভরশীল। বর্তমানে বাংলাদেশের কিশোর-কিশোরীদের জীবনেরও একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ ইনস্টাগ্রাম।”
তিনি আরও বলেন, বাবা-মায়েরা তাদের সন্তানের মানসিক সুস্বাস্থ্য এবং অনলাইন নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সচেষ্ট থাকেন। ইনস্টাগ্রামে ইতিবাচক অভিজ্ঞতা নিশ্চিত করার মাধ্যমে তাদের সেই প্রচেষ্টায় আমরা সহযোগী হতে চাই। ”ডিজিটাল ক্ষেত্র সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কমিউনিটি সংগঠন ও বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কাজ করে চলেছে ইনস্টাগ্রাম। তাছাড়া সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমটি তাদের সুরক্ষা এবং গোপনীয়তা বিষয়ক নীতিমালা আরও উন্নত করার জন্য পার্টনারদের মতামত গ্রহণ করে। এই বুকলেটটি চালু করার মাধ্যমে প্ল্যাটফর্মটি অভিভাবকদেরকেও তাদের নতুন সহযোগী হিসেবে যুক্ত করেছে।
অভিভাবক সহায়িকা প্রকাশ অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে ইউনিসেফ বাংলাদেশের শিশু সুরক্ষা বিশেষজ্ঞ শাবনাজ জাহেরীনও উপস্থিত ছিলেন।
কথাসাহিত্যিক ও কিশোর আলো সম্পাদক আনিসুল হক বলেন, “ইনস্টাগ্রামের এই উদ্যোগের অংশ হতে পেরে কিশোর আলো আনন্দিত। এই গাইডটিতে ইনস্টাগ্রাম অ্যাপের বিভিন্ন ফিচার ব্যবহার করে কীভাবে কমিউনিটি তৈরি করা যায়, সে সম্পর্কে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, একজন বাবা হিসেবে আমি বিশ্বাস করি কিশোর-কিশোরীদের ইন্টারনেট ব্যবহারের অভিজ্ঞতাকে সুরক্ষিত ও আনন্দদায়ক করতে আমরা সম্মিলিত ভাবে কাজ করতে পারি।
বিজ্ঞপ্তি থেকে জানা যায়, বাংলাদেশিদের জন্য একটি নিরাপদ অনলাইন জগৎ ও ইতিবাচক কমিউনিটি গড়ে তোলা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেছে ফেসবুক। কিশোর আলোর সঙ্গে গাইড প্রকাশ সেসব উদ্যোগেরই অংশ। গত বছর বাংলাদেশে উই থিঙ্ক ডিজিটাল শীর্ষক কর্মসূচি শুরু করে ফেসবুক। এই বৈশ্বিক কর্মসূচির লক্ষ্য ডিজিটাল সক্ষমতা বৃদ্ধি ও দায়িত্বশীল ডিজিটাল নাগরিকত্ব তৈরি করার জন্য মানুষকে অনুপ্রাণিত করা।