সংক্ষিপ্ত হজ গাইড: পর্ব- ১

হজ: আল্লাহপ্রেমিকদের মিলনমেলা



ড. মুফতি মুহাম্মদ গোলাম রব্বানী, অতিথি লেখক, ইসলাম

  • Font increase
  • Font Decrease

১৪ জুলাই শুরু হবে হজ ফ্লাইট। বাংলাদেশ থেকে এবার প্রায় ১ লাখ ২৭ হাজার ধর্মপ্রাণ মুসলামান হজপালনের জন্যে সৌদি আরব গমন করবেন।এবার যারা হজে যাচ্ছেন, তাদের প্রস্তুতি নিতে হবে এখনই। হজ পালনেচ্ছুদের সুবিধার্থে বার্তা২৪.কম ধারাবাহিকভাবে হজের নিয়ম-কানুন, মাসয়ালা, আমল ও প্রয়োজনীয় দোয়া প্রকাশ করবে। এরই ধারাবাহিকতায় আজ থাকছে প্রথম পর্ব।


হজ পরিচিতি
আল্লাহতায়ালা মানুষকে অনেক ভালোবেসে তৈরি করেছেন। মানুষ আল্লাহকে ভালোবেসে আল্লাহর আনুগত্য করবে, ইবাদত করবে এ উদ্দেশে মানবজাতিকে পাঠানো হয়েছে পৃথিবীর বুকে। আল্লাহর ইবাদত করতে যেয়ে কোনো কোনো ইবাদত শুধুমাত্র কায়িক শ্রমের মাধ্যমে করতে হয়- যেমন নামাজ, রোজা ইত্যাদি। আবার কিছু ইবাদত আছে যাতে টাকা-পয়সা সম্পদের ব্যবহার করতে হয়- যেমন জাকাত, সদকা ইত্যাদি। আর কিছু ইবাদত আছে যাতে শারীরিক পরিশ্রম ও সম্পদের ব্যবহার দু’টোই করতে হয়। এ ধরণের ইবাদতের অন্যতম হলো- হজ। যাতে বান্দা তার কষ্টের উপার্জিত টাকা খরচ করে দীর্ঘ সময়ের জন্য বাড়িঘর ছেড়ে আল্লাহ ও তার রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ভালোবাসায় সাড়া দেয়। উপস্থিত হয় মক্কা ও মদিনায়। আল্লাহর ঘর কাবা শরিফকে কেন্দ্র করে মহান রবের সন্তুষ্টির লক্ষ্যে ঘুরতে থাকে। আল্লাহর বন্ধু হজরত ইবরাহিম আলাইহিস সালাম ও তার পরিবার পরিজনদের কিছু স্মৃতির স্মরণে, তাদের অনুকরণ করে মক্কার স্থানে স্থানে।

এক কথায়, বছরের নির্দিষ্ট সময়ে আল্লাহর ঘর কাবা জিয়ারত করার ইচ্ছায় ইহরাম বেঁধে মক্কায় উপস্থিত হয়ে নির্ধারিত নিয়মে তাওয়াফ, সাঈ, জামারায় পাথর নিক্ষেপ, আরাফা ও মুজদালিফায় অবস্থান করা ও মাথার চুল কাটা, একইসঙ্গে কিছু নিষিদ্ধ কাজ থেকে বিরত থাকাই হলো- হজ।

কোরআনে কারিমের ভাষায় হজ হলো- নির্ধারিত মাসে কাবা জিয়ারতের ইচ্ছা করা। এ প্রসঙ্গে আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘হজ হলো নির্ধারিত (শাওয়াল, জিলকদ, জিলহজ) মাসে।’ -সূরা আল বাকারা: ১৯৭

আরও পড়ুন: কাবা প্রাঙ্গণের অমলিন ভালোবাসা

হজ যেভাবে এলো
সর্বপ্রথম হজরত আদম আলাইহিস সালাম ভারতবর্ষ থেকে মক্কায় পৌঁছে হজ করেন। ফেরেশতারা তাকে কাবা দেখিয়ে দেন যা তারা তৈরি করেছিল।

পরবর্তীতে হজরত ইবরাহিম আলাইহিস সালাম কাবাঘর পুন:নির্মাণ করার পর আল্লাহর হুকুমে কাবা ঘর জিয়ারত করার জন্য পাহাড়ের ওপর থেকে ঘোষণা দেন। এ আওয়াজ আল্লাহর কুদরতে সারাবিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে। তখন থেকে আবার নতুন উদ্যোমে হজ পালন চলতে থাকে।

পৃথিবীর সব প্রান্তের মানুষ হজ করার জন্য মক্কায় সমবেত হতো। সকল ধর্মেই, সকল নবী-রাসূলদের কাছে এ স্থানটি ছিল গুরুত্বপূর্ণ। এমনকি মক্কার পাথর পূজারীরাও কাবা ঘরে তাওয়াফ করা, হজ করাকে পূণ্যের কাজ মনে করতো। এর দ্বারা তাদের সকল অপরাধ ক্ষমার আশা করতো।

আল্লাহতায়ালা তার শেষ নবীকে মক্কার কাবা ঘরের পাশেই জন্ম দিলেন। কাবা ঘরের সেবা করতে করতে বেড়ে উঠেন তিনি। কাবা ঘরের হাজরে আসওয়াদ প্রতিস্থাপন নিয়ে বিরোধের অবসান ঘটিয়ে আরো জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিলেন রাসূলে আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ।

ইসলামে হজের নির্দেশ আসে নবম হিজরিতে। কোরআনে কারিমে জানিয়ে দেওয়া হয়, ‘আল্লাহর ঘরে পৌঁছা যাদের সামর্থ্য আছে তাদের জন্য আল্লাহর সন্তুষ্টির লক্ষ্যে হজ করা ফরজ।’ -সূরা আলে ইমরান: ৯৭

এ নির্দেশের পর হজরত আবু বকর রাযিয়াল্লাহু আনহুর নেতৃত্বে নবম হিজরিতে সর্বপ্রথম হজ পালন করা হয়। দশম হিজরিতে রাসূলে আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হজ পালন করেন। এটিই তার জীবনের প্রথম ও শেষ হজ। এ হজই আমাদের জন্য নমুনা।

হজের গুরুত্ব
আল্লাহ প্রেমিক বিশ্ব মানবতার মিলনমেলা হলো- হজ। হজের মাধ্যমে সারা বিশ্বের মানুষ একই সময়ে এক আল্লাহর ডাকে সাড়া দিয়ে মক্কায় উপস্থিত হয়ে আল্লাহর আনুগত্যের শিক্ষা হাতে কলমে লাভ করে। আল্লাহর আনুগত্যে আল্লাহর বন্ধু হজরত ইবরাহিম আলাইহিম তার নবজাতক হজরত ইসমাইল আলাইহিস সালাম ও হজরত হাজেরাকে মক্কায় রেখে চলে যান। আবার বালক ইসমাঈলকে আল্লাহর হুকুমের সামনে কোরবানি দিতে যাবতীয় কার্যক্রম সম্পাদন করেন। এ সব আনুগত্যের স্মৃতি স্মরণে পালিত হয় হজ।

হজের মাধ্যমে আল্লাহর আনুগত্য শেখা যায়। নবী-রাসূলদের স্মৃতি বিজড়িত স্থানগুলোতে চলাফেরা করার কারণে তাদের জীবনের চেষ্টা-সাধনা, ধৈর্য ও কৃতজ্ঞতা, চারিত্রিক ও আত্মিক উৎকর্ষতার বিষয়গুলো আমাদের সামনে চলে আসে। ব্যক্তিজীবনে এর প্রভাব দৃঢ়ভাবে পড়ে। বিশেষত কাবা ঘরকে যখন নিজের হাতে ছুঁয়ে দেখা হয় তখনকার অনুভূতি অন্যতম। সরাসরি কাবাকে সামনে রেখে নামাজ পড়া, কাবার হাতিমে নামাজ পড়ার অনুভূতিই আলাদা। আল্লাহ, আল্লাহর কুদরত ও মুহাব্বত এতো নিবিড়ভাবে আর কোনো ইবাদতে পাওয়া সম্ভব হয় না। তাই মুসলিম জীবনে হজের গুরুত্ব অপরিসীম।

কেউ যদি এর গুরুত্ব উপলব্ধি করতে না পারে, হজ ফরজ হওয়া সত্ত্বেও অবহেলা করে হজ আদায় না করে তাহলে আল্লাহর নবী হজরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, হজ পরিত্যাগ করে মারা গেলে আর দেখার বিষয় থাকে না সে কি মুসলিম? না কি ইহুদি? না কি খ্রিস্টান?

অারও পড়ুন: জেনেভার মসজিদে জুমার খুতবা দিলেন কাবার ইমাম

হজরত আবু উমামা রাযিয়াল্লাহু আনহু বলেন, হজরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, গ্রহণযোগ্য জরুরি প্রয়োজন বা অত্যাচারী শাসক কিংবা মারাত্মক অসুস্থতা যার হজ করায় বাঁধা হয়নি আর সে হজ আদায় না করে মারা যায়। তাহলে সে ইহুদি কিংবা খ্রিস্টান হয়ে মারা যাক। (কিংবা মুসলিম হয়ে এতে কোনো পার্থক্য হবে না)। -আদদারামি

যার ওপর হজ ফরজ হয়েছে সে যদি হজ অস্বীকার করে তা এড়িয়ে যায় তাহলে সে অমুসলিম হিসেবে গণ্য হয়। হজ আদায় করার ব্যাপারে আপত্তি নেই তবে অলসতা কিংবা পার্থিব প্রয়োজনগুলোকে প্রাধান্য দিয়ে যদি হজ করতে দেরি করে তা-ও অমুসলিমদের মতো কাজ করার শামিল বলে গণ্য হবে।

অনেকে হজ করার ক্ষেত্রে এ অজুহাতে দেরি করে, হজ করে একবারে তওবা করে নিব, তাই আগে আগে হজ করলে তো তওবা ঠিক রাখতে পারব না, তা-ই শেষ বয়সেই হজ করব। এ ধরণের মানসিকতা নানা ধরণের ক্ষতি করে।

প্রথমত: আমরা কতদিন বাঁচব তা জানি না। দেরি করতে যেয়ে হজ করা নাও হতে পারে। দ্বিতীয়ত: সত্তর বছর বয়সে হজ করার পরই কী মারা যাওয়া নিশ্চিত? এমনও তো হতে পারে আরও ১০/২০ বছর বাঁচিয়ে রাখবেন আল্লাহ। এ সময়ে শয়তান কী গোনাহ করিয়ে নিতে পারবে না? বস্তুত গোনাহ হয়ে যেতেই পারে, তওবার মাধ্যমে আল্লাহর কাছে ক্ষমা তো প্রতিদিন চাইতে হবে। হজ করায় কোনো দেরি করতে নেই। হজরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নির্দেশ তো তা-ই। হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, ‘যে হজ করার ইচ্ছা রাখে সে যেন তাড়াতাড়ি করে।’ -আবু দাউদ

হজরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হজকে ইসলামের পাঁচ স্তম্ভের একটি বলে ঘোষণা দিয়েছেন।

হজরত ইবনে উমর রাযিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, হজরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ইসলামের ভিত্তি পাঁচটি- ১. আল্লাহ ছাড়া কোনো উপাস্য নেই এবং মুহাম্মদ আল্লাহর বান্দা ও রাসূল এ সাক্ষ্য দেওয়া (ঈমান আনা), ২. নামাজ কায়েম করা, ৩. জাকাত প্রদান করা, ৪. বাইতুল্লাহর হজ, ৫. রমজানে রোজা রাখা।

লেখক: অধ্যাপক, উর্দু বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

   

রবের প্রিয় বান্দা হওয়ার সহজ উপায়



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
রবের প্রিয় বান্দা হওয়ার সহজ উপায়

রবের প্রিয় বান্দা হওয়ার সহজ উপায়

  • Font increase
  • Font Decrease

আল্লাহর তায়ালার প্রিয় বান্দা হওয়ার মাধ্যম হলো তার মহান হুকমগুলো পালন করা। তার হুকুমগুলোর মধ্যে থেকে অন্যতম হুকুম হলো নামাজ। আর এই নামাজের মাধ্যমে বান্দা আল্লাহর প্রিয় হয়ে ওঠে, বিশেষ করে নফল নামাজ বান্দাকে আল্লাহর এতটা প্রিয় করে তোলে যে, সে যখন আল্লাহর কাছে কিছু চাই তখন মহান আল্লাহ তাকে ফিরিয়ে দেন না। বরং তার চাওয়াকে পাওয়াতে রুপান্তরিত করে দেন ।

হাদিস শরিফে ইরশাদ হয়েছে, হযরত আবু হুরায়রা রা. বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আল্লাহ তায়ালা বলেন, যে ব্যক্তি আমার কোনো ওলির সঙ্গে দুশমনি রাখবে, আমি তার সঙ্গে যুদ্ধ ঘোষণা করব।

আমি যা কিছু আমার বান্দার ওপর ফরজ করেছি, তা দ্বারা কেউ আমার নৈকট্য লাভ করবে না। আমার বান্দা সর্বদা নফল ইবাদত দ্বারা আমার নৈকট্য লাভ করতে থাকবে। এমনকি অবশেষে আমি তাকে আমার এমন প্রিয় পাত্র বানিয়ে নিই যে আমিই তার কান হয়ে যাই, যা দিয়ে সে শুনে। আমিই তার চোখ হয়ে যাই, যা দিয়ে সে দেখে।

আর আমিই তার হাত হয়ে যাই, যা দিয়ে সে ধরে। আমিই তার পা হয়ে যাই, যা দ্বারা সে চলে। সে যদি আমার কাছে কিছু চাই, তবে আমি নিশ্চয়ই তাকে তা দান করি। আর যদি সে আমার কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করে, তবে অবশ্যই আমি তাকে আশ্রয় দেই।

আমি কোনো কাজ করতে চাইলে তা করতে কোনো দ্বিধা করি না, যতটা দ্বিধা করি মুমিন বান্দার প্রাণ নিতে। সে মৃত্যুকে অপছন্দ করে আর আমি তার বেঁচে থাকাকে অপছন্দ করি। (বুখারি, হাদিস : ৬৫০২)

তাই যেকোনো সংকটপূর্ণ অবস্থায় কিংবা যেকোনো প্রয়োজনীয় মুহূর্তে নফল নামাজ আদায়ের মাধ্যমে আল্লাহ তায়ালার কাছে প্রার্থনা করা। মহান আল্লাহ তায়ালা তাঁর বান্দাদেরকে নামাজ ও ধৈর্যের মাধ্যমে সাহায্য প্রার্থনা করার নির্দেশ দিয়েছেন। তাই আমাদের জন্য উচিত হলো, যেকোনো পরিস্থিতিতে তারই কাছে ফেরা। তাতে মহান রবের ভালোবাসা ও সন্তুষ্টি অর্জন হবে ইনশাআল্লাহ ।

খুব গুরুত্ব সহকারে ফরজ ও সুন্নত নামাজের পাশাপাশি নফল নামাজ আদায় করা। আর নাবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দীর্ঘ (নফল) নামাজ আদায় করাকে সর্বোত্তম আমল বলে আখ্যা দিয়েছেন।

আবদুল্লাহ ইবনু হুবশী আল-খাস’আমী রা. সূত্রে বর্ণিত। একদা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে সর্বোত্তম কাজ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে সালাত আদায় করা। (আবু দাউদ, হাদিস : ১৪৪৯)

মহান আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে তাঁর হুকুমগুলো আদায়ের মাধ্যমে, তাঁর প্রিয় বান্দা হওয়ার তৌফিক দান করুন আমিন।

;

হজ ফ্লাইট শুরু ৯ মে



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

চলতি বছরের হজ ফ্লাইট আগামী ৯ মে থেকে শুরু হবে। তবে এখনো চূড়ান্ত হয়নি ফ্লাইট শিডিউল।

শনিবার (২৭ এপ্রিল) ঢাকা হজ অফিসের পরিচালক মুহম্মদ কামরুজ্জামান এতথ্য জানান।

তিনি বলেন, আগামী ৯ মে হজ ফ্লাইট শুরু হবে। দ্রুতই যাত্রীদের ফ্লাইট শিডিউল জানানো হবে।

ধর্ম মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, গত বছর এক লাখ ১৯ হাজার ৬৯৫ জন হজযাত্রীকে বহন করার জন্য বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স, সৌদি এরাবিয়ান এয়ারলাইন্স (সৌদিয়া) ও সৌদির বেসরকারি এয়ারলাইন্স ফ্লাইনাস মোট ৩৩৫ হজ ফ্লাইট শিডিউল ঘোষণা করে। চুক্তি অনুযায়ী, মোট হজযাত্রীর অর্ধেক বহন করে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স এবং বাকি অর্ধেক বহন করে সৌদিয়া ও ফ্লাইনাস এয়ার। এবারও এই তিন এয়ারলাইনস হজযাত্রীদের বহন করবে।

চলতি বছর বাংলাদেশের জন্য এক লাখ ২৭ হাজার ১৯৮টি কোটা নির্ধারণ করেছিল সৌদি আরব। কিন্তু কয়েক দফা সময় বাড়িয়েও হজের নির্ধারিত কোটা পূরণ হয়নি। এর মধ্যে সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে গাইড ও মোনাজ্জেমসহ হজপালনে সৌদি আরব যাবেন ৮৫ হাজার ২৫৭ জন।

এদিকে, পবিত্র জিলহজ মাসের চাঁদ দেখা সাপেক্ষে চলতি বছরের ১৬ জুন পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হতে পারে। তবে এবারের হজ ব্যবস্থাপনায় বিশৃঙ্খলার আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন হজ এজেন্সির মালিকেরা। তাই সুষ্ঠু হজ ব্যবস্থাপনার লক্ষ্যে দ্রুত সকল প্রতিবন্ধকতা নিরসনে প্রধানমন্ত্রীর সরাসরি হস্তক্ষেপ কামনা করেন এজেন্সি মালিকেরা।

;

দারিদ্র্য বা অভাব দূর করার পরীক্ষিত আমল



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
দারিদ্রতা বা অভাব দূর করার পরীক্ষিত আমল

দারিদ্রতা বা অভাব দূর করার পরীক্ষিত আমল

  • Font increase
  • Font Decrease

একবার একজন সাহাবী রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে আরজ করলেন: ইয়া রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দুনিয়া আমার প্রতি পৃষ্ঠ প্রদর্শন করেছে। ইরশাদ করলেন: তোমার কি ঐ তাসবিহ স্মরণ নেই, যে তাসবিহ ফেরেশতা এবং মাখলুকের, যার বরকতে রুজি প্রদান করা হয়। যখন সুবহে সাদিক উদিত (শুরু) হয় তখন এ তাসবীহ ১০০ বার পাঠ কর:

তাসবিহটি হলো : সুবহানাল্লাহি অ-বিহামদিহি,সুবহানাল্লাহিল আলিয়্যিল আযিম, অ-বিহামদিহি আস্তাগফিরুল্লাহ।

অর্থ: মহাপবিত্র আল্লাহ এবং সকল প্রশংসা তাঁর জন্য; মহাপবিত্র আল্লাহ, যিনি সমুচ্চ, মহান; এবং সকল প্রশংসা তাঁর জন্য, আমি আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাই।

যদি তুমি এই তাসবিহটি ১০০ বার পড়, তাহলে দুনিয়া তোমার নিকট অপমানিত হয়ে আসবে। ঐ সাহাবী রাদ্বিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু চলে গেলেন। কিছুদিন পর পুনরায় হাজির হয়ে, আরজ করলেন: ইয়া রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম! দুনিয়া আমার নিকট এত বেশি আসছে, আমি হতবাক! কোথায় যাব, কোথায় রাখব! (সূত্র: আল খাছায়িছুল কুবরা, ২য় খন্ড, ২৯৯ পৃষ্ঠা)

এই তাসবিহটি যথাসম্ভব সুবহে সাদিক (শুরু) হওয়ার সাথে সাথে পাঠ করা নতুবা ফজরের, জামাআত যদি শুরু হয়ে যায় তবে জামাআতে শরীক হয়ে যাবে এবং পরে সংখ্যা পূর্ণ করে নিবে। আর যদি নামাযের পূর্বে কোনো কারনে তা পাঠ করতে না পারে বা পাঠ করতে ভুলে যায়,তাহলে সূর্য উদিত হওয়ার আগে আগেই তা পাঠ করে নিতে হবে। (সুত্র: মলফুজাতে আ’লা হযরত, ১২৮ পৃষ্ঠা)

উক্ত তাসবীহ পাঠ করার সাথে সাথে সকাল সন্ধ্যায় তিনবার এই আয়াতটিও পাঠ করতে পারেন।

উচ্চারণ: ওয়া মাই-ইয়াত্তাকিল্লাহা ইয়াজ আল্লাহু মাখরাজা। ওয়া ইয়ারযুকহু মিন হাইসু লা ইয়াহ তাসিব।ওয়া মান ইয়া তা ওয়াক্কাল আলাল্লাহি ফাহু ওয়া হাসবুহু ইন্নাল্লাহা বালিগু আমরিহি কাদযায়াল্লাহু লিকুল্লি শাইয়িন কাদরা।

অর্থ: আর যে আল্লাহ তায়ালাকে ভয় করে, আল্লাহ তায়ালা তার জন্য (সমস্যা থেকে উদ্ধার পাওয়ার) কোন না কোন পথ বের করে দিবেন। এবং তাকে ওই স্থান থেকে জীবিকা দেবেন, যেখানে তার কল্পনাও থাকে না এবং যে আল্লাহর উপর ভরসা করে, তবে তিনি তার জন্য যথেষ্ট। নিশ্চয় আল্লাহ তার কাজ পরিপূর্ণকারী। নিশ্চয় আল্লাহ তায়াল প্রত্যেক বস্তুর একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ রেখেছেন। (সূরা-ত্বালাক, আয়াত - ১, ২)

দারিদ্রতা দূর করার আরো একটি আমলের কথা হাদিসে উল্লেখ রয়েছে।
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাদ্বিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি প্রতিদিন রাতে সূরা ওয়াক্বিয়াহ তেলাওয়াত করবে তাকে কখনো দারিদ্রতা স্পর্শ করবে না। হযরত ইবনে মাসউদ রাদ্বিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু তাঁর মেয়েদেরকে প্রত্যেক রাতে এ সুরা তেলাওয়াত করার আদেশ করতেন।([বাইহাকি : শুআবুল ঈমান-২৪৯৮)

তবে একটি বিষয় আমাদেরকে অবশ্যই স্মরণ রাখতে হবে, দোয়া কবুল হওয়ার জন্য শর্ত হল হালাল উপার্জন। হালাল উপার্জন ছাড়া দোয়া কবুল হওয়ার আশা করা বোকামি।

মহান আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে দারিদ্রতা বা অভাব দূর করে, সচ্ছলতাকে জীবনসঙ্গী বানিয়ে দিন আমিন।

;

রিজিক বৃদ্ধির ৪ আমল



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
কোরআন-হাদিসে রিজিক বৃদ্ধির বিভিন্ন আমলের কথা বর্ণিত হয়েছে, ছবি : সংগৃহীত

কোরআন-হাদিসে রিজিক বৃদ্ধির বিভিন্ন আমলের কথা বর্ণিত হয়েছে, ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

মুমিন মাত্রই বিশ্বাস করেন যে, তার আয়-উপার্জন, জীবন-মৃত্যু এবং সৌভাগ্য-দুর্ভাগ্য ইত্যাদি র্নিধারণ হয়ে যায়; যখন তিনি মায়ের উদরে থাকেন। আর এসব তিনি লাভ করেন তার জন্য বরাদ্দ উপায়-উপকরণগুলোর মাধ্যমে। তাই আমাদের কর্তব্য হলো- হাত গুটিয়ে বসে না থেকে এর জন্য র্নিধারিত উপায়-উপকরণ সংগ্রহে চেষ্টা করা। যেমন চাষাবাদ, ব্যবসায়-বাণিজ্য, শিল্প-চারু, চাকরি-বাকরি বা অন্য কিছু।

আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘তিনিই তো তোমাদের জন্য জমিনকে সুগম করে দিয়েছেন, কাজেই তোমরা এর পথে প্রান্তরে বিচরণ করো এবং তার রিজিক থেকে তোমরা আহার করো। আর তার নিকটই পুনরুত্থান।’ -সুরা আল মুলক : ১৫

কোরআন-হাদিসে রিজিক বৃদ্ধির বিভিন্ন আমল ও উপায়ের কথা বর্ণিত হয়েছে। সেখান থেকে ৪টি আমলের কথা উল্লেখ করা হলো-

তওবা-ইস্তেগফার : তওবা-ইস্তিগফার করার মাধ্যমে বান্দার রিজিক বাড়ে। আল্লাহতায়ালা পবিত্র কোরআনে ইরশাদ করেছেন, ‘আমি তাদের বলেছি, নিজ প্রতিপালকের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করো। নিশ্চয়ই তিনি অতিশয় ক্ষমাশীল। তিনি আকাশ থেকে তোমাদের ওপর প্রচুর বৃষ্টি বর্ষণ করবেন এবং তোমাদের ধনসম্পদ ও সন্তানসন্ততিতে উন্নতি দান করবেন এবং তোমাদের বাগবাগিচা এবং নদীনালা দান করবেন।’ -সুরা নুহ : ১০-১২

হাদিসে হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি লাগাতার তওবা-ইস্তেগফার করবে; আল্লাহতায়ালা সংকট থেকে উত্তরণের পথ বের করে দেবেন; সব দুশ্চিন্তা মিটিয়ে দেবেন এবং অকল্পনীয় উৎস থেকে রিজিকের ব্যবস্থা করে দেবেন।’ -সুনানে আবু দাউদ : ১৫১৮

পরহেজগারি অবলম্বন এবং আল্লার ওপর ভরসা : যেসব আমলে রিজিকে প্রবৃদ্ধি ঘটে, তার মধ্যে তাকওয়া-পরহেজগারি অবলম্বন এবং তাওয়াক্কুল বা আল্লাহর প্রতি ভরসা রাখা অন্যতম। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘আর যে আল্লাহর তাকওয়া অর্জন করবে, আল্লাহ তার জন্য উত্তরণের পথ বের করে দেবেন এবং তিনি তাকে এমন উৎস থেকে রিজিক দান করবেন, যার কল্পনাও সে করতে পারবে না।’ -সুরা সাদ : ৩৫

হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যদি তোমরা আল্লাহর প্রতি যথার্থভাবে ভরসা রাখো। তিনি তোমাদের সেভাবে রিজিক দান করবেন, যেভাবে তিনি পাখিদের দান করে থাকেন। পাখিরা সকালে ক্ষুধার্ত অবস্থায় (খালি পেটে) বাসা থেকে বের হয় এবং সন্ধ্যায় উদর পূর্ণ করে বাসায় ফেরে।’ -জামে তিরমিজি : ২৩৪৪

সময়মতো নামাজ আদায় এবং ইবাদতের জন্য নিজেকে মুক্ত করা : সময়মতো দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করলে রিজিক বাড়ে। নামাজ আদায় করার ফাঁকে ফাঁকে কাজ ও ব্যবসা–বাণিজ্য করতে হবে; কাজ ও ব্যবসা–বাণিজ্য করার ফাঁকে ফাঁকে নামাজ নয়। একই সঙ্গে আল্লাহর ইবাদত পালনে নিজেকে ঝামেলামুক্ত করতে হবে। ইরশাদ হয়েছে, ‘আর আপনি পরিবার-পরিজনকে নামাজ আদায়ের আদেশ দিন এবং নিজেও তার ওপর অটল থাকুন। আমি আপনার কাছে কোনো রিজিক চাই না। আমিই আপনাকে রিজিক দিই। আর মুত্তাকিদের জন্যই শুভ পরিণাম।’ -সুরা ত্বহা : ১৩২

হজরত আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণনা করেন, হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘হে আদম সন্তান! আমার ইবাদতের জন্য তুমি তোমার অন্তরকে খালি করো। আমি তোমার অন্তরকে অভাবমুক্ত হিসেবে পরিপূর্ণ করে দেব এবং তোমার দরিদ্র্যের পথ দূর করে দেব। আর যদি তা না করো, আমি তোমার হাত (দুনিয়ার) ব্যস্ততায় পূর্ণ করে দেবো এবং তোমার অভাব মেটাব না।’ -জামে তিরমিজি : ২৪৬৬

রিজিক অর্জনের চেষ্টায় থাকা : পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘অতঃপর নামাজ সমাপ্ত হলে তোমরা পৃথিবীতে (জমিনে) ছড়িয়ে পড়ো আর আল্লাহর অনুগ্রহ (রিজিক) সন্ধান করো এবং আল্লাহকে অধিক পরিমাণে স্মরণ করো; যাতে তোমরা সফলকাম হও।’ -সুরা জুমা : ১০

হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তোমাদের কেউ যদি রশি নিয়ে সকালবেলা পাহাড়ের দিকে বের হয়। এরপর লাকড়ি সংগ্রহ করে তা বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করে এবং দানও করে। মানুষের কাছে হাত পাতার চেয়ে তার জন্য এটা উত্তম।’ -সহিহ বোখারি : ১৪৮০

;