পিএইচপি - কেএসআরএম জমি যুদ্ধ, কে জিতল?



বিশেষ প্রতিনিধি, চট্টগ্রাম

  • Font increase
  • Font Decrease

দুই শিল্প গ্রুপই বছরে প্রায় কয়েক হাজার কোটি টাকা লেনদেনের ব্যবসা করেন। দুই শিল্প গ্রুপের চেয়ারম্যানের ধর্মপরায়ণতা, মানবিকতা, সামাজিক মূল্যবোধ ও ব্যবসার নৈতিকতার কথা কমবেশি ব্যবসায়ীরা জানেন।

দুই জনের দান-খয়রাতের কাহিনী মানুষের মুখে মুখে। অসংখ্য মসজিদ, মাদ্রাসা, স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় নির্মাণ করে দিয়েছেন দুইজনই।

কিন্তু গত মাসে শিল্পকারখানার পাশে বাংলাদেশ রেলওয়ের সরকারি মালিকানাধীন লিজ নেয়া মাত্র কয়েক হাজার টাকার জমি নিয়ে যে লঙ্কা-কাণ্ড ঘটে গেল, সেটা নিয়ে শুধু চট্টগ্রামের ব্যবসায়ীরা নন, সরকারের নীতি-নির্ধারক মহলে চিন্তিত হয়ে পড়ে। ভাবনায় ও দ্বন্দ্বে পড়ে যায় সকলে।

দুই শিল্প মালিকের মধ্যে সামান্য জায়গা নিয়ে কেন এই বিরোধ? এর প্রকৃত মালিক আসলে কে? কোন মালিক সঠিক পথে এগুচ্ছেন? সামান্য এ জায়গা নিয়েই বা কেন এত হাকডাক?

এদের একজন হলেন- দেশের অন্যতম শিল্প প্রতিষ্ঠান পিএইচপি ফ্যামিলির সুফি মিজানুর রহমান, আরেকজন হলেন নামকরা রড উৎপাদন ও বিদেশগামী জাহাজ ব্যবসার মালিক কেএসআরএম গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহজাহান।

বয়সে বড় সুফি মিজানুর রহমান। ব্যবসার পরিধিও তার অনেক, বছরে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতনভাতা ছাড়াও বোনাস দেন ১৪টি। কেএসআরএমও কম যায় না। মোহাম্মদ শাহজাহানও আর্থিকভাবে বেশ স্বচ্ছল। মোহাম্মদ শাহজাহান অর্ন্তমুখি স্বভাবের, সাধারণের সঙ্গে খুবই কম চলাফেরা করেন। বিপরীতে সুফি মিজানুর রহমান ধর্ম-কর্ম আর সামাজিকতা নিয়ে সাধারণের সঙ্গে চলতে-থাকতে ভালোবাসেন।

এরকম শিল্প ও ব্যবসা-বাণিজ্যের মালিক হয়েও কয়েক হাজার টাকার লিজের সম্পত্তি নিয়ে বিরোধের নেপথ্যের কাহিনী খুবই করুণ ও পীড়াদায়ক। তাদের দুজনের ঘনিষ্ঠদের পক্ষ থেকে সমঝোতার প্রস্তাব দেয়া হয়েছিল নানাভাবে, নানা উপায়ে।

কিন্তু দু'পক্ষই অনড় ছিল কিছু শর্ত জুড়ে দিয়ে। শেষ পর্যন্ত সমঝোতা হয়নি। প্রশাসনিকভাবেই বিষয়টির নিষ্পত্তি হয়েছে ৪৮ দিন পর। এই ৪৮ দিনে মিডিয়াজুড়ে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা।

মিডিয়ার এই উত্তাপের রেশ সাধারণের মধ্যেও সংক্রমিত হয়। বলাবলি হচ্ছিলো নানা কথা ব্যবসায়ীদের মধ্যেও। একটি বেসরকারি ব্যাংকের চেয়ারম্যানতো বলেই বসলেন- এতো ছোটোখাটো ইস্যূ নিয়ে কেন রশি টানাটানি, এতে তো চট্টগ্রামের ব্যবসায়ীদেরই সুনাম প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে। আরেকজন শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়ী জানতে চাইলেন, প্রকৃত ঘটনা কি। কোন পক্ষ বেদখল করেছে। মাঝারি মানের এক ব্যবসায়ী বলে বসলেন- ১০ কোটি টাকা খরচ করতে পারবেন, কিন্তু আপোস করবেন না শাহজাহান সাহেব। আর ব্যবসার কথা চিন্তা করে সুফি মিজান সহজে আপোস রফা করে ফেলবেন। এতো গেল শিল্পপতি-ব্যবসায়ীদের মনোভাব।

সরকারের নীতিনির্ধারকদের ঘনিষ্ঠ এক প্রশাসনিক কর্মকর্তা সরাসরি জানতে চাইলেন, প্রকৃত ঘটনা আসলে কি? অর্থাৎ সীতাকুন্ডের বাড়বকুন্ড এলাকায় ঢাকা-চট্টগ্রাম রেললাইনের পাশে রেলওয়ের লিজ নেয়া জমিতে কেএসআরএম কর্তৃপক্ষ অবৈধভাবে কাটা তারের বেড়া দিয়ে পিএইচপির জমি দখলে নেয়ার বিষয়টি এতো বিস্তৃত রূপ নেয়।

৬০ শতক ও এক দশমিক ৬ একর জায়গা ২০০৫ সাল থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে রেলওয়ে থেকে লিজ নেয় পিএইচপি- এমন দাবি তাদের। ২০১৭ সালে ওই জায়গা লিজ নেয় রেল থেকে কেএসআরএম- এমন পাল্টা দাবিও তাদের।

দুই পক্ষের এমন অনড় দাবিতে রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ী নেতা, পুলিশ প্রশাসন, গোয়েন্দা কর্মকর্তা, সংবাদকর্মী থেকে শুরু করে রাষ্ট্রের নীতিনির্ধারকদের কেউ কেউ পর্যন্ত দ্বিধা-দ্বন্দ্বে পড়ে যান- একই সঙ্গে চাপ অনুভব করতে থাকেন। এরকম নাটকীয় ঘটনা এর আগে কখনও ঘটেনি, দেখেওনি কেউ।

যে এলাকায় রেলের জমি নিয়ে দুই শিল্প প্রতিষ্ঠানের মালিকদের মধ্যে এতো টানাপোড়েন, সেখানে উভয় প্রতিষ্ঠানের ভারী শিল্পের কারখানা রয়েছে। ঢাকা-চট্টগ্রাম রেললাইনের একপাশে পিএইচপি ফ্লোট গ্লাস ইন্ডাস্ট্রিজ, অপর প্রান্তে বিরল প্রজাতির হাজার হাজার গাছের বন রয়েছে। অর্থাৎ দুই পাশেই পিএইচপির স্থাপনা।

এর কিছু দূরেই কেএসআরএমের শিল্প প্রতিষ্ঠান। রেল লাইন অতিক্রম করে পিএইচপির ১৬০ একর বনে ঢোকার প্রবেশপথসহ কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে বন্ধ করে কেএসআরএম। যেদিন অর্থাৎ গত ২৯ মার্চ কেএসআরএম এই কাঁটা তারের বেড়া দেয়, তখন পিএইচপি ফ্যামিলির চেয়ারম্যান-পরিচালকদের সবাই ছিলেন ঢাকায় তাদের প্রতিষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয় ইউআইটিএস এর কনভোকেশনে। সেখানে প্রধান অতিথি ছিলেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ। নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে রাষ্ট্রপতির উপস্থিতিতে কোনো অনুষ্ঠানে মোবাইল ফোন ব্যবহার করতে দেয়া হয় না। যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন থাকার সুযোগটি গ্রহণ করে কেএসআরএম।

বিভিন্ন ফলজ ও বিলুপ্ত প্রজাতির গাছের রক্ষণাবেক্ষণের জন্য পিএইচপির কর্মচারীরা বাগানে যেতে পারছে না। বাগান আর গাছ রক্ষা করার চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে উভয় পক্ষের সামাজিক মর্যাদার ইস্যুটি। মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধও তো আছেই। পণ্য বেচাকেনার বাজার বা শেয়ার দখল করার চাইতেও জমি দখলের এই যুদ্ধ অনেক গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে তাদের কাছে। দেন-দরবারও চলতে থাকে উভয় পক্ষের। থানা, পুলিশ, সংবাদকর্মী, রাজনীতিবিদ, প্রশাসনিক কর্মকর্তা, সরকারি নীতিনির্ধারকদের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা বিভ্রান্ত হতে থাকে- আসলেই ঘটনা কি?

নানা তৎপরতা ও উদ্যোগ শেষে ৪৮ দিন পর রেলওয়ের কর্মকর্তা ও পুলিশের উপস্থিতিতে ৬০ শতক লিজের জমি থেকে কেএসআরএম কর্তৃপক্ষ অবৈধ কাঁটাতারের বেড়া তুলে নিতে বাধ্য হয়। কারণ রেল কর্তৃপক্ষই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেয় যে, এই জায়গার মালিক ছিল পিএইচপি ফ্যামিলি। ওই জায়গার পাশে ১ দশমিক ৬ একর লিজের জায়গা নিয়ে এখনো বিরোধ। দুই পক্ষের দাবি এটা তাদের জায়গা। জায়গা-জমির মালিকানা সংক্রান্ত বিষয়টি প্রমাণ করতে হয় বৈধ কাগজপত্রের মাধ্যমে। আগামীতে বোঝা যাবে ১ দশমিক ৬ একর লিজ নেয়া জায়গাটি আসলেই কার ।

মাত্র ৬০ শতক লিজের জায়গা, যার লিজমূল্য মাত্র ২৫ হাজার টাকার মতো। এই সামান্য টাকার জমি দখলে নিয়ে যে উত্তেজনা তৈরি করেছে চট্টগ্রামের দুটি নামকরা শিল্পপ্রতিষ্ঠান, সেটি খুবই হাস্যকর সাধারণের কাছে। কেউ কেউ ভাবতে পারে ভারত-পাকিস্তানের সীমান্ত বিরোধের মতোই বিশাল এক উত্তেজনাপূর্ণ ব্যাপার বুঝি। কিন্তু যখন কাঁটাতারের বেড়া সরিয়ে দখল করা জায়গা ছেড়ে দিতে হয়, তখন কি একটু লজ্জা হয় না কিংবা অনুশোচনা!

বছরে কেএসআরএমের ব্যবসায়িক লেনদেন কয়েক হাজার কোটি টাকা। তার মধ্যে সরকারকে রাজস্ব দেয় প্রতি বছর কয়েকশ কোটি টাকা। লাভের বিশাল অঙ্ক দান খয়রাত করেন কেএসআরএমের মালিক মোহাম্মদ শাহজাহান। তিনি ধর্মপ্রাণ ও দানবীর। ইসলাম এমন এক ধর্ম, যেখানে শান্তি ও মানবিকতার কথা বলে।

অন্যের জমিতে জোর করে কাঁটাতারের বেড়া দেয়ার ঘটনার পর মনে প্রশ্ন জাগা স্বাভাবিক যে, ধর্মের শিক্ষা আর শান্তির কথা তখন কি মনে ছিল না?

এরপর গত ১২ মে কয়েক হাজার মানুষকে ইফতার সামগ্রী বিতরণ করতে চেয়েছিলেন নিজের এলাকা সাতকানিয়ায়। সেখানে হুড়োহুড়ি আর ঠেলাঠেলিতে প্রাণ গেছে নয় জন নিরীহ মহিলার। সে মামলায় আসামি করা হয়েছে কেএসআরএমের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহজাহানকে। তিনি এখন পলাতক বলে জানিয়েছেন একজন পুলিশ কর্মকর্তা।

মজার ব্যাপার হলো- যেদিন এই অপ্রীতিকর ঘটনা সাতকানিয়ায় তার পরের দিন বাড়বকুণ্ডের অবৈধ দখল থেকে কাঁটাতারের বেড়া সরিয়ে নেয় মোহাম্মদ শাহজাহানের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীরা।

বিপদ যখন আসে তখন চারদিক থেকেই আসতে শুরু করে। এখানে ধর্মের শিক্ষা হলো ধৈর্য্য ধরা। জোর করে বেড়া না দিয়ে ধৈর্য্য ধরে অপেক্ষা করলে কিংবা নিজেরা বসে সমঝোতা করলে কি ভালো হতো না? সময়, টাকা, আত্মমর্যাদা সবই তখন রক্ষা পেত।

   

১৮৪ ব্যবসায়ী পাচ্ছেন সিআইপি সম্মাননা



স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
১৮৪ ব্যবসায়ী পাচ্ছেন সিআইপি সম্মাননা

১৮৪ ব্যবসায়ী পাচ্ছেন সিআইপি সম্মাননা

  • Font increase
  • Font Decrease

রফতানি বাণিজ্যে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ১৮৪ ব্যক্তিকে সিআইপি (রফতানি ও ট্রেড)- ২০২২ কার্ড প্রদান করবে সরকার। দেশের রফতানিকারক, শিল্পপতি ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে জাতীয় পর্যায়ে উৎসাহ, উদ্দীপনা ও পারস্পরিক সুষ্ঠু প্রতিযোগিতার আবহ সৃষ্টি করতে সিআইপি কার্ড করা হয়।

আগামীকাল বৃহস্পতিবার (৯ মে) বিকাল ৩টায় রেডিসন ব্লু ঢাকা ওয়াটার গার্ডেনে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু ১৮৪ ব্যক্তিকে সিআইপি (রফতানি ও ট্রেড)- ২০২২ কার্ড প্রদান করবেন।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন। এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন এফবিসিসিআই-এর সভাপতি মাহবুবুল আলম। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য প্রদান করবেন রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর ভাইস-চেয়ারম্যান এএইচএম আহসান।

নীতিমালা অনুযায়ী ২০২২ সালের জন্য ২২টি খাতের মধ্যে ১৮টি পণ্য ও সেবা খাত এবং ইপিজেডভুক্ত "সি” ক্যাটাগরিতে মোট ১৪০ জনকে সিআইপি (রফতানি) এবং ৪৪ জন ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দকে সিআইপি (ট্রেড) সম্মানে ভূষিত করা হবে।

এ বছর পণ্য ও সেবা সংশ্লিষ্ট ২০টি খাতে মোট ৩২৮টি আবেদন পাওয়া যায়। মেলামাইন ও জাহাজ নির্মাণ শিল্প খাতে কোন আবেদন পাওয়া যায়নি। ন্যূনতম আয়ের নিচে রফতানি আয় হওয়ায় চা খাতের ১টি আবেদন অযোগ্য হিসেবে বিবেচিত হয়।

রফতানি খাতে অবদানের জন্য ১ বছর মেয়াদে সিআইপি (রফতানি) নির্বাচন করা হয়ে থাকে। তবে বর্তমানে নির্বাচিত সিআইপিবৃন্দ পরবর্তী বছরের সিআইপি (রফতানি) ঘোষণার পূর্ব পর্যন্ত সিআইপি (রফতানি) মর্যাদায় ভূষিত থাকবেন।

রফতানিতে কাঁচাপাট শিল্পে ২ জন, পাটজাত পণ্যে ৪ জন, স্পেশালাইজড/হোমটেক্সটাইল পণ্য ৪ জন, তৈরী পোশাক (নিটওয়্যার) ৩৪ জন, চামড়াজাত দ্রব্য ৬ জন, সিরামিক পণ্য ১ জন, হিমায়িত খাদ্য ৪ জন, প্লাস্টিকজাত পণ্য ৪ জন, তৈরী পোশাক (ওভেন) ১৮ জন, টেক্সটাইল (ফেব্রিক্স) ৭ জন, কৃষিজাত দ্রব্য ৫ জন, কম্পিউটার সফ্টওয়্যার ২ জন, এগ্রোপ্রসেসিং ৫ জন, আসবাবপত্র ১ জন, হালকা প্রকৌশলী পণ্য ৪ জন, ফার্মাসিউটিক্যাল পণ্য ৩ জন, বিবিধ পণ্য ২৭ জন, হস্তশিল্পজাত পণ্য ৪ জন ও ইপিজেডভুক্ত সি ক্যাটাগরিতে ৫ জন। এছাড়া ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ (ট্রেড ক্যাটাগরি) তে ৪৪ জন সিআইপি কার্ড দেওয়া হচ্ছে।

সিআইপি (রফতানি)-২০২২ নির্বাচনের ক্ষেত্রে সিআইপি (রফতানি) নীতিমালা-২০১৩ অনুসরণ করা হয়। রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর মহাপরিচালকের নেতৃত্বে প্রাথমিক বাছাই কমিটি এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (রফতানি) এর নেতৃত্বে চূড়ান্ত বাছাই/নির্বাচন কমিটির মাধ্যমে প্রতিটি আবেদনপত্র মূল্যায়ন করা হয়।

আবেদনপত্র মূল্যায়নের ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানের রফতানি আয় এবং নতুন বাজারে প্রবেশ ইত্যাদি বিষয় বিবেচনা করা হয়। এছাড়া রফতানিকারকের বাণিজ্য বিরোধের সংশ্লিষ্টতা, আয়কর, ভ্যাট, শুল্ক এবং ঋণ গ্রহণ/পরিশোধ ইত্যাদি সম্পর্কিত বিষয়াদিও যাচাই করা হয়। খেলাপি ঘোষিত আবেদনকারীদের আবেদন চূড়ান্ত মূল্যায়নে বিবেচনা করা হয় না।

সিআইপি (রফতানি) হিসেবে নির্বাচিত ব্যাবসায়ীবৃন্দ বাংলাদেশ সচিবালয়ে প্রবেশের জন্য প্রবেশ পাশ ও গাড়ির স্টিকার প্রাপ্তি, জাতীয় অনুষ্ঠান ও মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশনের নাগরিক সম্বর্ধনায় আমন্ত্রণ প্রাপ্তি, ব্যবসা সংক্রান্ত ভ্রমণে বিমান, রেলপথ, সড়ক ও জলপথে সরকারি যানবাহনে আসন সংরক্ষণে অগ্রাধিকার, ব্যবসায়িক কাজে বিদেশ ভ্রমণের ক্ষেত্রে Letter of Introduction প্রাপ্তি, নির্বাচিত সিআইপি তার স্ত্রী, পুত্র, কন্যা ও নিজের চিকিৎসার জন্য সরকারি হাসপাতালে কেবিন প্রাপ্তির অগ্রাধিকার এবং বিমান বন্দরে ভিআইপি লাউঞ্জ-২ ব্যবহার সুবিধা পেয়ে থাকেন।

সরকারিভাবে প্রদত্ত সিআইপি কার্ডধারী ব্যক্তি বিদেশী ক্রেতার কাছে আস্থা ও সুনামের সাথে তার ব্যক্তিগত ও প্রাতিষ্ঠানিক গ্রহণযোগ্যতা তুলে ধরতে পারেন যা তার ব্যবসায়িক সম্পর্ককে সুদৃঢ়করণের পাশাপাশি দেশের সার্বিক রফতানি প্রসারে ইতিবাচক ভূমিকা রাখে।

;

আইএমএফের ঋণের তৃতীয় কিস্তি পাচ্ছে বাংলাদেশ



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
আইএমএফের ঋণের তৃতীয় কিস্তি পাচ্ছে বাংলাদেশ

আইএমএফের ঋণের তৃতীয় কিস্তি পাচ্ছে বাংলাদেশ

  • Font increase
  • Font Decrease

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ৪৭০ কোটি ডলার ঋণের তৃতীয় কিস্তি হিসেবে ৬৮ কোটি ডলার পেতে যাচ্ছে বাংলাদেশ।

বুধবার (৮ মে) সচিবালয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে এমন তথ্য জানিয়েছেন ঢাকায় সফররত দাতা সংস্থাটির প্রতিনিধি দলের প্রধান ক্রিস পাপাগেওর্জিউ।

তিনি বলেন, আইএমএফের তৃতীয় কিস্তির ঋণ পেতে বাংলাদেশের কর্মকর্তাদের সঙ্গে একটি চুক্তিতে পৌঁছেছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) প্রতিনিধি দল। এখন আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে দাতা সংস্থাটির নির্বাহী বোর্ডের অনুমতির অপেক্ষায় রয়েছে। এরপর দ্বিতীয় পর্যালোচনা শেষে ৯৩২ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের কিস্তির ছাড় দেয়া হবে।

ঋণ পাওয়ার বিষয়ে এই কর্মকর্তা বলেন, আইএমএফ-সমর্থিত কর্মসূচির আওতায় গুরুত্বপূর্ণ কাঠামোগত সংস্কার করেছে বাংলাদেশের কর্তৃপক্ষ। বিশেষ করে পেট্রোলিয়াম পণ্যের জন্য ফর্মূলাভিত্তিক জ্বালানি মূল্য সমন্বয় নীতি তারা বাস্তবায়ন করেছেন।

মূল্যস্ফীতিসহ নানা সমস্যা থাকা সত্ত্বেও বিনিময় হার পুনর্বিন্যাসে বাংলাদেশ ব্যাংক যেসব পদক্ষেপ নিয়েছে, সেগুলোকে স্বাগত জানিয়েছে আইএমএফ।

এর আগে বেশ কিছু লক্ষ্য পূরণের শর্ত দিয়ে গত বছরের জানুয়ারিতে বাংলাদেশের জন্য ৪৭০ কোটি মার্কিন ডলারের ঋণ প্রস্তাব অনুমোদন করে আইএমএফ। ২০২৬ সাল পর্যন্ত সাত কিস্তিতে ছাড় করা হবে এই ঋণ।

গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে প্রথম কিস্তিতে আইএমএফ ৪৪ কোটি ৭৮ লাখ ডলার ছাড় করে। ডিসেম্বরে দ্বিতীয় কিস্তিতে ছাড় করা হয় ৬৮ কোটি ১০ লাখ ডলার।

;

আইএমএফের ঋণের তৃতীয় কিস্তি নিয়ে কোনো উদ্বেগ নেই: প্রতিমন্ত্রী



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) নতুন করে মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, রাজস্ব আয় বাড়ানো, সুদহারের বিষয় নিয়ে পরামর্শ দিয়েছে জানিয়ে অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়শা খান বলেছেন, সংস্থাটির ঋণের তৃতীয় কিস্তি পাওয়া নিয়ে কোনো উদ্বেগ নেই।

বুধবার (৮ মে) ঢাকা সফররত আইএমএফ প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠক শেষে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান তিনি।

আইএমএফ প্রতিনিধি দল অর্থ প্রতিমন্ত্রীর কাছে ঋণের শর্ত ও সংস্কারে কতটা অগ্রগতি ও আরও কতটা করতে হবে সেই সুপারিশের মূল বিষয়গুলো তুলে ধরেন।

প্রসঙ্গত, গত ২৪ এপ্রিল থেকে টানা ১৫ দিন আইএমএফ প্রতিনিধি দল সরকারের বিভিন্ন দফতর ও সংস্থার সঙ্গে ধারাবাহিক বৈঠক করে। তার সারমর্ম নিয়ে অর্থ প্রতিমন্ত্রী সঙ্গে বুধবার বৈঠক করে সফররত প্রতিনিধি দলটি।

আইএমএফ প্রতিনিধিদল অর্থ প্রতিমন্ত্রীর কাছে ঋণের শর্ত ও সংস্কারের কতটা অগ্রগতি এবং আরও কতটা করতে হবে সেই সুপারিশের মূল বিষয়গুলো তুলে ধরেন।

করের হার বা আওতা বাড়ানোর যে আলোচনা আছে, তাতে মানুষের কষ্ট বাড়বে কি? সাংবাদিকরা এমন প্রশ্নে প্রতিমন্ত্রী বলেন, শর্ত পূরণ করতে গিয়ে মানুষের জন্য ভোগান্তি হয় এমন কোনো পদক্ষেপ নেবে না বাংলাদেশ।

আইএমএফের প্রতিনিধিদলের সফর নিয়ে এদিন কথা বলেন অর্থসচিব খায়রুজ্জামান মজুমদারও। তিনি জানান, ১০টি শর্তের মধ্যে বাংলাদেশ কেন একটি পূরণ করতে পারেনি তার সন্তোষজনক ব্যাখ্যা দিতে পেরেছে বাংলাদেশ পক্ষ। সবকিছু ঠিক থাকলে আসছে জুনে রিজার্ভে যোগ হতে পারে তৃতীয় কিস্তির টাকা।

;

টিসিবির জন্য ৪৬৮ কোটি টাকা ব্যয়ে তেল-ডাল কিনবে সরকার



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
টিসিবির জন্য ৪৬৮ কোটি টাকা ব্যয়ে তেল-ডাল কিনবে সরকার

টিসিবির জন্য ৪৬৮ কোটি টাকা ব্যয়ে তেল-ডাল কিনবে সরকার

  • Font increase
  • Font Decrease

সরকারি বিক্রয়কারী সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) জন্য মসুর ডাল, সয়াবিন তেল ও রাইস ব্রান কেনার অনুমোদন দিয়েছে সরকার। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে ৪৬৮ কোটি ৩৩ লাখ ৪০ হাজার টাকা। এর মধ্যে ২২ হাজার টন মসুর ডাল, এক কোটি ২০ লাখ লিটার সয়াবিন তেল এবং ৪০ লাখ লিটার রাইস ব্রাণ তেল রয়েছে।

বুধবার (৮ মে) সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের সভাপতিত্বে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে এ সংক্রান্ত পৃথক পাঁচটি প্রস্তাবের অনুমোদন দেয়া হয়েছে।

বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সমন্বয় ও সংস্কার সচিব মো. মাহমুদুল হোসাইন খান সাংবাদিকদের বলেন, টিসিবির জন্য স্থানীয়ভাবে নাবিল নাবা ফুডস প্রোডাক্ট লিমিটেডের কাছ থেকে ৬ হাজার মেট্রিক টন মসুর ডাল (৫০ কেজির বস্তায়) কেনার প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে সরকার। এতে মোট ব্যয় হবে ৬১ কোটি ৯৪ লাখ ৪০ হাজার টাকা। প্রতি কেজি মসুর ডালের দাম পড়বে ১০৩ দশমিক ২৪ টাকা। যা আগে ছিল ১০৩ দশমিক ৭৫ টাকা।

টিসিবির জন্য স্থানীয়ভাবে শবনম ভেজিটেবল অয়েল ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের কাছ থেকে ১০ হাজার মেট্রিক টন মসুর ডাল (৫০ কেজির বস্তায়) কেনার প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে সরকার। এতে মোট ব্যয় হবে ১০৩ কোটি ৭৫ লাখ টাকা। প্রতি কেজি মসুর ডালের দাম পড়বে ১০৩ দশমিক ৭৫ টাকা। যা আগে ছিল ১০৪ দশমিক ৭০ টাকা।

অপর এক প্রস্তাবে টিসিবির জন্য স্থানীয়ভাবে উন্মুক্ত দরপত্র (জাতীয়) পদ্ধতিতে ছয় হাজার মেট্রিক টন মসুর ডাল (৫০ কেজির বস্তায়) কেনার প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে সরকার। রাজশাহীর মেসার্স সালমান খুরশীদের কাছ থেকে তিন হাজার মেট্রিক টন মসুর ডাল এবং খুলনার শেখ এগ্রো ফুড ইন্ডাস্ট্রিজ এর কাছ থেকে তিন হাজার মেট্রিক টন মসুর ডাল কেনার প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে সরকার। এতে মোট ব্যয় হবে ৬০ কোটি ৮৪ লাখ টাকা। প্রতি কেজি ডালের দাম পড়বে ১০১ দশমিক ৪০ টাকা। যা আগে ছিল ১০২ দশমিক ৯০ টাকা।

;