প্রধানমন্ত্রীকে গান, বক্তৃতা শুনিয়ে লাখো কোটি টাকার বিনিয়োগ সুবিধা চাইলেন সুফি মিজান
দেশের বিশিষ্ট শিল্পগ্রুপ পিএইচপি গ্রুপের চেয়ারম্যান শিল্পপতি আলহাজ্ব সুফি মোহাম্মদ মিজানুর রহমান চৌধুরী বলেছেন, বঙ্গবন্ধু হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি। আমাদের হৃদয়ের ধন; স্বাধীন পতাকা দিয়েছিলেন। পরাধীনতার গ্লানিকে মুক্ত করে বিশ্বের জমিনে যেখানে যাই মানুষ মর্যাদার চোখে দেখে। বাংলাদেশের ইতিহাস মহা বিশ্বের বিস্ময়কর ইতিহাস। এই পৃথিবীর জমিনে প্রাগ-ঐতিহাসিক কাল থেকে যদি বিবেচনা করা হয় নয় মাসে কোনো জাতি তার স্বাধীনতা অর্জন করতে পারে নাই। এইটা একমাত্র আমাদের বাংলাদেশ।
বুধবার (১৯ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ‘ব্যবসায়ী সম্মেলন ২০১৮: শান্তি ও সমৃদ্ধির পথে বাংলাদেশ’ শীর্ষক সম্মেলনে এক বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই) সম্মেলনটি আয়োজন করে। সম্মেলনে দেশি, বিদেশী বিভিন্ন কোম্পানির ব্যবসায়ীরা অংশ নেন।
সুফি মিজান তার বক্তব্যের শুরুতেই ‘এক নদী রক্ত পেরিয়ে বাংলার আকাশে রক্তিম সূর্য আনলে যারা তোমাদের এই ঋণ কোনদিন শোধ হবে না। না না না শোধ হবে না।’ গানটির দুই লাইন গেয়ে শোনান। এসময় মঞ্চে উপস্থিত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর গান শুনে জোরে করতালি দেন।
সুফি মিজান বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর ১৮ মিনিটের ভাষণ সমস্ত জাতিকে একাকার করেছিল। আমরা সেই মহান জাতির উত্তরাধিকার। পৃথিবীর জমিনে ইনশাল্লাহ আমাদের স্বাধীনতাকে সগর্বে উড্ডীয়ন করব। আমরা সেই জাতি যারা হিন্দু মুসলিম বৌদ্ধ খৃষ্টান সবাই মানুষকে মানব সন্তান হিসেবে ভালোবাসি। কিছুদিন আগে হিন্দুদের দুর্গা পূজা, আমাদের কোরবানির ঈদ, খৃষ্টানদের ইস্টার সানডে , বুদ্ধদের বুদ্ধ পূর্ণিমা আমরা প্রত্যেকে যার যার ধর্ম অনুসারে আমরা আমাদের অনুষ্ঠান করেছি কোন ভেদাভেদ হয় নি। এটা বাংলাদেশ; এইটা বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্দেশে পিএইপি চেয়ারম্যান আরো বলেন, ‘ছোট্ট একটা নিবেদন আপনার কাছে আম্মু; আমরা বিদেশী ইনভেস্ট অ্যাট্রাক্ট করতে চাই। আপনার এই সন্তানরা বিদেশীদের থেকে কোনো দিক দিয়ে কম নন। আপনি একটা সাহায্য করেন। সেটা হল আপনের নেতৃত্বে বাংলাদেশ বর্হিবিশ্বে যেই সুনাম অর্জন করেছে, আমাদেরকে পৃথিবীর বিভিন্ন, দেশ বিভিন্ন জাতি, বিভিন্ন ব্যাংক, ফাইন্যান্সিয়াল ইনস্টিটিউশন আমাদেরকে ফরেন এক্সচেঞ্জে লোন দিতে চায় লাখ লাক কোটি কোটি ডলার। মা...আমরা আজকে যদি ১০০ মিলিয়ন ডলার আনি আর দুই বছর পরে যদি আমার বাংলাদেশে ডি ভ্যালুয়েশন হয়ে যদি ৫ টাকা, ১০ টাকা বেড়ে যায় আমরা সর্বশান্ত হয়ে যাব। এই ভয়ে আমরা বিদেশী লোন নিতে পারতেছি না।’
তিনি আরো বলেন, আমরা ফরেন ইনভেস্টমেন্টকে অ্যাট্রাক্ট করতেছি। আপনে একটা কাজ করে দেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাথে। এক্সচেঞ্জ ফ্লাকচুয়েশন যে ব্যাপারটা আছে এটা আপনি ঠিক করে দেন। ইনশাল্লাহ এখানে যারা আছি. আমাদের সামনে বিশাল ঘর, আপনার নেতৃত্বে আমরা সোনার বাংলাকে হীরার বাংলা করব।’
বক্তব্য শেষে সুফি মিজান ডায়াস থেকে মঞ্চে প্রধানমন্ত্রীর কাছে চলে যান। তাঁর সঙ্গে করমর্দন করে হীরার বাংলা গড়ার প্রতিশ্রুতি দেন। এসময় গোটা অনুষ্ঠানস্থলে তুমুল করতালিতে মুখর হয়ে ওঠে।