এগিয়ে চলেছে রংপুর শিশু হাসপাতাল নির্মাণ
দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলেছে রংপুর শিশু হাসপাতালের নির্মাণ কাজ। পুরাতন সদর হাসপাতালের জায়গাতে এটি নির্মিত হচ্ছে। আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে হাসপাতালটির নির্মাণ কাজ শেষ হবে। ১০০ শয্যার পূর্ণাঙ্গ শিশু হাসপাতালটি নির্মাণে ব্যয় হবে প্রায় ৩২ কোটি টাকা। রংপুর স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতর (এইচইডি) এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
জানা গেছে, রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সংক্রামক ব্যাধি ওয়ার্ডটিই হবে নতুন শিশু হাসপাতাল। মূল হাসপাতাল থেকে সাড়ে তিন কিলোমিটার দূরে অবস্থিত ছিল এ ওয়ার্ডটি। এক সময় অযত্ন-অবহেলা আর দুর্ভোগ থাকলেও এখন সেই জায়গাতেই নির্মিত হচ্ছে রংপুরবাসীর বহুল প্রত্যাশিত ও দীর্ঘদিনের আন্দোলনের ফসল পূর্ণাঙ্গ শিশু হাসপাতাল। ইতোমধ্যে তিনতলা বিশিষ্ট হাসপাতালটির অবকাঠামো দাঁড়িয়েছে।
রংপুর স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতর সূত্র জানায়, ঢাকার ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স মল্লিক এন্টারপ্রাইজ ও অণিক ট্রেডিং কর্পোরেশন (জেভি) রংপুর শিশু হাসপাতালটি নির্মাণে কাজ করছে। এর বাস্তবায়ন করছে স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতর। ২০১৮ সালের ৬ ফেব্রুয়ারিতে শুরু হওয়া হাসপাতালটির নির্মাণ কাজ শেষ হবে ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে। নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে ৩১ কোটি ৪৮ লাখ ৯২ হাজার ৮০৯ টাকা। রংপুর সদর হাসপাতালের তিন একর জায়গাতে এটি নির্মিত হচ্ছে।
জানা গেছে, রংপুর সিটি কর্পোরেশন ভবনের উল্টো দিকে ১৭ একর জায়গায় রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সংক্রামক ব্যাধি ওয়ার্ডটি ছিল। এর আগে রংপুর সদর হাসপাতাল নামে এখানে একটি হাসপাতাল ছিল। তারও আগে অর্থাৎ বৃটিশ আমলে ১৮৪০ সালে এটি ছিল একটি ডিসপেনসারি। ১৯৩০ সালে সেটি রংপুর সদর হাসপাতাল হিসেবে রুপান্তরিত হয়।
১৯৭০ সালে রংপুর মেডিকেল কলেজ (রমেক) হাসাপাতাল প্রতিষ্ঠার পর প্রথম এর কার্যক্রম শুরু হয় রংপুর সদর হাসপাতালে। নতুন অবকাঠামো তৈরি হলে ১৯৭৬ সালে সদর হাসপাতাল থেকে রমেক হাসাপাতালটি নগরীর ধাপ এলাকায় স্থানান্তর করা হয়। সদর হাসপাতাল চত্বরে থেকে যায় রমেক হাসপাতালের সংক্রামক ব্যাধি ওয়ার্ডটি।
জরাজীর্ণ সদর হাসপাতালটি চালু করতে ২০০৭ সালে আন্দোলন করেন স্থানীয় সচেতন মহল। সে সময় আন্দোলনের চাপে তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রধান ফখরুদ্দিন আহমেদ সেটি পুন:চালুকরণের আশ্বাস দিলেও সেটি বাস্তবায়ন হয়নি। অবশেষে আওয়ামী লীগ সরকার প্রধান শেখ হাসিনার সুনজরে শুরু হয় পূর্ণাঙ্গ শিশু হাসপাতাল নির্মাণ কাজ।
রংপুর সদর হাসপাতাল পুণঃচালুকরণ বাস্তবায়ন কমিটির আহ্বায়ক ডা. মফিজুল ইসলাম মান্টু বলেন, ‘এই হাসপাতালটি পুনরায় বাস্তবায়নের জন্য আমরা বহুদিন থেকে আন্দোলন করে আসছিলাম। অবশেষে তা বাস্তবায়িত হচ্ছে। এজন্য আমরা রংপুরবাসী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানাই।’
রংপুর জেলা প্রকৌশল অধিদফতরের নির্বাহী প্রকৌশলী আবু সাঈদ চৌধুরী জানান, ‘পুরনো সংক্রামক ব্যাধি ওয়ার্ডটিতেই ১০০ শয্যার পূর্ণাঙ্গ শিশু হাসপাতাল নির্মাণ কাজ হচ্ছে। আশা করা হচ্ছে আগামী বছরের মার্চের মধ্যে এটি চালু করা সম্ভব হবে।’