‘আর্থিক ব্যবস্থাপনায় এমএফএস গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে’



সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, মোবাইল ফিনান্সিয়াল সার্ভিস (এমএফএস) বাংলাদেশের আর্থিক ব‌্যবস্থাপনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।  আর্থিক ব‌্যবস্থাপনায় ব‌্যাংক সাধারণ  মানুষের সম্পৃক্ততার শেকল ভাঙ্গতে পারেনি, কিন্ত এমএফএস তা পেরেছে। এমএফএস সেবা দেশের জনগণ ব‌্যবহার করার সক্ষমতা অর্জন করেছে এবং জনগণের কাছে তা গ্রহণযোগ‌্যতা অর্জন করেছে।

মন্ত্রী বুধবার (২১ ডিসেম্বর) ঢাকায় আইডিয়া ফাউন্ডেশন আয়োজিত  বাংলাদেশের আর্থিক অন্তর্ভূক্তি শক্তিশালী করণে এমএফএসের ভূমিকা শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।

সাবেক মূখ‌্য সচিব মো: আবুল কালাম আজাদের সঞ্চালনায় আইডিয়া ফাউন্ডেশনের চেয়ারপার্সন কাজী এম আমিনুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আইডিয়া ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক সাবেক সচিব মোহাম্মদ শহিদুল হক, পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান মনসুর, বিকাশের সিইও কামাল কাদির, বাংলাদেশ ব‌্যাংকের নির্বাহী পরিচালক মেজবাহুল হক, সাবেক নির্বাহী পরিচালক লীলা রশিদ প্রমূখ বক্তৃতা করেন। অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন আইডিয়া ফাউন্ডেশনের লিড রিসার্চার হোসাইন এ সামাদ।

ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী  ডিজিটাল বাংলাদেশের ধারাবাহিকতায় কাগজের নোটের দিন শেষ হয়ে আসছে উল্লেখ করে বলেন, প্রচলিত পদ্ধতিতে আর্থিক ব‌্যবস্থাপনার দিন ফুরিয়ে আসছে। সামনের পাঁচ বছরে বিশ্ব আর্থিক ব‌্যবস্থাপনা কোথায় যাবে আমরা কেউ জানিনা। দেশের  মুদ্রা ব‌্যবস্থাপনা বাংলাদেশ ব‌্যাংকের দায়িত্ব। তবে এই মুদ্রা কাগজের নোট ছাড়া অন‌্যকোন ভাবে লেনদেন হবে এটা গভীর বিবেচনায় নিতে হবে। ডিজিটাল প্রযুক্তির ভবিষ‌্যত গতিবিধি আয়ত্ব করে আমাদের সামনে এগুতে হবে বলে উল্লেখ করেন ডিজিটাল প্রযুক্তি বিকাশের এই অগ্রদূত। মন্ত্রী  ডিজিটাল প্রযুক্তির ভিত্তির উপর স্মার্ট প্রযুক্তি এবং ডিজিটাল বাংলাদেশের উপর দাঁড়িয়ে ২০৪১ সালে স্মাট বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা লাভ করবে বলে আশাবাদ ব‌্যক্ত করেন।

মন্ত্রী বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা্র ফলে আমরা অতীতের তিনটি শিল্প বিপ্লবে অংশগ্রহণে ব‌্যর্থ হওয়ায় শতশত বছরের পশ্চাদপদতা অতিক্রম করে  প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনার দুরদৃষ্টি সম্পন্ন ডিজিটাল বাংলাদেশ কর্মসূচির ধারাবাহিকতায় ডিজিটাল প্রযুক্তিতে পৃথিবীর সমান্তরালে এসেছি। এই ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে পৃথিবীর একটি দৃষ্টান্ত স্থাপনকারী দেশ হিসেবে উল্লেখ করে বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরে দেশে কম্পিউটার ও মোবাইল ফোনের বিকাশের বিপ্লবের সূচনা হয়েছে ১৯৯৭ সাল থেকে ২০০১ সাল থেকেই। কম্পিউটারে বাংলা ভাষার উদ্ভাবক ডিজিটাল প্রযুক্তি বিকাশে তার দীর্ঘ ৩৫ বছরের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করে বলেন, দেশে টেলিকম সভ‌্যতার মহাসড়ক আমরা তৈরি করেছি। এই মহাসড়ক দিয়েই ডিজিটাল সভ‌্যতা এগিয়ে যাবে।

তিনি ডিজিটাল ফিনান্সিয়াল  সার্ভিস ও  মোবাইল ফিনান্সিয়াল সার্ভিসের পার্থক‌্য তুলে ধরে বলেন, আমরা ৫জি প্রযুক্তি যুগে প্রবেশ করেছি। আজ মোবাইলে যে ফিনান্সিয়াল সার্ভিস হচ্ছে পরবর্তীতে আইওটি্ ডিভাইস মোবাইলের স্থান দখল করতে পারে। মন্ত্রী প্রযুক্তির উন্নয়নের পাশাপাশি ডিজিটাল নিরাপত্তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি ভবিষ‌্যতের প্রযুক্তির গতিবিধি আয়ত্ব করতে না পারলে গবেষণার ফলাফল কাজে আসবে না বলে  উল্লেখ করেন।

অনুষ্ঠানে বক্তারা ডিজিটার প্রযুক্তির প্রয়োগ ও ভবিষ‌্যত প্রযুক্তির ওপর লাগসই গবেষণার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

গুগল ডুডলে লাল সবুজের বাংলাদেশ



নিউজ ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

আজ মহান স্বাধীনতা দিবস। বাংলাদেশ নামের ভূখণ্ডের অনন্য অর্জন ও গৌরবের দিন। এ দিনই চরম আত্মপ্রত্যয়ে পৃথিবীর বুকে নতুন একটি মানচিত্রের জন্মগাঁথা লেখা হয় রক্ত আর বিপ্লবের কালিতে। নাম তার বাংলাদেশ। পৃথিবীর সব রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে,সব শোষণ, বঞ্চণা, নির্যাতন পড়ে ফেলে লাল সবুজের যে আত্মপ্রকাশ তার নাম বাংলাদেশ।

মানি না, মানব না বলে যার যা কিছু আছে তাই নিয়ে লড়াইয়ের নতুন ঠিকানা বাংলাদেশ। পরাধীনতা শব্দটি মুছে দেয়ার নামই বাংলাদেশ। ২৬ শে মার্চ জাতির ইতিহাসে অমর, অক্ষয়, অবিনশ্বর দিন। নতুন বোধ, চিন্তা স্বপ্ন আর আদর্শের জন্ম ঠিকানা ২৬ শে মার্চ।

জাতি যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন করে শ্রেষ্টতম দিনটিকে। টেক জায়ান্ট গুগলও পালন করছে ২৬ শে মার্চ। বাংলাদেশ ও কোটি মানুষের এই অর্জনকে সম্মান ও স্বীকৃতি জানাতে রাত ১১.৫৯ মিনিটের পর থেকে গুগল ডুডলে শোভা পাচ্ছে বাংলাদেশের পতাকা। সেই পতাকার ওপর কার্সর রাখলেই বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস ২০২৩ ( Bangladesh Independence Day 2023) লেখা দেখা যাচ্ছে। পতাকায় ক্লিক করলেই কয়েক মুহূর্ত লাল সবুজের আতশবাজির অ্যানিমেশন ভেসে উঠছে। সেখানে দিবসটিকে উদযাপন হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে। এছড়াও পেজটিতে ক্লিক করলে স্বাধীনতা দিবসের ইতিহাস ও এ সম্পর্কিত বিভিন্ন তথ্য দেখা যাচ্ছে।

;

স্বয়ংক্রিয়ভাবে চিন্তা করতে সক্ষম এমন অরা লাইট প্রযুক্তি আনছে ভিভো



নিউজ ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ধরুন, ছবি তুলছেন। কিন্তু নেই পর্যাপ্ত আলো। সেক্ষেত্রে আপনি কী করবেন? ফ্লাশ লাইট অন করে ছবি তুলবেন। তখন দেখা যায় ফ্লাশের আলোতে চোখ ধাঁধিয়ে যাবে কিংবা মুখে তেলতেলে ভাব দেখা যাবে। আবার কম আলোতে ছবিও ভালো হবে না। অর্থাৎ আলোর তারতম্যের কারণে ভালো ছবিও নষ্ট হয়ে যায়।

যদি আলো নিজে নিজেই বুঝে যেত কখন, কোথায়, কেমন আলো প্রয়োজন এবং সেই অনুযায়ী আলো নিজের উজ্জ্বলতা কম বেশি করতো, তবে কেমন হতো?

স্বয়ংক্রিয়ভাবে কাজ করতে সক্ষম এমন আলো এখন আর স্বপ্ন নয়, বাস্তব। স্মার্টফোনে অরা লাইট নামে এমন এক দুর্দান্ত প্রযুক্তি নিয়ে আসছে গ্লোবাল স্মার্টফোন নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ভিভো। অরা লাইট হলো ভিভোর এক্সক্লুসিভ পোর্ট্রেট এলগরিদম যা স্বয়ংক্রিয়ভাবে কাজ করতে সক্ষম। এমন কি কম আলো বা অন্ধকারেও ছবির বিষয়বস্তুতে আলোর তীব্রতা পরিমাপ করতে পারে এই লাইট। প্রয়োজনে বুদ্ধিমত্তার সাথে আলোর তারতম্য দূর করে সঠিক টোন বজায় রাখতে সক্ষম। পাশাপাশি অসাধারণ আবহ সৃষ্টিতে বেশ পটু এই প্রযুক্তি।

এক্ষেত্রে অরা লাইট নামের সার্থকতা দেখা যাবে। কারণ ছবির বিষয়বস্তুর নিজস্ব সৌন্দর্যকে তুলে ধরবে অরা লাইট। এই লাইটের ভিতরে অবস্থিত তিনটি লাইট প্রয়োজনীয় আলো সরবরাহ করবে। ছবির টোনকে নষ্টকারী ফ্লাশের অনিয়ন্ত্রিত আলো থাকবে না। ফলে ছবির বিষয়বস্তু অধিক আলোতে নষ্ট হবে না। আবার রাতের আধাঁরেও নিজস্ব সৌন্দর্যকে বজায় রেখে দুর্দান্ত সব ছবি তুলতে পারবে এই নতুন প্রযুক্তি।

বাজেটের মধ্যেই নিত্যনতুন প্রযুক্তির সুবিধাসমৃদ্ধ স্মার্টফোন ব্যবহারে অসাধারণ অভিজ্ঞতা দিয়ে আসছে ভিভো। খুব শীঘ্রই বাংলাদেশে স্মার্টফোনে সম্পূর্ণ নতুন অভিজ্ঞতা নিয়ে ভিভোর ভি সিরিজের ভি২৭ এবং ভি২৭ই স্মার্টফোন দুইটি যাত্রা শুরু করতে যাচ্ছে। এই দুইটি স্মার্টফোনেই পাওয়া যাবে অরা লাইট প্রযুক্তির সুবিধা।

;

আরও ১০ হজার কর্মী ছাঁটাই করছে মেটা



আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

করোনা মহামারি ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের জের ধরে বিশ্বজুড়ে চলা আর্থিক মন্দা সামলাতে গিয়ে বন্ধ হচ্ছে একের পর এক প্রতিষ্ঠান। সেই ধাক্কা সামাল দিকে অনেক প্রতিষ্ঠান কর্মী ছাঁটাইয়ের পথে হাঁটছে।

ফেসবুকের প্যারেন্ট সংস্থা মেটা প্ল্যাটফর্ম বলেছে, তারা তাদের আরও ১০ হজার কর্মীকে ছাঁটাই করবে। মাত্র চার মাস আগে ১১,০০০ কর্মীকে চাকরিচ্যুত করার পর, জায়ান্ট টেক কোম্পানিটি দ্বিতীয় দফায় ব্যাপক ছাঁটাইয়ের এই ঘোষণা দিল।

মঙ্গলবার মেটার সিইও মার্ক জুকারবার্গ জানিয়ে দিয়েছেন, তার সংস্থা কমপক্ষে ১০০০০ কর্মী ছাঁটাই করতে চলেছে। শুধু তাই নয়, ৫০০০ নতুন নিয়োগ দেওয়ার কথা ছিল মেটায়, সেটাও আপাতত বন্ধ থাকছে।

বিভিন্ন সূত্র জানায়, বিজ্ঞাপন থেকে মেটার আয় কমেছে। ফলে ব্যয় কমানোর কথা চিন্তা করেই এই বিপুল সংখ্যক কর্মীকে ছাঁটাই করতে চলেছে মেটা।

;

চ্যাটজিপিটির প্রভাব, ব্যবহারিক তাৎপর্য ও আমাদের ভবিষ্যৎ



রূপম রাজ্জাক
চ্যাটজিপিটির লোগো

চ্যাটজিপিটির লোগো

  • Font increase
  • Font Decrease

চ্যাটজিপিটি নামক কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাভিত্তিক অ্যাপ্লিকেশনটির অসামান্য সক্ষমতা ইতিমধ্যেই প্রমাণিত। এত অল্পসময়ে এতটা হইচই ফেলে দেয়ার মতো প্রযুক্তি সাম্প্রতিক সময়ে আর দ্বিতীয়টি নেই। ফেসবুকে ব্যবহারকারীর সংখ্যা ১০০ মিলিয়নে পৌঁছতে যেখানে সাড়ে ৪ বছর লেগেছিল, সেই সংখ্যা ছুঁতে চ্যাটজিপিটির লেগেছে মাত্র ২ মাসের মতো। এটা প্রযুক্তি দুনিয়ায় নজিরবিহীন। এর সঠিক ব্যবহার হাজারো ক্ষেত্রে মানুষের কাজ সহজ করে দিচ্ছে। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে এর অপব্যবহার নৈতিকতার প্রশ্ন সৃষ্টি করেছে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ছাত্ররা চ্যাটজিপিটি ব্যবহার করে বিভিন্ন ধরনের এসাইনমেন্ট লিখে নিচ্ছেন এবং প্রায় ক্ষেত্রেই তাদের শিক্ষকগণ তা বুঝতেই পারছেন না। কারণ চ্যাটজিপিটি প্রত্যেক ছাত্রকে নিখুঁতভাবে ইউনিক উত্তর লিখে দিচ্ছে। বিষয়টি এখন এমন এক পর্যায়ে গেছে যে বিশ্বের উঁচু সারির অনেক বিশ্ববিদ্যালয় ঘোষণা দিয়ে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই ভিত্তিক এপ্লিকেশন ব্যবহারের ব্যাপারে সাবধানতা অবলম্বন করতে বলছে, এমনকি কিছু কিছু ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞাও আরোপ করেছে।

চ্যাটজিপিটি'র সক্ষমতা যখন অনেক কাজকে সহজ করে দিচ্ছে তখন স্বাভাবিকভাবেই অনেকের মনে শঙ্কা কাজ করছে যে হয়তোবা অনেক ধরনের কাজে এর ব্যাপক ব্যবহার শুরু হলে অনেকেই চাকরি হারাতে পারে। বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যেই বিশ্বব্যাপী আলোচনা চলছে। বিশেষ করে গুগলের মতো টেক জায়ান্ট চ্যাটজিপিটির অনুকরণে অ্যাপ্লিকেশন নিয়ে আসার ঘোষণা দেয়ার পরে এই বিষয়টি অনেকটাই স্পষ্ট। শুধু কি তাই! চ্যাটজিপিটিতে অন্যতম বিনিয়োগকারী মাইক্রোসফট কর্পোরেশন তাদের "বিং" নামক সার্চ ইঞ্জিনে চ্যাটজিপিটি'র সুবিধা দিতে ইতিমধ্যেই চ্যাটমোড নামক একটি আলাপচারী ফিচার যুক্ত করার কাজ শুরু করেছে। এটি উন্মুক্ত হলে সার্চ ইঞ্জিনটির ব্যবহারকারীগন সেখানে শুধু সার্চ রেজাল্ট না, অনেক ধরনের প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে পারবে আলাপচারিতার ঢংয়ে। সেই আলাচারিতা যে শুধু দৈনন্দিন ছোটখাটো প্রশ্নের উত্তর দিতে পারবে তা না, বরং জানাতে পারবে গাণিতিক-অগাণিতিক নানান ধরনের প্রশ্নোত্তর। ফলে কর্মক্ষেত্রে চ্যাটজিপিটি বা এআই এর ব্যবহার বাড়িয়ে দ্রুত কর্মসম্পাদনের এক ধরনের প্রচেষ্টা শুরু হবে। যার সরাসরি প্রভাব পড়বে 'মানব' কর্মীদের উপর।


বর্তমান সময়ে চ্যাটজিপিটির প্রভাব কতটা তা বুঝাতে গত জানুয়ারিতে ডাভোসে অনুষ্ঠিত ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামে মাইক্রোসফটের সিইও সত্য নাদেলার একটি বক্তব্য বিশ্লেষণ করা যেতে পারে। তিনি বলছিলেন, ভারতের একটি রাজ্যে কৃষকদের জন্য চ্যাটজিপিটি ব্যবহার করে একটি সফটওয়্যার বানানো হয়েছে যা দিয়ে সেখানকার কৃষকগণ স্থানীয় ভাষায় অস্পষ্ট বাক্যে সরকারি বিভিন্ন সেবার ব্যাপারে প্রায় নির্ভুল উত্তর পাচ্ছেন। তিনি বলছিলেন, এক্ষেত্রে কিছু ট্রান্সলেটরের মাধ্যমে স্থানীয় ভাষা থেকে ইংরেজিতে রূপান্তর করে চ্যাটজিপিটিকে যে ইনপুট দেয়া হয়েছিল সেসব ভাঙা বা অস্পষ্ট বাক্যগুলোকেই চ্যাটজিপিটি বিশ্লেষণ করে সরকারি বিভিন্ন ডকুমেন্ট ঘেঁটে সঠিক উত্তর সংকলন করতে সক্ষম হয়েছিল। এর বাইরে তিনি আরেকটি উদাহরণ টেনেছিলেন যেখানে একজন অভিজ্ঞ সফটওয়্যার ডেভেলপার দৈনন্দিন কোডিংয়ের কাজে চ্যাটজিপিটি ব্যবহারে ৮০% কর্মক্ষমতা বাড়াতে পেরেছে বলে উল্লেখ করেছেন। এসবের বাইরে আরও হাজারো উদাহরণ আছে যেখানে চ্যাটজিপিটি ব্যবহার করে মানুষ তার কোনো জিজ্ঞাসা বা কাল্পনিক প্রশ্ন থেকে অর্থবহ বিষয়বস্তু পেতে পারছে।

আমি নিজেও যখন চ্যাটজিপিটির ব্যাপারে জেনেছি তখনও এর ব্যাপক শক্তির ব্যাপারে অনুমান করতে পারিনি। আমি চ্যাটজিপিটিকে পরীক্ষা করার জন্য জিজ্ঞেস করেছিলাম, তুমি আমাকে একটা পাইথন কোড দাও যা একটি ফাইল তৈরি করে সেখানে ইংরেজি A-Z অক্ষরগুলোর সমন্বয়ে একটি বাক্য বানিয়ে লিখবে এবং শেষে ফাইলটি মুছে দিবে। চ্যাটজিপিটি শুধু নির্ভুল কোড লিখেই দেয়নি, সাথে প্রত্যেকটি লাইনের নির্ভুল ব্যাখ্যাও দিয়েছে। একইভাবে, তাকে সেই প্রশ্নের উত্তর পিএইচপি'র ক্ষেত্রেও দিতে বললে সেখানেও সে নির্ভুল উত্তর দিয়েছে। বলা বাহুল্য, পাইথন ও পিএইচপি বর্তমান সময়ে দু'টি জনপ্রিয় প্রোগ্রামিং ভাষা। পরবর্তীতে প্রাত্যহিক কাজে বিভিন্ন জটিল সমাধানের অংশবিশেষ পেয়ে আসছি চ্যাটজিপিটির মাধ্যমে। চ্যাটজিপিটি হয়তো পুরো সফটওয়্যার প্রজেক্ট করে দিতে পারছে না, কিন্তু একটি প্রজেক্ট করতে গিয়ে প্রতিটি ধাপে কোনো সমস্যার সমাধান পেতে বা বিদ্যমান সমাধানের বিকল্প সমাধান পেতে অনবদ্য ভূমিকা রাখতে পারছে। বিশেষ করে বিভিন্ন ধরনের কোড কাঠামো পেতে সফটওয়্যার ডেভেলপাররা ব্যাপকভাবে চ্যাটজিপিটি ব্যবহার করছে বলে ধারনা করা যায়। অ্যালগরিদম ভিত্তিক সমাধানের ক্ষেত্রেও চ্যাটজিপিটি একই ধরনের দক্ষতা দেখায়।


অন্যদিকে প্রযুক্তি দুনিয়ায় চ্যাটজিপিটিকে ঘিরে চলছে ভিন্নমাত্রার কার্যক্রম। খুব অল্প সময়ের ব্যবধানেই চ্যাটজিপিটির সক্ষমতাকে ব্যবহার করে বিভিন্ন ধরনের অ্যাপ্লিকেশন তৈরি হয়েছে। কেউ কেউ ব্রাউজার এক্সটেনশন বানিয়েছেন যেগুলোর মাধ্যমে ওয়েব ব্রাউজিংয়ের সময় বিভিন্ন ধরনের সেবা পাওয়া যায়। জনপ্রিয় বিভিন্ন প্রশ্নোত্তরভিত্তিক কমিউনিটিতেও চ্যটাজিপিটি'র সক্ষমতা ব্যবহার করে তাৎক্ষনিক উত্তর দেয়ার এপ্লিকেশন বানিয়েছেন কেউ কেউ (উদাহরণ হিসেবে স্ট্যাকওভারফ্লো'র কথা বলা যায়)। এছাড়া মেসেজিং প্লাটফর্ম স্ল্যাকের জন্য চ্যাটজিপিটি নিয়ে আসছে বিশেষ সমাধান - যার মাধ্যমে ব্যবহারকারীরা আলাপচারিতাকে সামারাইজ করতে ও উত্তরের ড্রাফট রেডি করতে পারবেন এক ক্লিকেই। এছাড়াও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান সেবা দিচ্ছে কিভাবে চ্যাটজিপিটিকে সঠিকভাবে ব্যবহার করে দ্রুত ও নিখুঁতভাবে কর্মসম্পাদন করা যাবে। বিশেষ করে কোন উত্তর খুঁজতে কোন প্রম্পট ব্যবহার করা উচিত - এ ধরনের সেবা দিচ্ছে অনেকেই। লেখালেখি বা ড্রাফট করার মতো কাজে এসবের ব্যবহার অনেক হচ্ছে।

পুরো একাডেমিক এসাইনমেন্ট তৈরি করতে, আইনি কোনো ড্রাফট করতে, ওয়েবসাইট তৈরির কোড পেতে কিংবা মার্কেটিং কৌশল প্রণয়ন করতে চ্যাটজিপিটি অভাবনীয় রকমের দক্ষতা দেখাচ্ছে। তবু অনেক ক্ষেত্রেই এর উত্তর মানুষকে দ্বিধায় ফেলে দিচ্ছে। বিশেষ করে গাণিতিক সমাধানের ক্ষেত্রে বা কৌশলপূর্ন প্রশ্নের বেলায়। তাই বিশেষজ্ঞরা চ্যাটজিপিটির মতো কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার উপর পুরোপুরি নির্ভর করতে সমর্থন দিচ্ছেন না। তারা এসব সমাধানকে যাচাই করে ব্যবহার করতে পরামর্শ দিয়েছেন। তাদের মতে, এটি শুধু বিশ্বাসযোগ্য উত্তর দিতে পারছে ভালোভাবে। কিন্তু সেই বিশ্বাসযোগ্য সমাধান সবসময় সঠিক নাও হতে পারে।


চ্যাটজিপিটি নিয়ে যখন এত ইতিবাচক আলোচনা হচ্ছে, সে সময় কিছু আশংকামূলক আলোচনাও আসছে। বলা হচ্ছে, চ্যাটজিপিটির মতো জেনারেটিভ এআই মডেলগুলো যে পরিমাণ এনার্জি ব্যবহার করছে ও কার্বন নিঃসরণ হচ্ছে তা পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর। বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধির মতো সংবেদনশীল ব্যাপারে নেতিবাচক ভূমিকা রাখবে এসব মডেল। বর্তমান চ্যাটজিপিটির ১৭৫ বিলিয়ন প্যারামিটারের মডেলটিকে ট্রেনিং দিতে প্রত্যেকবার যে পরিমাণ কার্বন ডাই অক্সাইড নিঃসরণ হয়, তা প্রায় ১ লক্ষ ৩ হাজার বার বেইজিং-নিউইয়র্ক ফ্লাইটের যাতায়াতে নিঃসরনযোগ্য কার্বন ডাই অক্সাইডের সমান। এটি অভাবনীয়। সামনের দিনে চ্যাটজিপিটির সক্ষমতা বাড়বে, অন্য যেসব এআই অ্যাপ্লিকেশন আসবে তাদের ক্ষেত্রেও তাই হবে। যেমন- চ্যাটজিপিটির পরবর্তী ভার্সনেই ১০০ ট্রিলিয়ন প্যারামিটার প্রয়োজন হবে, যা বর্তমানের চেয়ে প্রায় ৫৭০ গুণ বেশি। তখন এসবের দ্বারা নিঃসরিত কার্বন বৈশ্বিক পরিবেশ তথা জলবায়ুতে মারাত্মক রকমের প্রভাব ফেলবে।

এখন কথা হচ্ছে, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা আমাদের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ বা নিয়ন্ত্রণ করবে কিনা। আমার মতে, এই মুহুর্তে এর সরাসরি হ্যাঁ বা না উপসংহার করা সম্ভব না। এ প্রসঙ্গে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ইদানীং একটি কথা বেশ প্রচলিত - "কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সরাসরি আপনাকে প্রতিস্থাপন করবে না। করবে একজন ব্যক্তি যে কিনা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সঠিক ব্যবহার জানে।"। ফলে চ্যাটজিপিটি বা এআই আমাদের সক্ষমতাকে প্রতিস্থাপন করতে পারবে না, বরং কো-পাইলট হিসেবে আমাদের কাজে সহায়তা করে যাবে। তাই আগামী দিনে চ্যাটজিপিটি বা এআই ভিত্তিক কোনোকিছুই আমাদেরকে প্রতিস্থাপন করতে না পারলেও আমাদের অদক্ষতার সুযোগে অন্যরা তা করবে নিশ্চিতভাবে বলা যায়। এজন্য প্রতিটি সেক্টরে মানবসম্পদ তৈরির ক্ষেত্রে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে কার্যকরভাবে কাজে লাগানোর প্রশিক্ষণের বিকল্প নেই।

লেখক: রূপম রাজ্জাক, তথ্য প্রযুক্তিবিদ ও সাংবাদিক (ডেটা ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে কর্মরত), লন্ডন, যুক্তরাজ্য।

;