অ্যামোনিয়া গ্যাসে বিপন্ন গ্রামবাসী
খুলনা: খুলনার রূপসা সেতুর বাইপাস রোড দিয়ে যাবার পথে বটিয়াঘাটার সাচিবুনিয়া মোড়ে হঠাৎ চোখ আটকে গেল শতাধিক নারী-পুরুষ আর শিশুদের জটলা দেখে। কৌতুহলী হয়ে এগিয়ে যেতেই দেখলাম স্থানীয় গ্রামবাসী একত্রিত হয়ে মানববন্ধন করছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেল, সাচিবুনিয়ার মহম্মদনগরের শতাধিক গ্রামবাসী গত এক সপ্তাহ যাবৎ অ্যামোনিয়া গ্যাসের প্রভাবে বিপন্ন জীবনযাপন করছে।
বুধবার (১৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সাচিবুনিয়া মোড়ের ফারুক সি-ফুড কারখানা থেকে মাত্রাতিরিক্ত অ্যামোনিয়া গ্যাস নির্গত হওয়ায় তীব্র দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে আশপাশে। এছাড়া কারখানার দূষিত পানি পাশের খালে ফেলা হচ্ছে। কারখানা সংলগ্ন মহম্মদনগর স্লুইচগেট খালে মাছ মরে ভেসে উঠছে, অনেকটা অংশে কচুরিপানা এবং গাছের পাতা হলুদ বর্ণ ধারণ করেছে। দুর্গন্ধে এলাকাবাসীর স্বাভাবিক জীবনযাপন বিপন্ন হচ্ছে।
এ সময় গ্রামবাসী অভিযোগ করে জানায়, সাচিবুনিয়া মোড়ের ফারুক সি-ফুড কারখানা থেকে নির্গত মাত্রাতিরিক্ত অ্যামোনিয়া গ্যাস ও দূষিত পানির প্রভাবে নারী-পুরুষ, বিশেষত শিশুদের শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে। এছাড়া আরও অনেক রোগে আক্রান্ত হচ্ছে তারা। শ্বাসনালি জ্বালাপোড়া, চোখ ও নাক জ্বালাপোড়া করা, মাথা ভার, শরীরে চুলকানি হচ্ছে অনেকের। কারখানার আশপাশের খালের মাছ ও অনেক জলজপ্রাণী মরে ভেসে উঠছে।
ভুক্তভোগী মনিরা বেগম বলেন,‘গ্যাসের গন্ধে ঘরে থাকতে পারি না। আমার নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হয়।’
কারখানার পাশের আরেক বাসিন্দা জাহিদুল ইসলাম বলেন,‘গত শুক্রবার রাত থেকে এই গ্যাসের কারণে গ্রামের অনেকে অসুস্থ্ হয়ে পরেছে। আমরা বারবার কর্তৃপক্ষকে জানানোর পরও কোনো লাভ হয়নি। গ্যাস বের হবার পরও কারখানার মেশিন চালিয়ে আরও দুর্গন্ধ বাড়িয়ে দিচ্ছে তারা।’
এ অভিযোগের বিষয়ে ফারুক সি-ফুডের জেনারেল ম্যানেজার খন্দকার নজরুল ইসলাম বলেন,‘গত শুক্রবার থেকে কারখানার ফ্রিজিং পাইপলাইনের একটি গ্রেট ভাল্বের নিচে ছিদ্র হয়ে গ্যাস নির্গত হচ্ছে। আমরা কারখানা বন্ধ রেখে কাজ করছি। কাল থেকে আর কোনো গ্যাস বের হবে না।’