সিলেট: রাতারগুল সোয়াম ফরেস্ট বনবিভাগের কর্মীদের সঙ্গে এলাকাবাসীর সংঘর্ষে তিনজন গুলিবিদ্ধসহ ১৫ থেকে ২০ জন আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে রাতারগুল বনবিভাগের রেঞ্জ অফিসার সাদ উদ্দিনও রয়েছেন।
বুধবার (৫ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১২টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
বিজ্ঞাপন
রাতারগুল বন বিভাগের বিট অফিসার প্রদীপ চন্দ্র মণ্ডল জানান, পূর্ব মহিষখেড় মৌজায় বাগান করতে গিয়েছিলেন বনবিভাগের কর্মীরা। তখন দখলদার বাহিনী বনবিভাগের কর্মীদের ওপর হামলা চালায়। আত্মরক্ষার্থে বন বিভাগের কর্মীরা ৪ রাউন্ড গুলি ছোড়ে। এতে কেউ কেউ আহত হতে পারেন।
তিনি আরও জানান, গ্রামবাসীর হামলায় রেঞ্জ অফিসার সাদ উদ্দিন গুরুতর আহত হয়েছেন। তাকে ওসমানী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
রাতারগুল গ্রামের বাসিন্দা সোনা মিয়া জানান, তিনি দুইজন গ্রামবাসীকে গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে যেতে দেখেছেন।
গোয়াইনঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল জলিল জানান, তিনি নির্বাহী কর্মকর্তাকে সঙ্গে নিয়ে ঘটনাস্থলে যাচ্ছেন। পুলিশের একটি টিম ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে বলেও জানান তিনি।
ফেনীর স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যার প্রভাব পড়েছে দাগনভূঞা উপজেলার কৃষিতে। যদিও বন্যার পানি নেমে যাওয়ার পর দেরিতে হলেও জমিতে রোপা আমন চাষ করে ক্ষতি কিছুটা পুষিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছেন কৃষকরা। তবে উপজেলা কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, এবারের মৌসুমে উপজেলা রোপা আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রার মাত্র ১০ ভাগ পূরণ হয়েছে। উপজেলার ৮ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে আমন আবাদের লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও বন্যার কারণে কেবল ৮০০ হেক্টর জমিতে আমন আবাদ করা হয়েছে।
সরেজমিনে উপজেলার রাজাপুর ইউনিয়নে গিয়ে দেখা যায়, কৃষকরা জমি ধানের পরিচর্যা ব্যস্ত সময় পার করছে। বন্যা পরবর্তী ক্ষতি পুষিয়ে নিতে প্রায় ৭ হেক্টর জমিতে রোপা আমনের আবাদ করেছে কৃষকরা। কৃষক মহিন উদ্দিন ৩০৬ শতক, একরাম উদ্দিনের ১৩২ শতক, ইদ্রিস ১২০ শতক, আবদুর ছোবহান ৭২ শতক, মীর আহাম্মদ ৬০ শতক, বিবি মরিয়ম ৬০ শতক, আবু ইউছুফ ৬৫ শতক, নূরুল আমীন বাচ্চু ৫৫ শতক জয়নাল আবেদীন ৫০ শতক সানোয়ারা বেগম ৪৮, বিষ্ণু চন্দ্র ভৌমিক ৩৬ শতক ও কালন ৩০ শতক জমিতে ব্রি ধান ৯৫, ৪৯ ও ৮৭ জাতের ধান আবাদ করেছে।
কৃষকরা জানান, বন্যায় জমির ধানগাছ নষ্ট হয়ে গেছে। বন্যার পানি নেমে গেলে ধানের চারাগুলোতে সার কীটনাশক দিয়েও লাভ হয়নি। পরবর্তীতে উপজেলা কৃষি অফিসের সহযোগিতায় ধানের চারা পেয়ে কিছুটা ক্ষতি পুষিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছেন তারা।
স্থানীয় কৃষক মীর আহাম্মদ জানান, প্রতি বছর ২০০ শতাংশ জমিতে আমন ধানের আবাদ করি। বন্যার কারণে বেশির ভাগ জমিই খালি রয়েছে। এ মৌসুমে ঘরের খোরাকি কীভাবে মেটাব সেটিই চিন্তা করছি। এবারের বন্যায় ভয়াবহ ক্ষতি হয়েছে।
আবু ইউছুফ নামে আরেকজন বলেন, বন্যা পরবর্তী কৃষিখাতে এ বছর যে ক্ষতি হয়েছে তা ভাষায় প্রকাশ করার মত না। আমরা কৃষিকাজ করেই সংসার চালাই। সবকিছুই নষ্ট হয়ে গেছে। বন্যা পরবর্তী ক্ষতি পুষিয়ে নিতে ৬৫ শতক জমিতে ধানের চারা রোপণ করেছি। যা দিয়ে কোনোভাবে নিজে খেতে পারব।
কৃষি অফিসের দেয়া তথ্যমতে, দাগনভূঞা উপজেলায় এবারের ভয়াবহ বন্যায় কৃষি বিভাগের ১৫ কোটি ৪৪ লাখ ৯ হাজার ৮৫০ টাকার ক্ষতি হয়েছে। প্লাবিত হয়েছে ৯৩৪ হেক্টর ফসলি জমি। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে উপজেলার ১০ হাজার ৩৫৩ জন কৃষক।
ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে আউশ আবাদ করেছিলেন ৯২০ জন কৃষক, আমন বীজতলা করেছেন ৭ হাজার ৫৪৩ জন, আমন আবাদ ৬৫০ জন, শরৎকালীন সবজি ১ হাজার ১৮৫ জন, ফলবাগান ৪৫ জন ও আদা চাষ করেছেন ১০ জন কৃষক।
উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, বন্যা পরবর্তী কৃষকরা ক্ষতি পুষিয়ে ঘুরে দাঁড়ানো জন্য উপজেলা কৃষি অফিস থেকে ধানের চারা বিতরণ করা হয়েছে। স্বল্প মেয়াদি ব্রি ধান ৯৫ জাত রোপণের ১২০ দিন পর ফসল ঘরে তোলা যায়। আগামী ১৫-২০ দিনের মধ্যে ধান কর্তন করা যাবে। মাঠে গিয়ে কৃষকদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. মহিউদ্দিন মজুমদার বলেন, বন্যায় কৃষকদের অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে। বিভিন্ন জায়গায় থেকে ধানের চারা সংগ্রহ করে কৃষকদের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে। প্রণোদনা কর্মসূচির আওতায় কৃষকদের মাঝে শীতকালীন সবজি বীজ, ধা
পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় নিজামপুর এলাকায় বিশেষ অভিযান চালিয়ে ২৫ হাজার ৫০০ পিস ইয়াবা জব্দ করেছে বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড নিজামপুর স্টেশন।
বুধবার (২৬ নভেম্বর) দুপুরে কোস্ট গার্ড সদর দফতরের মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার খন্দকার মুনিফ তকি এ তথ্য জানান।
এ বিষয়ে তিনি বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গতকাল মঙ্গলবার (২৬নভেম্বর) রাত ৩টার দিকে বাংলাদেশ কোষ্ট গার্ড দক্ষিণ জোন অধীনস্থ বিসিজি স্টেশন নিজামপুর এর সদস্যরা মহিপুর ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডে একটি অভিযান পরিচালনা করে। এসময় ব্যাগ হাতে দারিয়ে থাকা একজন ব্যক্তির গতিবিধি সন্দেহজনক মনে হলে তাকে কাছে আসতে বলা হয়। কিন্তু কাছে না এসে ব্যাগ ফেলে পার্শ্ববর্তী ঘন বসতির মধ্যে পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে ফেলে যাওয়া ব্যাগের মধ্যে ২৫ হাজার ৫ শত পিচ ইয়াবা পাওয়া যায়।
লেফটেন্যান্ট কমান্ডার খন্দকার মুনিফ তকি বলেন, জব্দকৃত ইয়াবার পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য মহিপুর থানায় হস্তান্তর করা হয়।
মহিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তরিকুল ইসলাম বলেন, জব্দকৃত ইয়াবা থানার মালখানায় সংরক্ষিত রয়েছে। এ বিষয়ে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
চট্টগ্রাম নগরের কোতোয়ালি থানার লালদিঘী এলাকায় চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভরতদের হামলায় সাইফুল ইসলাম আলিফ নামে এক আইনজীবী নিহত হয়েছেন। তার মাথায় কোপানো হয়।
মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে আদালত ভবনের প্রবেশমুখে রঙ্গম কনভেনশন হলের সামনে এই ঘটনা ঘটে। গুরুতর আহত অবস্থায় আলিফকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
চমেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক নিবেদিতা ঘোষ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানিয়েছেন আহত ৭ জনকে হাসপাতালে আনা হয়। তাদের মধ্যে একজন মারা গেছেন। এছাড়া হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন শ্রীবাস দাশ, শারকু দাশ, ছোটন, সুজিত ঘোষ, উৎপল ও এনামুল হক।
এর আগে শুনানির পর জামিন না মঞ্জুর হলে মঙ্গলবার বেলা ১২টা ২০ মিনিটে চিন্ময়কে পুলিশের প্রিজনভ্যান তোলা হয়। তখন তার সমর্থকরা প্রিজন ভ্যানটির ঘেরাও করে আটকে রাখেন। আদালত চত্বর থেকে বের হওয়ার সড়কটিতে পুরাতন পিকআপ ভ্যান দিয়ে পথ রোধ করা হয়। পুলিশ তাদের অনুরোধ করে ও বুঝিয়ে সরিয়ে দিতে চাইলেও তারা পথ অবরোধ করে রাখেন। পুলিশের প্রিজন ভ্যানটির চাকা পাংচার করে দেওয়া হয়। এরপর বেলা ২টা ৫০ মিনিটে সাউন্ড গ্রেনেড ফাটিয়ে এবং লাঠিচার্জ করে ছত্রভঙ্গ করে দেওয়া হয়। পরে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে পুলিশের একটি পিকআপে করে কারাগারের নিয়ে যাওয়া হয়। ছত্রভঙ্গ হয়ে যাওয়া ইসকন সমর্থকেরা আদালত এলাকার ত্যাগ করার সময় মোটরসাইকেল, গাড়ি ও আদালত মসজিদ মার্কেটের নিচতলায় চেম্বারকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছুড়ে। তাদের ইট পাটকেলের আঘাতে কয়েক জন আহত হয়েছেন। লালদীঘি চত্বরের নাসির উদ্দিন নামে একজন পিঠা ব্যবসায়ীর মাথা ফেটে যায়। এ সময় সাইফুল ইসলাম আলিফকে কোপানো হয়। ইসকন সমর্থকদের রামদা, লাঠিসোঁটা হাতে দেখা গেছে।
শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত, সনাতনী ধর্মাবলম্বীরা নগরের নিউমার্কেট মোড়ে অবস্থান নিয়েছেন। অপরদিকে, ‘নারায়ে তাকবীর, আল্লাহু আকবর' স্লোগান দিয়ে তরুণ-যুবকদের একটি দল মিছিল নিয়ে নিউ মার্কেট মোড়ে অবস্থান নিয়েছে।
জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের কমিশন প্রধান আবদুল মুয়ীদ চৌধুরী বলেছেন, আগের রিজিমে পুলিশ ও এনএসআই দ্বারা ভেরিফিকেশনে চাকরি প্রার্থীর রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা যাচাইয়ের অর্থহীন প্রক্রিয়া চলছিল। চাকরিতে এত ভেরিফিকেশনের দরকার নেই। ব্যক্তি হিসেবে চাকরি প্রার্থী কেমন সেটি বিবেচনাই মুখ্য বিষয়। সরকারি কর্মচারী ব্যক্তি হিসেবে তার কাজ ঠিকমত করছেন কিনা সেটাই দেখার বিষয়।
মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের ধারাবাহিক মতবিনিময়ের অংশ হিসেবে রাজশাহীতে এক মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, আমরা এমন একটি প্রতিবেদন দিতে চাই যা বাস্তবতা বিবর্জিত নয়। জনগণ কী চাচ্ছে তা শোনার জন্য আমরা এসেছি। আমরা সরকারের কাছে একটি সামগ্রিক চিত্র তুলে ধরতে চাই। এখন যে প্রশাসন আছে সেখান থেকে কীভাবে আরও ভালো সেবা দেওয়া যায় সেটিই আপনাদের কাছ থেকে শোনা আমাদের উদ্দেশ্য।
তিনি নিজ নিজ জায়গা থেকে অর্পিত দায়িত্বটা আরও ভালোভাবে পালন করার এবং মানুষের কীসে ভালো হবে তা চিন্তা করার অনুরোধ জানান। সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এক দুই বছরের মধ্যেই দেশের চেহারায় একটা পরিবর্তন আসবে মর্মে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
কমিশনের সদস্য এবং ছাত্র সমন্বয়ক মেহেদী হাসান বলেন, সাম্য, ইনসাফ ও মানবিকতা ছিল আমাদের মুক্তিযুদ্ধের অঙ্গীকার। ছাত্র আন্দোলন হয়েছিল কারণ আগের সরকারের নিকট থেকে মানুষ এগুলো পায়নি। তিনি আগস্টের পরিবর্তনের দর্শন গ্রহণ এবং জনপ্রশাসনে নিযুক্ত কর্মচারীদের মানসিকতা পরিবর্তনের আহ্বান জানান।
মতবিনিময় সভায় জনপ্রশাসনে নিযুক্ত কর্মচারীদের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা, আন্তঃক্যাডার বৈষম্য দূর করা, আবেদন বা চিঠিপত্র স্বয়ংক্রিয়ভাবে মীমাংসা হওয়া, পেশাভিত্তিক মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠা, ডেপুটেশন বন্ধ করা, পাবলিক সার্ভিস কমিশন এবং জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে সকল ক্যাডারের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা, দক্ষতা ও সততার ভিত্তিতে পদোন্নতি, সেবাগ্রহীতার রেটিং প্রদান, শিশুদের জন্য মাঠ উন্মুক্ত করা, কোচিং ও প্রাইভেট বন্ধ করা, দুষ্টের দমন ও শিষ্টের পালনের মত নানা সুপারিশ উঠে আসে অংশগ্রহণকারীদের পক্ষ থেকে।
এ সময় কমিশনের সদস্য এবং জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মো. মোখলেস উর রহমানের সঞ্চালনায় কমিশনের সদস্য ও স্বাস্থ্য ক্যাডারের অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা প্রফেসর ডা. সৈয়দা শাহীনা সোবহান, ছাত্র প্রতিনিধি ও কমিশনের সদস্য মেহেদী হাসান, রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ুন কবীর, রাজশাহী রেঞ্জের ডিআইজি আলমগীর রহমান, আরএমপি কমিশনার মোহাম্মদ আবু সুফিয়ান, রাজশাহীর পুলিশ সুপার আনিসুজ্জামানসহ আট জেলার জেলা প্রশাসক ও বিভিন্ন সরকারি অফিসের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।