বর্তমানে চলমান কঠোর লকডাউনে গ্রাহকদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করতে সারাদেশে বিনামূল্যে হোম ডেলিভারি দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে শীর্ষস্থানীয় স্মার্টফোন নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ভিভো। দেশের যেকোনো প্রান্ত থেকে এখন যেকোনো সময় ভিভো হটলাইনে কল করলেই ভিভো স্মার্টফোন পৌঁছে যাবে গ্রাহকদের ঘরের দরজায়। এই সার্ভিসকে ভিভো বলছে ‘ডোরস্টেপ ডেলিভারি’ সার্ভিস।
হোম ডেলিভারির এ সময়ে সংক্রমণ রোধ করতে সব ধরণের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাও নিয়েছে ভিভো। হোম ডেলিভারি সেবা পেতে গ্রাহকেরা ভিভো হটলাইন ০৯৬১০৯৯১০৭৯ নাম্বারে কল করতে পারেন। এজন্য গ্রাহককে অতিরিক্ত কোনো ডেলিভারি চার্জও দিতে হবে না।
চলতি বছর দেশের বাজারে আসা ভিভো ভি ও ওয়াই সিরিজের স্মার্টফোনগুলো তুমুল জনপ্রিয়তা পেয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে লেটেস্ট সিরিজ ভি২১; তুমুলভাবে জনপ্রিয়তা পেয়েছে এর নাইট সেলফি প্রযুক্তির জন্য। এছাড়া সার্বিকভাবে সেরা পারফরম্যান্সের পাশাপাশি বাজেট স্মার্টফোন হওয়ায় জনপ্রিয়তা পেয়েছে ভিভো’র তারুণ্যনির্ভর ওয়াই সিরিজ। শক্তিশালী ব্যাটারি এবং অত্যাধুনিক ক্যামেরা প্রযুক্তির সাথে সাথে বাজেট ফোন হওয়ায় ভিভো’র সবচেয়ে বেশি বিক্রিত স্মার্টফোন ওয়াই সিরিজ।
ভিভো বাংলাদেশের সেলস ডিরেক্টর জানায়, চলতি বছর বহুল পরিমাণে বিক্রিত ভিভো স্মার্টফোনগুলোর মধ্যে রয়েছে ভিভো ভি২১, ভি২১ই, ওয়াই১২এস, ওয়াই১এস, ওয়াই২০জি এবং ওয়াই৫১।
বিনামূল্যে এই ‘ডোরস্টেপ ডেলিভারি’সার্ভিস বিষয়ে ভিভো বাংলাদেশের সেলস ডিরেক্টর শ্যারন বলেন, ‘ভিভো সবসময়ই গ্রাহকদের রুচি, পছন্দ ও প্রয়োজনকে প্রাধান্য দেয়। সে অনুযায়ী স্মার্টফোনের ফিচার ও দামেরও সামঞ্জস্য করার চেষ্টা করে ভিভো। গ্রাহক কেন্দ্রিক ব্র্যান্ড হিসেবে গ্রাহকদের সুরক্ষার কথা চিন্তা করেই সারাদেশে ডোরস্টেপ ডেলিভারি সার্ভিসের সূচনা করেছে ভিভো। বাংলাদেশ সরকার ঘোষিত কঠোর লকডাউনকে চলমান রাখার পাশাপাশি, আমাদের সাথে যারা কাজ করেন তাদের অর্থনৈতিক সুরক্ষাও নিশ্চিত করবে এই সেবা।’
ভিভো প্রসঙ্গে
ভিভো একটি প্রযুক্তিভিত্তিক প্রতিষ্ঠান যা ডিজাইন ড্রিভেন ভ্যালুর ওপর ভিত্তি করে স্মার্ট ডিভাইস ও ইন্টেলিজেন্ট সার্ভিসের মাধ্যমে পণ্য উৎপাদন করে। মানুষ আর ডিজিটাল ওয়ার্ল্ডের মধ্যে সেতুবন্ধন তৈরি করাই প্রতিষ্ঠানটির উদ্দেশ্য। অনন্য সৃজনশীলতার মাধ্যমে ভিভো ব্যবহারকারীদের হাতে যথোপযুক্ত মোবাইল ও ডিজিটাল আনুষাঙ্গিক তুলে দিচ্ছে। প্রতিষ্ঠানের মূল্যবোধকে অনুসরণ করে ভিভো টেকসই উন্নয়ন কৌশল বাস্তবায়ন করেছে; সমৃদ্ধ ও দীর্ঘস্থায়ী বিশ^মানের প্রতিষ্ঠান হওয়াই যার ভিশন।
স্থানীয় মেধাবী কর্মীদের নিয়োগ ও উন্নয়নের মাধ্যমে শেনজেন, ডনগান, নানজিং, বেজিং, হংঝু, সাংহাই, জিয়ান, তাইপে, টোকিও এবং সান ডিয়াগো এই ১০টি গবেষণা ও উন্নয়ন কেন্দ্রে (আরএন্ডডি) কাজ করছে ভিভো। যা স্টেট-অফ-দ্য-আর্ট কনজ্যুমার টেকনোলজির উন্নয়ন, ফাইভজি, আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স, ইন্ডাস্ট্রিয়াল ডিজাইন, ফটোগ্রাফি এবং আসন্ন প্রযুক্তির ওপর কাজ করে যাচ্ছে। চীন, দক্ষিণ ও দক্ষিণপূর্ব এশিয়ায় ভিভোর পাঁচটি প্রোডাকশন হাব আছে (ব্র্যান্ড অথোরাইজড ম্যানুফ্যাকচারিং সেন্টারসহ) যেখানে বছরে প্রায় ২০০ মিলিয়ন স্মার্টফোন বানানোর সামর্থ্য আছে। এখন পর্যন্ত ৫০টিরও বেশি দেশে বিক্রয়ের নেটওয়ার্ক আছে ভিভোর এবং বিশ^জুড়ে ৪০০ মিলিয়নের বেশি ভিভো স্মার্টফোন ব্যবহারকারী রয়েছে।
করোনা মহামারি ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের জের ধরে বিশ্বজুড়ে চলা আর্থিক মন্দা সামলাতে গিয়ে বন্ধ হচ্ছে একের পর এক প্রতিষ্ঠান। সেই ধাক্কা সামাল দিকে অনেক প্রতিষ্ঠান কর্মী ছাঁটাইয়ের পথে হাঁটছে।
ফেসবুকের প্যারেন্ট সংস্থা মেটা প্ল্যাটফর্ম বলেছে, তারা তাদের আরও ১০ হজার কর্মীকে ছাঁটাই করবে। মাত্র চার মাস আগে ১১,০০০ কর্মীকে চাকরিচ্যুত করার পর, জায়ান্ট টেক কোম্পানিটি দ্বিতীয় দফায় ব্যাপক ছাঁটাইয়ের এই ঘোষণা দিল।
মঙ্গলবার মেটার সিইও মার্ক জুকারবার্গ জানিয়ে দিয়েছেন, তার সংস্থা কমপক্ষে ১০০০০ কর্মী ছাঁটাই করতে চলেছে। শুধু তাই নয়, ৫০০০ নতুন নিয়োগ দেওয়ার কথা ছিল মেটায়, সেটাও আপাতত বন্ধ থাকছে।
বিভিন্ন সূত্র জানায়, বিজ্ঞাপন থেকে মেটার আয় কমেছে। ফলে ব্যয় কমানোর কথা চিন্তা করেই এই বিপুল সংখ্যক কর্মীকে ছাঁটাই করতে চলেছে মেটা।
চ্যাটজিপিটির প্রভাব, ব্যবহারিক তাৎপর্য ও আমাদের ভবিষ্যৎ
রূপম রাজ্জাক
চ্যাটজিপিটির লোগো
টেক
চ্যাটজিপিটি নামক কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাভিত্তিক অ্যাপ্লিকেশনটির অসামান্য সক্ষমতা ইতিমধ্যেই প্রমাণিত। এত অল্পসময়ে এতটা হইচই ফেলে দেয়ার মতো প্রযুক্তি সাম্প্রতিক সময়ে আর দ্বিতীয়টি নেই। ফেসবুকে ব্যবহারকারীর সংখ্যা ১০০ মিলিয়নে পৌঁছতে যেখানে সাড়ে ৪ বছর লেগেছিল, সেই সংখ্যা ছুঁতে চ্যাটজিপিটির লেগেছে মাত্র ২ মাসের মতো। এটা প্রযুক্তি দুনিয়ায় নজিরবিহীন। এর সঠিক ব্যবহার হাজারো ক্ষেত্রে মানুষের কাজ সহজ করে দিচ্ছে। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে এর অপব্যবহার নৈতিকতার প্রশ্ন সৃষ্টি করেছে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ছাত্ররা চ্যাটজিপিটি ব্যবহার করে বিভিন্ন ধরনের এসাইনমেন্ট লিখে নিচ্ছেন এবং প্রায় ক্ষেত্রেই তাদের শিক্ষকগণ তা বুঝতেই পারছেন না। কারণ চ্যাটজিপিটি প্রত্যেক ছাত্রকে নিখুঁতভাবে ইউনিক উত্তর লিখে দিচ্ছে। বিষয়টি এখন এমন এক পর্যায়ে গেছে যে বিশ্বের উঁচু সারির অনেক বিশ্ববিদ্যালয় ঘোষণা দিয়ে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই ভিত্তিক এপ্লিকেশন ব্যবহারের ব্যাপারে সাবধানতা অবলম্বন করতে বলছে, এমনকি কিছু কিছু ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞাও আরোপ করেছে।
চ্যাটজিপিটি'র সক্ষমতা যখন অনেক কাজকে সহজ করে দিচ্ছে তখন স্বাভাবিকভাবেই অনেকের মনে শঙ্কা কাজ করছে যে হয়তোবা অনেক ধরনের কাজে এর ব্যাপক ব্যবহার শুরু হলে অনেকেই চাকরি হারাতে পারে। বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যেই বিশ্বব্যাপী আলোচনা চলছে। বিশেষ করে গুগলের মতো টেক জায়ান্ট চ্যাটজিপিটির অনুকরণে অ্যাপ্লিকেশন নিয়ে আসার ঘোষণা দেয়ার পরে এই বিষয়টি অনেকটাই স্পষ্ট। শুধু কি তাই! চ্যাটজিপিটিতে অন্যতম বিনিয়োগকারী মাইক্রোসফট কর্পোরেশন তাদের "বিং" নামক সার্চ ইঞ্জিনে চ্যাটজিপিটি'র সুবিধা দিতে ইতিমধ্যেই চ্যাটমোড নামক একটি আলাপচারী ফিচার যুক্ত করার কাজ শুরু করেছে। এটি উন্মুক্ত হলে সার্চ ইঞ্জিনটির ব্যবহারকারীগন সেখানে শুধু সার্চ রেজাল্ট না, অনেক ধরনের প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে পারবে আলাপচারিতার ঢংয়ে। সেই আলাচারিতা যে শুধু দৈনন্দিন ছোটখাটো প্রশ্নের উত্তর দিতে পারবে তা না, বরং জানাতে পারবে গাণিতিক-অগাণিতিক নানান ধরনের প্রশ্নোত্তর। ফলে কর্মক্ষেত্রে চ্যাটজিপিটি বা এআই এর ব্যবহার বাড়িয়ে দ্রুত কর্মসম্পাদনের এক ধরনের প্রচেষ্টা শুরু হবে। যার সরাসরি প্রভাব পড়বে 'মানব' কর্মীদের উপর।
বর্তমান সময়ে চ্যাটজিপিটির প্রভাব কতটা তা বুঝাতে গত জানুয়ারিতে ডাভোসে অনুষ্ঠিত ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামে মাইক্রোসফটের সিইও সত্য নাদেলার একটি বক্তব্য বিশ্লেষণ করা যেতে পারে। তিনি বলছিলেন, ভারতের একটি রাজ্যে কৃষকদের জন্য চ্যাটজিপিটি ব্যবহার করে একটি সফটওয়্যার বানানো হয়েছে যা দিয়ে সেখানকার কৃষকগণ স্থানীয় ভাষায় অস্পষ্ট বাক্যে সরকারি বিভিন্ন সেবার ব্যাপারে প্রায় নির্ভুল উত্তর পাচ্ছেন। তিনি বলছিলেন, এক্ষেত্রে কিছু ট্রান্সলেটরের মাধ্যমে স্থানীয় ভাষা থেকে ইংরেজিতে রূপান্তর করে চ্যাটজিপিটিকে যে ইনপুট দেয়া হয়েছিল সেসব ভাঙা বা অস্পষ্ট বাক্যগুলোকেই চ্যাটজিপিটি বিশ্লেষণ করে সরকারি বিভিন্ন ডকুমেন্ট ঘেঁটে সঠিক উত্তর সংকলন করতে সক্ষম হয়েছিল। এর বাইরে তিনি আরেকটি উদাহরণ টেনেছিলেন যেখানে একজন অভিজ্ঞ সফটওয়্যার ডেভেলপার দৈনন্দিন কোডিংয়ের কাজে চ্যাটজিপিটি ব্যবহারে ৮০% কর্মক্ষমতা বাড়াতে পেরেছে বলে উল্লেখ করেছেন। এসবের বাইরে আরও হাজারো উদাহরণ আছে যেখানে চ্যাটজিপিটি ব্যবহার করে মানুষ তার কোনো জিজ্ঞাসা বা কাল্পনিক প্রশ্ন থেকে অর্থবহ বিষয়বস্তু পেতে পারছে।
আমি নিজেও যখন চ্যাটজিপিটির ব্যাপারে জেনেছি তখনও এর ব্যাপক শক্তির ব্যাপারে অনুমান করতে পারিনি। আমি চ্যাটজিপিটিকে পরীক্ষা করার জন্য জিজ্ঞেস করেছিলাম, তুমি আমাকে একটা পাইথন কোড দাও যা একটি ফাইল তৈরি করে সেখানে ইংরেজি A-Z অক্ষরগুলোর সমন্বয়ে একটি বাক্য বানিয়ে লিখবে এবং শেষে ফাইলটি মুছে দিবে। চ্যাটজিপিটি শুধু নির্ভুল কোড লিখেই দেয়নি, সাথে প্রত্যেকটি লাইনের নির্ভুল ব্যাখ্যাও দিয়েছে। একইভাবে, তাকে সেই প্রশ্নের উত্তর পিএইচপি'র ক্ষেত্রেও দিতে বললে সেখানেও সে নির্ভুল উত্তর দিয়েছে। বলা বাহুল্য, পাইথন ও পিএইচপি বর্তমান সময়ে দু'টি জনপ্রিয় প্রোগ্রামিং ভাষা। পরবর্তীতে প্রাত্যহিক কাজে বিভিন্ন জটিল সমাধানের অংশবিশেষ পেয়ে আসছি চ্যাটজিপিটির মাধ্যমে। চ্যাটজিপিটি হয়তো পুরো সফটওয়্যার প্রজেক্ট করে দিতে পারছে না, কিন্তু একটি প্রজেক্ট করতে গিয়ে প্রতিটি ধাপে কোনো সমস্যার সমাধান পেতে বা বিদ্যমান সমাধানের বিকল্প সমাধান পেতে অনবদ্য ভূমিকা রাখতে পারছে। বিশেষ করে বিভিন্ন ধরনের কোড কাঠামো পেতে সফটওয়্যার ডেভেলপাররা ব্যাপকভাবে চ্যাটজিপিটি ব্যবহার করছে বলে ধারনা করা যায়। অ্যালগরিদম ভিত্তিক সমাধানের ক্ষেত্রেও চ্যাটজিপিটি একই ধরনের দক্ষতা দেখায়।
অন্যদিকে প্রযুক্তি দুনিয়ায় চ্যাটজিপিটিকে ঘিরে চলছে ভিন্নমাত্রার কার্যক্রম। খুব অল্প সময়ের ব্যবধানেই চ্যাটজিপিটির সক্ষমতাকে ব্যবহার করে বিভিন্ন ধরনের অ্যাপ্লিকেশন তৈরি হয়েছে। কেউ কেউ ব্রাউজার এক্সটেনশন বানিয়েছেন যেগুলোর মাধ্যমে ওয়েব ব্রাউজিংয়ের সময় বিভিন্ন ধরনের সেবা পাওয়া যায়। জনপ্রিয় বিভিন্ন প্রশ্নোত্তরভিত্তিক কমিউনিটিতেও চ্যটাজিপিটি'র সক্ষমতা ব্যবহার করে তাৎক্ষনিক উত্তর দেয়ার এপ্লিকেশন বানিয়েছেন কেউ কেউ (উদাহরণ হিসেবে স্ট্যাকওভারফ্লো'র কথা বলা যায়)। এছাড়া মেসেজিং প্লাটফর্ম স্ল্যাকের জন্য চ্যাটজিপিটি নিয়ে আসছে বিশেষ সমাধান - যার মাধ্যমে ব্যবহারকারীরা আলাপচারিতাকে সামারাইজ করতে ও উত্তরের ড্রাফট রেডি করতে পারবেন এক ক্লিকেই। এছাড়াও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান সেবা দিচ্ছে কিভাবে চ্যাটজিপিটিকে সঠিকভাবে ব্যবহার করে দ্রুত ও নিখুঁতভাবে কর্মসম্পাদন করা যাবে। বিশেষ করে কোন উত্তর খুঁজতে কোন প্রম্পট ব্যবহার করা উচিত - এ ধরনের সেবা দিচ্ছে অনেকেই। লেখালেখি বা ড্রাফট করার মতো কাজে এসবের ব্যবহার অনেক হচ্ছে।
পুরো একাডেমিক এসাইনমেন্ট তৈরি করতে, আইনি কোনো ড্রাফট করতে, ওয়েবসাইট তৈরির কোড পেতে কিংবা মার্কেটিং কৌশল প্রণয়ন করতে চ্যাটজিপিটি অভাবনীয় রকমের দক্ষতা দেখাচ্ছে। তবু অনেক ক্ষেত্রেই এর উত্তর মানুষকে দ্বিধায় ফেলে দিচ্ছে। বিশেষ করে গাণিতিক সমাধানের ক্ষেত্রে বা কৌশলপূর্ন প্রশ্নের বেলায়। তাই বিশেষজ্ঞরা চ্যাটজিপিটির মতো কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার উপর পুরোপুরি নির্ভর করতে সমর্থন দিচ্ছেন না। তারা এসব সমাধানকে যাচাই করে ব্যবহার করতে পরামর্শ দিয়েছেন। তাদের মতে, এটি শুধু বিশ্বাসযোগ্য উত্তর দিতে পারছে ভালোভাবে। কিন্তু সেই বিশ্বাসযোগ্য সমাধান সবসময় সঠিক নাও হতে পারে।
চ্যাটজিপিটি নিয়ে যখন এত ইতিবাচক আলোচনা হচ্ছে, সে সময় কিছু আশংকামূলক আলোচনাও আসছে। বলা হচ্ছে, চ্যাটজিপিটির মতো জেনারেটিভ এআই মডেলগুলো যে পরিমাণ এনার্জি ব্যবহার করছে ও কার্বন নিঃসরণ হচ্ছে তা পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর। বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধির মতো সংবেদনশীল ব্যাপারে নেতিবাচক ভূমিকা রাখবে এসব মডেল। বর্তমান চ্যাটজিপিটির ১৭৫ বিলিয়ন প্যারামিটারের মডেলটিকে ট্রেনিং দিতে প্রত্যেকবার যে পরিমাণ কার্বন ডাই অক্সাইড নিঃসরণ হয়, তা প্রায় ১ লক্ষ ৩ হাজার বার বেইজিং-নিউইয়র্ক ফ্লাইটের যাতায়াতে নিঃসরনযোগ্য কার্বন ডাই অক্সাইডের সমান। এটি অভাবনীয়। সামনের দিনে চ্যাটজিপিটির সক্ষমতা বাড়বে, অন্য যেসব এআই অ্যাপ্লিকেশন আসবে তাদের ক্ষেত্রেও তাই হবে। যেমন- চ্যাটজিপিটির পরবর্তী ভার্সনেই ১০০ ট্রিলিয়ন প্যারামিটার প্রয়োজন হবে, যা বর্তমানের চেয়ে প্রায় ৫৭০ গুণ বেশি। তখন এসবের দ্বারা নিঃসরিত কার্বন বৈশ্বিক পরিবেশ তথা জলবায়ুতে মারাত্মক রকমের প্রভাব ফেলবে।
এখন কথা হচ্ছে, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা আমাদের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ বা নিয়ন্ত্রণ করবে কিনা। আমার মতে, এই মুহুর্তে এর সরাসরি হ্যাঁ বা না উপসংহার করা সম্ভব না। এ প্রসঙ্গে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ইদানীং একটি কথা বেশ প্রচলিত - "কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সরাসরি আপনাকে প্রতিস্থাপন করবে না। করবে একজন ব্যক্তি যে কিনা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সঠিক ব্যবহার জানে।"। ফলে চ্যাটজিপিটি বা এআই আমাদের সক্ষমতাকে প্রতিস্থাপন করতে পারবে না, বরং কো-পাইলট হিসেবে আমাদের কাজে সহায়তা করে যাবে। তাই আগামী দিনে চ্যাটজিপিটি বা এআই ভিত্তিক কোনোকিছুই আমাদেরকে প্রতিস্থাপন করতে না পারলেও আমাদের অদক্ষতার সুযোগে অন্যরা তা করবে নিশ্চিতভাবে বলা যায়। এজন্য প্রতিটি সেক্টরে মানবসম্পদ তৈরির ক্ষেত্রে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে কার্যকরভাবে কাজে লাগানোর প্রশিক্ষণের বিকল্প নেই।
লেখক: রূপম রাজ্জাক, তথ্য প্রযুক্তিবিদ ও সাংবাদিক (ডেটা ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে কর্মরত), লন্ডন, যুক্তরাজ্য।
স্মার্টফোন কিনে দীর্ঘদিন ব্যবহার করার ইচ্ছা সবারই। কিন্তু স্থায়ীত্বের পরীক্ষায় কি আর সব স্মার্টফোন স্মার্ট হতে পারে! তবে এক্ষেত্রে ভিভোর ওয়াই২২ দেখিয়েছে দারুণ চমক।
গত ২ মার্চ দেশে যাত্রা শুরু করেছে ভিভোর ওয়াই সিরিজের নতুন স্মার্টফোন ওয়াই২২। এর মধ্যেই নান্দনিক কালার, দুর্দান্ত ক্যামেরা কোয়ালিটি, সুবিশাল ব্যাটারি ও স্টোরেজ সুবিধাসহ আরো নানা ফিচারের গুণে মুগ্ধ হয়েছে আট থেকে আশি বয়সী সকলেই।
এখন স্থায়ীত্বের পরীক্ষায় চমক দেখিয়ে ৭ মার্চ থেকে ফার্স্ট সেল শুরু হচ্ছে ভিভোর নতুন স্মার্টফোন ওয়াই২২ এর। মাত্র ১৯ হাজার ৯৯৯ টাকায় ভিভো যেকোনো অথোরাইজড শো-রুম এবং ই-স্টোরে পাওয়া যাবে স্মার্টফোনটি।
ভিভোর এই স্মার্টফোনে রয়েছে ৫০ মেগাপিক্সেল রেয়ার ব্যাক ক্যামেরা। এই ক্যামেরায় ব্যবহৃত এফ/১.৮ লেন্সে তোলা ছবি খুব বেশি জীবন্ত মনে হবে। ন্যাচারাল, ভিনটাগ, সামার পার্টি, জাপানিজ স্টাইল, মনোক্রোম, সিলভার স্লট সহ নানা পোর্ট্রটে স্টাইলে ছবি তোলা যাবে।
ফ্রন্ট ক্যামেরায় ব্যবহৃত হয়েছে এফ/২.০ লেন্সসমৃদ্ধ ৮ মেগাপিক্সেলের ক্যামেরা। যা দিয়ে তোলা যাবে ফ্রেশ, টেক্সচার, গ্রে, ফিল্ম, ৮০র দশকের স্টাইল, টোকিও স্টাইলসহ দারুণসব সেলফি পোর্ট্রটে মুডের ছবি। এছাড়া রয়েছে সুপার নাইট ক্যামেরা যা রাতে আকর্ষণীয় ছবি তোলার অন্যন্য অভিজ্ঞতা দেবে। ভিভোর এই স্মার্টফোনের পাওয়ার বাটনে রয়েছে সাইড মাউন্টেড ফিঙ্গার প্রিন্ট স্ক্যানার। অর্থাৎ এই অংশটি পাওয়ার বাটন ও ফিঙ্গার প্রিন্ট স্ক্যানার দুইটি হিসেবেই কাজ করবে।
শুধু কি তাই? স্মার্টফোন অন অফ করা, রিস্টার্ট করা এমনকি সময় কিংবা নোটিফিকেশন দেখতেও এর প্রয়োজন হবে। তাই এর কার্যক্ষমতা হতে হবে সবচেয়ে বেশি। গ্রাহকের প্রয়োজনের কথা মাথায় রেখে ভিভোর ওয়াই২২ স্মার্টফোনের পাওয়ার বাটনটির স্ক্যানার প্রায় ১৫ লক্ষ বার ফিঙ্গার প্রিন্ট স্ক্যান করতে সক্ষম। এমনকি মাত্র ০.২৪ সেকেন্ডে আনলক করবে এই স্ক্যানার। পাশাপাশি পাওয়ার বাটনটিও প্রায় দেড় লাখ বার প্রেস করার মতোই শক্তিশালী।
পাওয়ার বাটনের ঠিক উপরেই রয়েছে ভলিউম বাটন। কথা বলা, গান শোনা, ভিডিও বা মুভি দেখার সময় প্রয়োজন অনুযায়ী বার বার ভলিউম বাড়িয়ে কমিয়ে সাউন্ড ঠিক করে নিতে হয়। তাই ভিভোর ওয়াই২২ স্মার্টফোনটি প্রায় ৭০ হাজার বার প্রেস করতে সক্ষম। এমনকি পাওয়ার ও ভলিউম বাটন ব্যবহার করে স্মুথভাবে স্ক্রিনশট নেওয়াতেও দারুণ কার্যকর এই স্মার্টফোন।
৫ হাজার মিলি অ্যাম্পিয়ার ব্যাটারি চার্জের জন্য রয়েছে ১৮ ওয়াটের টাইপ সি ফার্স্ট চার্জার। একবার চার্জে যেমন টানা ২০ ঘণ্টা অনলাইন ভিডিও স্ট্রিমিং এর সুবিধা পাওয়া যাবে, তেমনি মাত্র ১৫ মিনিটের চার্জে দেখা যাবে প্রায় সাড়ে তিন ঘন্টার ভিডিও কিংবা সিনেমা। আবার গেমাররা চাইলেই একই চার্জে খেলতে পারবে দুই রাউন্ড গেম। তাই বার বার চার্জে দিয়ে চার্জিং পোর্ট নষ্ট হবার ভয় নেই। কারণ এর ইউএসবি পোর্ট প্রায় ৬ হাজার সাইকেল প্লাগিং-আনপ্লাগিং ক্ষমতাসমৃদ্ধ।
যারা হেডফোনে গান শুনতে পছন্দ করেন তাদের জন্যও ভিভোর এই স্মার্টফোনটি দেবে প্রায় সাড়ে ৬ হাজার সাইকেল প্লাগিং-আনপ্লাগিং এর সুবিধা। এমনকি পানি ও ডাস্ট থেকেও সুরক্ষা দেবে ওয়াই২২ স্মার্টফোনটি
অপো ব্র্যান্ডের সবশেষ সংযোজন ‘রেনো’ সিরিজ। নতুন সিরিজে ‘এইট টি’ মডেল উন্মোচন করল অপো। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অপো ব্র্যান্ডের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান। সাকিব সবাইকে ভিডিওচিত্রের মাধ্যমে নিজের প্যাশনে অটল থাকতে উৎসাহিত করেন।
স্মার্টফোন সিরিজে রেনো প্রথম ১০০ মেগাপিক্সেল পোর্ট্রেট ক্যামেরা দিচ্ছে। সিরিজের বৈশিষ্ট্যেয় আছে ফাইবার গ্লাস-লেদার স্টিচ ডিজাইন, ৪৮ মাসের জন্য ফ্লুয়েন্সি প্রোটেকশন, সার্টিফাইড এসজিএস আই কেয়ার ডিসপ্লে এবং ৫০০০ মিলিঅ্যাম্পিয়ার (এমএএইচ) ব্যাটারি ছাড়াও নতুন সব ফিচার।
ডিজাইন, ইমেজিং ও পারফরমেন্সে নতুন অভিজ্ঞতা নিশ্চিত করেছে অপো রেনো এইট টি মডেল। ৪০এক্স মাইক্রোলেন্স অপো রেনো এইট টি ভক্তদের ফটোগ্রাফিতে দেবে নতুন অভিজ্ঞতা। যা ভালো মানের পেশদার ছবি তুলতে সহায়ক। জীবন্ত সেলফি তুলতে আছে ২ মেগাপিক্সেল ডেপথ ক্যামেরার সঙ্গে ৩২ মেগাপিক্সেল ফ্রন্ট ক্যামেরা।
অপো ব্র্যান্ড ভক্তদের ফটোগ্রাফি অভিজ্ঞতা নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে আছে বোকেহ ফ্লেয়ার পোর্ট্রেট, সেলফি এইচডিআর আর এআই পোর্ট্রেট রিটাচিংয়ের মতো ইমেজিং ফিচার।
সানসেট অরেঞ্জ ও স্টারি ব্ল্যাক দুটি রঙে পাওয়া যাচ্ছে মডেলটি। সানসেট অরেঞ্জ রঙের ডিজাইনে আছে ফাইবার গ্লাস-লেদার স্টিচ ডিজাইন। চারপাশে প্লাস্টিক এজিং অপসারণে নতুন ডিজাইন করা হয়েছে। ফলে মিলবে প্রিমিয়াম অভিজ্ঞতা। আর লেদারের মতো ব্যাটারি কাভারের তুলনায় হালকা ও পাতলা কাভার ব্যবহারের অনুভূতি। অন্যদিকে স্টারি ব্ল্যাক রঙের ডিজাইনে আছে গ্লো টেকনিক। ফলে ফোনটিতে সিল্কের মতো মসৃণ অনুভূতি পাওয়া যাবে।
কাস্টমাইজেবল অরবিট লাইট ডিজাইন যা পাঁচটি ভিন্ন নটিফিকেশন সেটিংস সমর্থন করে। পছন্দ ভেদে কালার অপশন (রঙ) নির্বাচন (পার্সোনালাইজ) করা যাবে। স্মার্টফোনের আলট্রা-স্লিম বডি ডিজাইন সবার ফ্যাশন স্টেটমেন্টে নতুনত্ব নিয়ে আসবে। তা ছাড়া আপগ্রেডে কালারওএস ১৩, ৯০ হার্জ রিফ্রেশ রেট এবং ৫০০০ মিলিঅ্যাম্পিয়ার (এমএএইচ) ব্যাটারি।
অপো বাংলাদেশের ম্যানেজিং ডিরেক্টর ড্যামন ইয়াং জানালেন, অপো ব্র্যান্ডের রেনো সিরিজ বিশ্বজুড়ে ৭ কোটি ভক্তের কাছে ইতিমধ্যেই জনপ্রিয়তা পেয়েছে। রেনো এইট টি-মূলত যারা জীবনে নতুন কিছু অর্জনে চেষ্টা করছে এমন শৈল্পিক চিন্তা-চেতনার তারুণ্যের জন্য নির্মিত। হালকা, নিখুঁত ডিজাইন, পোর্ট্রেট ক্যামেরা-সবই আছে। আশা করছি, রেনো ‘এইট-টি’ ভক্তদের সুপ্ত প্রতিভা অন্বেষণে অনুপ্রাণিত করবে। মডেলটি প্রি-অর্ডার করা যাচ্ছে। সঙ্গে থাকছে গিফট বক্স, তিন মাসের ফ্রি স্ক্রিন রিপ্লেসমেন্ট সুবিধা এবং ইন্টারনেট বান্ডেল অফার। অপো রেনো ‘এইট টি’ মডেলের দাম ৩২ হাজার ৯৯০ টাকা।