পূজার গন্ধে বিভোর সনাতন ধর্মাবলম্বীরা

  • হাসান মাহমুদ শাকিল, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

পুজোর গন্ধে বিভোর সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। ছবি: বার্তা২৪.কম

পুজোর গন্ধে বিভোর সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। ছবি: বার্তা২৪.কম

হিন্দুদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় অনুষ্ঠান হচ্ছে দুর্গাপূজা। দুর্গা মাকে বরণ করতে বছর জুড়ে অপেক্ষা করেছে বাঙালি সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। এবার অপেক্ষার পালা শেষ হয়েছে। শুরু হয়েছে দুর্গাপূজা। ইতোমধ্যে পূজার গন্ধে বিভোর হয়ে উঠেছে লক্ষ্মীপুরের সনাতন ধর্মাবলম্বীরা।

সোমবার (১৫ অক্টোবর) সকালে জেলা শহরের ত্রিনয়নী মণ্ডপে আনুষ্ঠানিকভাবে ষষ্ঠী পূজা দিচ্ছে ভক্তরা।

বিজ্ঞাপন

পূজাকে ঘিরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষ থেকে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। পুলিশ-র‌্যাবের পাশাপাশি গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরাও সক্রিয় থাকবে বলে জানা গেছে।

প্রতিবছরের মতো এবারও ব্যাপক প্রস্তুতির মধ্য দিয়ে পূজা শুরু করে ভক্তরা। সকাল থেকে মণ্ডপগুলোতে ঢাক-ঢোল আর কাঁসার শব্দে পূজার আনুষ্ঠানিকতা জানান দিচ্ছে। ধীরে ধীরে ভক্তদের সমাগমও বাড়ছে মণ্ডপগুলোতে। পবিত্রতা ও নতুন সাজে সজ্জিত হয়ে পূজা দিতে এসেছে তারা। সবাই যার যার মনের বাসনা পূরণের লক্ষ্যে দুর্গা মায়ের পায়ে অঞ্জলি দিচ্ছে।

বিজ্ঞাপন

জানা গেছে, এবার জেলার পাঁচটি উপজেলায় ৭৮টি মণ্ডপে পূজার আয়োজন করা হয়েছে। এর মধ্যে সদর উপজেলায় ৩৩, রায়পুরে ১১, রামগঞ্জে ২০, রামগতিতে ১১ ও কমলনগরে ৩টি মণ্ডপ রয়েছে। এসব মণ্ডপগুলো নানা রকম আলোকসজ্জায় সাজানো হয়েছে। মণ্ডপে স্থান পাওয়া প্রতিমাগুলোও বেশ আকর্ষণীয়। যা খুব সহজেই ভক্তদের মন কেড়ে নেবে।

এদিকে অধিকাংশ মণ্ডপে সকাল থেকেই পূজা শুরু হয়েছে। এ বছর মর্ত্যলোকে ঘোটকে (ঘোড়ায়) চড়ে আসেন দেবী। আগামী ১৯ অক্টোবর দশমীতে পালকিতে করে গমন করবেন।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, জেলা শহরের শাঁখারী পাড়া এলাকায় ত্রিনয়নী পূজা মণ্ডপে দুর্গা মাকে অঞ্জলি দিতে ভক্তদের ভীড়। পূজারিকে মন্ত্র পড়তে দেখা গেছে। ভক্তরা যার যার মতো দেবীর কাছে প্রার্থনা করছে। এবারই প্রথম জেলায় এই মণ্ডপটিতে ১০ দিনব্যাপী পূজার আয়োজন করা হয়েছে বলে জানা গেছে। এর আগে ৮ অক্টোবর ঘট স্থাপনের মাধ্যমে এখানে পূজা শুরু হয়।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জেলা শহরের শ্যাম সুন্দর জিউর আখড়া, আনন্দময়ী কালী বাড়ি মন্দির, সমসেরাবাদ মন্দির, শ্রী শ্রী রক্ষাকালী মন্দির, দালাল বাজার ও মান্দারীসহ মণ্ডপগুলোতে নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে পূজা শুরু হয়েছে।

লক্ষ্মীপুর সরকারি কলেজের মাস্টার্সে অধ্যয়নরত সনাতন দত্ত সুমন বলেন, ‘পূজা শুরু হয়েছে। অনেক আনন্দ লাগছে। মায়ের কাছে আমিসহ দেশবাসীর মঙ্গল কামনায় প্রার্থনা করব। সবাই যেন সুখে-শান্তিতে থাকতে পারে সে লক্ষ্যে মায়ের আরাধনা করব।’

জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি শংকর মজুমদার বলেন, ‘৭৮টি পূজা মণ্ডপই ভক্তদের মনের মতো করে সাজানোর চেষ্টা করা হয়েছে। প্রশাসনের পাশাপাশি সকল স্তরের মানুষের সহযোগিতা পেলে যথাযথভাবে পূজা উদযাপন বেশ আনন্দদায়ক হবে। আশা করি প্রতি বছরের মতো এবারও সবাই আমাদের সহযোগিতা করবে।’

লক্ষ্মীপুর জেলা পুলিশ সুপার আ স ম মাহাতাব উদ্দিন জানান, পূজাকে ঘিরে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তৎপর রয়েছে। মণ্ডপগুলোর আশপাশে পোশাকধারী ও সাদা পোশাকে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে পুলিশ মোতায়েন থাকবে। এছাড়া আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে র‌্যাবও কাজ করবে।