জাবিতে ‘জিওসপেসিয়াল ইন অ্যাকশন’ শীর্ষক বিজ্ঞান সম্মেলন অনুষ্ঠিত
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) ‘জিওসপেসিয়াল ইন অ্যাকশন’ শীর্ষক আন্তর্জাতিক এক বিজ্ঞান সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। ইনস্টিটিউট অব রিমোট সেনসিং অ্যান্ড জিআইএস-এর ইয়ুথ ম্যাপারস চ্যাপ্টার ও ওপেন ম্যাপিং হাব এ সম্মেলনের আয়োজন করে।
শুক্রবার (২৬ জানুয়ারি) সকাল ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট কক্ষে ইনস্টিটিউট অব রিমোট সেনসিং অ্যান্ড জিআইএস-এর পরিচালক অধ্যাপক ড. শেখ তৌহিদুল ইসলামের সভাপতিত্বে সম্মেলনের উদ্বোধনী অধিবেশন শুরু হয়।
সম্মেলনে দেশ-বিদেশের ১৭টি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ৮৭টি গবেষণা অভিসন্দর্ভ উপস্থাপনের আবেদন পড়ে। সেখান থেকে যাচাই-বাচাই শেষে ২৭টি গবেষণা অভিসন্দর্ভ সম্মেলনে উপস্থাপন করা হয়। ছয়টি ভাগে ভাগ হয়ে তরুণ গবেষকেরা এসব অভিসন্দর্ভ উপস্থাপন করেন।
বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে বিচার-বিশ্লেষণ করে পাঁচজন তরুণ গবেষককে সেরা অভিসন্দর্ভ উপস্থাপক হিসেবে সনদ দেওয়া হয়।
অধ্যাপক ড. শেখ তৌহিদুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন- জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মোস্তফা ফিরোজ।
তিনি তাঁর বক্তব্যে বলেন, 'বর্তমান বাংলাদেশ তরুণ ও মেধাবীদের জন্য! ৯০-এর দশকে বাংলাদেশে জিপিএস ও রিমোট সেনসিং প্রযুক্তির ব্যবহার ছিল সীমিত। বর্তমানে বাংলাদেশের টেকসই উন্নয়নের প্রতিটি ক্ষেত্রে রিমোট সেনসিং ও জিপিএস প্রযুক্তি ব্যবহৃত হচ্ছে। দুর্যোগপ্রবণ বাংলাদেশে রিমোট সেনসিং অ্যান্ড জিআইএস প্রযুক্তির বহুবিধ ব্যবহার রয়েছে। এর মাধ্যমে ম্যাপারেরা দুর্যোগপ্রবণ এলাকায় না গিয়েও ঘরে বসে দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের উদ্ধার, সাড়াদান ও সহায়তা পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারছেন।'
মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপনে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক ও ফারইস্ট ইন্টারন্যাশনাল ইউনির্ভাসিটির উপাচার্য অধ্যাপক ড. রাকিব আহমেদ রিমোট সেনসিং ও জিআইএস প্রযুক্তির দর্শনসম্বন্ধীয় তত্ত্বগুলো তুলে ধরেন।
এ বিষয়ে তিনি বলেন, 'বর্তমান বিশ্বের যেকোনো সমস্যা মোকাবিলার প্রধান হাতিয়ার হচ্ছে, প্রযুক্তি। তরুণ প্রজন্মকে প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে কীভাবে বৈশ্বিক সমস্যাগুলো মোকাবিলা করা যায়, তা নিয়ে আমাদের ভাবতে হবে।'
সম্মানিত অতিথির বক্তব্যে প্লাজমা বিজ্ঞানী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. এ এ মামুন তাঁর বক্তব্যে বিভিন্ন স্যাটেলাইটের বহুবিধ ব্যবহারের কথা উল্লেখ করে বিশদ আলোচনা করেন। স্যাটেলাইট তথ্য ব্যবস্থাপনা ও গবেষণা করার জন্য তিনি ইনস্টিটিউট অব রিমোট সেনসিং অ্যান্ড জিআইএস-এর প্রশংসা করেন।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে সমাজ বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক বশির আহমেদ, বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউটশনাল কোয়ালিটি অ্যাসুরেন্স সেলের (আইকিউএসি) পরিচালক অধ্যাপক ড. সৈয়দ হাফিজুর রহমান, নগর পরিকল্পনাবিদ অধ্যাপক ড. মো. আকতার মাহমুদ, ভূতাত্ত্বিক বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. হুসাইন মো. সায়েম, ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের অধ্যাপক ড. উম্মে সায়কা, সহযোগী অধ্যাপক রেজাউল রনি ও রওনক জাহানসহ বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষকেরা উপস্থিত ছিলেন।
পরে বিকেল ৪টায় গবেষণা অভিসন্দর্ভ উপস্থাপনকারীদের মধ্যে সনদপত্র বিতরণের মাধ্যমে সম্মেলনের সমাপ্তি ঘোষণা করেন ইনস্টিটিউট অব রিমোট সেনসিং অ্যান্ড জিআইএস-এর পরিচালক অধ্যাপক ড. শেখ তৌহিদুল ইসলাম।
উল্লেখ্য, ইনস্টিটিউট অব রিমোট সেনসিং অ্যান্ড জিআইএস-এর ইয়ুথ ম্যাপার চ্যাপ্টারটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসটেক বিশ্ববিদ্যালয়ের পৃষ্ঠপোষকতায় পরিচালিত একটি মানবিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন।