বাংলার প্রতি অবহেলায় মন কাঁদে ভাষা সৈনিক আনিসুলের



ফরহাদুজ্জামান ফারুক, স্টাফকরেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ভাষা সৈনিক আনিসুল হক পেয়ারা/ ছবি: সংগৃহীত

ভাষা সৈনিক আনিসুল হক পেয়ারা/ ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

১৯৪৭ সালে দ্বিজাতি তত্ত্বের ভিত্তিতে ভারত ও পাকিস্তান রাষ্ট্রের জন্ম হয়। কিন্তু পূর্ব ও পশ্চিম প্রদেশে ভাগ হওয়া পাকিস্তানে দেখা দেয় নতুন সমস্যা। পূর্ব পাকিস্তানের (বর্তমান বাংলাদেশ) বাংলাভাষীদের উপর উর্দুকে রাষ্ট্র ভাষা হিসেবে চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টায় মরিয়া হয়ে উঠে পাকিস্তানের শাসক গোষ্ঠী।

১৯৪৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে ভাষণে মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ বলেছিলেন- ‘উর্দুই হবে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা।‘ তার এই ভাষণের সাথে সাথে উপস্থিত ছাত্র-জনতা প্রতিবাদ শুরু করেন। সেই দিন থেকেই শুরু হয় ভাষার জন্য আন্দোলন। এই আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে পূর্ব পাকিস্তানজুড়ে। রংপুরেও একই সময় থেকে দানা বাঁধে রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন। ২২ ফেব্রুয়ারি রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে রংপুর কারমাইকেল কলেজে বিক্ষোভ মিছিল করেন ছাত্ররা।

১৯৫২ সালের সেই একুশে ফেব্রয়ারি থেকেই ক্রমে ধাবিত হয়েছিল মুক্তির সংগ্রাম তথা স্বাধীনতার আন্দোলন। ভাষা আন্দোলনে সারাদেশ যখন উত্তাল সেই সময় বসে ছিলেন না রংপুরের দামাল ছেলেরাও। রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে তারা রাজপথে মিছিল-মিটিং সমাবেশে জানিয়েছিলেন তীব্র প্রতিবাদ।

বার্তা২৪.কমের এই প্রতিবেদকের কাছে এভাবেই ৬৭ বছর আগের ভাষা সংগ্রামের স্মৃতিময় দিনগুলোর কথা জানান রংপুরের ভাষা সৈনিক মীর আনিসুল হক পেয়ারা।

১৯৫২’র স্লোগানমুখর সেই দিনগুলো কাঁদায় ভাষা সৈনিক মীর আনিসুল হক পেয়ারকে। তাঁর এই কান্না বাংলা ভাষার ব্যবহার, বিকৃতি আর উচ্চারণে বর্তমান প্রজন্মের অবহেলা দেখে। বাংলাকে সর্বক্ষেত্রে সার্বজনীন হিসেবে দেখে যেতে চান এই ভাষা সৈনিক।

সদা হাস্যোজ্জ্বল এই ভাষা সৈনিকের মুখে এখন আর হাসি নেই। তিনি গত বছরের ২ সেপ্টেম্বর সড়ক দুর্ঘটনায় মারাত্মক আহত হন। রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে কিছুটা সুস্থ হওয়ার পর থেকে বাসায় শয্যাশয়ী হয়ে পড়ে আছেন আনিসুল।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Feb/20/1550666909368.jpg

বুধবার (২০ ফেব্রুয়ারি) রংপুর মহানগরীর মাহিগঞ্জ আফানউল্লাহ্ রোডের আমেনা কুঠিরে তাঁর সাথে কথা হয় বার্তা২৪.কমের প্রতিবেদকের। এ সময় ভাষা সংগ্রামী মীর আনিসুল হক পেয়ারাকে বার্তা২৪.কম এর পক্ষ থেকে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয়। দীর্ঘক্ষণের আলাপচারিতায় বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনের প্রেক্ষাপট স্মৃতিচারণ করেন এই ভাষা সৈনিক।

আনিসুল হক পেয়ারা জানান, রাষ্ট্রভাষার আন্দোলনে মিছিলে যাওয়ার জন্য রংপুর জিলা স্কুল থেকে তাঁকে বের করে দেওয়া হয়। পরে আদর্শ স্কুল থেকে মেট্রিক পাস করে ১৯৫২ সালে কারমাইকেল কলেজে ভর্তি হন। ঐ সময় কারমাইকেল কলেজের অবাঙালি অধ্যক্ষ শাহাবউদ্দিন ভাষা আন্দোলনের পক্ষে ছিলেন না। ছাত্রদের মিছিল, সভা-সমাবেশ করতে দিতেন না উর্দুভাষী এই অধ্যক্ষ।

১৩৫৮ বঙ্গাব্দের ৮ ফাল্গুন। আগুনঝড়া ফাগুনের এই দিনটি ছিল ১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারি। সেদিন ঢাকায় ১৪৪ ধারা জারি ছিল। পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে ১৪৪ ধারা উপেক্ষা করে সেই দিন রাজপথে নেমে ছিলেন ছাত্র-শিক্ষক ও সাধারণ জনতা।

মিছিলে বৃষ্টির মতো চলে গুলিবর্ষণ। এই খবর সন্ধ্যার দিকে ছড়িয়ে পড়ে রংপুরে। বিক্ষুব্ধ ছাত্রসমাজ এর প্রতিবাদে ও বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে রাত থেকেই সংঘবদ্ধ হতে থাকে।

আনিসুল জানান, পরেরদিন ২২ ফেব্রুয়ারি কারমাইকেল কলেজে প্রতিবাদ সভার আয়োজন করা হয়। সেই সভা শেষে মিছিল নিয়ে শহরের দিকে এগুতে থাকে ছাত্রজনতা। মিছিলটি আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় পার হয়ে তেঁতুলতলার কাছাকাছি এলেই পুলিশ ছত্রভঙ্গ করতে উদ্যত হয়।

সেই সময় পুলিশি বাঁধা উপক্ষো করে ছাত্র-জনতার স্লোগানমুখরিত প্রতিবাদের মিছিল শহরের ভেতরে পৌঁছে যায়। সেদিন পুলিশের বেধড়ক লাঠিচার্জের কাছে মাথা নত করেনি ছাত্র-জনতা।

আনিসুল বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘ভাষা আন্দোলনে সক্রিয় হওয়ার কারণে ৫২’র পরে আমার বিরুদ্ধে হুলিয়া জারি করা হয়। এক পর্যায়ে আত্মগোপনে যাই। এ কারণে ১৯৫৪ সালে এইচএসসি পরীক্ষা দিতে পারিনি। পরে ১৯৫৫ সালে পরীক্ষা দিই। ১৯৫৬ সালে আবার পলাতক হতে হয়।‘

সহযোদ্ধাদের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘রংপুরে ভাষা আন্দোলনের কেন্দ্রবিন্দু ছিলো কারমাইকেল কলেজ। আন্দোলনে তখন নেতৃত্ব দিতেন মতিউর রহমান, আলতাব হোসেন, মোহাম্মদ আফজাল, আজিজুর রহমান, সুফি মোতাহার হোসেন, তোফাজ্জল হোসেন, শাহ আবদুর রাজ্জাক, আশরাফ হোসেন বড়দা, শামসুল হুদা, শাহ আবদুল বারী, শাহ তবিবর রহমান প্রধান সহ অনেকে। যাদের অনেকেই আজ বেঁচে নেই। আর যারা আছেন, তাদের খোঁজ কেউ রাখেন না। শুধু ভাষার মাস এলেই খোঁজ পড়ে আমাদের।’

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Feb/20/1550666944141.jpg

কাঁদামাটি দিয়ে শহীদ মিনার তৈরির স্মৃতি তুলে ধরে তিনি জানান, ১৯৫৬ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি এক রাতের শ্রমে রংপুর পাবলিক লাইব্রেরি মাঠে কাঁদামাটি দিয়ে তৈরি হয় প্রথম শহীদ মিনার। সেই কাঁদামাটির শহীদ মিনার আজও স্মৃতিপটে ভেসে উঠে। মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি সেনারারা শহীদ মিনারটি ভেঙে ফেলে। স্বাধীনতার পর ঐ জায়গাতেই নতুন করে শহীদ মিনারটি নির্মিত হয়।

আনিসুল ১৯৬১ সালে মাহিগঞ্জ আফানউল্ল্যাহ উচ্চ বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। এরপর ৬৬’র ছয় দফা আন্দোলনের সময় জেল খাটেন দুই মাস। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে একাত্তরে স্বাধীনতা যুদ্ধে যোগ দিয়ে সম্মুখ যুদ্ধে অংশ নেন সাহসী এই মানুষটি।

আনিসুল হকের পাঁচ সন্তানের মধ্যে চার মেয়ে ও একজন ছেলে। স্ত্রী নূরজাহান বেগম ২০১৪ সালে মারা গেছেন। ছেলে-মেয়ে সবারই বিয়ে হয়েছে। এদের মধ্যে বড় মেয়ে ইফফেতারা বিনতে আনিস লুবনা রংপুর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক, দ্বিতীয় মেয়ে ইসমেত আরা বিনতে আনিস লুমা বেসরকারি ইন্সুরেন্স কোম্পানিতে কর্মরত, ছেলে মীর ইফতেখারুল হক পল্লব ব্যবসা করছেন। আর বাকি দুই মেয়ের মধ্যে শামীম আরা সুলতানা রাজশাহীর চারঘাটে সরকারি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এবং ছোট মেয়ে শাহিনা সুলতানা রংপুর জিলা স্কুলে শিক্ষকতা করছেন।

বর্তমানে পরিবারের অন্যদের পাশাপাশি অসুস্থ শ্বশুরের সেবাযন্তে ব্যস্ত সময় পার করছেন ছেলের বউ রাবেয়া খাতুন শিল্পী। তিনিজানান, এ মাসে রংপুর ও কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসকসহ বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধিরা শয্যাশয়ী আনিসুল হক পেয়ারার খোঁজখবর নিতে বাসায় এসেছিলেন।

   

বরিশালে আগুনে পুড়ে বৃদ্ধার মৃত্যু



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, বরিশাল
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

বরিশাল জেলার বানারীপাড়া উপজেলার উদয়কাঠি গ্রামের এক কৃষকের বসতঘরে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে আমিরুন নেছা নামের শতবর্ষী এক নারীর করুণ মৃত্যু হয়েছে। তবে কিভাবে ঘরে আগুন লেগেছে সে বিষয়ে কেউ বলতে পারছেন না। ফলে অগ্নিকাণ্ডের রহস্য উদঘাটনের দাবি জানিয়েছেন নিহত বৃদ্ধার স্বজন ও স্থানীয়রা।

শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) বিকালে তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করে উদয়কাঠি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রাহাদ আহমেদ ননী জানান, বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত সাড়ে দশটার দিকে কৃষক মোশাররফ হোসেনের বসত ঘরে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। মুহুর্তের মধ্যে ঘরের সবকিছু পুড়ে ছাই হয়ে যায়। এসময় ঘরের মধ্যে থাকা সবাই দৌঁড়ে বের হতে পারলেও কৃষক মোশাররফ হোসেনের ১২০ বছর বয়সের মা আমিরুন নেছা আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গেছেন। তবে কিভাবে আগুন লেগেছে সে বিষয়ে কেউ কিছু বলতে পারছেন না।

বরিশাল বানারীপাড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. মাইনুল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা ঘটনাস্থলে যাওয়ার পূর্বেই বসতঘরসহ বৃদ্ধা পুড়ে ছাই হয়ে যায়। ওসি আরও বলেন, অগ্নিকাণ্ডের কারণ উদঘাটনে তদন্ত চলছে।

;

থাইল্যান্ডের সঙ্গে ৫ সমঝোতা ও চুক্তি সই



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

থাইল্যান্ড ও বাংলাদেশের মধ্যে একটি চুক্তি, তিনটি সমঝোতা স্মারক এবং একটি লেটার অব ইনটেন্ট বা অভিপ্রায়পত্র সই হয়েছে।

শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) থাই প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় গভর্নমেন্ট হাউসে দেশটির প্রধানমন্ত্রী স্রেথা থাভিসিনের সাথে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের পর এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

এ সময় শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের বন্ধুত্ব ঐতিহাসিক, ভাষাগত এবং অভিন্ন সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের গভীরে প্রোথিত। আমাদের দুই দেশের মধ্যে উষ্ণ ও সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক সহযোগিতার বহুমুখী ক্ষেত্রে ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে।

দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে দুই নেতা পারস্পরিক বিষয়ে দ্বিপাক্ষিক ও আঞ্চলিক বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার প্রাণবন্ত অর্থনীতির সঙ্গে আমাদের সম্পৃক্ততার ক্ষেত্রে আমরা থাইল্যান্ডকে একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং গতিশীল অংশীদার হিসেবে দেখছি।

শেখ হাসিনা বলেন, আমি থাই প্রধানমন্ত্রীকে বাংলাদেশে বিনিয়োগ এবং ব্যবসা সহজীকরণের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছি। আমি থাই পক্ষকে আমাদের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল এবং হাই-টেক পার্কগুলোতে থাইল্যান্ডের বিনিয়োগের এবং বিশেষভাবে একটি এসইজেড এই সুযোগ নেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছি।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা থাই প্রধানমন্ত্রী স্রেথা থাভিসিনের আমন্ত্রণে গত বুধবার (২৪ এপ্রিল) ছয় দিনের সরকারি সফরে থাইল্যান্ডে গেছেন।

দুই পক্ষ ২০২৪ সালের মধ্যে একটি মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) নিয়ে আলোচনা শুরু করতে সম্মত হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, দুই দেশের বাণিজ্য মন্ত্রীরা এই বিষয়ে একটি আগ্রহপত্রে সই করেছেন।

থাই এবং বাংলাদেশি কর্মকর্তাদের মধ্যে সহজ যোগাযোগের সুবিধার্থে ঢাকা এবং ব্যাংকক অফিসিয়াল পাসপোর্টধারীদের জন্য ভিসা অব্যাহতি সংক্রান্ত চুক্তিতে সই করেছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, দুই দেশের মধ্যে ইতোমধ্যে কূটনৈতিক পাসপোর্টধারীদের জন্য একটি চুক্তি রয়েছে।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশের জন্য থাইল্যান্ড জ্বালানি সহযোগিতায় নিয়োজিত একটি সম্ভাব্য অংশীদার। জ্বালানি সহযোগিতার সম্ভাবনা অনুসন্ধান করতে, শক্তি সহযোগিতা সংক্রান্ত সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষর এখানে স্বাক্ষরিত দ্বিতীয় নথি।

শুল্ক সংক্রান্ত বিষয়ে সহযোগিতা ও পারস্পরিক সহায়তার বিষয়ে তৃতীয় সমঝোতা স্মারকটি সই হয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, থাই জ্ঞান, অভিজ্ঞতা এবং সেরা পর্যটন অনুশীলন থেকে উপকৃত হওয়ার জন্য আমরা পর্যটন ক্ষেত্রে সহযোগিতার বিষয়ে সমঝোতা স্মারক সই করেছি।

তিনি বলেন, জনগণের জন্য খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে দুই পক্ষ কৃষি ও খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ খাতে সহযোগিতার সম্ভাবনা অনুসন্ধান করেছে।

সামুদ্রিক যোগাযোগের বিষয়ে শেখ হাসিনা বলেন, রানং বন্দর ও চট্টগ্রাম বন্দরের মধ্যে সরাসরি জাহাজ চলাচল নিয়ে দুই পক্ষ আলোচনা করেছে। থাইল্যান্ডের ফ্ল্যাাগশিপ ‘ল্যান্ডব্রিজ প্রকল্প’ বাংলাদেশ অত্যন্ত আগ্রহের সঙ্গে অনুসরন করছে।

 

;

বাংলাদেশের চিকিৎসা খাতে থাই বিনিয়োগ চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

বিশেষ অর্থনৈতিক খাত, হাসপাতাল ও চিকিৎসা খাতে থাইল্যান্ডকে বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, আমরা বাংলাদেশি স্বাস্থ্য কর্মীদের প্রশিক্ষণ এবং সক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহযোগিতার সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করেছি। আমি থাই প্রধানমন্ত্রীকে বাংলাদেশের হাসপাতাল ও চিকিৎসা খাতে বিনিয়োগের সম্ভাবনা পরীক্ষা করে দেখারও প্রস্তাব দিয়েছি।

শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) থাই প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় গভর্নমেন্ট হাউসে দেশটির প্রধানমন্ত্রী স্রেথা থাভিসিনের সাথে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের পর এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন শেখ হাসিনা।

দ্বিপাক্ষিক বৈঠক ও একান্ত বৈঠকের পর দুই প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে পাঁচটি দ্বিপাক্ষিক নথি-একটি চুক্তি, তিনটি সমঝোতা স্মারক এবং একটি আগ্রহপত্র সই হয়।

বাংলাদেশ একটি নিকট প্রতিবেশী হিসেবে থাইল্যান্ডের সাথে সম্পর্ককে অত্যন্ত গুরুত্ব দেয় উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের বন্ধুত্ব ঐতিহাসিক, ভাষাগত এবং অভিন্ন সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের গভীরে প্রোথিত। আমাদের দুই দেশের মধ্যে উষ্ণ ও সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক সহযোগিতার বহুমুখী ক্ষেত্রে ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে।’

দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে দুই নেতা পারস্পরিক বিষয়ে দ্বিপাক্ষিক ও আঞ্চলিক বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার প্রাণবন্ত অর্থনীতির সঙ্গে আমাদের সম্পৃক্ততার ক্ষেত্রে আমরা থাইল্যান্ডকে একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং গতিশীল অংশীদার হিসেবে দেখছি।

বাণিজ্য সহযোগিতার বিষয়ে তারা দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের বর্তমান পরিধি বাড়ানোর জন্য দীর্ঘ পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনা করেছেন এবং শক্তিশালি দ্বিমুখী প্রবৃদ্ধি অর্জনে একসঙ্গে কাজ করতে সম্মত হয়েছেন।

শেখ হাসিনা বলেন, আমি থাই প্রধানমন্ত্রীকে বাংলাদেশে বিনিয়োগ এবং ব্যবসা সহজীকরণের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছি। আমি থাই পক্ষকে আমাদের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল এবং হাই-টেক পার্কগুলোতে থাইল্যান্ডের বিনিয়োগের এবং বিশেষভাবে একটি এসইজেড এই সুযোগ নেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছি।

দুই পক্ষ ২০২৪ সালের মধ্যে একটি মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) নিয়ে আলোচনা শুরু করতে সম্মত হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, দুই দেশের বাণিজ্য মন্ত্রীরা এই বিষয়ে একটি আগ্রহপত্রে সই করেছেন।

থাই এবং বাংলাদেশি কর্মকর্তাদের মধ্যে সহজ যোগাযোগের সুবিধার্থে ঢাকা এবং ব্যাংকক অফিসিয়াল পাসপোর্টধারীদের জন্য ভিসা অব্যাহতি সংক্রান্ত চুক্তিতে সই করেছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, দুই দেশের মধ্যে ইতোমধ্যে কূটনৈতিক পাসপোর্টধারীদের জন্য একটি চুক্তি রয়েছে।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশের জন্য থাইল্যান্ড জ্বালানি সহযোগিতায় নিয়োজিত একটি সম্ভাব্য অংশীদার। জ্বালানি সহযোগিতার সম্ভাবনা অনুসন্ধান করতে, শক্তি সহযোগিতা সংক্রান্ত সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষর এখানে স্বাক্ষরিত দ্বিতীয় নথি।

শুল্ক সংক্রান্ত বিষয়ে সহযোগিতা ও পারস্পরিক সহায়তার বিষয়ে তৃতীয় সমঝোতা স্মারকটি সই হয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, থাই জ্ঞান, অভিজ্ঞতা এবং সেরা পর্যটন অনুশীলন থেকে উপকৃত হওয়ার জন্য আমরা পর্যটন ক্ষেত্রে সহযোগিতার বিষয়ে সমঝোতা স্মারক সই করেছি।

তিনি বলেন, জনগণের জন্য খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে দুই পক্ষ কৃষি ও খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ খাতে সহযোগিতার সম্ভাবনা অনুসন্ধান করেছে।

সামুদ্রিক যোগাযোগের বিষয়ে শেখ হাসিনা বলেন, রানং বন্দর ও চট্টগ্রাম বন্দরের মধ্যে সরাসরি জাহাজ চলাচল নিয়ে দুই পক্ষ আলোচনা করেছে। থাইল্যান্ডের ফ্ল্যাাগশিপ ‘ল্যান্ডব্রিজ প্রকল্প’ বাংলাদেশ অত্যন্ত আগ্রহের সঙ্গে অনুসরন করছে।

তিনি বলেন, আমি থাই পক্ষকে দুই দেশের মধ্যে বিশেষায়িত বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে বিশেষ করে কৃষি, মৎস্য ও খাদ্য প্রক্রিয়াকরণে সহযোগিতা বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছি।

দুই প্রধানমন্ত্রী বিমসটেক কাঠামোর আওতায় আঞ্চলিক সহযোগিতা প্রক্রিয়া নিয়েও আলোচনা করেছেন। চলতি বছরের শেষের দিকে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া শীর্ষ সম্মেলনে বর্তমান সভাপতি ও আয়োজক হিসেবে থাইল্যান্ড বাংলাদেশের কাছে সভাপতিত্ব হস্তান্তর করবে।

তিনি বলেন, আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি যে, বিমসটেক মোট ১৮০ কোটি জনসংখ্যার আঞ্চলিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির মূল চালিকাশক্তি। রোহিঙ্গা সংকটের একটি স্থায়ী সমাধানে বাংলাদেশ থাইল্যান্ডের সমর্থন চেয়েছে।

তিনি দুই দেশের মধ্যে উচ্চ পর্যায়ের সফরের গুরুত্ব পুনর্ব্যক্ত করেন।

এ সময় শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী থাভিসিনকে বাংলাদেশে সফরের আমন্ত্রণ জানান।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা থাই প্রধানমন্ত্রী স্রেথা থাভিসিনের আমন্ত্রণে গত বুধবার (২৪ এপ্রিল) ছয় দিনের সরকারি সফরে থাইল্যান্ডে গেছেন।

সূত্র- বাসস

;

টাঙ্গাইলে ছুরিকাঘাতে কিশোর নিহত



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, টাঙ্গাইল
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

টাঙ্গাইল সদর উপজেলার গোসাই জোয়াইর এলাকায় ছুরিকাঘাতে মো. সাইম (১৪) নামে এক কিশোর নিহত হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) রাতে সদর উপজেলার ঘারিন্দা ইউনিয়নের রানাগাছা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সন্ধ্যার দিকে বাড়ির পাশে যাওয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে বের হয় সাইম। পরে তার বন্ধুরা সাইমকে ধরাধরি করে বাড়িতে নিয়ে আসে। এসময় সাইমের মা ছেলের কি হয়েছে জানতে চাইলে তারা বলে মাচায় (বাঁশ দিয়ে তৈরি বসার স্থান) থেকে পড়ে গিয়ে ব্যথা পেয়েছে। পরে সাইমের মাথায় পানি ঢালতে গিয়ে স্বজনরা দেখে তার বুক থেকে রক্ত বের হচ্ছে। পরে তাড়াতাড়ি টাঙ্গাইল ২৫০ শয্যার হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক সাইমকে মৃত ঘোষণা করেন।

ঘারিন্দা ইউনিয়নের মেম্বার সাদ্দাম হোসেন বলেন, খবর পেয়ে আমি দ্রুত সাইমকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলি।

টাঙ্গাইলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) শরফুদ্দীন বলেন, সাইম সারা দিন রোজা ছিলো। ওর বন্ধুর ডাকে সাইমরা চার বন্ধু ওই গ্রামের ওবায়দুল পাগলার বাড়িতে যান। ওবায়দুল পাগলার বাবার সাথে তাদের কোন এক বন্ধুর পরিবারের সাথে জমি নিয়ে বিরোধ ছিলো। কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে ওবায়দুল ছুরিকাঘাত করে। তখনই সাইমের মৃত্যু হয়। পরে ওবায়দুল পাগলাকে পালিয়ে যেতে দেখে স্থানীয়রা। তাকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

;