টেসলা পিআই ফোন অবৈধ বিক্রিতে দ.কোরিয়ার রাষ্ট্রদূতের সাবধান বাণী
টেসলা পিআই ফোন অবৈধ বিক্রিতে দ.কোরিয়ার রাষ্ট্রদূতের সাবধান বাণী
মার্কিন ধনকুবের ইলন মাস্কের প্রতিষ্ঠানের স্মার্টফোন ‘টেসলা পিআই ফোন’ এর বাংলাদেশে অবৈধ বিক্রিতে সাবধান বাণী উচ্চারণ করেছেন ঢাকাস্থ দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত লি জাং-কেউন।
মঙ্গলবার (২৭ ডিসেম্বর) ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বারের সঙ্গে তার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে রাষ্ট্রদূত এ সাবধান বাণী উচ্চারণ করেন।
বুধবার (২৮ ডিসেম্বর) ঢাকাস্থ দক্ষিণ কোরিয়ার দূতাবাস থেকে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এসব জানান হয়।
রাষ্ট্রদূত অবৈধ আমদানি মোবাইল হ্যান্ডসেটের জন্য উইল লিস্ট সিস্টেম চালু করার বিষয়েও আলোচনা করেছেন।
রাষ্ট্রদূত জানান, পিআই মোবাইল ফোনের অবৈধ বিক্রি আমদানি শিল্পের ব্যবসায়িক পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তোলে, স্থানীয় উৎপাদনকে বাধাগ্রস্ত করে।
এসকল ফোনের বিক্রয় ৫০ শতাংশের বেশি বেড়েছে, যা পরিমাণে প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকা। যার জন্য বাংলাদেশ সরকার তার ১ হাজার কোটি টাকা পর্যন্ত রাজস্ব হারাচ্ছে।
তিনি বলেন, যদি পিআই ফোনগুলোতে তালিকা সিস্টেম প্রয়োগ করা হয়, তবে যে ফোনগুলো তাদের ইন্টারন্যাশনাল মোবাইল ইকুইপমেন্ট আইডেন্টিটি ( আইএমইআই) নম্বরের সিস্টেমের সঙ্গে নিবন্ধিত নয় সেগুলো কাজ করবে না৷ এটি করার মাধ্যমে, সন্ত্রাসবাদী এবং চরমপন্থী বা অর্থ পাচারকারী সংস্থাগুলো পিআই ফোনগুলো ব্যবহার করতে পারবে না৷
এ প্রসঙ্গে রাষ্ট্রদূত লি যোগ করেন, বাংলাদেশে হোয়াইট লিস্ট সিস্টেম চালু হলে গ্রাহকরা পিআই কেনা থেকে বিরত থাকবেন। যার ফলে আইনি দিক রক্ষা হবে। ফলস্বরূপ, নির্মাতারা বিনিয়োগ বাড়াবে এবং আরও চাকরি তৈরি হবে। সবচেয়ে বড় কথা, আইএমইআই অনুপস্থিতির কারণে সন্ত্রাসী ও অপরাধীরা জাতীয় যোগাযোগের সুযোগ নিলে জাতীয় নিরাপত্তা বাড়াতে হবে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের ডিজিটাল প্রযুক্তিসহ আইসিটি অবকাঠামোর আরও উন্নয়নে দক্ষিণ কোরিয়ার বিশেষ আগ্রহ রয়েছে।
বৈঠকে তারা দ্বিপাক্ষিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে মতবিনিময় করেন, বিশেষ করে ডিজিটাল প্রযুক্তি এবং মোবাইল সেটসহ ডিজিটাল ডিভাইসের উৎপাদন ও বিপণন সম্পর্কে ।
রাষ্ট্রদূত জানান, সব মিলিয়ে স্যামসাং সহ বাংলাদেশে ১৫টি মোবাইল ফোন উৎপাদন ব্যবসা রয়েছে এবং ৯০ শতাংশেরও বেশি স্মার্টফোন এবং ৬৫ শতাংশ ফিচার ফোনের চাহিদা স্থানীয় নির্মাতারা পূরণ করছে, যার মূল্য প্রায় ১০ হাজার কোটি প্রায় টাকা।
ইতিমধ্যে, এই অর্থবছর (২২-২৩) থেকে মোবাইল ফোন বিক্রির একাধিক ব্যবসায়িক পর্যায়ে আরোপিত অতিরিক্ত ট্রেড ভ্যাটের ১৫.৮ শতাংশ স্থানীয় মোবাইল ফোন নির্মাতাদের নেতিবাচকভাবে প্রভাবিত করছে। এইভাবে, এখন মোবাইল ফোন শিল্প ৫০ শতাংশ পর্যন্ত বিক্রি হ্রাসের শিকার হচ্ছে, যা সরকারের কর রাজস্বকেও প্রভাবিত করছে।
রাষ্ট্রদূত লি উল্লেখ করেন ব্যবসার পর্যায় থেকে মোবাইল ফোনের ট্রেডিং ভ্যাট প্রত্যাহার বা হ্রাস করার ফলে গ্রাহকরা সাশ্রয়ী মূল্যে হ্যান্ড গ্যাজেট কিনতে পারবেন যা ডিজিটালাইজেশন এবং স্মার্ট বাংলাদেশ অর্জনে সহায়তা করবে।
রাষ্ট্রদূত লি আরও জোর দিয়ে বলেন, ২০২৩ সাল কোরিয়া-বাংলাদেশ অংশীদারিত্ব উন্নত আইসিটি সহযোগিতার একটি নতুন উচ্চতায় উন্নীত করার জন্য একটি মাইলফলক বছর হবে। উভয় দেশই একসঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্কে ৫০ বছর উদযাপন করতে প্রস্তুত।