লগি মেপে চলে লঞ্চ!
ঢাকা-পটুয়াখালী নৌরুট সহ পুরো দক্ষিণাঞ্চলে নাব্যতা সংকটের কারণে ব্যাহত হচ্ছে যাত্রী ও পণ্যবাহী নৌযান চলাচল। এর ফলে ভোগান্তিতে পরছে দক্ষিণ উপকূলের কয়েক লাখ মানুষ। দ্রুত সময়ের মধ্যে সঠিক পরিকল্পনা অনুযায়ী ড্রেজিং না করলে যেকোনো সময় ঢাকা-পটুয়াখালী গুরুত্বপূর্ণ এই নৌরুটটি বন্ধ হতে পারে।
ফলে স্থবির হয়ে পরবে দক্ষিণাঞ্চলের নদী নির্ভর অর্থনীতি। তাইতো এক প্রকার বাধ্য হয়েই লঞ্চের লস্কররা এখন লগি (বাঁশ) নিয়ে পানি মেপে মেপে লঞ্চ চলাচ্ছে।
পটুয়াখালী থেকে ঢাকা পর্যন্ত যে ২৫২ কিলোমিটার নৌপথ রয়েছে, এর বেশ কয়েকটি স্থানেই ডুবোচরের ফলে আটকে যাচ্ছে লঞ্চগুলো। গত এক সপ্তাহ যাবৎ প্রতিদিন বিকেলে পটুয়াখালী নদী বন্দর থেকে নৌযান ছেড়ে যাওয়ার পর কারখানা নদীতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা ঢাকাগামী ডাবল ডেকার লঞ্চগুলো কয়েক হাজার যাত্রী নিয়ে আটকে থাকছে। নদীতে জোয়ারের পানির উচ্চতা না বাড়লে বন্ধ থাকছে নৌযান চলাচল।
এছাড়া অনেক স্থানে নাব্যতা সংকটের কারণে লঞ্চগুলোকে ধীর গতিতে চলাচল করতে হচ্ছে। ফলে এই রুটের লঞ্চগুলো নির্ধারিত সময়ে যাত্রী ও পণ্য পরিবহন করতে ব্যর্থ হচ্ছে। আর বর্তমানে শীত মৌসুমে নদীতে পানি কম থাকায় এ ভোগান্তি আরও প্রকট আকার ধারণ করেছে।
গত কয়েকদিনে এমভি কুয়াকাটা-১, এমভি সুন্দরবন-৯, এমভি এ আর খান, এমভি প্রিন্স আওলাদ, এমভি কাজল-৭ সহ বেশ কয়েকটি ডাবল ডেকার যাত্রীবাহী লঞ্চ ডুবোচরে আটকে যায়। এ কারণে যাত্রীদের মধ্যে এখন ডুবোচর আতঙ্ক বিরাজ করছে।
পটুয়াখালী নদী বন্দর কর্মকর্তা খাজা সাদিকুর রহমান জানান, নাব্যতা সংকটের সমস্যা চিহ্নিত করে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেয়া হয়েছে। বর্তমানে নদী বন্দরের কাছে ড্রেজিং শুরু হয়েছে। পরবর্তীতে এই রুটে ড্রেজিং শুরু হতে পারে।
এদিকে অভিযোগ আছে, প্রতি বছর যেনতেন ভাবে পটুয়াখালী নদী বন্দর ও এর আশপাশ এলাকায় নদী ড্রেজিং করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে বিআইডব্লিউটিএ’র একটি অসাধু চক্র। আর প্রতি বছর ড্রেজিং বাবদ কী পরিমাণ অর্থ ব্যয় হচ্ছে সে বিষয়েও পটুয়াখালী নদী বন্দর কর্তৃপক্ষের কাছে নেই কোনো তথ্য।
পটুয়াখালীতে দেশের তৃতীয় পায়রা সমুদ্র বন্দর থেকে পণ্য পরিবহন ও নদী নির্ভর এই অঞ্চলের অর্থনীতি সমৃদ্ধ করতে দ্রুত এই নৌরুটটি খনন করার দাবি জেলাবাসীর।