স্বামীকে হত্যার দায়ে স্ত্রীসহ ৪ জনের মৃত্যুদণ্ড
প্রায় ৯ বছর পর ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার বীরগাঁও ইউনিয়নের আমতলি গ্রামের চাঞ্চল্যকর শাহজাহান খান হত্যা মামলায় তার স্ত্রী কোহিনূর বেগমসহ চারজনের মৃত্যুদণ্ডের রায় ঘোষণা করেছেন আদালত।
মঙ্গলবার (৯ অক্টোবর) দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ দ্বিতীয় আদালতের বিচারক শেখ সুলতানা রাজিয়া এ রায় ঘোষণা করেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- নবীনগর উপজেলার জালশুকা গ্রামের আবুল খায়ের, গোলাপ মিয়া, দোহা ওরফে দুইখ্যা ও শাহজাহানের স্ত্রী কোহিনুর বেগম। এদের মধ্যে আবুল খায়ের ছাড়া বাকি সবাই পলাতক রয়েছেন। এ মামলায় মোখলেছুর রহমান ও আল আমিন নামে দুই আসামিকে খালাস দেয়া হয়েছে।
মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, নবীনগর উপজেলার বীরগাঁও ইউনিয়নের আমতলি গ্রামের আবদুল বারেক খানের ছেলে সৌদিআরব প্রবাসী মো. শাহজাহান খান ২০০৯ সালে ১৩ নভেম্বর ছুটিতে বাড়িতে আসেন। আসার পর থেকে স্ত্রী কোহিনূরের পরকীয়া নিয়ে মনোমালিন্য চলতে থাকে। ২ ডিসেম্বর দিবাগত রাতে তিন সন্তান নিয়ে নিজ ঘরে ঘুমিয়ে ছিলেন শাহজাহান। হঠাৎ রাত ১২টা থেকে ১টার মধ্যে শাহজাহানের ঘরে চিৎকার শুনতে পান বাবা বারেক খান। পরে তিনি ঘরে গিয়ে দেখেন বিছানায় শাহজাহানের গলাকাটা মরদেহ পড়ে রয়েছে।
এ ঘটনায় ৩ ডিসেম্বর কোহিনূরকে প্রধান আসামি করে নবীনগর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন বারেক খান। পরে পুলিশ নিহত শাহজাহানের স্ত্রী কোহিনূরকে গ্রেফতার করে রিমান্ডে নিলে তিনি হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী দেন। সেখানে তিনি আবুল খায়ের, গোলাপ মিয়া, দোহাকে নিয়ে তার স্বামীকে হত্যার বিষয়টি স্বীকার করেন। পরবর্তীতে পুলিশ তদন্তকাজ শেষ করে তাদের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
মামলার রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অতিরিক্ত পিপি দ্বীন ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, এটি একটি যুগান্তকারী রায়। এ রায়ের ফলে আর কোনো নারী তার স্বামীকে হত্যার পরিকল্পনা করবে না। বাকি আসামিরা গ্রেফতার হওয়ার পর তাদের রায় কার্যকর করা হবে।
আসামিপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট একেএম আবদুল হাই বলেন,`এ মামলার সুষ্ঠু ও ন্যায় বিচার হয়নি। আমরা এই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করব।‘