ঢাকা থেকে নীলডুমুর: সুন্দরবনে কিছুক্ষণ



হাসান মোঃ শামসুদ্দীন
ঘোলাপেটুয়া নদী - সূর্যাস্ত

ঘোলাপেটুয়া নদী - সূর্যাস্ত

  • Font increase
  • Font Decrease

এপ্রিলের আবহাওয়া বেড়ানোর জন্য তেমন আদর্শ না হলেও সুযোগ যেহেতু পেয়ে গেলাম তাই ঢাকা থেকে খুলনা যাবার প্ল্যান করলাম, এবার বাসে না গিয়ে ট্রেনে যাব ঠিক করলাম। ঢাকা থেকে খুলনা এসি বাস আছে এবং টিকিটও সহজেই পাওয়া যায়। আমরা ট্রেনে যাব তাই ঢাকা-খুলনা সুন্দরবন এক্সপ্রেস ট্রেনে করে যাওয়া ঠিক হলো। এসি ফোরবার্থের টিকিট পেয়ে গেলাম। আমার দুটো পরিবার এবার ভ্রমণে বের হয়েছি। সুন্দরবন এক্সপ্রেস সকাল ছয়টা বিশ মিনিটে কমলাপুর থেকে ছাড়ে। বাচ্চাদের অত ভোরে উঠতে অসুবিধা হবে তাই আগের রাতে তাড়াতাড়ি ঘুমাতে পাঠালাম। গাড়িতে খাবার জন্য নাস্তা ওদের মা বেশ সুন্দর ভাবে গুছিয়ে নিল। সময় মত স্টেশনে গিয়ে জানলাম ট্রেন আরো ঘণ্টা দেড়েক পরে আসবে। এসি ওয়েটিং রুমে বসে রইলাম, এর রক্ষণাবেক্ষণ অতি সাধারণ মানের অথচ একটু দেশপ্রেম কিংবা আন্তরিকতা হলেই অনেক উন্নত মানের ভ্রমণ উপহার দিতে পারে দেশবাসীকে কিংবা বাংলাদেশ দেখতে আসা পর্যটকদেরকে ।

অবশেষে ট্রেন আসল। কুলি ঠিক করা ছিল। জিনিস পত্র আমাদের কমপার্টমেন্টে এনে দিল। এসি কমপার্টমেন্ট, একসময় এগুলো ঝকঝক করত এখন একটা সুইপার ফিনাইল দিয়ে টয়লেট পরিষ্কার করে কোনমতে রুমে একটু ভেজাপাটের ঝাড়ু দিয়ে গেল। সোফা গুলোতে ময়লা রয়ে গেছে, যাক নিজেরা পরিস্কার করে বসলাম। এই বগিতে যাত্রীদের জন্য এটেনডেন্ট আছে, এই ট্রেনের একটা দিক ভাল যে রুমের সাথে এটাচড বাথরুম, সেখানে টয়লেট পেপারও আছে। তবে গোটা বগিতে তিনটার মতো কামরাতে যাত্রী, বাকীগুলো খালি, অথচ টিকিট নেওয়ার সময় জানতাম সবটিকিট বিক্রি হয়ে গেছে। ইঞ্জিন লাগার পর এসি চালো হলো। ঠান্ডা বাতাসের আমেজে দু ঘণ্টা লেইট ও অন্যান্য কষ্ট গুলো আস্তে আস্তে কমে গেল।

সাড়ে আটটার দিকে ট্রেন ছাড়লো। গরমের দিন হলেও সূর্যের আলোতে তখনও গরমভাব আসেনি, এসির মধ্যে এ আলোটাই ভাল লাগলো। কমলাপুর রেল স্টেশনে ট্রেনের দুপাশের সেই পরিচিত দৃশ্য, আরো নান্দনিক এলাকা বানানো যেত এই জায়গাগুলোকে। কে খেয়াল রাখে। লাইনের দুপাশে ধুলি উড়িয়ে সুন্দরবন এক্সপ্রেস সুন্দরবনের নগর খুলনার উদ্দেশ্যে ছুটে চলল। এয়ারপোট ও জয়দেবপুর স্টেশন পর্যন্তসেই পুরানো সব দৃশ্য, জয়দেবপুর থেকে নতুন লাইন টাঙ্গাইল হয়ে বঙ্গবন্ধু যমুনা ব্রীজ পর্যন্ত চলে গেছে। এই লাইন দিয়ে ব্রডগেজ ও মিটার গেজ উভয় ট্রেন চলতে পারে। নতুন বড় স্টেশন হয়েছে টাঙ্গাইলে তাছাড়া মৌচাক ও অন্যান্য কয়েকটা স্টেশন ও আছে। এখানে মাঝে মাঝে ট্রেন থেমে একটা দুটো আপ বা ডাউন ট্রেনকে পাস দিল।

বঙ্গবন্ধু যমুনা ব্রিজ

বিজেএমবিতে উঠে ট্রেনের গতি কমে গেল। কোথায় সেই প্রমত্তা যমুনা, ব্রিজের নীচে চিকন খালের মত যমুনার অংশ তার পাশেই চর। চরের বালি ঢেউ খেলানো যেন নদীর ঢেউ বালিতে তার ছাপ রেখে গেছে। চরে শনের ক্ষেত, অসমতল ভূমি দেখতে দেখতে এগিয়ে যাচ্ছে ট্রেন লাইনের পাশে ট্রেন। পাশ দিয়ে উত্তর বঙ্গগামী বাস ট্রাক চলছে। আবার একচিলতে যমুনা তারপর ব্রিজটা উত্তর বঙ্গে গিয়ে শেষ । দুপাশের প্রকৃতি এখন একটু অন্য রকম। ট্রেনের দুধারে যেন ফাঁকা ধানের মাঠ, সবুজ ধান ফসল আসবে আসবে। দুরের গ্রামগুলো গাছ পালায় ছায়াঢাকা। কৃষক ধানক্ষেতের পাশে বিশ্রাম নিচ্ছে, কেউ কাজ করছে। পানি এখন উঠে পাম্প মেশিনে, পানি দেয়া হয়েছে ক্ষেত গুলোতে। সিরাজগঞ্জ, পাবনার পাকশি তারপর ট্রেন চলবে দক্ষিন বাংলার দিকে, পথে উত্তর বাংলার অনেক ট্রেন স্টেশন।

 হার্ডিঞ্জ ব্রিজ

পাকশি স্টেশন পার হয়ে ট্রেন বিখ্যাত হার্ডিঞ্জ ব্রিজের উপর, নীচে একসময় ছিল প্রমতা পদ্মা। এখন তার কিছুই নেই। যেন চকচক করে বালু কোথাও নাই কাঁদা। হার্ডিঞ্জ ব্রিজের প্রায় সমান্তরালে চলে গেছে লালন শাহ ব্রিজ। ব্রিজ দিয়ে বাস ট্রাক চলছে নিজ নিজ গন্তব্যে। ব্রিজ পার হয়ে ভেড়ামারা স্টেশন, আমরা দক্ষিণ বাংলায় ঢুকে গেছি। দর্শনা, চুয়াডাংগা, কোট চাঁদপুর হয়ে যশোর স্টেশন। ট্রেন থামলেই বাচ্চারা জানতে চায় কোন স্টেশন, কি আছে এখানে। নতুন অভিজ্ঞতা বাচ্চাদের জন্য। খুলনা আর ঘণ্টা দেড়েকের পথ । যশোর স্টেশনে ট্রেন কিছুক্ষণ থামল, তারপর আবার পথচলা । খুলনার কাছাকাছি আসতেই বেলা শেষ। মাগরিবের আজানের সময় খুলনা স্টেশনে ট্রেন থামল, স্টেশন থেকে বাহিরে এসে মসজিদে নামাজ পড়লাম। একটু ঝড়ো বাতাস ছিল তখন। এই দুদিনে যদি আবহাওয়া ভাল না থাকে তাহলে এই ভ্রমণটা মাটি হবে। অনেক আশা নিয়ে এসেছি এবং ইনশাআল্লাহ আবহাওয়া ভাল থাকবে।

রাতে খুলনা শহর দেখতে বের হলাম, খোলামেলা শহর জানজট মুক্ত নির্মল, ভাল লেগে গেল প্রথমবারেই। ঢাকার দুঃসহ জট এখানে স্বপ্নের মত। খুলনায় থাকার জন্য অনেক হোটেল আছে। স্টেশনের পাশে সুন্দরবন ভ্রমণের জন্য কতগুলো বেসরকারি পর্যটন সংস্থার অফিস। এখানে হোটেলের খোজ পাওয়া যায়। ট্যাক্সি কিংবা রিক্সায় হোটেলে যাওয়া যায়। দামও সাধ্যের মধ্যে। পরদিন সকাল বেলা নাস্তা খেয়ে সাতক্ষিরার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হলাম। সাতক্ষীরা পর্যন্ত প্রায় দুই ঘণ্টা লাগে এবং সেখান থেকে নীলডুমুর আরো ঘণ্টা দেড়েকের পথ। বাসে আসলে অবশ্য সময় আরো বেশি লাগে। নীলডুমুরের স্থানীয় নাম বুড়ি গোয়ালিনী, সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ পর্যন্ত অনেক বাস যায় যেখান থেকে স্থানীয় বাহনে বুড়ি গোয়ালিনী যাওয়া যায়। নীলডুমুরের দিকে যতই এগিয়ে যাচ্ছি রাস্তার দু পাশে ফনিমনসার ঝোপ দেখা যাচ্ছে। বাড়িঘরের কাছেও এ ধরনের ঝোপ যা বাংলাদেশের অন্যান্য এলাকায় দেখা যায় না ।নীলডুমুর এলাকায় ঢোকার সাথে সাথেই প্রকৃতি একটু অন্যরকম। দূরে শাখা নদী, নদীর অন্যপাড় সুন্দরবনের অংশ। রাস্তার দুপার্শ্বে জলমগ্ন এলাকা, চিংড়ি চাষে লেগে গেছে । লবণাক্ততা চাষাবাদের জন্য অনুপযোগী হলেও এই লবনপানির জলাবদ্ধতা চিংড়ি চাষের উপযুক্ত জায়গা । এখানেও বাড়ীঘর ও রাস্তার পাশে ফনীমনসার ঝোপ দেখলাম ।

পর্যটনের জন্য স্থানীয় এনজিও বর্ষা মোটেল বানাচ্ছে। তাছাড়া শাখা নদীর পাড়ে ছোট ছোট গোলঘর বানানো আছে। যেখানে বসে থেকে এক দৃষ্টিতে সুন্দর বনের সোভা দেখা যায় দিন রাত। এছাড়াও তাদের আছে ছোট ছোট বোট/লঞ্চ। এসব লঞ্চে সুন্দর বনের ভিতরে ভ্রমনের ব্যবস্থা করে থাকে। মোটামুটি এসময় পর্যটকের ভিড় না থাকলেও সুন্দরবনের টানে অনেক পর্যটক এখানে বেড়াতে আসে।

ঘোলাপেটুয়া নদী

দুপুরে রোদের প্রচন্ড তাপে বাইরে যাওয়ার কথা চিন্তাও করিনি ।বিকেল বেলা সুন্দরবন দেখার পালা। ঘোলাপেটুয়া নদীর ঘাট থেকে রওয়ানা হলাম সুন্দরবন দেখতে। নদীর দুপাশ থেকে অসংখ্য শাখা শিরা উপশিরার মত ছড়িয়ে গেছে । ভাটার সময় বলে এগুলোতে পানি ছিল না তবে জোয়ারের সময়ে এগুলোতে পানি থাকে। ভেজা দুইকুল দেখেই তা বোঝা যায়, নদীপথে ৪৫ মিনিট চলার পর বন বিভাগের টহল ফাঁড়ির জোট দেখা গেল। যাত্রা পথে বুড়ি গোয়ালিনী বাজার দেখলাম। এই বাজারের ঘাট থেকে যন্ত্রচালিত নৌকায় সৌখিন পর্যটকরা সুন্দরবনে ঘুরতে যায়। ঘাটে এ রকম কতগুলো নৌকা বাঁধা আছে। কলাগাছিয়া টহলফাঁড়ি এবং ইকো টুরিজম কেন্দ্রে বোট ভিড়ালাম। সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠে ব্রিজের মত পাটাতনের উপর দিয়ে হেঁটে ফরেস্ট অফিসে যেতে হয় ।

কলাগাছিয়া টহলফাঁড়ি এবং ইকো টুটিজম কেন্দ্র

বনবিভাগের লোকজন এখানে থাকে। নামমাত্র দাম দিয়ে টিকিট করে এখানে বেড়ানোর ব্যবস্থা আছে। ইনচার্জ আমাদেরকে জানালো বাঘ ও এখানে মাঝে মাঝে আছে এবং হরিনের অভয়ারণ্য এটা, মাটিতে অনেক হরিণের পায়ের ছাপ দেখলাম। বাচ্চারা গোলপাতা গাছ দেখার জন্য উৎসুক, নারকেল পাতার মত পাতার নাম কেন গোলপাতা এটাই তারা ভেবে পায়না। সুন্দরী, কেওড়া ইত্যাদি নানা ধরনের গাছ এখানে আছে। বনবিভাগ পর্যটনের জন্য সুন্দর ওয়াকওয়ে বানিয়ে দিয়েছে। ধন্যবাদ জানাই দুরদর্শী সেই বন কর্মকর্তাকে।

ওয়াকওয়ে কলাগাছিয়া টহলফাঁড়ি এবং ইকো টুরিজম কেন্দ্র

ওয়াকওয়ের একদিক দিয়ে যাত্রা শুরু করলে সুন্দরবনের গাছপালা, হরিণের পায়ের ছাপ, জোয়ার ভাটার চিহ্ন, কৃত্রিমভাবে বানানো মিষ্টি পানির আঁধার এগুলো সব দেখতে দেখতে আবার নিজ অবস্থানে ফিরে আসা যায়। ওয়াকওয়ের নীচে জোয়ারের পানি আসে, ভাটার সময় পানি নেমে যায়। মিষ্টি পানি খেতে বনের অন্যান্য প্রানী আসে। বাঘ মামারা পানির টানে চলে আসে এখানে। এই নির্জন এলাকায় বন বিভাগের লোকজন মুরগী পালে এবং কাছের বাজার থেকে তাদের প্রয়োজনীয় জীবন উপকরন সংগ্রহ করে আনে। চোরাকারবারি বা বনদস্যুদের হটাতে তাদের ইঞ্জিন চালিত বোট আছে। তবে এটা দিয়ে দ্রুতগামী দস্যুর বোট ধাওয়া করা বেশ কষ্টকর। সন্ধ্যা হয় হয় করছে, সূর্য পশ্চিমে ঢলে পরছে। সুন্দরবনের জালের মতো বিছানো ছোট ছোট খাল ও বনের গাছপালায় ফাঁক দিয়ে সূর্যাস্ত দেখতে দেখতে বোটে চড়লাম। আলো থাকতে থাকতে বুড়ি গোয়ালিনী ঘাটের দিকে রওয়ানা দিলাম। বাচ্চারা বাংলাদেশের প্রাকৃতিক লীলাভূমি সুন্দরবন দেখে মুগ্ধ হলো। এটা এক নতুন অভিজ্ঞতা।

বুড়ি গোয়ালিনী এলাকা, সাতক্ষীরা

সন্ধ্যায় ফেরত এসে আবার নদীর ঘাটে গেলাম জোয়ার দেখার জন্য, আকাশে হালকা চাঁদের আলো, নদীর ঘাটে সোঁ সোঁ শব্দে বাতাস বয়ে যাচ্ছে। নদীতে জোয়ারের পানির ছলাত ছলাত শব্দ। জোয়ারের সময় কিভাবে পানি বাড়ে তাদের বিশ্বাস হচ্ছে না, তাই তারা ঘাটের সিঁড়ির দিকে খেয়াল করছে বেশ মনোযোগ দিয়ে। একটু একটু করে পানি বেড়ে সিঁড়িগুলো ডুবিয়ে দিচ্ছে আর তাদের আগ্রহ আরও বাড়ছে, একসময় অনেক কাছে জোয়ারের পানি এসে গেল, নদীর এই জোয়ার ভাটার অভিজ্ঞতাও তাদের কাছে নতুন, যদিও কক্সবাজারের সমুদ্রতীরে তারা দেখেছে। রাত বাড়ছে তাই রেস্ট হাউজে ফিরে এলাম। পরদিন সকালে খুলনার উদ্দেশ্যে ফিরতি যাত্রা, সাতক্ষিরা হয়ে রওয়ানা দিলাম ।

বুড়ি গোয়ালিনী এলাকা, সাতক্ষীরা

খুলনা শহরের সাতক্ষীরার ঘোষের মিষ্টান্ন ভান্ডার থেকে নতুন নতুন নাম ও ডিজাইনের মিষ্টি কেনা হলো, একটা মিষ্টির নাম ইলিশ এটা বেশ হিট হলো, বাচ্চাদের এটা বেশ পছন্দ। সন্ধ্যায় রুপসা ব্রিজ দেখতে বের হলাম, প্রথমে লঞ্চ ঘাটে এলাম, লঞ্চঘাট খুলনা স্টেশনের পাশেই ।

রাত হওয়াতে যাত্রী নেই, সুন্দরবন ভ্রমণের জন্য রুপসা নামের পর্যটক ভর্তি দুটো লঞ্চ ঘাটে অপেক্ষা করছে। এরা প্রাইভেট পর্যটন সংস্থার মাধ্যমে প্যাকেজ ট্যুরে সুন্দরবন যাচ্ছে। একটা লঞ্চে অনুমতি নিয়ে উঠলাম, ঢুকতেই খাবার ঘর, রাতে বিরিয়ানী খাচ্ছিল যাত্রীরা । দোতালায় উঠে কেবিনগুলো দেখলাম, পর্যটকরা তাদের রুমে আরাম করছে, সকাল নাগাদ লঞ্চ ছেড়ে যাবে । এটা কটকা ও হিরন পয়েন্ট হয়ে আবার এখানেই ফিরে আসবে ।

রাতের রুপসা ব্রিজ

লঞ্চ ঘাট থেকে রুপসা ব্রিজের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হলাম, রাস্তা প্রায় ফাঁকা, ব্রিজের উঠার রোড চমৎকার। সুন্দর ও নান্দনিক ব্রিজ এলাকা, আলো জ্বলজ্বল করছে। টোল প্লাজার ওপারে না গিয়ে এপারেই গাড়ি ঘুরিয়ে নিয়ে কিছুক্ষণ দাঁড়ালাম, নিচে নদী বয়ে চলছে। নদীতে সেই চিরপরিচিত নৌকায় টিমটিম করে আলো জ্বলছে, যন্ত্রচালিত নৌকা শব্দ করে রাতের আঁধারে নদীর বুক চিরে গন্তব্যে যাচ্ছে। ব্রিজের উপর সুন্দর বাতাস কিছুক্ষণ থেকে ফিরে চললাম। ঢাকা থেকে খুলনা হয়ে সুন্দরবন দেখার চমৎকার অভিজ্ঞতা নিয়ে ফিরে আসলাম। সেখানে যোগাযোগ ব্যবস্থা ভাল বলে সুন্দরবন ভ্রমণ এখন তেমন কষ্টসাধ্য নয়। একটা ছোট গ্রুপে বেশ মজা করে প্যাকেজ প্রোগ্রামের আওতায় সুন্দরবন দেখা যায়। দেশকে দেখুন, আমাদের দেশ অনেক সুন্দর। আসুন আমরা তাকে আরও সুন্দর করি।

ব্রি জেনারেল (অবঃ) হাসান মোঃ শামসুদ্দীন
লেখক সদস্য বাংলাদেশ ট্র্যাভেল রাইটার্স এসোসিয়েশন

 

   

পায়ে হেঁটে টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়ায় শান্তা-শাওন দম্পতি



তৌফিক হাসান, কন্ট্রিবিউটিং এডিটর, ট্রাভেল এন্ড ট্যুর
পায়ে হেঁটে টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়ায় দম্পতি

পায়ে হেঁটে টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়ায় দম্পতি

  • Font increase
  • Font Decrease

সম্প্রতি এক প্রাণোচ্ছল ভ্রমণপিপাসু দম্পতি পায়ে হেঁটে টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়াতে পৌঁছান। ‘প্রতিটি প্রাণ মূল্যবান, আত্মহত্যা নয়- বাঁচতে শিখি’ এ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে চলতি বছরের গত ২৮ জুন পায়ে হেঁটে টেকনাফ থেকে ভ্রমণ শুরুর পর শনিবার (২৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে বাংলাবান্ধা জিরো পয়েন্টে ভ্রমণ শেষ করেন তারা।

ব্যাংকার শারাবান তহুরা শান্তা এবং আর্কিটেক্ট আল ইমরান শাওন তাদের পেশাগত ব্যস্ততার মাঝেও এই সময় বের করে আত্মহত্যা নয় বাঁচতে শেখার প্রতিপাদ্যকে দেশব্যাপী ছড়িয়ে দিতে এই দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়েছেন। দম্পতির ভাষ্যমতে তাদের এই ভ্রমণে তারা প্রচুর মানুষের সাথে বিশেষ করে তরুণ তরুণী এবং স্কুলের বাচ্চাদের সাথে কথা বলেছেন, দেশকে দেশের মানুষকে নতুন করে চিনেছেন এবং অনেককে নতুনভাবে চিনতে সাহায্য করেছেন ও সচেতন করেছেন। চলার এই পথে তারা নানাবিধ সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন। নতুন কিছু শিখতে, মানুষকে জীবন সম্পর্কে জানাতে ও সচেতন করার অভিপ্রায় তাদের পিছু হটতে দেয়নি।

ইনানীতে কয়েকজন তরুণ তাদের স্বাগত জানায়

বার্তা২৪ কে শান্তা বলেন, বিগত ২৮ জুন আমরা হাঁটা শুরু করি টেকনাফের শাহীপরীর দ্বীপ থেকে। প্রথমদিন প্রায় ২৮ কিলোমিটার পথ হেঁটে বড়ডিলের মরিসবুনিয়া স্কুলের নৈশপ্রহরীর বাড়িতে রাত্রিযাপনের ব্যবস্থা হয়। সেদিন রাতে আমাদের সাথে একটা ভয়ঙ্কর ঘটনা ঘটে। মাঝরাতের দিকে হাতির পাল আমাদের থাকার ঘরে আক্রমণ করে বসে। নৈশ প্রহরীর পরিবারের সাথে দৌড় দিয়ে স্কুল ঘরে গিয়ে উঠি এবং বাকি রাতটা আমাদের সেখানেই কাটে। দ্বিতীয় দিন ছিল ঈদের দিন, সেদিন প্রায় ৩৬ কিলোমিটার হেঁটে থেকে ইনানী বিচ পর্যন্ত যাই। ঈদের ছুটিকে কাজে লাগিয়ে ১০ দিনে ৪০০ কিলোমিটার কুমিল্লার দাউদকান্দি পর্যন্ত পৌঁছাই। পরের সপ্তাহে দাউদকান্দি থেকে হেঁটে ঢাকার রামপুরা পর্যন্ত আসি। অতঃপর মায়ের অসুস্থতা, পারিবারিক সমস্যা এবং অফিসের ব্যস্ততার কারণে কয়েক সপ্তাহ বিরতি নিয়ে পুনরায় সাপ্তাহিক ছুটির দিনে হাঁটা শুরু করি। এভাবে হাঁটতে হাঁটতে আরিচা হয়ে ট্রলারে যমুনা পাড়ি দিয়ে কখনো হাইওয়ে ধরে আবার কখনো লোকাল রাস্তা দিয়ে হেঁটে উত্তরের সীমান্ত তেঁতুলিয়ার বাংলাবান্ধা জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত পৌঁছে ভ্রমণ শেষ করি।

 পুরো ভ্রমণে কোনো সমস্যায় পরতে হয়েছিল কিনা তার জবাবে শান্তা জানান। ফেনী ক্রস করার পর আমার স্বামী আমাকে ফেলে বেশ খানিকটা এগিয়ে যাওয়ায় ৫/৬ জন বখাটে আমাকে ঘিরে ধারে নানানভাবে উত্ত্যক্ত করতে থাকে এবং অনৈতিক কথা বলতে থাকে। সেসময় আমি সাহস নিয়ে প্রতিবাদ করায় এবং উপস্থিত বুদ্ধি খাঁটিয়ে ওদের ভয় দেখানোতে ওরা দৌড়ে পালিয়ে যায়। এই ঘটনা ছাড়া তেমন কোন সমস্যা হয়নি। তবে আমাদের দেশে পাবলিক টয়লেট না থাকে চলতি পথে ভ্রামনিকদের খানিকটা সমস্যায় পড়তে হয়। আমাদের দেশের মানুষজন খুব ভাল এবং সাহায্যপরায়ণ।

অনিন্দ্যসুন্দর এক রাস্তায় ভ্রামনিক শান্তা

শাওন বার্তা২৪ কে বলেন, আমরা ঐকান্তিক চেষ্টা ছিল দেশব্যাপী পায়ে হেঁটে ঘোরার এবং মানুষের মধ্যে জীবনের বানী পৌঁছে দেবার এবং শত বাধার পরেও আমরা চেষ্টা করে গেছি। ভবিষ্যতেও আমাদের এই প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে এবং মূল প্রতিবাদ্যকে মাথায় রেখে দেশের অন্যান্য অঞ্চলেও ভ্রমণ করার ইচ্ছে আছে আমাদের। আমি বন্ধু এবং শুভানুধ্যায়ীদের ধন্যবাদ জানাই এবং আউটডোর বিডি এর প্রতি বিশেষ কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করি এই ভ্রমণে বিভিন্ন ভাবে পরামর্শ ও সহায়তা দেবার জন্য।

স্কুলের বাচ্চাদের সাথে মতবিনিম

আউটডোর বিডির ফাউন্ডার জুয়েল রানা বার্তা২৪ কে বলেন, আমি নিজে একজন ভ্রমণপাগল মানুষ। আউটডোর বিডি’র উদ্দেশ্যেই হলো একজন পরিব্রাজক বা ভ্রমণকারী যাতে হাতের কাছেই সহজলভ্যে সকল ভ্রমণ সামগ্রী পান। শান্তা ও শাওন দম্পতি এই ভ্রমণ সম্পন্ন করায় আমরা খুশি এবং তাদের এই ভ্রমণ দেখে আরও মানুষ উদ্বুদ্ধ হোক আমরা সেটাই চাই।

;

ইন-ফ্লাইট সার্ভিস ক্যাটাগরিতে গোল্ড পুরস্কার পেলো এয়ার এ্যাস্ট্রা



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট বার্তা২৪.কম ঢাকা
গোল্ড পুরস্কার নিচ্ছেন এয়ার এ্যাস্ট্রার সিইও ইমরান আসিফ। ছবি : সংগৃহীত

গোল্ড পুরস্কার নিচ্ছেন এয়ার এ্যাস্ট্রার সিইও ইমরান আসিফ। ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

‘মনিটর এয়ারলাইন অব দ্য ইয়ার ২০২৩’- এর বেস্ট ইন-ফ্লাইট সার্ভিস ক্যাটাগরিতে সেরা হয়েছে এয়ার এ্যাস্ট্রা।

রাজধানীর ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে বুধবার (২০ সেপ্টেম্বর) রাতে বাংলাদেশ মনিটর আয়োজিত গালা অ্যাওয়ার্ড নাইটে এয়ার এ্যাস্ট্রার সিইও ইমরান আসিফের হাতে বেস্ট ইন-ফ্লাইট সার্ভিস ক্যাটাগরির গোল্ড পুরস্কার তুলে দেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী, এমপি।

যাত্রী সন্তুষ্টির প্রতিশ্রুতির জন্য পরিচিত এয়ার এ্যাস্ট্রা ২০২২ সালের ২৪ নভেম্বর যাত্রা শুরু করে বর্তমানে কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, সৈয়দপুর এবং সিলেটে ফ্লাইট পরিচালনা করছে।

এয়ার এ্যাস্ট্রা’র বহরে বর্তমানে তিনটি এটিআর ৭২-৬০০ এয়ারক্রাফট রয়েছে, যা ফ্রান্সে নির্মিত সর্বাধুনিক প্রযুক্তির টার্বোপ্রপ এয়ারক্রাফট এবং ৭০ জন যাত্রী বহন করতে সক্ষম।

বাংলাদেশ মনিটর তাদের বাৎসরিক কার্যক্রম হিসেবে ২০০৭ সালে বাংলাদেশে ‘এয়ারলাইন অব দ্য ইয়ার’ প্রবর্তন করে। এভিয়েশন ও পর্যটন বিষয়ক প্রকাশনা ‘বাংলাদেশ মনিটর’-এর জরিপের ভিত্তিতে বিজয়ীদের নির্বাচিত করা হয়।

বিগত এক বছরে যারা কমপক্ষে তিনবার আকাশপথে ভ্রমণ করেছেন, তারা অনলাইনে নিজের পছন্দের এয়ারলাইন্সকে ভোট দিতে পেরেছেন।

;

সিলেটে একসঙ্গে ঘুরে দেখা যাবে ২৩টি পর্যটন স্পট



মশাহিদ আলী, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, সিলেট
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি সিলেট। সিলেটের অপার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের খ্যাতি ছড়িয়ে পড়েছে বিশ্বজুড়ে। যেদিকে চোখ যায় সেদিকে উঁকি দিয়ে ডাকছে প্রকৃতির সৌন্দর্য। আর সেই সৌন্দর্য উপভোগের জন্য দেশ-বিদেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছুটে আসেন ভ্রমণপিপাসুরা। প্রতিদিন সিলেটে বেড়াতে আসেন হাজার হাজার পর্যটকরা।

কিন্তু পর্যটন স্পটগুলোতে যোগাযোগ ব্যবস্থা খুব একটা ভালো না থাকায় বেশ ভোগান্তিতে পড়তে হয় ঘুরতে আসা পর্যটকদের। তবে এবার পর্যটক ও এই অঞ্চলের মানুষের কর্মসংস্থানের কথা চিন্তা করে নেয়া হয়েছে উদ্যোগ। দুই দিনে এক সঙ্গে ২৩টি স্পট ঘুরে দেখতে পারবেন ভ্রমণপিপাসুরা।

জানা যায়, সিলেটের ৪ আসনের সংসদ সদস্য এবং প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ এমপির দিক নির্দেশনায় সিলেটের জেলা প্রশাসক এবং বিভাগীয় কমিশনার প্রেরিত ২০২৩ সালের জেলা প্রশাসক সম্মেলনে কোম্পানিগঞ্জ উপজেলার ভোলাগঞ্জের সাদাপাথর হয়ে জাফলং পর্যন্ত একটি সড়ক তৈরির প্রস্তাবনা তুলে ধরা হয়। আর সেই প্রস্তাবনা শুনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দ্রুত পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে সড়ক ও জনপথ অধিদফতরকে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন। নির্দেশনা অনুযায়ী ইতোমধ্যে প্রাথমিক জরিপ সম্পন্ন করেছে সিলেট সড়ক ও জনপথ বিভাগ।

প্রতি সপ্তাহের বৃহস্পতিবার থেকে শনিবার পর্যন্ত এই তিনদিন সিলেটে পর্যটকদের আনাগোনা বেশি থাকে। কারণ শুক্রবার ও শনিবার সরকারি বন্ধ থাকায় চাকরিজীবিরা আসা যাওয়া করেন। তাদের অনেকেই একদিনে প্রাকৃতিক সৌন্দের্যের লীলাভূমি জাফলং ও পাথর সাম্রাজ্য সাদাপাথর ঘুরে দেখতে চান। কিন্তু সময় ও ভোগান্তির কারণে তা আর একদিনে ঘুরে বেড়ানো যায় না। কারণ যেখানে মাত্র ত্রিশ কিলোমিটার রাস্তা পাড়ি দিলে জাফলং থেকে সাদাপাথর যাওয়া সম্ভব সেখানে পাড়ি দিতে হয় ১২০ কিলোমিটার। আর এই ১২০ কিলোমিটারে পাড়ি দিতে গিয়ে হাতছাড়া হয়ে যায় আর ৫টি পর্যটন স্পট। জাফলং থেকে ভোলাগঞ্জ সাদাপাথর প্রতিমধ্যে পান্তুমাই, বিছনাকান্দি, রাতারগুল, শ্রীপুর, শাপলা বিল, লাক্কাতুড়া চা বাগানসহ বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান ঘুরে দেখা যাবে।

সিলেটে বেড়াতে আসা পর্যটক দর্শনার্থীদের ভ্রমণকে সহজতর এবং আরামদায়ক করণে প্রধানমন্ত্রী নির্দেশিত সড়কটি বাস্তবে রূপান্তরিত হলে এখানে আসা পর্যটকরা একটি সড়কে যাতায়াত করে ২ দিনে ২৩টি পর্যটন স্পট ঘুরে দেখতে পারবেন। সড়কটি নির্মাণ করা হলে সিলেটের পর্যটন শিল্প বিকশিত হবে। সেই সাথে পর্যটন শিল্পে সরকারি এবং বেসরকারি বিনিয়োগ বৃদ্ধি পাবে। এছাড়াও এই অঞ্চলের মানুষের কর্মস্থানের বিশাল সুযোগ তৈরি হবে।

জাফলং-কোম্পানিগঞ্জের সাদাপাথর পর্যন্ত সড়ক তৈরির বিষয়ে চলতি বছরের ২৪ এপ্রিল দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদফতরকে নির্দেশনা দিয়ে পত্র পাঠানো হয়। ইতোমধ্যে প্রাথমিক জরিপের কাজ শেষ করেছে বলে জানিয়েছে সড়ক ও জনপথ অধিদফতর সিলেট।

এব্যাপারে সড়ক ও জনপথ অধিদফতর (সওজ) সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী মো.মোস্তাফিজুর রহমান জানান, ইতোমধ্যে তারা প্রাথমিক জরিপ কাজ শেষ করেছেন। এই প্রকল্পটির আশপাশে আরও কয়েকটি চলমান প্রকল্প থাকায় এই সড়ক নির্মাণে আগ্রহ প্রকাশ করেছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর।

আর গোয়াইনঘাটের উপজেলা নির্বাহী অফিসার তাহমিলুর রহমান বলেন, যোগাযোগ ব্যবস্থা না থাকায় জাফলং থেকে সাদাপাথর বা সাদাপাথর থেকে জাফলং যেতে হলে ভিন্ন সড়ক ব্যবহার করতে হয়।এতে করে সময় খরচ দুটিই বাড়ে।গোয়াইনঘাটের জাফলং থেকে কোম্পানিগঞ্জের সাদাপাথর পর্যন্ত একটি সড়ক নির্মাণে সরকারের প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন। সড়কটি বাস্তবায়িত হলে এক সড়ক দিয়েই অনেকগুলো স্পট ঘুরে দেখতে পারবেন পর্যটক দর্শনার্থীরা।

;

থাইল্যান্ড ভ্রমণে তাপ ও বৃষ্টি থেকে সাবধান!



মাজেদুল নয়ন, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, সাউথ ইস্ট এশিয়া, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

তিন ঋতুর দেশ থাইল্যান্ড। বর্তমানে চলছে বর্ষাকাল। তবে বৃষ্টি যখন থাকে না তখন প্রচণ্ড রোদের তাপ। অন্তত গত এক সপ্তাহ ধরে প্রায়ই বিকেলের দিকে বৃষ্টি হচ্ছে এবং দিনের বেলায় গরমে অতিষ্ঠ হচ্ছে মানুষ।

এরই মধ্যে থাইল্যান্ডের আবহাওয়া অধিদফতর প্রয়োজন না হলে জনগণকে রোদে বের না হওয়ার জন্য এবং বৃষ্টিতে ভিজলে করণীয় সম্পর্কে নির্দেশনা দিয়েছে। 

এমন গরম আবহাওয়ায় স্থানীয় থাই জনগোষ্ঠীর পছন্দের বেড়ানো বা সময় কাটানোর জায়গা হচ্ছে বড় শপিংমলগুলো। তবে পর্যটকদের শুধু শপিং মলে ঘুরে পোষাবে না। তাই ছাতা, ক্যাপ এবং সঙ্গে পানি রাখার জন্য পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।


শুক্রবার (১ সেপ্টেম্বর) সকালে ব্যাংককের তামপাত্রা ৩২ ডিগ্রী ফারেনহাইট। তবে সেটা ৪০ ডিগ্রী ফারেনহাইট পর্যন্ত অনুভূত হচ্ছে। এমন গরমে বিশেষত শিশুদের বারবার পানি পান করানো এবং ছায়াযুক্ত স্থানে রাখার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

জুন মাসের পর থেকে থাইল্যান্ডে পুরোপুরি বর্ষা। তবে বর্ষাতেও বৃষ্টি ছাড়াও রোদের তাপ থাকে প্রচুর। থাইল্যান্ডে বর্ষা চলবে অক্টোবর পর্যন্ত। এরপরে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত আর্দ্র এবং শীতল। এ সময়টায় চিয়াং মাই বা চিয়াং রাইয়ের মতো উত্তর থাইল্যান্ডে পুরোপুরি শীত অনুভূত হয়। তবে গালফ অব থাইল্যান্ড এবং আন্দামানের তীরের ভূমিতে শীত কখনোই অনুভুত হয় না। বরং গরমই থাকে।

যেহেতু বাংলাদেশের পর্যটকরা বেশিরভাগই সাগর তীরবর্তী অঞ্চলে বেড়াতে যান, তাই সবসময় হালকা এবং উজ্জ্বল রংয়ের কাপড় পড়ার পরামর্শ থাকবে। কারণ এই অঞ্চলগুলোতে এবং দ্বীপগুলোতে বেশিরভাগ সময় গরমই থাকে।

এসব স্থানে ভ্রমণের সময় শিশু ও বয়স্কদের গরম থেকে হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি থাকতে পারে। তাই ছায়ায় থাকা, পানি পান করা, ভিটামিন সি গ্রহণ করার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।

তবে ব্যাংকক, উত্তর, উত্তর পূর্বাঞ্চল এবং দক্ষিণ পূর্বাঞ্চলে এখন বৃষ্টির পরিমাণ অনেক বেশি। ব্যাংককে বিকেল নাগাদ ভারি বৃষ্টি হচ্ছে। তাই এসময় নাইট মার্কেট বা খোলা স্থানে যাওয়ার সময় সঙ্গে ছাতা বা রেইনকোট রাখা বুদ্ধিমানের কাজ হবে। আর এখানে সেভেন ইলেভেনের মতো সুপারশপগুলোতে একবার ব্যবহারের জন্য ছাতা এবং রেইনকোট পাওয়া যায়।

তবে বৃষ্টিতে ভিজে গেলে পরবর্তীতে গোসল করার পরামর্শ দিয়েছে শহর কর্তৃপক্ষ।

;