নিজ দলের প্রার্থীকে মারপিটের নির্দেশ বিএনপি নেতা নাদিমের
রাজশাহী-৫ (দুর্গাপুর-পুঠিয়া) আসনের বিএনপির প্রার্থী অধ্যাপক নজরুল ইসলামকে মারপিটের নির্দেশ দিয়েছেন নির্বাচন থেকে ছিঁটকে পড়া দলটির আরেক নেতা নাদিম মোস্তফা।
মঙ্গলবার (২৬ ডিসেম্বর) রাতে মোবাইল ফোনে রেজাউল নামের একজনকে এ নির্দেশ দেন বিএনপির দুইবারের সাবেক এমপি নাদিম মোস্তফা। তার এ ফোনালাপ ফাঁস হয়েছে।
ফোন আলাপে নাদিম মোস্তফার কথা হয় দুর্গাপুর উপজেলার দেলুয়াবাড়ী ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও তার অত্যান্ত ঘনিষ্টজন হিসেবে পরিচিত রেজাউল করিমের। এ ফোন আলাপে সুযোগমত নজরুলকে বসাইয়া (মারপিট) দেয়ার নির্দেশ দেন নাদিম মোস্তফা।
ফোনআলাপে সালাম ও কুশুল বিনিময় করেন নাদিম ও রেজাউল। এরপর রেজাউল বলেন, ‘দুর্গাপুরে বাজারে নজরুল এসেছিলো।’
নাদিম মোস্তফা : ‘কোথায় আসছে?’
রেজাউল : ‘দুর্গাপুর বাজারে।’
নাদিম মোস্তফা : ‘সালাকে মারতে পারলে ভাল হয়। কতজন আছে, কতজন আছে?’
রেজাউল : ‘মাত্র কয়েকজন আছে। মারলেতো কালকেই মারতে পারতাম। মারতে দেয়নি এক মিনিট দাঁড়াইতে দেইনি দুর্গাপুর বাজারে।’
নাদিম মোস্তফা : ‘এখন সুযোগ পাইলে বসাইয়া দাও।’
এদিকে, নাদিম মোস্তফার এই ফোনআলাপ ফাঁসের পর রাজশাহী বিএনপিতে তোলপাড় শুরু হয়েছে। আর নিজ দলের নেতার হত্যার পরিকল্পনার কারণে নিরাপত্তাহীনতার রয়েছে বিএনপির প্রার্থী নজরুল ইসলাম। তিনি বুধবার এ কারণে ঠিকমত প্রচার চালায় নি।
মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাইয়ের দিন তথ্য গোপন ও ঋণ খেলাপির কারণ দেখিয়ে জেলা রিটানিং কর্মকর্তা বিএনপির মনোনীত প্রার্থী নাদিম মোস্তফার মনোনয়ন বাতিল করেন। এ কারণে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির দলীয় প্রার্থী নজরুল ইসলাম মন্ডলকে দলীয় মনোনয়ন দেয়া হয়।
পরে নাদিম মোস্তফা আপিলে প্রার্থিতা ফিরে পেলে দল থেকে তাকেই চূড়ান্ত প্রার্থী হিসাবে ঘোষণা করা হয়। তিনি প্রতীক পাওয়ার পর নেতাকর্মীদের নিয়ে প্রচার-প্রচারণায় নেমে পড়েন নির্বাচনের মাঠে। এর পর নাদিম মোস্তফাকে দলীয় প্রতীক দেয়ায় নজরুল ইসলাম উচ্চ আদালতে একটি আপিল আবেদন করেন।
তার আবেদনের প্রেক্ষিতে উভয় পক্ষের শুনানি শেষে গত ২৭ ডিসেম্বর আদালত নাদিম মোস্তফার প্রার্থিতা বাতিল করে নজরুল ইসলাম মন্ডলকে দলীয় প্রতীক বরাদ্দ দেয়ার নির্দেশ দেয়। এরপর অপর একটি রিটে গত ২০ ডিসেম্বর হাইকোর্ট ঋণ খেলাপির দায়ে নাদিম মোস্তফার মনোনয়নপত্র বাতিল করে।