মেধার ভিত্তিতে নিয়োগের বিধান রেখে বিল পাস
প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণীর সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিলের সরকারি সিদ্ধান্তকে আইনগত ভিত্তি দিতে সংসদে পাস হয়েছে ‘সরকারি চাকরি আইন-২০১৮ বিল’। এতে বলা হয়েছে, সরকারি চাকরিতে জনবল নিয়োগ হবে মেধা ও উন্মুক্ত প্রতিযোগিতার ভিত্তিতে। তবে সংবিধানের উদ্দেশ্য পূরণ করতে সরকার ‘পদ সংরক্ষণ’ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পারবে।
বুধবার (২৪ অক্টোবর) স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদের ২৩তম অধিবেশনের বৈঠকে কণ্ঠভোটে বিলটি পাস হয়। বিলটি প্রস্তাব করেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ইসমত আরা সাদেক।
এর আগে বিলের ওপর আনীত জনমত যাচাই, বাছাই কমিটিতে প্রেরণ ও সংশোধনী প্রস্তাবগুলো কণ্ঠভোটে নাকচ হয়ে যায়। গত ২১ অক্টোবর বিলটি উত্থাপিত হয়। বিলটি পরীক্ষা নিরীক্ষার পর ২৩ অক্টোবর সংশ্লিষ্ট সংসদীয় স্থায়ী কমিটি সংসদে বিলের প্রতিবেদন পেশ করে।
আইনে সরকারি কর্মচারিদের দ্বারা ফৌজদারি অপরাধ সংঘটনের দায়ে বিনা অনুমতিতে গ্রেফতারের ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধতা আরোপ করা হয়েছে। বলা হয়েছে, ‘কোন সরকারি কর্মচারির দায়িত্ব পালনের সাথে সম্পর্কিত অভিযোগে দায়েরকৃত ফৌজদারি মামলায় আদালত কর্তৃক অভিযোগপত্র গৃহীত হওয়ার আগে তাকে গ্রেফতার করতে হলে সরকার বা নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষের পূর্বানুমতি গ্রহণ করতে হবে।’
আইনের ৩২ অনুচ্ছেদে প্রজাতন্ত্রের কর্মচারিদের লঘু ও গুরুদন্ডের বিধান রাখা হয়েছে। লঘু শাস্তির মধ্যে রয়েছে তিরষ্কার, নির্দিষ্ট মেয়াদের জন্য পদোন্নতি বা বেতন স্থগিত, বেতন স্কেলের নিম্নধাপে অবনতি ইত্যাদি।
এ আইনে দায়ী কর্মচারির নিকট থেকে ক্ষতিপূরণের অর্থ আদায় করা সম্ভব না হলে, তার বেতন, ভাতা, বা অন্য কোন আর্থিক সুবিধা হতে আদায় করা যাবে।
আইনের নিয়োগ, পদোন্নতি ও পদায়ন বিষয়ে বলা হয়েছে, এই আইনের আওতাভুক্ত কোন কর্ম বিভাগে সরাসরি জনবল নিয়োগের ভিত্তি হবে মেধা ও উন্মুক্ত প্রতিযোগিতা। পদোন্নতির ভিত্তি হবে, সততা, মেধা, দক্ষতা, জ্যেষ্ঠতা, প্রশিক্ষণ ও সন্তোষজনক চাকরি।
এছাড়া আইনে কোন বিদেশি নাগরিককে প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিয়োজিত করা যাবে না মর্মে বিধান রাখা হয়েছে। একই সঙ্গে বলা হয়েছে, আউট সোর্সিংয়ের মাধ্যমে সেবা গ্রহণকে কোন অর্থেই প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিয়োগ বলে গণ্য করা যাবে না।
আইনের উদ্দেশ্য ও কারণে বলা হয়েছে, সামগ্রিক বিষয়সমুহ বিবেচনায় নিয়ে সরকারি চাকুরি সংক্রান্ত একটি সমন্বিত আইন প্রণয়নের প্রয়োজনীয়তা দীর্ঘদিন থেকে অনুভূত হওয়ায় ‘সরকারি চাকরি আইন’ প্রণয়নের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়।