ভালো মানুষ আছে বলেই অসহায়রা স্বপ্ন দেখে
প্রতিবন্ধী, নদীভাঙা, ছিন্নমূল ও অসহায়রাও আমাদের মতোই মানুষ। হয়তো আমাদের মতো তারা জীবনযাপন করতে পারে না। তবে তাদেরও ইচ্ছে জাগে সবার মতো করে জীবনকে সাজিয়ে নিতে। তারাও চায় বিধাতার এই সুন্দর পৃথিবীতে মুক্তভাবে বিচরণ করতে। সমাজের ভালো মানুষগুলো আছে বলেই হয়তো তারা এমন স্বপ্ন দেখতে পারে। পুরোপুরি না হলেও তাদের স্বপ্নগুলো আংশিক বাস্তবে রূপ নেয়।
হুইল চেয়ার পেয়ে ঠিক এমন স্বপ্ন বাস্তবে রূপ নিয়েছে লক্ষ্মীপুরের চার শারীরিক প্রতিবন্ধীর। সম্প্রতি উপজেলার চরমার্টিনে তাদেরকে এই হুইল চেয়ারগুলো দেওয়া হয়।
ওই সময় উপস্থিত ছিলেন- আন্তর্জাতিক যুব-কমিটির ডেপুটি অ্যাম্বাসেডর ও সিআরপি প্রতিবন্ধী ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক ইদ্রিস আলী, সামাজিক সংগঠন ধ্রুবতারা লক্ষ্মীপুর জেলা উদ্যোক্তা সম্পাদক মাকছুদুর রহমান মানিক, কমলনগর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অ্যাম্বুলেন্স চালক মো. রাসেল, লক্ষ্মীপুর সরকারি কলেজের ছাত্র জুনাইদ আল হাবিব ও লক্ষ্মীপুর আলিয়া মাদরাসার ছাত্র মো. শাওবান প্রমুখ।
হুইল চেয়ার প্রাপ্তরা হলেন- জেলার কমলনগর উপজেলার চরকালকিনির মো. ফারুক হোসেন (৩৫), আবদুর রশিদ (৪২), চরমার্টিনের পারভীন আক্তার (৪০) ও চর লরেন্সের বাসিন্দা মো. ইউনুস (৩০)। এদের মধ্যে তিনজন জন্ম থেকে প্রতিবন্ধী এবং ছোট বেলায় পা আগুনে পুড়ে যায় আবদুর রশিদের।
জানা গেছে, সম্প্রতি স্থানীয় কলেজছাত্র জুনাইদ প্রতিবন্ধীদের হুইল চেয়ারের জন্য সহযোগিতা চেয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন। এতে সাড়া দিয়ে এগিয়ে এসেছেন কয়েকজন বিত্তবান। তাদের দেওয়া অর্থে উন্নতমানের ৪টি হুইল চেয়ার কেনা হয়।
হুইল চেয়ার পেয়ে খুশি হয়েছেন ফারুক, রশিদ, পারভীন ও ইউনুস। তারা বলেন, ‘এখন আর আমাদের চলাচল করতে বেশি কষ্ট হবে না। অন্যদেরকেও বেশি কষ্ট পেতে হবে না। আমাদের সাহায্য করার জন্য ধন্যবাদ।’
কলেজছাত্র জুনাইদ আল হাবিব বলেন, ‘প্রতিবন্ধী, নদীভাঙা, ছিন্নমূল ও অসহায়রাও আমাদের মতোই মানুষ। তাদের পাশে দাঁড়ানো আমাদের সবার কর্তব্য। সে ভাবনা থেকেই আমি ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেই।’
আন্তর্জাতিক যুব-কমিটির ডেপুটি অ্যাম্বাসেডর ইদ্রিস আলী বলেন, ‘আমিও একজন শারীরিক প্রতিবন্ধী। সুযোগ পেয়ে অন্যদের সহযোগিতা করতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করছি। সেই সঙ্গে জুনাইদের উদ্যোগকেও সাধুবাদ জানাচ্ছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘জুনাইদ প্রতিবন্ধীদের জন্য কিছু করতে যাচ্ছে এ খবর শুনে আর দেরি করিনি। দেশের যে প্রান্তেই প্রতিবন্ধী থাকুক আমাকে একবার বললেই হবে। আমি ঠিক হাজির হব। কারণ প্রতিবন্ধীদের মনোভাব আমি বুঝি।’