রাখাল জীবন নিয়ে খুশি শাহজাহান
মো. শাহজাহান (বাচ্চু)। ১০ বছর বয়স থেকেই মহিষ চরানোর কাজ করেন তিনি। এখন তার বয়স ৫৫ বছর। দীর্ঘ ৪৫ বছর ধরে তিনি মহিষ চরিয়ে আসছেন। রাখাল জীবনযাপন নিয়ে তিনি বেশ খুশি। তাকে দেখলেই মনে হয়, তিনি মহিষের ভাষা বোঝেন। তার দায়িত্বে থাকা অশান্ত মহিষগুলো তাকে দেখলে শান্ত হয়ে যায়। অবুঝ পশুগুলোও যেন তার সান্নিধ্য অনুভব করে।
শাহজাহান লক্ষ্মীপুর পৌরসভার সমসেরাবাদ এলাকার খোকন ড্রাইভার বাড়ির মজিবুল হকের ছেলে।
শনিবার (১৭ নভেম্বর) সকালে লক্ষ্মীপুর সরকারি কলেজের পাশে একটি মাঠে কিছু মহিষকে ঘাস খাওয়াচ্ছিলেন শাহজাহান। এ সময় কথা হয় তার সঙ্গে।
তিনি জানান, ১০ বছর বয়সে বয়ারচর এলাকার মহিষ ব্যবসায়ী আহসান বেপারীর সঙ্গে দেখা হয় তার। সেখান থেকেই তিনি মহিষ চরানোর কাজ শুরু করেন।
শাহজাহান জানান, প্রথমে ৫টি মহিষ নিয়ে তিনি কাজ শুরু করেন। ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে এসব মহিষ কিনে নেন কসাইরা। আর জবাই করার আগ পর্যন্ত তিনি মহিষগুলোর দেখভাল করেন। প্রথমে একটি মহিষের জন্য তিনি ৩০ টাকা করে পেতেন। এরপর ধীরে ধীরে টাকার পরিমাণ বাড়তে থাকে। এখন তিনি একটি মহিষের জন্য ৫০০ টাকা পান। শুরু থেকে এই পর্যন্ত ৩০০ মহিষ চরানোর দায়িত্ব পেয়েছেন তিনি। তবে মাঝে মধ্যে তিনি গরু চরানোর কাজও করেন।
তিনি আরও জানান, কাজটি করতে তার ভালো লাগে। ব্যবসায়ীদের থেকে মহিষ আনতে ১৫-২০ কিলোমিটার হাঁটতে হয় তাকে। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সদর উপজেলার মজুচোধুরীরহাট এলাকা থেকেই মহিষ আনেন তিনি।
মহিষ নিয়ে কখনো বিপদে পড়তে হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি জানান, একদিন একটি মহিষ হারিয়ে গিয়েছিল। এর দুইদিন পর ভবানীগঞ্জ এলাকা থেকে মহিষটিকে উদ্ধার করা হয়। এছাড়া আর কোনো সমস্যা হয়নি।
মহিষকে খাওয়ানোর বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, মহিষকে বাইরের খাবার দেওয়া লাগে না। ঘাস ও কচুরিপানা বেশি খায়। আগে বড় বড় ডগি (ক্ষেত) ছিল, সেখানে ছেড়ে দিতেন। তখন খাবারের অভাব হতো না। এখন ক্ষেত কমে গেছে, তাই কচুরিপানা কম পাওয়া যায়৷ এ জন্য শহর থেকে দূরে গিয়ে মহিষ চড়াতে হয়। আর অন্য কোনো সমস্যা নেই।