এক হাতে ক্যাচ ধরার অনুশীলন!
মিরপুরে হোম অব ক্রিকেটে অনুশীলন ক্যাম্পের দ্বিতীয়দিনের ফিল্ডিং সেশনে ক্যাচ ধরার নতুন একটা স্টাইল দেখা মিলল।
বাউন্ডারি লাইনের ধারে দাঁড়িয়ে ক্রিকেটাররা। একেজনের নাম ধরে ডাকছেন কোচ স্টিভ রোডস। আর ক্যাচ ছুঁড়ে দিচ্ছেন। সেই ক্রিকেটার খানিক দৌঁড়ে এসে ক্যাচ ধরছেন। তবে শর্ত হল এই ক্যাচ ধরতে হবে একহাতে! দুই হাতে ধরা যাবে না। ডান-বাম যে কোন হাতে ধরা যাবে। কিন্তু নিয়ম ঐ আগেরটাই- যে কোন এক হাতে!
একহাতে ক্যাচ ধরার ঘটনা সাধারনত স্লিপ বা ক্লোজ ইন ফিল্ডিং এলাকায় ঘটে থাকে। আর তাই ক্লোজ ফিল্ডিং সাজিয়েই সাধারণত এমন ক্যাচ অনুশীলন করানো হয়। কিন্তু সেই ধারণা থেকে বেরিয়ে এসে বাংলাদেশ কোচ স্টিভ রোডস বাউন্ডারি লাইনে দাঁড়ানো ফিল্ডারকে শেখাচ্ছেন একহাতে ক্যাচ ধরার কৌশল!
বাউন্ডারি সীমানায় একহাতে ক্যাচ ধরার এই ফিল্ডিংয়ে বেশ সাফল্যের সঙ্গে উতরে যেতে দেখা গেল স্পিনার মেহেদি হাসান মিরাজকে। কোচের দেয়া ক্যাচের প্রায় সবগুলো চ্যালেঞ্জই জিতলেন তিনি। অনুশীলন শেষে ফিল্ডিংয়ের নতুন এই উদ্ভাবন প্রসঙ্গে মেহেদি হাসান মিরাজ বলছিলেন-‘এক হাতে ক্যাচ ধরতে পারলে ব্যালান্সটা ঠিক রাখা যায়। জানা কথা যে এক ক্যাচ ধরা বেশ কঠিন। আমরা ফিল্ডিংয়ে সেই কঠিন কাজটাই সেরে নিচ্ছি। কঠিনটা আয়ত্ত করতে পারলে সহজটা তখন আরও সহজ মনে হবে।’
বাউন্ডারি লাইনে দাঁড়ানো একহাতে ক্যাচ ধরার ঘটনা এখনকার ক্রিকেটে প্রায় দেখতে পাওয়া যায়। এই পজিশনে র্যালি ক্যাচের দৃশ্যও হরহামেশাই ঘটছে। বাউন্ডারির দড়ির সামনে দাঁড়িয়ে প্রায় ছক্কা হয়ে যাওয়া বলে একহাতে ক্যাচ ধরাও এখন নতুন কিছু নয়। ম্যাচে অমন পরিস্থিতি এলে ফিল্ডাররা যাতে একহাতে ক্যাচ ধরতে গিয়ে নার্ভাস না হয়ে পড়েন, সেই দীক্ষা দিতেই অনুশীলনে বাংলাদেশ কোচ একহাতে দলকে ক্যাচ ধরায় অভ্যস্ত করছেন।
প্রতিনিধি হয়ে মঙ্গলবার দুপুরে মিরপুরের হোম অব ক্রিকেটে সাংবাকিদের সঙ্গে কথার বলার সময় মেহেদি হাসান মিরাজও এমনতর ফিল্ডিংয়ের সেই গুরুত্বপূর্ণ দিকের কথাই তুলে ধরলেন-‘ম্যাচ পরিস্থিতির জন্য ক্যাচিংয়ের এমন অনুশীলন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ব্যালেন্স ঠিক রেখে বাউন্ডারি লাইনের পাশ থেকে ক্যাচ ধরার ক্ষেত্রে এই অনুশীলন গুলো অনেক সহায়তা করবে। এভাবে ক্যাচ ধরার কৌশল অনুশীলনে যারা ভালভাবে রপ্ত করতে পারবে, ম্যাচে তখন সেটা ততটাই কাজে আসবে।’
যে কোন খেলায় কোচেরা একটা কথা বলতে বেশ পছন্দ করেন-‘প্রশিক্ষণ তোমাকে নির্ভুল হতে সহায়তা করে।’ অনুশীলনে যে যত বেশি নিজেকে নিয়োজিত রাখবে, নিমগ্ন থাকবে; ম্যাচের দিনের কঠিন সময়টা তখন তার কাছে বেশি সহজ মনে হবে। বাংলাদেশ দলের নতুন কোচ স্টিভ রোডসও সেই নীতিতেই বিশ্বাসী।
মেহেদি মিরাজের কাছ থেকেও সেই কথারই সত্যতা মিলল-‘আসলে অনুশীলন যত কঠিন হবে, ম্যাচে পরে কাজটা তখন সহজ হয়ে যায়। আর তাই আমরা কঠিন অনুশীলনকেই বেছে নিয়েছি।’