ঐক্যফ্রন্ট প্রার্থী আবু সাইয়িদ হামলার শিকার
নির্বাচনী প্রচারণায় নেমেই হামলার শিকার হয়েছেন পাবনা-১ (সাঁথিয়া-বেড়ার আংশিক) আসনে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী অধ্যাপক আবু সাইয়িদ। হামলার অভিযোগের তীর আওয়ামী লীগের দিকে। তবে নিজামীর স্বজনসহ জামায়াতে ইসলামীর একটি বিক্ষুব্ধ অংশ এই হামলা চালিয়েছে বলে স্থানীয় আওয়ামী লীগের দাবি।
বৃহস্পতিবার (১৩ ডিসেম্বর) বেলা সোয়া ১১ টার দিকে উপজেলার সাঁথিয়া বাজারের আব্দুর রশিদের সারের দোকানের সামনে এ হামলার ঘটনা ঘটে।
ধানের শীষের প্রার্থী অধ্যাপক আবু সাইয়িদ মুঠোফোনে জানান, 'সাঁথিয়া বাজারে উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্পাদক তপন হায়দার সানের নির্দেশে উপজেলা ছাত্রলীগ সেক্রেটারি সানার নেতৃত্বে প্রতিপক্ষের একদল সশস্ত্র সন্ত্রাসী আমার উপর এই হামলা চালিয়েছে।'
আবু সাইয়িদ আরো বলেন, 'এই হামলায় আমার সমর্থিত তিন কর্মী আহত হয়েছেন। তাদের চিকিৎসার জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠানো হয়েছে।'
তিনি নিজেও আক্রান্ত হয়েছে এমন দাবি করে বলেন, 'হামলাকারীরা আমার নিজ গাড়িসহ দুটি গাড়ি ভাঙচুর করেছে। দুটি মোটর সাইকেল ভাঙচুরের পর আরোহীসহ আরেকটি মোটর সাইকেল পাওয়া যাচ্ছে না।'
এ ঘটনার পর তিনি আশ্রয় নেন সাঁথিয়া থানায়। সেখানে তিনি থানার ওসি ও রিটার্নিং অফিসার বরাবর অভিযোগ দিয়েছেন। ইতোমধ্যে আইনগত সকল ব্যবস্থা গ্রহণ করছেন বলে জানিয়েছেন আবু সাইয়িদ।
সাঁথিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, 'তার নির্বাচনী গাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাংচুর করা হয়েছে। তবে কেউ হতাহত হননি। তিনি অভিযোগ দিয়েছেন। আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।'
এদিকে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তপন হায়দার সানের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, 'যুদ্ধাপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত জামায়াতে ইসলামীর আমির মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীর কবর জিয়ারতের জন্য অধ্যাপক আবু সাইয়িদ দলবল নিয়ে যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যে সাঁথিয়া বাজারের আব্দুর রশিদের সারের দোকানের সামনে পৌঁছালে নিজামীর মামাতো ভাই টিপুর নেতৃত্বে নজরুল, মোল্লা ওমরসহ তার কয়েকজন আত্মীয় গাড়ির গতিরোধ করেন। এ সময় গতিরোধকারীরা আবু সাইয়িদকে নিজামীর কবর জিয়ারত করতে নিষেধ করেন। এতে তিনি সেই নিষেধ উপেক্ষা করে যাবার সময়ে বিক্ষুব্ধসহ জামায়াতে ইসলামীর একটি অংশ তার গাড়ি বহরে হামলা চালিয়ে ভাংচুর করে।'
নির্বাচনী কৌশল হিসেবে অধ্যাপক আবু সাইয়িদ ফায়দা লুটতে মিথ্যা অপপ্রচার চালিয়ে সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করছেন বলেও উল্লেখ করেন আওয়ামী লীগের এ নেতা। উপজেলা আওয়ামীলীগের পক্ষ থেকে এই ঘটনার তীব্র নিন্দা ও ঘৃণা জানানো হয়েছে।
এ বিষয়ে উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর নেতৃবৃন্দ বা নিজামীর স্বজনদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে জেলা জামায়াতে ইসলামীর শীর্ষ এক নেতা নাম প্রকাশ না করা শর্তে জানান, উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর আমীর, নায়েবে আমীরসহ শীর্ষ মুখপাত্ররা নিজামী পুত্রের মনোনয়ন প্রত্যাহারের চিঠি নিয়ে জেলা রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয়ে গেলে পুলিশ তাদের নাশকতার মামলায় গ্রেপ্তার করে জেল হাজতে পাঠিয়েছে।
তিনি বলেন, 'এই মুহূর্তে উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর কোন বক্তব্য পাওয়া সম্ভব হবে না।'