অ্যান্টিগা টেস্টের তৃতীয় দিনে বাংলাদেশ ২৬৯ রানে ৯ উইকেট হারিয়ে দিন শেষ করেছে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের ৪৫০ রানে ৯ উইকেটে ডিক্লেয়ার করা প্রথম ইনিংসের চেয়ে সফরকারীরা এখনও ১৮১ রানে পিছিয়ে।
স্বাগতিকরা তাদের বোলারদের দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে খেলার নিয়ন্ত্রণ ধরে রেখেছে দিন শেষে। ফলো অনটাও প্রায় করিয়েই ফেলছিল বাংলাদেশকে, তবে শেষ দিকে জাকের আলির দারুণ ফিফটিতে তাদের ফলো-অন এড়াতে সাহায্য করেছে।
বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা মন্থর পিচে স্থিরভাবে খেলার চেষ্টা করলেও কেউই বড় ইনিংস খেলতে পারেননি। জাকের আলি (৫৩) ও মুমিনুল হক (৫০) হাফ-সেঞ্চুরি করলেও দ্রুত আউট হয়ে যান। লিটন দাসও ৪০ রানে থেমে যান। সপ্তম উইকেটে জাকের ও তাইজুল ইসলাম ৬৮ রানের পার্টনারশিপ গড়ে ফলো-অন এড়ানোর জন্য দলকে ২৫১ রানের সীমা পার করতে সাহায্য করে।
তৃতীয় দিনের শুরুতে মুমিনুল শামার জোসেফের ওভারে দুটি বাউন্ডারি হাঁকান। তবে কেমার রোচ শাহাদাত হোসেনকে ১৮ রানে আউট করেন, তিনি কাভেম হজের হাতে ক্যাচ তুলে দেন। মুমিনুল ও লিটন প্রথম সেশন পার করলেও, লাঞ্চের পরে জেডেন সিলস মুমিনুলকে এলবিডব্লিউ করে ফেরান।
মেহেদি হাসান মিরাজ ওয়েস্ট ইন্ডিজের বাউন্সারের চাপে পড়ে যান, আলজারি জোসেফের একটি বাউন্সারে ক্যাচ দেন শর্ট লেগে থাকা মিকাইল লুইসের হাতে। লিটনও চাপ সামলাতে না পেরে ৪০ রানে বোল্ড হন।
তাইজুল ও জাকেরের দৃঢ়তায় বাংলাদেশ কিছুটা ঘুরে দাঁড়ায়। জাকের চারটি বাউন্ডারি হাঁকিয়ে হাফ-সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন। তবে জোসেফ তাইজুলকে ও জাকেরকে ক্যাচে পরিণত করে এই জুটি ভাঙেন।
সংক্ষিপ্ত স্কোর: (তৃতীয় দিন শেষে)
ওয়েস্ট ইন্ডিজ প্রথম ইনিংস: ১৪৪.১ ওভারে ৪৫০/৯ ডিক্লে. (গ্রিভস ১১৪, লুইস ৯৭, এথানেজ ৯০, রোচ ৪৭; হাসান ৩-৮৭, মিরাজ ২-৭৬)
বাংলাদেশ প্রথম ইনিংস: ৯৮ ওভারে ২৬৯/৯ (মুমিনুল ৫০, জাকের ৫৩; আলজারি ৩/৬৯)।
ক্রিকেট
অ্যান্টিগা টেস্ট-৪র্থ দিন
বাংলাদেশ-ওয়েস্ট ইন্ডিজ
রাত ৮টা, টি স্পোর্টস ও নাগরিক
পার্থ টেস্ট-৪র্থ দিন
অস্ট্রেলিয়া-ভারত
সকাল ৮-২০ মি., স্টার স্পোর্টস ১
আইপিএল
মেগা নিলাম
বিকেল ৪টা, স্টার স্পোর্টস ২
জাতীয় ক্রিকেট লিগ
সিলেট-বরিশাল
সকাল ১০টা, ইউটিউব/বিসিবি
রংপুর-ঢাকা মহানগর
সকাল ১০টা, ইউটিউব/বিসিবি
চট্টগ্রাম-খুলনা
সকাল ১০টা, ইউটিউব/বিসিবি
ফুটবল
ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ
নিউক্যাসল-ওয়েস্ট হাম
রাত ২টা, স্টার স্পোর্টস সিলেক্ট ১
অনেকটা চাপে থেকেই অ্যান্টিগা টেস্টের দ্বিতীয় দিনের খেলা শেষ করেছিল বাংলাদেশ। সেই চাপ কাটিয়ে ওঠার জন্য লড়ে যাচ্ছে মেহেদী হাসান মিরাজের দল। টেস্টের তৃতীয় দিনের প্রথম সেশন শেষে বাংলাদেশ ৩ উইকেট হারিয়ে তুলেছে ১০৫ রান।
এখনো অ্যান্টিগা টেস্টে বাংলাদেশ দল প্রতিপক্ষ ওয়েস্ট ইন্ডিজের ১ম ইনিংসের চেয়ে পিছিয়ে আছে ৩৪৫ রানে। সন্দেহ নেই আপাতত ফলোঅন এড়ানোটাই লক্ষ্য সফরকারীদের।
আগের দিন বাংলাদেশকে হতাশ করে ৯ উইকেটে ৪৫০ রান তুলে ইনিংস ঘোষণা করে ক্যারিবীয়রা। জাস্টিন গ্রিভস এবং কেমার রোচের ১৪০ রানের বিশাল এক জুটি ও পেছনে বাংলাদেশের বোলার-ফিল্ডারদেরও ব্যর্থতায় এতো বড় লক্ষ্য অর্জন করতে সহায়তা করেছে।
গ্রিভস টেস্ট ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি করে অপরাজিত ছিলেন ১১৫ রানে। ১৪০ রানের রেকর্ড অষ্টম উইকেটে তার সঙ্গী কেমার রোচও ফিরেছেন ক্যারিয়ার-সর্বোচ্চ ৪৭ রান করে। বাংলাদেশের পেসার হাসান মাহমুদ নিয়েছেন ৩ উইকেট। ২টি করে উইকেট পেয়েছেন তাসকিন আহমেদ ও মেহেদী হাসান মিরাজ।
এরপর নেমে আগের দিন ২০ ওভার খেলে ২ উইকেটে টাইগাররা তুলে ৪০ রানে। আর আজ একটি উইকেট হারিয়ে ফেলেছে তারা। শাহাদাত হোসেন দীপু ফিরেছেন ৭১ বলে ১৮ রানে। ভাঙল ৪৫ রানের জুটি। মুমিনুল হক অবশ্য লড়ে যাচ্ছেন। তিনি ৩৮ রানে নটআউট। সঙ্গে লিটন দাস আছেন ২১ রানে।
ইনজুরি থেকে সেরে উঠার লড়াইয়ে রয়েছেন বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। কুঁচকির ইনজুরির জন্য তিনি ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে চলতি টেস্ট সিরিজ মিস করেছেন। তার জায়গায় এই টেস্ট সিরিজের অধিনায়কত্ব করছেন মেহেদি মিরাজ। তবে স্বস্তির বিষয় হলো কুঁচকির ইনজুরি কাটিয়ে ওঠার পর্যায়ে রয়েছেন এখন নাজমুল। যেখানে তার ইনজুরির চিকিৎসা ও পরিচর্যা চলছে তাতে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে ওয়ানডে সিরিজের ঠিক আগেভাগে ফিটনেস ফিরে পেতে পারেন তিনি। আর সেটা সম্ভব হলে ওয়ানডে সিরিজে খেলতে ওয়েস্ট ইন্ডিজে যাবেন তিনি।
আপাতত তার ইনজুরির বিষয়ে চিকিৎসকদের কাছ থেকে যে তথ্য পাওয়া গেছে তা স্বস্তিদায়ক। জানা গেছে, ইনজুরি থেকে সেরে উঠার প্রক্রিয়া তার বেশ ইতিবাচক। শনিবার তার ইনজুরির একটা ছোট টেস্ট হয়েছে। সেই টেস্টের ফলাফল বেশ সন্তোষজনক। নাজমুল হোসেন শান্ত কুঁচকির চোটের জন্য আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে সিরিজের তৃতীয় এবং শেষ ওয়ানডেতে খেলতে পারেননি।
বাংলাদেশ দলের সাম্প্রতিক ইনজুরিতে থাকা ক্রিকেটারদের তালিকা বেশ লম্বা। সেই তালিকায় রয়েছেন মুশফিকুর রহিমও। আফগানিস্তান সিরিজের মাঝপথে তিনি আঙ্গুলে চোট পান। সেই চোট নিয়ে সিরিজের শেষ দুটো ম্যাচ তিনি মিস করেন। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে সিরিজেও নেই তিনি। মুশফিকের আঙ্গুলের চোট নিয়ে কোনো সুখবর নেই। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে সিরিজের ওয়ানডে ফরমেটেও তার ফেরার সম্ভাবনা নেই। সেরে উঠা, ফিটনেস ফিরে পাওয়া, কিপিং করা- সবকিছু আগে নিয়মে করার জন্য মুশফিকের আরো মাসখানেক সময় লাগতে পারে। সেই বিবেচনায় বিপিএলের আগে কোনো ধরনের ক্রিকেটে ফেরাটা আপাতত মুশফিকের জন্য কঠিন বিষয়।
ওয়েস্ট ইন্ডিজে দুই টেস্টের সিরিজ শেষ হবে ৪ ডিসেম্বর। এরপর তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজের প্রথম ম্যাচ হবে ৮ ডিসেম্বর। সিরিজের বাকি দুটো ম্যাচ হবে ১০ ও ১২ ডিসেম্বর।