ভারত থেকে ধেয়ে আসছে পানি, চরাঞ্চল প্লাবিত
লালমনিরহাট: ভারী বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে তিস্তা ও ধরলা নদীর পানি বেড়ে যাওয়ায় লালমনিরহাটের চরাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। আকস্মিক সৃষ্ট বন্যায় পানিবন্দী হয়ে পড়েছে চরাঞ্চলের প্রায় ১০ হাজার মানুষ।
সোমবার (১০ সেপ্টেম্বর) রাত ৯টায় তিস্তা ব্যারাজের দোয়ানী পয়েন্টে পানি প্রবাহ রেকর্ড করা হয় ৫২ দশমিক ৭৫ সেন্টিমিটার, যা বিপৎসীমার ১৫ সেন্টিমিটারের উপরে ছিল। তবে মঙ্গলবার পানি কিছুটা কমে বিপৎসীমার ৮ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
ভারত তাদের গজল ডোবা ব্যারাজের অধিকাংশ গেট খুলে দেওয়ায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে মনে করছেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) কর্মকর্তারা। তারা বলছেন, প্রচণ্ড গতিতে পানি বাংলাদেশের দিকে ধেয়ে আসছে।
পানির গতি নিয়ন্ত্রণ করতে তিস্তা ব্যারাজের ৪৪টি জলকপাট খুলে দেওয়া হয়েছে। তবে হঠাৎ পানি বেড়ে যাওয়ায় তিস্তা পাড়ের লোকজনের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড বলছে, তিস্তার পানিতে জেলার পাটগ্রাম উপজেলার অধুনালুপ্ত ছিটমহল আঙ্গোরপোতা-দহগ্রাম, হাতীবান্ধার সানিয়াজান, গড্ডিমারী, সিঙ্গিমারী, সিন্দুনা, পাটিকাপাড়া ও ডাউয়াবাড়ী ইউনিয়ন, পার্শ্ববর্তী কালীগঞ্জ উপজেলার আমিনগঞ্জ, বৈরাতি, আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা ও সদর উপজেলার রাজপুর ও খুনিয়াগাছ ইউনিয়নের চর এলাকার ২৩ গ্রামের ১০ হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে।
হাতীবান্ধা উপজেলার ধুবনী গ্রামের অস্থায়ী বাঁধগুলোও হুমকির মুখে পড়েছে। এ বাঁধগুলো ভেঙে গেলে তিস্তার পানি হাতীবান্ধা শহরে ঢুকে পড়তে পারে। আদিতমারী উপজেলার বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ সংস্কার না করায় হুমকির মধ্যে পড়েছে মহিষখোচা ও সদরের খুনিয়াগাছ বাগডোরা অংশও। ইতোমধ্যে চর এলাকাগুলোর যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে গেছে।
সদর উপজেলার চর রাজপুর এলাকার কোরবান আলী, আনোয়ার, নবিয়ারসহ অনেক পানিবন্দী বাসিন্দা বলেন,‘সোমবার বিকেল থেকে পানিবন্দী আমরা। ক্রমে পানি বেড়ে চলেছে।’
তিস্তা ব্যারাজ সেচ প্রকল্পের পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রফিকুল আলম চৌধুরী জানান, বর্তমানে পানি বিপৎসীমার ৮ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে বইছে। উজানের ঢল অব্যাহত থাকায় পানি আরও বাড়তে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।