দিন বদল হয়নি নরসুন্দর কালামের



রাকিবুল ইসলাম রাকিব, ডিস্ট্রিক করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
নরসুন্দর কালাম। ছবি: বার্তা২৪.কম

নরসুন্দর কালাম। ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

বড়সড় আমগাছটার বুকে দুটো পেরেক গাঁথা। পেরেকে সুতো বেঁধে টানানো হয়েছে ভাঙা আয়না। তার বিপরীতে পাতা একটি কাঠের চেয়ারে বসে এক ব্যক্তি তাকিয়ে আছেন আয়নায়। আর মাঝ বয়সী এক যুবক হাতে চিরুনি ও কাঁচি নিয়ে সেই ব্যক্তির চুল কেটে যাচ্ছেন একমনে।

এক সময়কার গ্রাম-গঞ্জের সাধারণ চিত্র ছিল এটি। কিন্তু আধুনিক যুগের সেলুন অথবা জেন্টস পার্লারের দাপটে খোলা আকাশের নিচে নরসুন্দরদের ক্ষৌরকর্মের এই দৃশ্য এখন অনেকটাই বিরল। তবে ময়মনসিংহের গৌরীপুর রেলওয়ে জংশনে রোববার (৪ নভেম্বর) এমন একটি দৃশ্য চোখে পড়ে।

কাছে গিয়ে কথা হয় ওই নরসুন্দরের সঙ্গে। এ প্রতিনিধিকে তিনি জানান তার নাম মো. কালাম (৩৫)। বাড়ি রেলওয়ে স্টেশন সংলগ্ন চকপাড়া মহল্লায়। বাবার নাম আব্দুল হাকিম। মায়ের নাম ফাতেমা খাতুন। তিন ভাই তিন বোনের মধ্যে সবার বড় তিনি। আগে অভাব-অনটনের কারণে তিনবেলা পেটে ভাত জুটত না। তাই জীবিকার তাগিদে বাবার সূত্র ধরে এই পেশায় এসেছেন তিনি।

কথা বলতে বলতেই এক ট্রেনযাত্রীর চুল কেটে চলেছেন কালাম। নিপুণ হাতে চিরুনি ও কাঁচিতে ঘ্যাচাং ঘ্যাচাং শব্দ তুলে কাজটি করছেন খুব সহজ ভাবে। চুল কাটা শেষে শেভ করার প্রস্তুতি নিতেই স্টেশনে প্রবেশ করল ভৈরবগামী একটি ট্রেন। তাই শেভ না করে কালামের হাতে টাকা দিয়ে ওই লোক উঠে পড়ল ট্রেনে। মুচকি হেসে কালাম বলে উঠেন-‘বুঝলেন ভাই আমার কিছু কাস্টমারই থাকে দৌড়ের ওপরে।’

এরই মধ্যে মেঘাচ্ছন্ন আবহাওয়ায় কালো হয়ে গেছে চারদিক। গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি পড়তে শুরু করেছে স্টেশনে। গা বাঁচাতে অপেক্ষমান ট্রেন যাত্রীরাও ছুটছে নিরাপদ আশ্রয়ে। কিন্তু ক্ষৌরকর্মের সামগ্রী পুঁটলিতে ভরে কালাম দাঁড়িয়ে আছে আমগাছটার নিচেই। সেখানে দাঁড়িয়ে থাকতে থাকতে এ প্রতিনিধির সঙ্গে জীবনের গল্প জুড়ে দেয় কালাম।

তিনি বলেন, ‘ছোটবেলায় পড়াশোনা করার জন্য বাবা আমাকে স্কুলে ভর্তি করে দেয়। কিন্তু আমি স্কুলে না গিয়ে খেলাধুলা করে বাড়ি ফিরতাম। তখন বাবা আক্ষেপ করে বলতেন, ‘গোলামের পুত পড়ালেহা না করলে খাইবি কী? আমার তো জমি-বাড়ি কিছুই নাই যে বেইচ্যা বেইচ্যা খাইবি। আমার লগে থাইক্যা এই কামডা শিইখ্যা রাখ। একটা কিছু কইর‌্যা তো তোর খাওন লাগবো।’ এরপর বাবার সঙ্গে থেকে ক্ষুর-কাঁচির কাজটা রপ্ত করে ফেলি।’

কথা প্রসঙ্গে কালাম বলেন, ‘বার্ধক্যজনিত রোগে বাবা বিছানায় পড়েছে বহু বছর আগে। কিন্তু জীবিকার তাগিদে আমি এই পেশা নিয়ে স্টেশনে পড়ে আছি গত একযুগ ধরে। ইতোমধ্যে আমিসহ দুই ভাই জুয়েল, সোহেল ও তিন বোন হাসিনা, মৌসুমী ও খালেদা বিয়ে করে আলাদা হয়েছি। তবে বাবা, মা ও স্কুল পড়ুয়া ছোট ভাই সোহেল রয়ে গেছে আমার সংসারেই। কিন্তু সংসারের হাল ধরতে এখনো বৃদ্ধ মাকে কাজ করতে হয় পরের বাড়িতে।’

সময়ের বিবর্তনে গত একযুগে স্টেশনে অনেক কিছুই পরিবর্তন হয়েছে। আন্তনগর ট্রেন চালুর পাশাপাশি গড়ে উঠছে স্টেশনের নতুন ভবন। কিন্তু দিন বদল হয়নি নরসুন্দর কালামের। রোদ ও ঝড়-বৃষ্টি উপেক্ষা করে প্রতিদিন সকাল ৭টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত স্টেশনের আমগাছ তলায় ক্ষৌরকর্মের কাজ করেন কালাম। পোশাক শ্রমিক, ফেরিওয়ালা, রিকশা চালক, দিনমজুর, ট্রেনযাত্রীসহ নিম্ন আয়ের লোকজন তার কাস্টমার। তার এখানে চুল কাটা ২৫ টাকা, দাড়ি শেভ ১০ টাকা। সারাদিন তার কাজ করে আয় হয় ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা। এই টাকায় চলে তার সংসার, বাবার চিকিৎসাসহ অন্যান্য খরচ।

দাম্পত্য জীবনে কালামের জয় নামে এক ছেলে আছে। অভাবের কারণে তিনি ছেলেকে ভালো স্কুলে ভর্তি করতে পারেননি। ছেলেটি এখন স্থানীয় হাফেজি মাদরাসায় পড়ছে। কিন্তু সেখানেও আছে স্বপ্ন ভাঙার শঙ্কা। কিন্তু কালাম অনড়। যেভাবেই হোক ছেলেকে তিনি মানুষ করবেন।

কালাম বলেন, ‘ছোটবেলায় স্কুল ফাঁকি দিয়েছি। পড়ালেখা করিনি। তাই আমাকে নাপিত হতে হয়েছে। আমি চাইনা ছেলে এই পেশায় আসুক।’

এরই মাঝে বৃষ্টি থেমে গেছে। চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে আসা আন্তনগর ট্রেন বিজয় এক্সপ্রেস প্রবেশ করেছে স্টেশনে। এক বৃদ্ধ লোক তড়িঘড়ি করে গাছতলায় পাতা চেয়ায়টায় বসে বলে উঠেন- ‘ওই মিয়া তাড়াতাড়ি দাড়িডি শেভ কইর‌্যা দেও। ট্রেন ছাইর‌্যা দিব।’ দ্রুত পুঁটলিতে রাখা চাদর বের করে বৃদ্ধের শরীরে মুড়ে দেয় কালাম। মুখে শেভিং ক্রিম মেখে ক্ষুর টান দিতেই কালামকে বাঁধা দিয়ে বৃদ্ধ বলেন, ‘আরে মিয়া ক্ষুরের পুরান ব্লেডটা বদলাইয়া লও।’

   

শেরে বাংলা একে ফজলুল হকের মৃত্যুবার্ষিকীতে আ. লীগের শ্রদ্ধা



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

জাতীয় নেতা শেরে বাংলা আবুল কাশেম ফজলুল হকের ৬২তম মৃত্যুবার্ষিকীতে তার সমাধিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছে আওয়ামী লীগ।

শনিবার (২৭ এপ্রিল) সকাল ৮টায় ঐতিহাসিক শহীদ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ফজলুল হকের সমাধিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয়।

এসময় প্রথমে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে ও পরে দলের পক্ষ থেকে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের নেতৃত্বে শ্রদ্ধা জানান কেন্দ্রীয় নেতারা। সেখানে নেতারা এক মিনিট দাঁড়িয়ে নীরবতা পালন করেন।

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন- আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফর উল্লাহ, ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, যুগ্ম আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, সুজিত রায় নন্দী, সাংস্কৃতিক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, শিক্ষা ও মানবসম্পদ বিষয়ক সম্পাদক শামসুন্নাহার চাপা, দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান, কার্যনির্বাহী সদস্য সাহাবুদ্দিন ফরাজী প্রমুখ।

;

সকাল ৯টার মধ্যে ৬০ কিমি বেগে ঝড়ের পূর্বাভাস



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ওপর দিয়ে বইছে তীব্র তাপপ্রবাহ। গরমে অতিষ্ঠ জনজীবন। হাসপাতালে বাড়ছে রোগীর সংখ্যা। এর মধ্যে সিলেটের ওপর দিয়ে ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৬০ কিলোমিটার বেগে ঝড়সহ বজ্রবৃষ্টি হওয়ার পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অফিস। 

আবহাওয়া দফতরের নদীবন্দরের জন্য দেয়া সতর্কবার্তা অনুযায়ী শনিবার (২৭ এপ্রিল) সকাল ৯টার মধ্যে এই ঝড় বয়ে যাওয়ার কথা।

সতর্কবার্তায় বলা হয়, সকাল ৯টার মধ্যে সিলেটের বিভিন্ন এলাকার ওপর দিয়ে পশ্চিম ও উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫-৬০ কিলোমিটার বেগে বৃষ্টি অথবা বজ্রবৃষ্টিসহ অস্থায়ীভাবে দমকা ও ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।

এসব এলাকার নদীবন্দর সমূহকে ১ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

এদিকে মধ্যরাতে ঘণ্টার বেশি সময়ে বৃষ্টিতে সিলেট নগরীসহ জেলার বিভিন্ন উপজেলা ভিজেছে। রাত আটটার পর থেকে নগরে বইতে শুরু করে বাতাস। পরে রাত ১১টার দিকে নামে ঝুম বৃষ্টি।

এছাড়া মে মাসের শুরুতে দেশে বৃষ্টিপাত বাড়তে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া বিভাগ। 

আবহাওয়াবিদ মো. ওমর ফারুক সময় সংবাদকে জানান, এপ্রিল জুড়েই থাকবে তাপপ্রবাহ। তবে মে মাসের শুরুতেই সারাদেশে বৃষ্টিপাত হতে পারে। এরপরই গরম কমে আসবে।

শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) সন্ধ্যায় আবহাওয়া বার্তায় জানানো হয়, বর্ধিত পাঁচ দিনের শেষের দিকে দেশের উত্তরপূর্বাঞ্চল ও দক্ষিণপূর্বাঞ্চলে বৃষ্টিপাতের প্রবণতা বাড়তে পারে। 

;

ধানমন্ডির সীমান্ত স্কয়ারে আগুন



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

রাজধানীর ধানমন্ডি এলাকার শপিং মল সীমান্ত স্কয়ারে আগুনের ঘটনা ঘটেছে। পরে ফায়ার সার্ভিসের ৫টি ইউনিটের চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।

শুক্রবার (২৭ এপ্রিল) রাত ১টার দিকে আগুনের সূত্রপাত হয়। 

ফায়ার সার্ভিস সূত্র জানায়, রাত ১টা ১৫ মিনিটের দিকে আগুনের তথ্য পাওয়া যায়। ৬তলা শপিং মলের তৃতীয় তলার আর কে ইলেকট্রনিকস নামের একটি মোবাইলের দোকানে আগুন লাগে। আগুনে দোকানটি পুড়ে গেছে। তবে অন্যকোনো দোকানের ক্ষতি হয়নি। ফায়ার সার্ভিস সদস্যরা ২টা ১৬ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। আর ৩টা ২২ মিনিটে আগুন সম্পূর্ণ নির্বাপণ করা হয়।

মোহাম্মদপুর ও পলাশী স্টেশনের ৫টি ইউনিট আগুন নেভাতে কাজ করে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে বৈদ্যুতিক গোলযোগ থেকে আগুনের সূত্রপাত। তবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ তদন্ত সাপেক্ষে বলা যাবে বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস। 

;

ভালুকায় ছেলের হাতে বাবা খুন



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ময়মনসিংহ
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ময়মনসিংহের ভালুকায় ছেলের হাতে মজিবুর রহমান পান্না (৫৫) নামে এক শিক্ষক খুন হয়েছে। এ ঘটনা ছেলে মারুফ আহমেদ রাব্বীকে (১৮) আটক করছে ভালুকা মডেল থানা পুলিশ।

শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) রাতে উপজেলার পূর্ব ভালুকা কোনাপাড়া এলাকায় এ ঘটনায় ঘটে। 

নিহত মজিবুর রহমান পান্না ওই এলাকার মৃত সালামত সরকারের ছেলে এবং সে একই এলাকার মিরকা হাসিনা বানু উচ্চ বিদ্যালয়ের সিনিয়র সহকারী শিক্ষক।

ভালুকা মডেল থানা ইনচার্জ (ওসি) শাহ কামাল আকন্দ ঘটনাটির সত্যতা নিশ্চিত করেন।

স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানায়, নিহত মজিবুর রহমান পান্না পরিবারকে না জানিয়ে দ্বিতীয় বিয়ে করেন। কিন্তু পারিবারিক অশান্তি কারণে কিছুদিন পূর্বে তালাক দেন। এর পর থেকেই পরিবারে কলহ বাঁধে। এ ঘটনায় প্রথম স্ত্রীর ছেলে কলেজ পড়ুয়া মারুফ আহমেদ রাব্বির সাথে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে হাতে থাকা কলম দিয়ে এলোপাথাড়ি আঘাত করে, এতে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। পরে স্থানীয়রা আহত অবস্থায় ভালুকা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে জরুরি বিভাগের দায়িত্বরত চিকিৎসক মজিবুর রহমান পান্নাকে মৃত ঘোষণা করেন। খবর পেয়ে ভালুকা মডেল থানার পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে এবং ঘাতক ছেলে রাব্বীকে আটক করেন।

ভালুকা মডেল থানার ইনচার্জ (ওসি) শাহ কামাল আকন্দ জানান, নিহতের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে এবং এ ঘটনার পর ছেলে রাব্বিকে আটক করা হয়েছে। নিহতের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হবে ।

;