ঐতিহ্যের প্রতীক খেজুরের রস
প্রকৃতিতে জেঁকে বসেছে শীত। এ কারণে খেজুর গাছ থেকেও বেশি পরিমাণে রস আহরণ করতে পারছে গাছিরা। আর শীতে ঐতিহ্যের প্রতীক হিসেবে খেজুর রস ঘিরে গ্রামীণ জনপদে শুরু হয়েছে উৎসবমুখর পরিবেশ। রসের পাশাপাশি নড়াইলের হাটবাজারে বিক্রি হচ্ছে খেজুর গুড়ের পাটালি। গুড়ের গন্ধে ভরপুর হাটবাজারগুলো। এ রস ও গুড় দিয়ে পাড়া-মহল্লায় তৈরি হচ্ছে নানা প্রকার পিঠা-পায়েস।
জানা গেছে, নড়াইলে ১১৫ হেক্টর জমিতে খেজুর গাছ রয়েছে। এ বছর সাড়ে ৯শ মেট্রিক টন গুড় উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, খেজুর গাছ থেকে সপ্তাহে সাধারণত এক বা দুইবার রস সংগ্রহ করা হয়। আর অগ্রহায়ণের মাঝামাঝি থেকে ফাল্গুন মাসের মাঝামাঝি পর্যন্ত খেজুর রস সংগ্রহ করা যায়। প্রতি কেজি পাটালি গুড়ের মূল্য ১৫০ থেকে ২০০ টাকা। আর এক ঠিলা (কলস) রস বিক্রি হয় ১২০ থেকে ১৩০ টাকা দরে।
এদিকে আগের তুলনায় খেজুরগাছের সংখ্যা যেমন কমেছে, তেমনি কমেছে গাছির সংখ্যাও। অনেক এলাকায় গাছির অভাবে খেজুর গাছ কাটা হচ্ছে না।
এছাড়া, ইটভাটায় পোড়ানোর জন্য কাঠ হিসেবে খেজুর গাছের চাহিদা রয়েছে ব্যাপক। এ কারণে কাঠ ব্যবসায়ী এবং ভাটা মালিকরা খেজুর গাছের দিকেই বেশি নজর দেয়। ছোট ছোট খণ্ড করে (আঞ্চলিক ভাষায় গুল) ইটভাটায় খেজুর গাছ দেয়া হয়। এতে আশঙ্কাজনক হারে খেজুর গাছ কমছে। তবে নির্বিচারে খেজুর গাছ কাটা হলেও সেই তুলনায় বা তার চেয়ে বেশি খেজুরগাছ রোপণ করা হয়নি। এ কারণে গ্রামাঞ্চলের পথে-প্রান্তরে এবং বিলের ধারে আগের মতো খেজুর গাছের সারি চোখে পড়ে না।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক চিন্ময় রায় জানান, বর্তমানে রস সংগ্রহে ব্যস্ত গাছিরা। তারা রস বা গুড় বিক্রি করে লাভবান হচ্ছে। আর রস ও গুড় দিয়ে পাড়া-মহল্লায় তৈরি হচ্ছে নানা প্রকার পিঠা-পায়েস। যা আমাদের গ্রামীণ ঐতিহ্য বহন করে।
তিনি আরও জানান, বিভিন্ন সড়কসহ জমিতে খেজুর গাছ লাগানোর জন্য কৃষকদের মধ্যে আগ্রহ সৃষ্টি করা হচ্ছে।