লেক কিভু থেকে লেক টাঙ্গানিকার বিচে: কঙ্গো-বুরুন্ডি (পর্ব ২)



হাসান মোঃ শামসুদ্দীন
কামিম্বি শহরতলী- রুয়ান্ডা

কামিম্বি শহরতলী- রুয়ান্ডা

  • Font increase
  • Font Decrease

রুসিজি, কঙ্গো-রুয়ান্ডা বর্ডার: পরদিন সকাল বেলা নাস্তা সেরে কঙ্গো রুয়ান্ডা বর্ডারে চলে এলাম। জায়গাটার নাম রুসিজি-১ দুই দেশের সীমান্ত চেক পোস্ট এখানে। ইমিগ্রেশন শেষ করে রুসিজি নদীর উপরের ব্রিজ পার হয়ে রুয়ান্ডার চেকপোস্টে গেলাম। রুয়ান্ডার দিকে রাস্তা বেশ ভাল। এই দিকে পাহাড় একটু বেশি। ছোট রুসিজি নদী দুই দেশকে আলাদা করে রেখেছে।

ইমিগ্রেশন অফিস রুসিজি

রুসিজি একটা ছোট পাহাড়ি নদী, নদী না বলে এটাকে একটা খাল কিংবা নালা ও বলা যেতে পারে। এই নদী লেক কিভুর পানি নিয়ে লেক টাঙ্গানিকার দিকে বয়ে চলছে। লেক কিভু সাগর সমতল থেকে প্রায় পনের’শ মিটার উঁচুতে আর লেক টাঙ্গানিকা সাগর সমতল থেকে প্রায় সাতশত পঞ্চাশ মিটার উপরে। গোমা এলাকার আগ্নেয়গিরির অগ্নুৎপাতের ফলে এত উঁচুতে এই মিষ্টি পানির লেকগুলো সৃষ্টি হয়েছে। এই অঞ্চলে এখনও জীবন্ত আগ্নেয়গিরি আছে।

রুসিজি সীমান্ত- রুয়ান্ডার ভেতরে

বুকাভু থেকে রুয়ান্ডা কঙ্গো সীমান্ত রুসিজি-১ ও রুসিজি-২ চেক পয়েন্টে পনের বিশ মিনিটে যাওয়া যায়। তাই বুকাভুর বেশির ভাগ মানুষ রুয়ান্ডার কামিম্বি বিমানবন্দর দিয়ে দেশের বাহিরে যাতায়াত করে। ব্যবসায়ীক দৃষ্টিকোণ থেকে রুয়ান্ডা সীমান্তের কাছে এই বিমানবন্দর বানিয়েছে। এখান থেকে রুয়ান্ডা এয়ার যাত্রীদেরকে কিগালি নিয়ে যায়, সেখান থেকে সারা পৃথিবীর যে কোন গন্তব্যে যাওয়া যায়।

রুসিজি বর্ডার-রুয়ান্ডার রাস্তা

রুয়ান্ডার এই অংশের কাছেই কামিম্বি শহর। এটা একটা ছোট সীমান্ত জনপদ। বিমানবন্দর থাকার কারণে এখানে অনেক বিদেশীর আনাগোনা আছে। কঙ্গোর ভেতরে বুকাভু শহর ও তার আশেপাশে অনেক বিদেশী এন জি ও কাজ করে। তারা নিজদেশে যাতায়াতের জন্য কামিম্বি বিমানবন্দর ব্যবহার করে। বুরুন্ডির রাজধানী বুজুম্বুরার উদ্দেশ্যে যাওয়ার জন্য আমরা একটা ট্যাক্সি ঠিক করলাম। ট্যাক্সি ড্রাইভারের বাড়ি কামিম্বি শহরে। আমরা ট্যাক্সিতে করে বুজুম্বুরা যাব একরাত সেখানে থেকে পরদিন আবার রুসিজি -১ চেকপোস্টে ফিরে আসব। যাওয়ার পথে একটু ঘুরে রুয়ান্ডার কামিম্বি শহরেটা দেখে যাব।

ইমিগ্রেশন ফর্মালিটিজ শেষ করে ট্যাক্সিতে করে রওয়ানা হলাম। পাহাড়ি পথে আমরা চলছি। পাহাড়ের গা বেয়ে আঁকাবাঁকা পথ পাহাড়ের চূড়ার দিকে উঠে গেছে। পাহাড়ের পর পাহাড় ডিঙ্গিয়ে এই রাস্তা বুরুন্ডির দিকে চলে গেছে । দশ মিনিট চলার পর আমরা কামিম্বি শহরে পৌঁছালাম। যে কোন সাধারণ মফস্বল শহরের মত শহর। ব্যাংক, দোকানপাট সবই আছে এখানে। বিদেশী জিনিসপত্র পাওয়া যায় এখানে। রুয়ান্ডা এখন ফ্রেঞ্চ ভাষা বাদ দিয়ে ইংরেজির দিকে জোর দিয়েছে। আমাদের ড্রাইভার কিন্তু ইংরেজি বোঝে না। অল্প অল্প ফ্রেঞ্চ ভাষা জানা থাকাতে তার সাথে মাঝে মাঝে কিছু কথা বলা যায়।

রুয়ান্ডার এই অঞ্চলে বেশ কয়েকটা মসজিদ দেখলাম, আমাদের ড্রাইভার ও মুসলিম, সে এখানকার অনেক মানুষকে চেনে। কামিম্বি শহরে দেখার কিছু নেই। শহরে প্রাণকেন্দ্রে রাস্তার মোড়ের আইল্যান্ডে একটা বড় ঘড়ি সময় জানিয়ে দিচ্ছে। এখানে ট্রাক, বাস ট্যাক্সি সবই পাওয়া যায়। বিমান বন্দরের কারণে প্রত্যন্ত অঞ্চলের এই শহরটাতে বেশ প্রাণ চাঞ্চল্য দেখা যায়। এখানে কিছুক্ষণ থেকে আবার আমরা বুজুম্বুরার পথে রওয়ানা হলাম। রুসিজি ১ থেকে বুজম্বুরা প্রায় ১২৫ কিলোমিটার। এর মধ্যে ৪০ কিলোমিটার রুয়ান্ডাতে আর বাকী পথ বুরুন্ডির ভেতরে। রুয়ান্ডার ভেতর রাস্তা পাহাড়ি হলেও বেশ সুন্দর এবং উন্নত।

রুয়ান্ডা থেকে বুরুন্ডির পথে যেতে

রাস্তা থেকে নীচে পাহাড়ের উপত্যকাতে মাঝে মাঝে ঘরবাড়ী দেখা যায়। পাহাড়ের মাঝের পথ দিয়ে রুসিজি নদী একে বেঁকে লেক তাঙ্গানিকার দিকে চলছে। এদিকে গ্রাম অঞ্চল, মানুষজন মাঠে কাজ করছে কেউবা ঘরে ফিরছে। হাঁটা কিংবা সাইকেলেই তাদের যাতায়াত। আনায়াসে পাহাড়ি পথে তারা তাদের গন্তব্যে চলছে। মাঝে মাঝে কয়েকজন হাত দিয়ে ট্যাক্সিতে লিফট নিতে চাইছে এরা ট্যাক্সি কিংবা মাইক্রোতে করে আশেপাশের জনপদে যাবে। বুরুন্ডি সীমান্তের কিছু আগে ড্রাই ভার একটা ছোট শহরের মানি এক্সচেঞ্জে গাড়ি থামাল। আমরা নেমে একটু হাঁটাহাঁটি করলাম। মানুষজন বেশ বন্ধুভাবাপন্ন, ভালই লাগল। এক ঘণ্টা চলার পর আমরা রুয়ান্ডা বুরুন্ডির সীমান্ত জনপদ রুয়া বর্ডারে পৌঁছে গেলাম।

রুয়া এলাকায় রুয়ান্ডা সরকার নিজ খরচে সুন্দর বর্ডার চেকপয়েন্ট বানিয়েছে। এখানে রুয়ান্ডা আর বুরুন্ডির পতাকা বাতাসে খেলা করছে। দুদেশের কাস্টম ও ইমিগ্রেসান অফিসারদের জন্য পাশাপাশি ডেস্ক, কাঁচের পার্টি শান দিয়ে আলাদা। ব্যাঙ্কের জন্য ও জায়গা করা আছে। ফর্ম ফিলাপ করার জন্য চেয়ার টেবিল আছে। হাত মুখ ভিজিয়ে নেয়ার জন্য পরিস্কার টয়লেট আছে দুইদিকেই। একটু দূরে কাস্টম ও ইমিগ্রেসান অফিসারদের জন্য বাংলো বানানো হয়েছে। এই কমপ্লেক্সে সব ধরনের সুবিধা আছে। এলাকাটা চারিদিকে দেয়াল দিয়ে ঘেরা। দুই দিকে সীমান্তের প্রহরাতে পুলিস আছে।

ইমিগ্রেশন অফিস রুয়া-রুয়ান্ডা বুরুন্ডি বর্ডার

আমাদের পাসপোর্ট চেক করে দেখল রুয়ান্ডার পুলিশ। তারপর পারকিং লটে গাড়ি পার্ক কাস্টম ও ইমিগ্রেসান অফিসের ভেতরে গেলাম। মানুষজন তেমন নেই। দু একটা গাড়ি আছে, সেগুলোর মানুষজন ফর্ম ফিলাপ করে কাউনটারে জমা দিচ্ছে। আমাদের পাসপোর্টে রুয়ান্ডার এক্সিট সিল দিয়ে পাশের বুরুন্ডির অফিসারকে এগিয়ে দিল। অফিসার পাসপোর্ট দেখে আবার বুরুন্ডির এন্ট্রি সিল দিয়ে দিল। কাজ শেষে আবার আমরা পথে নামলাম। এখান থেকে বুরুন্ডি ৮০ কিলোমিটার।বুরুন্ডির রাস্তা উপত্যকার মধ্যে, দূরে অনেক উঁচু পাহাড়ের সারি যেন মেঘের সাথে মিশে আছে।দুপাশে ফাঁকা তৃণভূমি, মাঝে মাঝে ঝোপ গাছ। কিছু কিছু চাষ হয় এই মাঠে।

বুজুম্বুরার পথে – বুরুন্ডি

পথের এক জায়গাতে তুলার ক্ষেত, অনেক এলাকা নিয়ে সাদা হয়ে আছে সারা মাথ।মানুষজন মাঠে কাজ করছে, সাইকেল এখানকার অন্যতম বাহন, মাঝে মাঝে মোটর সাইকেল ও গাড়ি দেখা যায়। রাস্তার অবস্থা বেশী ভাল না তবে চলাচল করা যায়।পথের পাশে হঠাৎ এক জায়গাতে অনেক এলাকা জুড়ে বিশাল ক্যাকটাসের বন। রুয়ান্ডার পথে এধরনের দৃশ্য দেখা যায়নি। রাস্তা মাঝে মাঝে চড়াই উৎরাই পেরিয়ে চলছে। নীচে রুসিজি নদী মাঝে মাঝে এঁকে বেঁকে চলছে দেখলাম। কিছু জায়গাতে বেশ স্রোত ও আছে এই ছোট নদীতে।

এরপর রাস্তার দুপাশে অনেক অর্ধসমাপ্ত ঘরবাড়ী দেখলাম ।বাড়ীগুলো বানানো প্রায় শেষ কিন্তু জানালা দরজা লাগানো হয়নি, কেউ সেখানে থাকে না। এর থেকে একটু দূরে ছোট গ্রামের কুঁড়ে ঘর দেখা যায়, হয়ত ভবিষ্যতে গ্রামের মানুষ এসব ঘরে থাকবে। রাস্তার পাশে ছোট ছোট জনপদ আছে। খুব সাধারণ মানের ঘরবাড়ী, মানুষ জন সরল জীবন যাপনেই অভ্যস্ত। মসজিদ দেখলাম কয়েকটা, সীমান্তের এই দিকে মুসলিম জনবসতি আছে বেশ কিছু।

বুজুম্বুরার কাছে রাস্তার মান একটু ভাল, প্রায় ঘন্টা খানেক আমরা খারাপ রাস্তায় চলেছি। শহরের বাহিরে বুজুম্বুরা বিমানবন্দর। এই বিমানবন্দর দিয়ে ও বেশ কিছু আন্তর্জাতিক সংস্থার কর্মী এবং এন জি ও কর্মীরা আশেপাশের দেশে যাতায়াত করে। আমরা শহরের ভেতরে ঢুকে গেলাম। রাস্তা বেশ খোলামেলা, ট্রাফিক জ্যাম তেমন নেই শহরের এই অংশে। শহরের ভেতরের রাস্তা দিয়ে চলতে চলতে আমরা ডাউন টাউনে চলে এলাম। এর পাশেই মুসলিম অধ্যুষিত এলাকা। আমাদের ড্রাইভার ও রুয়ান্ডিজ মুসলিম। শহরে মোটামুটি ট্রাফিক জ্যাম আছে। দুপুর হয়ে গেছে, আমরা একটা হোটেলে এলাম। মোটামুটি থাকা যায়। হোটেলে ব্যাগ রেখে আবার পথে বের হলাম।

ডাউন টাউন বুজুম্বুরা

বুজুম্বুরা শহরে অনেক মানি এক্সচেইঞ্জ আছে, হোটেল থেকে বের হয়ে বেশ জ্যামে পড়লাম। তারপর বড় একটা বাজার এলাকাতে এলাম। এখানে প্রচুর ফল ও তাজা সবজি পাওয়া যায়। গাড়ি পার্ক করে আমরা টাকা বদলে নিলাম। ডলারের বিনিময়ে প্রায় ১৬৫০ ফ্রা পাওয়া গেল। মোটামুটি জমজমাট শহর। মানুষজন তাদের নিত্য দিনের কাজকর্ম নিয়ে ব্যস্ত। আমরাও দেরি না করে টাঙ্গানিকা লেকের উদ্দেশে রওয়ানা হলাম।

চলবে......

 

   

পায়ে হেঁটে টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়ায় শান্তা-শাওন দম্পতি



তৌফিক হাসান, কন্ট্রিবিউটিং এডিটর, ট্রাভেল এন্ড ট্যুর
পায়ে হেঁটে টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়ায় দম্পতি

পায়ে হেঁটে টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়ায় দম্পতি

  • Font increase
  • Font Decrease

সম্প্রতি এক প্রাণোচ্ছল ভ্রমণপিপাসু দম্পতি পায়ে হেঁটে টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়াতে পৌঁছান। ‘প্রতিটি প্রাণ মূল্যবান, আত্মহত্যা নয়- বাঁচতে শিখি’ এ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে চলতি বছরের গত ২৮ জুন পায়ে হেঁটে টেকনাফ থেকে ভ্রমণ শুরুর পর শনিবার (২৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে বাংলাবান্ধা জিরো পয়েন্টে ভ্রমণ শেষ করেন তারা।

ব্যাংকার শারাবান তহুরা শান্তা এবং আর্কিটেক্ট আল ইমরান শাওন তাদের পেশাগত ব্যস্ততার মাঝেও এই সময় বের করে আত্মহত্যা নয় বাঁচতে শেখার প্রতিপাদ্যকে দেশব্যাপী ছড়িয়ে দিতে এই দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়েছেন। দম্পতির ভাষ্যমতে তাদের এই ভ্রমণে তারা প্রচুর মানুষের সাথে বিশেষ করে তরুণ তরুণী এবং স্কুলের বাচ্চাদের সাথে কথা বলেছেন, দেশকে দেশের মানুষকে নতুন করে চিনেছেন এবং অনেককে নতুনভাবে চিনতে সাহায্য করেছেন ও সচেতন করেছেন। চলার এই পথে তারা নানাবিধ সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন। নতুন কিছু শিখতে, মানুষকে জীবন সম্পর্কে জানাতে ও সচেতন করার অভিপ্রায় তাদের পিছু হটতে দেয়নি।

ইনানীতে কয়েকজন তরুণ তাদের স্বাগত জানায়

বার্তা২৪ কে শান্তা বলেন, বিগত ২৮ জুন আমরা হাঁটা শুরু করি টেকনাফের শাহীপরীর দ্বীপ থেকে। প্রথমদিন প্রায় ২৮ কিলোমিটার পথ হেঁটে বড়ডিলের মরিসবুনিয়া স্কুলের নৈশপ্রহরীর বাড়িতে রাত্রিযাপনের ব্যবস্থা হয়। সেদিন রাতে আমাদের সাথে একটা ভয়ঙ্কর ঘটনা ঘটে। মাঝরাতের দিকে হাতির পাল আমাদের থাকার ঘরে আক্রমণ করে বসে। নৈশ প্রহরীর পরিবারের সাথে দৌড় দিয়ে স্কুল ঘরে গিয়ে উঠি এবং বাকি রাতটা আমাদের সেখানেই কাটে। দ্বিতীয় দিন ছিল ঈদের দিন, সেদিন প্রায় ৩৬ কিলোমিটার হেঁটে থেকে ইনানী বিচ পর্যন্ত যাই। ঈদের ছুটিকে কাজে লাগিয়ে ১০ দিনে ৪০০ কিলোমিটার কুমিল্লার দাউদকান্দি পর্যন্ত পৌঁছাই। পরের সপ্তাহে দাউদকান্দি থেকে হেঁটে ঢাকার রামপুরা পর্যন্ত আসি। অতঃপর মায়ের অসুস্থতা, পারিবারিক সমস্যা এবং অফিসের ব্যস্ততার কারণে কয়েক সপ্তাহ বিরতি নিয়ে পুনরায় সাপ্তাহিক ছুটির দিনে হাঁটা শুরু করি। এভাবে হাঁটতে হাঁটতে আরিচা হয়ে ট্রলারে যমুনা পাড়ি দিয়ে কখনো হাইওয়ে ধরে আবার কখনো লোকাল রাস্তা দিয়ে হেঁটে উত্তরের সীমান্ত তেঁতুলিয়ার বাংলাবান্ধা জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত পৌঁছে ভ্রমণ শেষ করি।

 পুরো ভ্রমণে কোনো সমস্যায় পরতে হয়েছিল কিনা তার জবাবে শান্তা জানান। ফেনী ক্রস করার পর আমার স্বামী আমাকে ফেলে বেশ খানিকটা এগিয়ে যাওয়ায় ৫/৬ জন বখাটে আমাকে ঘিরে ধারে নানানভাবে উত্ত্যক্ত করতে থাকে এবং অনৈতিক কথা বলতে থাকে। সেসময় আমি সাহস নিয়ে প্রতিবাদ করায় এবং উপস্থিত বুদ্ধি খাঁটিয়ে ওদের ভয় দেখানোতে ওরা দৌড়ে পালিয়ে যায়। এই ঘটনা ছাড়া তেমন কোন সমস্যা হয়নি। তবে আমাদের দেশে পাবলিক টয়লেট না থাকে চলতি পথে ভ্রামনিকদের খানিকটা সমস্যায় পড়তে হয়। আমাদের দেশের মানুষজন খুব ভাল এবং সাহায্যপরায়ণ।

অনিন্দ্যসুন্দর এক রাস্তায় ভ্রামনিক শান্তা

শাওন বার্তা২৪ কে বলেন, আমরা ঐকান্তিক চেষ্টা ছিল দেশব্যাপী পায়ে হেঁটে ঘোরার এবং মানুষের মধ্যে জীবনের বানী পৌঁছে দেবার এবং শত বাধার পরেও আমরা চেষ্টা করে গেছি। ভবিষ্যতেও আমাদের এই প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে এবং মূল প্রতিবাদ্যকে মাথায় রেখে দেশের অন্যান্য অঞ্চলেও ভ্রমণ করার ইচ্ছে আছে আমাদের। আমি বন্ধু এবং শুভানুধ্যায়ীদের ধন্যবাদ জানাই এবং আউটডোর বিডি এর প্রতি বিশেষ কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করি এই ভ্রমণে বিভিন্ন ভাবে পরামর্শ ও সহায়তা দেবার জন্য।

স্কুলের বাচ্চাদের সাথে মতবিনিম

আউটডোর বিডির ফাউন্ডার জুয়েল রানা বার্তা২৪ কে বলেন, আমি নিজে একজন ভ্রমণপাগল মানুষ। আউটডোর বিডি’র উদ্দেশ্যেই হলো একজন পরিব্রাজক বা ভ্রমণকারী যাতে হাতের কাছেই সহজলভ্যে সকল ভ্রমণ সামগ্রী পান। শান্তা ও শাওন দম্পতি এই ভ্রমণ সম্পন্ন করায় আমরা খুশি এবং তাদের এই ভ্রমণ দেখে আরও মানুষ উদ্বুদ্ধ হোক আমরা সেটাই চাই।

;

ইন-ফ্লাইট সার্ভিস ক্যাটাগরিতে গোল্ড পুরস্কার পেলো এয়ার এ্যাস্ট্রা



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট বার্তা২৪.কম ঢাকা
গোল্ড পুরস্কার নিচ্ছেন এয়ার এ্যাস্ট্রার সিইও ইমরান আসিফ। ছবি : সংগৃহীত

গোল্ড পুরস্কার নিচ্ছেন এয়ার এ্যাস্ট্রার সিইও ইমরান আসিফ। ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

‘মনিটর এয়ারলাইন অব দ্য ইয়ার ২০২৩’- এর বেস্ট ইন-ফ্লাইট সার্ভিস ক্যাটাগরিতে সেরা হয়েছে এয়ার এ্যাস্ট্রা।

রাজধানীর ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে বুধবার (২০ সেপ্টেম্বর) রাতে বাংলাদেশ মনিটর আয়োজিত গালা অ্যাওয়ার্ড নাইটে এয়ার এ্যাস্ট্রার সিইও ইমরান আসিফের হাতে বেস্ট ইন-ফ্লাইট সার্ভিস ক্যাটাগরির গোল্ড পুরস্কার তুলে দেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী, এমপি।

যাত্রী সন্তুষ্টির প্রতিশ্রুতির জন্য পরিচিত এয়ার এ্যাস্ট্রা ২০২২ সালের ২৪ নভেম্বর যাত্রা শুরু করে বর্তমানে কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, সৈয়দপুর এবং সিলেটে ফ্লাইট পরিচালনা করছে।

এয়ার এ্যাস্ট্রা’র বহরে বর্তমানে তিনটি এটিআর ৭২-৬০০ এয়ারক্রাফট রয়েছে, যা ফ্রান্সে নির্মিত সর্বাধুনিক প্রযুক্তির টার্বোপ্রপ এয়ারক্রাফট এবং ৭০ জন যাত্রী বহন করতে সক্ষম।

বাংলাদেশ মনিটর তাদের বাৎসরিক কার্যক্রম হিসেবে ২০০৭ সালে বাংলাদেশে ‘এয়ারলাইন অব দ্য ইয়ার’ প্রবর্তন করে। এভিয়েশন ও পর্যটন বিষয়ক প্রকাশনা ‘বাংলাদেশ মনিটর’-এর জরিপের ভিত্তিতে বিজয়ীদের নির্বাচিত করা হয়।

বিগত এক বছরে যারা কমপক্ষে তিনবার আকাশপথে ভ্রমণ করেছেন, তারা অনলাইনে নিজের পছন্দের এয়ারলাইন্সকে ভোট দিতে পেরেছেন।

;

সিলেটে একসঙ্গে ঘুরে দেখা যাবে ২৩টি পর্যটন স্পট



মশাহিদ আলী, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, সিলেট
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি সিলেট। সিলেটের অপার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের খ্যাতি ছড়িয়ে পড়েছে বিশ্বজুড়ে। যেদিকে চোখ যায় সেদিকে উঁকি দিয়ে ডাকছে প্রকৃতির সৌন্দর্য। আর সেই সৌন্দর্য উপভোগের জন্য দেশ-বিদেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছুটে আসেন ভ্রমণপিপাসুরা। প্রতিদিন সিলেটে বেড়াতে আসেন হাজার হাজার পর্যটকরা।

কিন্তু পর্যটন স্পটগুলোতে যোগাযোগ ব্যবস্থা খুব একটা ভালো না থাকায় বেশ ভোগান্তিতে পড়তে হয় ঘুরতে আসা পর্যটকদের। তবে এবার পর্যটক ও এই অঞ্চলের মানুষের কর্মসংস্থানের কথা চিন্তা করে নেয়া হয়েছে উদ্যোগ। দুই দিনে এক সঙ্গে ২৩টি স্পট ঘুরে দেখতে পারবেন ভ্রমণপিপাসুরা।

জানা যায়, সিলেটের ৪ আসনের সংসদ সদস্য এবং প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ এমপির দিক নির্দেশনায় সিলেটের জেলা প্রশাসক এবং বিভাগীয় কমিশনার প্রেরিত ২০২৩ সালের জেলা প্রশাসক সম্মেলনে কোম্পানিগঞ্জ উপজেলার ভোলাগঞ্জের সাদাপাথর হয়ে জাফলং পর্যন্ত একটি সড়ক তৈরির প্রস্তাবনা তুলে ধরা হয়। আর সেই প্রস্তাবনা শুনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দ্রুত পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে সড়ক ও জনপথ অধিদফতরকে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন। নির্দেশনা অনুযায়ী ইতোমধ্যে প্রাথমিক জরিপ সম্পন্ন করেছে সিলেট সড়ক ও জনপথ বিভাগ।

প্রতি সপ্তাহের বৃহস্পতিবার থেকে শনিবার পর্যন্ত এই তিনদিন সিলেটে পর্যটকদের আনাগোনা বেশি থাকে। কারণ শুক্রবার ও শনিবার সরকারি বন্ধ থাকায় চাকরিজীবিরা আসা যাওয়া করেন। তাদের অনেকেই একদিনে প্রাকৃতিক সৌন্দের্যের লীলাভূমি জাফলং ও পাথর সাম্রাজ্য সাদাপাথর ঘুরে দেখতে চান। কিন্তু সময় ও ভোগান্তির কারণে তা আর একদিনে ঘুরে বেড়ানো যায় না। কারণ যেখানে মাত্র ত্রিশ কিলোমিটার রাস্তা পাড়ি দিলে জাফলং থেকে সাদাপাথর যাওয়া সম্ভব সেখানে পাড়ি দিতে হয় ১২০ কিলোমিটার। আর এই ১২০ কিলোমিটারে পাড়ি দিতে গিয়ে হাতছাড়া হয়ে যায় আর ৫টি পর্যটন স্পট। জাফলং থেকে ভোলাগঞ্জ সাদাপাথর প্রতিমধ্যে পান্তুমাই, বিছনাকান্দি, রাতারগুল, শ্রীপুর, শাপলা বিল, লাক্কাতুড়া চা বাগানসহ বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান ঘুরে দেখা যাবে।

সিলেটে বেড়াতে আসা পর্যটক দর্শনার্থীদের ভ্রমণকে সহজতর এবং আরামদায়ক করণে প্রধানমন্ত্রী নির্দেশিত সড়কটি বাস্তবে রূপান্তরিত হলে এখানে আসা পর্যটকরা একটি সড়কে যাতায়াত করে ২ দিনে ২৩টি পর্যটন স্পট ঘুরে দেখতে পারবেন। সড়কটি নির্মাণ করা হলে সিলেটের পর্যটন শিল্প বিকশিত হবে। সেই সাথে পর্যটন শিল্পে সরকারি এবং বেসরকারি বিনিয়োগ বৃদ্ধি পাবে। এছাড়াও এই অঞ্চলের মানুষের কর্মস্থানের বিশাল সুযোগ তৈরি হবে।

জাফলং-কোম্পানিগঞ্জের সাদাপাথর পর্যন্ত সড়ক তৈরির বিষয়ে চলতি বছরের ২৪ এপ্রিল দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদফতরকে নির্দেশনা দিয়ে পত্র পাঠানো হয়। ইতোমধ্যে প্রাথমিক জরিপের কাজ শেষ করেছে বলে জানিয়েছে সড়ক ও জনপথ অধিদফতর সিলেট।

এব্যাপারে সড়ক ও জনপথ অধিদফতর (সওজ) সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী মো.মোস্তাফিজুর রহমান জানান, ইতোমধ্যে তারা প্রাথমিক জরিপ কাজ শেষ করেছেন। এই প্রকল্পটির আশপাশে আরও কয়েকটি চলমান প্রকল্প থাকায় এই সড়ক নির্মাণে আগ্রহ প্রকাশ করেছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর।

আর গোয়াইনঘাটের উপজেলা নির্বাহী অফিসার তাহমিলুর রহমান বলেন, যোগাযোগ ব্যবস্থা না থাকায় জাফলং থেকে সাদাপাথর বা সাদাপাথর থেকে জাফলং যেতে হলে ভিন্ন সড়ক ব্যবহার করতে হয়।এতে করে সময় খরচ দুটিই বাড়ে।গোয়াইনঘাটের জাফলং থেকে কোম্পানিগঞ্জের সাদাপাথর পর্যন্ত একটি সড়ক নির্মাণে সরকারের প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন। সড়কটি বাস্তবায়িত হলে এক সড়ক দিয়েই অনেকগুলো স্পট ঘুরে দেখতে পারবেন পর্যটক দর্শনার্থীরা।

;

থাইল্যান্ড ভ্রমণে তাপ ও বৃষ্টি থেকে সাবধান!



মাজেদুল নয়ন, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, সাউথ ইস্ট এশিয়া, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

তিন ঋতুর দেশ থাইল্যান্ড। বর্তমানে চলছে বর্ষাকাল। তবে বৃষ্টি যখন থাকে না তখন প্রচণ্ড রোদের তাপ। অন্তত গত এক সপ্তাহ ধরে প্রায়ই বিকেলের দিকে বৃষ্টি হচ্ছে এবং দিনের বেলায় গরমে অতিষ্ঠ হচ্ছে মানুষ।

এরই মধ্যে থাইল্যান্ডের আবহাওয়া অধিদফতর প্রয়োজন না হলে জনগণকে রোদে বের না হওয়ার জন্য এবং বৃষ্টিতে ভিজলে করণীয় সম্পর্কে নির্দেশনা দিয়েছে। 

এমন গরম আবহাওয়ায় স্থানীয় থাই জনগোষ্ঠীর পছন্দের বেড়ানো বা সময় কাটানোর জায়গা হচ্ছে বড় শপিংমলগুলো। তবে পর্যটকদের শুধু শপিং মলে ঘুরে পোষাবে না। তাই ছাতা, ক্যাপ এবং সঙ্গে পানি রাখার জন্য পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।


শুক্রবার (১ সেপ্টেম্বর) সকালে ব্যাংককের তামপাত্রা ৩২ ডিগ্রী ফারেনহাইট। তবে সেটা ৪০ ডিগ্রী ফারেনহাইট পর্যন্ত অনুভূত হচ্ছে। এমন গরমে বিশেষত শিশুদের বারবার পানি পান করানো এবং ছায়াযুক্ত স্থানে রাখার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

জুন মাসের পর থেকে থাইল্যান্ডে পুরোপুরি বর্ষা। তবে বর্ষাতেও বৃষ্টি ছাড়াও রোদের তাপ থাকে প্রচুর। থাইল্যান্ডে বর্ষা চলবে অক্টোবর পর্যন্ত। এরপরে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত আর্দ্র এবং শীতল। এ সময়টায় চিয়াং মাই বা চিয়াং রাইয়ের মতো উত্তর থাইল্যান্ডে পুরোপুরি শীত অনুভূত হয়। তবে গালফ অব থাইল্যান্ড এবং আন্দামানের তীরের ভূমিতে শীত কখনোই অনুভুত হয় না। বরং গরমই থাকে।

যেহেতু বাংলাদেশের পর্যটকরা বেশিরভাগই সাগর তীরবর্তী অঞ্চলে বেড়াতে যান, তাই সবসময় হালকা এবং উজ্জ্বল রংয়ের কাপড় পড়ার পরামর্শ থাকবে। কারণ এই অঞ্চলগুলোতে এবং দ্বীপগুলোতে বেশিরভাগ সময় গরমই থাকে।

এসব স্থানে ভ্রমণের সময় শিশু ও বয়স্কদের গরম থেকে হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি থাকতে পারে। তাই ছায়ায় থাকা, পানি পান করা, ভিটামিন সি গ্রহণ করার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।

তবে ব্যাংকক, উত্তর, উত্তর পূর্বাঞ্চল এবং দক্ষিণ পূর্বাঞ্চলে এখন বৃষ্টির পরিমাণ অনেক বেশি। ব্যাংককে বিকেল নাগাদ ভারি বৃষ্টি হচ্ছে। তাই এসময় নাইট মার্কেট বা খোলা স্থানে যাওয়ার সময় সঙ্গে ছাতা বা রেইনকোট রাখা বুদ্ধিমানের কাজ হবে। আর এখানে সেভেন ইলেভেনের মতো সুপারশপগুলোতে একবার ব্যবহারের জন্য ছাতা এবং রেইনকোট পাওয়া যায়।

তবে বৃষ্টিতে ভিজে গেলে পরবর্তীতে গোসল করার পরামর্শ দিয়েছে শহর কর্তৃপক্ষ।

;