মাদক ব্যবসার সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড

  • স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: বার্তা২৪

ছবি: বার্তা২৪

ইয়াবা (অ্যামফিটামিন), কোকেন, হেরোইন পরিবহন, কেনাবেচা, ব্যবসা, সংরক্ষণ, উৎপাদন, প্রক্রিয়াজাতকরণ, হস্তান্তর, সরবরাহ ইত্যাদি অপরাধের জন্য সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড ও যাবজ্জীবনের বিধান রেখে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ বিল-২০১৮ সংসদে পাস হয়েছে।

শনিবার (২৭ অক্টোবর) স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদের ২৩তম অধিবেশনের বৈঠকে বিলটি কণ্ঠভোটে পাস হয়। বিলটি পাসের প্রস্তাব করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। এরআগে বিলের ওপর আনিত সংশোধনী, যাচাই ও বাছাই কমিটিতে প্রেরণ ও জনমত যাচাইয়ের প্রস্তাব কণ্ঠভোটে নাকচ হয়ে যায়। গত ২২ অক্টোবর সম্পূরক কর্মসূচিতে বিলটি উত্থাপন করা হয়।

বিজ্ঞাপন

আইনে মাদকদ্রব্যের নাম, অপরাধের ৩৪টি ধরণ একটি তফসিলে বর্ণনা করা হয়েছে। এজন্য আইনে সর্বনিম্ন এক বছর থেকে ১৫ বছর পর্যন্ত শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে। তফসিলের ৭ অনুচ্ছেদ থেকে ১৫ অনুচ্ছেদ পর্যন্ত নয়টি ক্ষেত্রে ক শ্রেণীভুক্ত মাদকের বিভিন্ন পরিমাণ উল্লেখ করে তার সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড ও যাবজ্জীবনের বিধান রাখা হয়েছে।

আইনে অপরাধ সংঘঠনে অর্থ বিনিয়োগ, সরবরাহ, মদদ ও পৃষ্ঠপোষকতা দিলেও একই ধরনের শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে। কোন গৃহে মাদকদ্রব্য উৎপাদনে ব্যবহারযোগ্য কোনো যন্ত্রপাতি, ওয়াশ অথবা অন্যান্য উপকরণ পাওয়া গেলে তিনি সর্বনিম্ন ২ বছরের কারাদণ্ড ও সর্বোচ্চ ১০ বছরের কারাদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। এছাড়া নেশাগ্রস্থ অবস্থায় গাড়ি চালালে আইনে এক বছরের কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে।

আইনে কোকেন, কোকো মাদক চাষাবাদ, উৎপাদন বা প্রক্রিয়াজাতকরণের ক্ষেত্রে ২৫ গ্রামের বেশি হলে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড বা যাবজ্জীবন দেওয়ার বিধান রাখা হয়েছে। আর ২৫ গ্রামের নিচে হলে কমপক্ষে দুই বছর ও সর্বোচ্চ ১০ বছরের কারাদণ্ডের বিধান আছে। ইয়াবা বহনের ক্ষেত্রে ২০০ গ্রামের বেশি হলে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড অথবা যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং অর্থদণ্ড। তবে ১০০ গ্রাম বা মিলিলিটার হলে সর্বনিম্ন ৫ বছল এবং সর্বোচ্চ ১০ বছরের কারাদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। মাদকাসক্ত ব্যক্তির ডোপ টেস্টে ইতিবাচক ফল পাওয়া গেলে কমপক্ষে ৬ মাস ও সর্বোচ্চ ৫ বছর কারাদণ্ড দেওয়া হবে।

আইনে দেশি মদ, মিথাইল অ্যালকোহল,  অ্যাবসিলিউট অ্যালকোহল, রেকটিফাউড স্ফিরিট, হোমিও প্যাথি চিকিৎসার জন্য ৪০ লিটার প্রুফ, এক্সট্রা নিউট্রাল অ্যালকোহল ইথানল (ঔষুধে ব্যবহারের জন্য) বাংলাদেশে প্রস্তুত বিলাতি মদ, ডিনেচারড স্পিরিট, ও টলুইন এই আট প্রকার মাদক ব্যবহারে শুল্ক আরোপের বিধান রাখা হয়েছে। এছাড়া লাইসেন্স ছাড়া কোন ব্যক্তি অ্যালকোহল পান করতে পারবে না।

আইনে মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে অপরাধ তদন্তের ব্যাপারে থানার ভারপ্রাপ্ত থানার ভারপ্রাপ্ত অফিসারের ক্ষমতা থাকবে। মহাপরিচালকের দায়িত্বপ্রাপ্ত অফিসার সেই ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারবেন। মাদক অপরাধ বিচারের জন্য গঠিত মাদক দ্রব্য অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনালে এর বিচার হবে। ট্রাইবুনালে মামলা স্থানান্তরের ৯০ দিনের মধ্যে মামলা নিস্পতির বিধান রাখা হয়েছে। এছাড়া ক্যামারায় ধারনকৃত ছবি, অডিও ফুটেজ মামলার সাক্ষ্য হিসেবে গৃহীত হবে।