প্রধানমন্ত্রী হিসেবে চিন্তা করি না, আমি হচ্ছি ‘ফাদারস ডটার’: শেখ হাসিনা
প্রধানমন্ত্রীত্ব নয়, জাতির পিতার কন্যা হিসেবেই তিনি গর্ব অনুভব করেন বল জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, প্রধানমন্ত্রীত্ব, এটা একটা দায়িত্ব পেয়েছি। এই পদটাকে কিভাবে উপভোগ করবো সেই চিন্তা করি না, মানুষের কল্যাণে নিজেকে কতটুকু নিয়োজিত করতে পারলাম আমার কাছে সেটাই বিবেচ্য।‘
প্রধানমন্ত্রী আবেগাপ্লুত কণ্ঠে বলেন, আমি কিন্তু নিজেকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে চিন্তা করি না। আমি হচ্ছি বাবার কন্যা ‘ফাদারস ডটার।’ সন্তান হিসেবে আমি আমার দায়িত্ব পালন করি। আমি জাতির পিতার কন্যা। আমি আপনাদের কাছে এটুকুই চাইবো আপনারা সবসময় আমাকে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের কন্যা হিসেবেই একান্ত আপনজন হিসেবে দেখবেন। সেটাই আমি চাই। সেটাইতেই আমি গর্বিত বোধ করি। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নয়।
বৃহস্পতিবার (২৭ ডিসেম্বর) দুপুরে তেজগাঁওস্থ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে সরকারের মেয়াদের শেষ কর্মদিবসে কার্যালয়ের সর্বস্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারিদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন।
বিদায় বেলায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়কে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ আখ্যায়িত করে তিনি সরকারি কর্মচারিদেরকে তাদের দায়িত্বের কথাও স্মরণ করিয়ে দেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি থাকি বা না থাকি, আপনাদের কাছে আবেদন এটাই থাকবে আপনারা দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করবেন, কারণ আপনারা সরকারি কর্মচারি। আপনাদের বেতন-ভাতা বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের ট্যাক্সের টাকাতেই হয়। কাজেই তাঁদের সেবা করা, কল্যাণ করা, আপনাদের দায়িত্ব।’
প্রধানমন্ত্রী তাঁর ভাষণে দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নসহ সরকারি কর্মচারিদের বেতন বৃদ্ধির প্রসঙ্গে বলেন, ১০টি বছর আপনাদের সাথে কাজ করেছি, আমরা হচ্ছি টেম্পোরারি, আপনারা পার্মানেন্ট। আমরাতো ৫ বছরের জন্যই নির্বাচিত হয়ে আসি।
তিনি সরকারের ধারাবাহিকতা বজায় থাকার ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, ‘১০ বছর একটানা থাকায় অনেক কাজ করে যেতে পেরেছি। এখনও বহুকাজ বাকী। সেটাও নির্ভর করে বাংলাদেশের জনগণের ওপর। আগামী ৩০ তারিখে যদি তাঁরা ভোট দেয় তাহলে আবার আসতে পারবো এবং কাজগুলোকে শেষ করতে পারবো। আর তা না হলে মানুষের ভাগ্য মানুষ বেছে নেবে। এখানে আমার কোন ক্ষোভ বা দুঃখ নেই। কেননা আমার নিজের জীবনে চাওয়া-পাওয়ার কিছু নেই।
বিদায় বেলায় কবি সুকান্তের ভাষায় শেখ হাসিনা বলেন, ‘চলে যাব- তবু যতক্ষণ দেহে আছে প্রাণ/প্রাণপণে পৃথিবীর সরাব জঞ্জাল? এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি/ নবজাতকের কাছে এই আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।’
প্রধানমন্ত্রী পরে তাঁর কার্যালয়ের মেইন গেটের সামনের দেয়ালে স্মৃতিময় ১৯৫২ থেকে ’৭১ এর মুক্তিসংগ্রাম পর্যন্ত বাঙালির গৌরবের ইতিহাস সমৃদ্ধ একটি টেরাকেটার ম্যুরাল পরিদর্শন করেন।