‘আঁচলে মেঘনার মায়া, ডাকাতিয়া বুকে...’



হাসান মাহমুদ শাকিল, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
লক্ষ্মীপুরের মাটি ও আবহাওয়া সুপারি চাষের জন্য উপযোগী। ছবি: বার্তা২৪.কম

লক্ষ্মীপুরের মাটি ও আবহাওয়া সুপারি চাষের জন্য উপযোগী। ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

দেশের পূর্ব উপকূলীয় অঞ্চলের জেলা লক্ষ্মীপুর। এখানকার মাটি ও আবহাওয়া সুপারি চাষের জন্য উপযোগী। প্রতিবছর এখান থেকে কোটি কোটি টাকার সুপারি দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করা হয়। এবারো লক্ষ্মীপুরে প্রায় সাড়ে ৩শ কোটি টাকার সুপারি উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।

আর এই অর্থকরী ফসলের সঙ্গে মিল রেখে কবি যথার্থই বলেছেন, ‘আঁচলে মেঘনার মায়া, ডাকাতিয়া বুকে, রহমতখালী বয়ে চলে মৃদু এঁকেবেঁকে; নারিকেল, সুপারি আর ধানে ভরপুর, আমাদের আবাসভূমি প্রিয় লক্ষ্মীপুর।’

জানা গেছে, এখানে উৎপাদিত সুপারি জেলার চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সরবরাহ করা হচ্ছে। অন্যদিকে বাজার দর ভালো থাকায় স্থানীয়দের আগ্রহ বাড়ছে সুপারি আবাদে। তবে পরিকল্পিত আবাদ, সঠিক পরিচর্যা ও চাষিদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হলে উৎপাদন আরও বৃদ্ধি পাবে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এ জেলায় কাঁচা, পাকা সুপারি বিক্রি ছাড়াও পানিতে ভিজিয়ে এবং শুকিয়ে সরবরাহ করা হয়ে থাকে। উৎপাদিত সুপারির ৭০ ভাগ পানিতে ভিজিয়ে জেলার বাইরে সরবরাহ করে ব্যবসায়ীরা।

আশ্বিন-কার্তিক-অগ্রহায়ণ মাসে বিভিন্ন নদীনালা, খালডোবা, পুকুর ও জলাশয়ের পানিতে এসব সুপারি ভেজানো হয়। এরপর এসব সুপারি ঢাকা, চট্টগ্রাম, রংপুর, ময়মনসিংহ, রাজশাহী ও শ্রীমঙ্গলসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ হয়ে থাকে।

জেলার সবচেয়ে বড় সুপারির হাট বসে দালাল বাজারে। সপ্তাহে দুইদিন (শুক্র ও সোমবার) এখানে সুপারির হাট বসে। এ বাজারে কোটি কোটি টাকার সুপারি বেচাকেনা হয়ে থাকে। এছাড়া জেলার রায়পুর উপজেলার মোল্লারহাট, রাখালিয়া, হায়দরগঞ্জ, সদর উপজেলার জকসিন, চন্দ্রগঞ্জ, ভবানীগঞ্জসহ রামগঞ্জ, কমলনগর ও রামগতি উপজেলার বিভিন্ন স্থানে সুপারির হাট বসে।

জেলার কয়েকটি বাজারে গিয়ে দেখা যায়, বাজারে এখন প্রতি পোন (৮০টি) সুপারি বিক্রি হচ্ছে ১৩০-১৪০ টাকায়। মান ভালো হলে তা ১৪০-১৬০ টাকায়ও বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কাহন (১৬ পোন) সুপারি এখানে বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ২৪০ থেকে ২ হাজার ৫৬০ টাকায়। অন্যদিকে শুকনো সুপারি বিক্রি হয় প্রতি টন দুই থেকে আড়াই লাখ টাকায়।

স্থানীয়রা জানায়, জেলার বাসিন্দারা নিজ উদ্যোগে বাড়ি, রাস্তার পাশে, পুকুর পাড়ে ও ফসলি জমিতে বাগান করে সুপারি উৎপাদন করে আসছে। সঠিক পরিচর্যার অভাবে ফসলটি আবাদ করে যথাযথ ফলন পাওয়া যাচ্ছে না। সরকারিভাবে প্রশিক্ষণ, উন্নত বীজ সরবরাহ ও পৃষ্ঠপোষকতা দেয়া হলে সুপারির উৎপাদন বাড়ানো সম্ভব হতো। উন্নত জাতের সুপারি চাষ করে চাষিরা নিয়মিত আয়ের সুফলভোগী হতেন। এতে চাষিদের ভাগ্য উন্নয়নের পাশাপাশি গ্রামীণ অর্থনীতি আরও সমৃদ্ধ হয়ে উঠত।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরে জেলার ৫টি উপজেলায় ৬ হাজার ৭৯৫ হেক্টর জমিতে সুপারি উৎপাদন হয়েছে। এরমধ্যে সদর উপজেলায় ১ হাজার ৯০০ হেক্টর, রায়পুরে ৩ হাজার ৭০০ হেক্টর, রামগঞ্জে ৮৯০ হেক্টর, কমলনগরে ২৬৫ হেক্টর ও রামগতিতে ৪০ হেক্টর জমিতে সুপারি চাষ হচ্ছে। জেলায় এবার ১১ হাজার ৪৫২ মেট্রিক টন সুপারি উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। যার বাজার মূল্য নির্ধারণ করা হয় সাড়ে ৩শ কোটি টাকা।

সুপারি গাছের চারা রোপণের পর সঠিক পরিচর্যা করলে ৬-৭ বছরে ফলন পাওয়া যায়। সুপারি গাছ ২০-২৫ মিটার পর্যন্ত লম্বা হয়ে থাকে। আগস্ট থেকে শুরু করে পরবর্তী বছরের মার্চ পর্যন্ত সুপারি সংগ্রহ চলে। একেকটি গাছে বছরে তিন থেকে পাঁচটি ছড়া আসে। গাছে ফুল আসার পর ৯-১০ মাস লেগে যায় ফল পাকতে। প্রতি ছড়ায় ৫০-১৫০টি পর্যন্ত সুপারি থাকে।

সুপারি ব্যবসায়ী রাকিব হোসেন ও মেহেদি হাসান জানান, এ বছর সুপারির দাম একটু বেশি। গত বছর এক পোন (৮০ টি) সুপারি কিনেছি ১০০ টাকায়। এবার তা ১৫০-১৬০ টাকায় কিনতে হচ্ছে। ফলন কিছুটা কম হওয়ার কারণে দাম চড়া। তবে আরও কয়েকদিন পরে বাজারে সুপারির দাম কমতে পারে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. বেলাল হোসেন খান জানান, এখানকার মাটি ও আবহাওয়া সুপারি চাষে উপযোগী হওয়ায় সামান্য পরিচর্যায় ভালো ফলন আসে। এ অঞ্চলের অর্থনৈতিক সচ্ছলতার পেছনে সুপারির অবদান অনস্বীকার্য। গত কয়েক বছরের তুলনায় এবার কাঁচা-পাকা সুপারির দাম কিছুটা বেশি।

তিনি আরও জানান, জেলা ও উপজেলা কৃষি অফিসে জনবল সংকট রয়েছে। এরপরও সুপারি চাষ, পরিচর্যা, ফসল সংগ্রহ ও সংরক্ষণের বিষয়ে চাষিদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

   

পাটগ্রাম সীমান্তে ভারতীয় নাগরিক আটক



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, লালমনিরহাট
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

পাটগ্রাম উপজেলায় অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রম করায় শফিউদ্দিনকে (৫০) নামে এক ভারতীয় নাগরিককে আটক করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।

সোমবার (০৬ মে) রাতে তাকে আটক করা হয়।

মঙ্গলবার (০৭ মে) দুপুরে পাটগ্রাম থানায় দায়িত্বরত সহকারী উপপুলিশ পরিদর্শক (এএসআই) শহিদুল ইসলাম আটকের বিষয়টি বার্তা২৪.কম-কে নিশ্চিত করেছেন।

বিজিবি জানায়, পাটগ্রাম সীমান্তের ৮৭১ নম্বর প্রধান পিলারের ৬ নম্বর উপপিলার সীমান্তের কাছ দিয়ে প্রায় ৫০ গজ অভ্যন্তরে বাংলাদেশে প্রবেশ করেন শফিউদ্দিন। এ সময় ৬১ বিজিবি ব্যাটালিয়নের (তিস্তা-২) কালিরহাট ক্যাম্পের টহল দলের সদস্যরা তাকে আটক করে।

শফিউদ্দিন ভারতের কোচবিহার জেলার মেখলিগঞ্জ থানার ১৬৫ ওসুল পুকুরী গ্রামের মৃত জহির উদ্দিনের ছেলে। আজ সকালে বিজিবি শফিউদ্দিনকে ১৯৫২ সনের প্রবেশ নিয়ন্ত্রণ আইনের ৪ ধারায় একটি মামলা দিয়ে পাটগ্রাম থানা পুলিশের নিকট হস্তান্তর করেন।

পাটগ্রাম থানার দায়িত্বরত সহকারী উপপুলিশ পরিদর্শক (এএসআই) শহিদুল ইসলাম বার্তা২৪.কম-কে জানান, ভারতীয় নাগরিক শফিউদ্দিনকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।

;

কুষ্টিয়ায় বেঙ্গল টোব্যাকো গোডাউনে অভিযান: রাজস্ব ফাঁকির অভিযোগ



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

অনুমোদন না থাকা এবং বিপুল পরিমাণের শুল্ক ফাঁকি দিয়ে অবৈধভাবে ব্যবসা পরিচালনা করছে এমন অভিযোগে কুষ্টিয়ার শহরতলীর জুগিয়ায় বেঙ্গল টোব্যাকোতে অভিযান পরিচালনা করেছে কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট। অভিযানে কুষ্টিয়া জেলা পুলিশ, কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট বিভাগ কুষ্টিয়া অঞ্চলের রাজস্ব কর্মকর্তারা এবং গোয়েন্দা পুলিশ কর্মকর্তারা অভিযানে অংশ নেন।

রোববার (৫ মে) বিকেলের দিকে কুষ্টিয়া শহরতলীর জুগিয়া কদমতলার আতিয়ার বেঙ্গল টোব্যাকো নামের ওই ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে অভিযান পরিচলনা করা হয়।

প্রায় ঘণ্টাব্যাপী এই অভিযান শেষে প্রতিষ্ঠানটির কর্মকাণ্ড স্থগিত রাখার আদেশ দেওয়া হয়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা সূত্রে জানা যায়, বেঙ্গল টোব্যাকোতে অবৈধভাবে কাঁচা তামাক (র টোব্যাকো) ও প্রসেস টোব্যাকো স্টোর করা হয়। পরে এসব তামাক অবৈধভাবে ভাবে যারা সিগারেট তৈরি করে তাদের কাছে বিক্রি করে। এই বিক্রির প্রক্রিয়া পুরোটাই ভ্যাট ফাঁকি দিয়ে। এছাড়াও এসব তামাক বিভিন্ন অবৈধ সিগারেট প্রস্তুতকারক এর কাছে সরবরাহ করা হয়।

তিনি আরও জানান, আজকের অভিযানে প্রায় ২০ লাখ কেজি অপরিশোধিত তামাক ও ৩৫০ কার্টুন (৭০ হাজার কেজি) প্রসেস তামাক পাওয়া গেছে। যার বাজার মূল্য আনুমানিক ৪২ কোটি টাকা (৪০ কোটি টাকা মূল্যের অপরিশোধিতো তামাক ও ২ কোটি টাকা মূল্যের প্রসেসড তামাক)। যার ভ্যাট ফাঁকির পরিমাণ ৯ কোটি টাকার উপরে।

ভ্যাট আইন অনুযায়ী অপরিশোধিত তামাকের ক্ষেত্রে ৭% অগ্রিম আয়কর ও ৭.৫% ভ্যাট এবং প্রসেস টোব্যাকোর ক্ষেত্রে ১৫% ভ্যাট ও ৪% অগ্রিম আয়কর পরিশোধ করতে হয়।
কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট সুত্রে জানা যায় যে এই ঘটনার প্রেক্ষিতে বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

অভিযানের বিষয়ে বেঙ্গল টোব্যাকোর সত্তাধিকারি আতিয়ার রাহমান জানান, এই তামাক ভারগো টোব্যাকো ও তারা টোব্যাকোকে সরবরাহ করা হবে। তামাকের বেবসা ছাড়াও এদের সি এন জি পাম্প, পাইপ তৈরি ও বেঙ্গল মোটরস নামক ট্রান্সপোর্ট বেবসা আছে।

এদিকে গতবছর ১৯ মে একই প্রতিষ্ঠানে এমন অভিযানের ঘটনা ঘটে।

;

ঘুরতে নেওয়ার কথা বলে তরুণীকে চলন্ত অটোরিকশায় ধর্ষণ, গ্রেফতার ২



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

চট্টগ্রাম নগরীর ইপিজেডে ঘুরতে নেওয়ার কথা বলে পোশাক শ্রমিক এক তরুণীকে চলন্ত অটোরিকশায় ধর্ষণের ঘটনায় প্রেমিকসহ দুইজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এসময় ওই অটোরিকশাটিও উদ্ধার করা হয়।

সোমবার (৬ মে) রাতে নগরের ডবলমুরিং ও হালিশহরের বড়পোল বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়।

গ্রেফতার দুইজন হলেন ভোলা জেলার মো. আক্তার (৩০) ও কুমিল্লা জেলার বাসিন্দা মো. সাগর (১৯)। আক্তার অটোরিকশাচালক এবং সাগর পেশায় অটোরিকশা গ্যারেজের মিস্ত্রি।

পুলিশ জানায়, ধর্ষণের শিকার ওই পোশাক শ্রমিক তরুণীর বাসা ডবলমুরি এলাকার মিস্ত্রিপাড়ায়। আসামি সাগরের বাসাও একই এলাকায় হওয়ায় তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। গত ৩ মে (শুক্রবার) সন্ধ্যায় পোশাককর্মী তরুণী কারখানা থেকে বের হওয়ার পর ঘুরতে নেওয়ার কথা বলে সাগর তাকে অটোরিকশায় তুলে নেয়। অটোরিকশা চালাচ্ছিল আক্তার।

ডবলমুরিং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফজলুল কাদের পাটোয়ারী বলেন, ওই তরুণীর ভাষ্যমতে- সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে নগরীর ইপিজেড থানার আকমল আলী পকেট গেইট এলাকায় নির্জন রাস্তায় অটোরিকশার ভেতর সাগর ও আক্তার তাকে ধর্ষণ করে। রাত সাড়ে ১১টার দিকে ওই অটোরিকশায় তাকে মিস্ত্রিপাড়ার বাসায় নামিয়ে দেয়। পরদিন ওই তরুণী থানায় এসে এ বিষয়ে অভিযোগ করলে আমরা দুজনের অবস্থান শনাক্ত করে তাদেরকে গ্রেফতার অভিযান শুরু করি।

তিনি আরও বলেন, অভিযান শুরু করার পরই আসামিরা আমাদের তৎপরতা বুঝতে পেরে অটোরিকশা ডবলমুরিং এলাকার মিস্ত্রীপাড়া লাল মসজিদের পাশে রেখে পালিয়ে যায়। আমরা প্রথমে অটোরিকশাটি উদ্ধার করি। এরপর আসামি সাগরকে ডবলমুরিং এলাকা থেকে রোববার রাতে গ্রেফতার করা হয়। এদিকে অটোরিকশা চালক মো. আক্তার ইপিজেড থানার বন্দরটিলা এলাকায় পালিয়ে আছে জানতে পেরে আমরা সেখানে অভিযান চালাই। কিন্তু সে বুঝতে পেরে নিজ জেলা ভোলায় পালিয়ে যাওয়ার জন্য হালিশহর থানার বড়পোল বাসস্ট্যান্ড এলাকায় চলে যায়। সেখান থেকে তাকে সোমবার রাতে আমরা গ্রেফতার করা হয়েছে।

;

স্বস্তির বৃষ্টিতে খুলনায় কৃষকের মাথায় হাত!



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, খুলনা
ছবি: বার্তা২৪

ছবি: বার্তা২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

চলতি বোরো মৌসুমে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবার খুলনায় বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে প্রায় ১ হাজার হেক্টর বেশি জমিতে বোরো চাষাবাদ হয় এ জেলায়।

এখন মৌসুম বোরো ধান ঘরে তোলার। এমন সময় দেশের উপর দিয়ে মাস জুড়ে চলে তাপপ্রবাহ। অতিরিক্ত গরমে ধান কাটা থেকে বিরত থাকেন এ জেলার কৃষকেরা। ঠিক সেই মুহূর্তে সোমবার (৬ মে) সন্ধ্যায় খুলনার উপর দিয়ে বয়ে যায় দমকা হাওয়াসহ বজ্রবৃষ্টি। আর এ বৃষ্টিতে কৃষকের কপালে ভাঁজ পড়েছে। অধিকাংশ ধান শীষ থেকে ঝরে পড়েছে। গাছও নুয়ে পড়েছে। আবার কোথাও বৃষ্টির পানিতে ডুবে গেছে।

খুলনা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, এ বছর খুলনার ৯টি উপজেলায় ৬৪ হাজার ১০ হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। সেখানে চাষ হয়েছে ৬৪ হাজার ৮শ ৬০ হেক্টর জমিতে। মাঠে ফলন ভালো হওয়ায় কৃষকের মুখে লেগেছিল তৃপ্তির হাসি। কিন্তু সেই হাসি বেশিদিন স্থায়ী হয়নি। ধান কাটা ও ঘরে তোলার মৌসুমের শেষের দিকে বৃষ্টিতে জেলার বেশ কিছু এলাকার কৃষকেরা বেকায়দায় পড়ে গেছেন। বৃষ্টিতে ধান গাছ নুয়ে পড়েছে। বৃষ্টির কারণে শীষ থেকে ঝরে গেছে ধান। দমকা হাওয়ায় ধানগাছ এলেমেলো হয়ে নুয়ে পড়েছে। আর বৃষ্টির পানি জমে থাকায় মাটির সঙ্গে মিশে গেছে পাকা ধান। কৃষকেরা বলছেন, অতিরিক্ত গরমের কারণে শ্রমিক সংকট ছিল। ফলে সময়মতো ধান কাটতে পারেননি। এর খেসারত এখন দিতে হচ্ছে তাদের।

জেলার পাইকগাছা সোনাদানা এলাকার কৃষক মো. আফজাল হোসেন জানান, গরমের জন্য ধান কাটায় শ্রমিক সংকট ছিল। সেজন্য আমরা পরিবারের সবাই মিলে শুক্র, শনিবারে ধান কাটবো বলে চিন্তা করলাম। কিন্তু হঠাৎ বৃষ্টি আমাদের সেই প্ল্যান (পরিকল্পনা) নষ্ট করে দিয়েছে। শুধু তাই নয়, সব ধান ঘরে তুলতে পারবো কি না জানি না!

ডুমুরিয়া উপজেলার কৃষক মো. আমজাদ আলী মোড়ল জানান, ৫০ শতক জমির মধ্যে ২০ শতকের মতো জমির ধান কাটা হয়েছে। সেই ধান মাঠে রয়েছে। বাকি ধান এখনো কাটা হয়নি। এরই মধ্যে বৃষ্টি। প্রায় সব ধান ঝরে গেছে। এখন কিছু করার নেই।

খুলনা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক কাজী মো. জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, খুলনা জেলায় ৬৪ হাজার ১০ হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। সেখানে চাষাবাদ হয়েছে ৬৪ হাজার ৮শ ৬০ হেক্টর জমিতে। কৃষকের চাহিদার তুলনায় এবার ফলনও বেশ ভালো হয়েছিল। বেশির ভাগ কৃষকেরা ধান ঘরে তুলেছেন। কিন্তু ১০ শতাংশের কৃষকের ধান এখনো মাঠে রয়েছে। ফলে তারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। তবে ক্ষতির পরিমাণ এখন পর্যন্ত নির্ধারণ করা সম্ভব হয়নি।

খুলনা আবহাওয়া অফিসের আবহাওয়াবিদ মো. আমিরুল আজাদ জানান, সোমবার সন্ধ্যা থেকে মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত খুলনায় ৭৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। আগামী ১১ মে পর্যন্ত প্রতিদিন এ জেলায় বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।

 

;